লাখিমি জাতের গরু নিয়ে কিছু কথা!
—————————————————–
আজকে এমন একটা জেবু উপপ্রজাতির গরুর জাত নিয়ে সামান্য আলোচনা করবো যা অনেকে ভারতের আসাম অঞ্চলের গরুর জাত মনে করলেও আসলে এই জাতের গরু আমাদের দেশেও পাওয়া যায়। মানে এটা আমাদেরও একটা দেশী জাতের গরু। কিন্তু সম্প্রতি ভারত সরকার এটাকে আসামের একটা লোকাল ব্রিড হিসাবে নথিভুক্ত এবং নামকরণ করলেও আমাদের দেশের সরকারের এই নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই! লাখিমি জাতের গরু ভারতের আসামে পাওয়া গেলেও বাংলাদেশের সিলেটের পাহাড় সংলগ্ন হাওড়ের অববাহিকার বিস্তীর্ণ সমভূমিতে এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিলেট সংলগ্ন অঞ্চলেও এই জাতের গরু মোটামটিু ভাবে দেখা মেলে।
লাখিমি জাতের গরু জেবু উপপ্রজাতিভুক্ত এবং এটা ডুয়েল পারপাস জাত। এই জাতের গরু গুলি আকারে ছোট,বডি ল্যাংথ বা দৈর্ঘ্য গড়ে ৮৫ সেন্টিমিটার, উচ্চতা গড়ে ৯২ সেন্টিমিটার এবং গড় বুকের বেড় ১১৫ সেন্টিমিটার। গায়ের রং সাধারণত বাদামী,লালচে বাদামী বা ধূসর রংয়ের হয়ে থাকে। পা খাটো,কুজ মাঝারী আকৃতির এবং গাভীর ওলান ছোট কিন্তু বোউল আকৃতিবিশিষ্ট। গাভী গুলি শুধু খড়,বিচালি, ঘাস খেয়ে এক ল্যাক্টেশনে ২৭০-৩৭৫কেজি দুধ এবং প্রতি বছর একটি বাছুর প্রসবে সক্ষম! লাখিমি জাতের বলদ গাড়ি এবং লাঙ্গল টানায় খুবই ওস্তাদ এবং এদের মাংস খুবই সুস্বাদু! এই জাতের গাভীর দুধ ও A2!
লাখিমি জাতের গরুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এরা অধিক তাপ সহ্য করতে পারে,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যান্য জেবু উপপ্রজাতির গরুর চাইতে বেশী এবং এরা দূর্যোগপূর্ণ অত্যন্ত চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ায় নিজেকে সহজেই খাপ খাইয়ে নিতে পারে। এরা অতি অল্প খাবার খেয়ে বহাল তবিয়তেই বেঁচে থাকতে পারে এবং উৎপাদনশীলতায় সক্ষম!
লাখিমি জাতের গরু পালনে খরচ একেবারেই নেই বললেই চলে, অথচ এমন একটি জাতের গরু আমাদের দেশে থাকা স্বত্তেও এদেশের সরকারের আশু দৃষ্টি এদিকে পড়ছে না। একসময় হয়তো এই জাতটাই বিলুপ্ত হয়ে যাবে যদি যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া না হয়! খুবই দুঃখ লাগে যখন দেখি স্বদেশী জাতের গরু গুলি রক্ষায় আমাদের দেশের সরকারের ভাবলেশহীনতা!!!
মুক্তি মাহমুদ( পি ডি এফ)