রানিক্ষেতের ভ্যাক্সিন নিয়ে বিস্তারিত
রানিক্ষেতের স্ট্রেইনের প্যাথোজেসিটি আই সি পি আই(Intracerebral pathogenecity index) দ্বারা পরিমাপ করা হয়।
এটা দ্বারা স্ট্রেইন গুলোকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে ০.১.২.
ইন্ডেক্স যত বেশি হবে প্যাথোজেনেসিটি তত বেশি হবে মানে রোগ তৈরি করার ক্ষমতা বেশি হবে।
লেন্টোজেনিক স্ট্রেইনের আই সি আপ আই ০.৭ এর নিচে।
মেসোজেনিক এর ০.৭-১.৫
মুক্তেশর এর আই সি পি আই ১.৫
রোয়াকিন এর আই সি পি আই ১.৪
ভেলোজেনিক এর ১.৫ এর বেশি
ভেলোজেনিক স্ট্রেইন হল
TXGB ICPI 1.8
CA2002. 1.8
ZJ1 1.9
Herts. 1.9
এগুলো দিয়ে কোন ভ্যাক্সিন বানানো হয়না কারণ এতে রোগ হবার সম্বাবনা বেশি।
নিচে বিভিন্ন স্ট্রেইন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
১।লাইভ লেন্টোজেনিকঃ
লাইভ টিকা গুলো মেইনলি লেন্টোজেনিক( মেসোজেনিকও আছে যেমন আর ডি বি তবে আমাদের দেশে ৯৫% মনে করে এটা কিল্ড ভ্যাক্সিন)
বি ১ হিচনার
লাসোটা
উলস্টার
ক্লোন
ভি জি-ভিএ
ভি স্টেইন
এফ স্টেইন
ক্লোন ভ্যাক্সিন যা লাসোটা থেকে করা হয়।ক্লোন টিকার প্যাথোজেনেসিটি কম থাকে,স্টেস কম পড়ে তাই বাচ্চাতে বেশি ব্যবহার হয়।বাচ্চাতে এফ স্ট্রেইন,বি১ হিচনার ও ক্লোন দেয়া হয়।.
২।লাইভ মেসোজেনিকঃ
ভেলোজেনিক রানিক্ষেতের জন্য মেসোজেনিক ভ্যাক্সিনের সবচেয়ে ভাল বিশেষ করে আমাদের দটিমে
জন্য এই ভ্যাক্সিন টা দরকার কারণ আমাদের দেশে ভেলোজেনিক রানিক্ষেত হচ্ছে।
আমি নিজে ভেলোজনিক রানিখেত হবার পর ব্রয়লার,সোনালী ও লেয়ারে মেসোজেনিজ স্ট্রেইনের ভ্যাক্সিন দিয়ে ১০০% রিজাল্ট পেয়েছি,বাংলাদেশে আমিই মনে হয় ১ম ব্রয়লার রানিক্ষেতে আক্রান্ত হবার পর ভ্যাক্সিন দিতেছি এবং ভাল ফল পাচ্ছি। যেখানে ১০০% মর্টালিটি সেখানে মুরগি সুস্থ হয়ে যাচ্ছে।
৪টি মেসোজেনিক স্ট্রেইনের নাম হল
.রোয়াকিন(Roakin)
কোমারভ(Komarov) এক সময় এটার ভ্যাক্সিন আমাদের দেশে চলত কিন্তু এখন নাই।
মুক্তেশর(mukteswar) আমাদের দেশে আর ডি বি ভ্যাক্সিন এই স্ট্রেইন দিয়ে করা হয়েছে।
এইচ স্টেইন
নোটঃপৃথিবী থেকে দিন দিন মেসোজেনিক ভ্যাক্সিন উঠে যাচ্ছে কারণ সবাই বায়োসিকিউরিটি ভাল করতেছে কিন্তু আমরা পারতেছি না ।
৩।কিল্ড ভ্যাক্সিন
লাসোটা
মুক্তেশর
কিমম্বার
৪।কোন স্ট্রেইনের ভ্যাক্সিন কোথায় ভাল কাজ করে
অন্ত্রের রানিক্ষেতের জন্য ভি জি-ভি এ ভ্যাক্সিন( এভিনিউ) ভাল।
ভেলোজেনিকের জন্য মেসোজেনিক ভাল
রেস্পিরেটরী ও নার্ভাস সিস্টেমের জন্য ক্লোন /লাসোটা ভাল ।
৫।লাইভ না কিল্ড কোন টা ভালঃ
শুধু লাইভ করলে একটি নির্দিষ্ট সময় পর টাইটার কমে যায় ফলে ডিম কমে যায়
আর লাইভ এবং কিল্ড এক সাথে দিলে টাইটারের ইউনিফর্মিটি এবং প্রডাকশন ভাল থাকে।
তবে শুধু লাইভ দিয়েও চালানো যায়।
৬।প্রাইমিং ও ব্রুস্টিং কি,কেন করা উচিতঃ
১ম ভ্যাক্সিন টাকে প্রাইমিং বলা হয়,২য় বা পরের ভ্যাক্সিঙ্গুলোকে ব্রুস্টিং বলা হয়,১ম ও পরের ভ্যাক্সিন কাজ না করলে যে ভ্যাক্সিন করা হয় তাকে রি ভ্যাক্সিনেশন বলা হয়।
প্রাইমিং ভ্যাক্সিন ক্লোন/এফ/বি১ টাইপ লাসোটা দিয়ে করতে হয় কারণ এতে রিয়েকশন কম হয়
ব্রুস্টিং করলে কি হয়ঃ
১ম ভ্যাক্সিনে টাইটার কম উঠে এবং বেশিদিন থাকে না তবে ১ম ভ্যাক্সিনে মেমোরি সেল তৈরি হয়.২য় ভ্যাক্সিন দিলে মেমোরী সেলের মাধ্যমে দ্রুত টাইটার উঠে এবং টাইটার বেশিদিন থাকে।লাসোটা দিয়ে ব্রুস্টারিং করা হয় ১ম ভ্যাক্সিন দেয়ার ১৭-২৫দিন পর।
লাইভ ভ্যাক্সিনে সেলোলার ও হউনোরাল ২ ধরণের টাইটার উঠে আর কিল্ড ভ্যাক্সিনে শুধু হিউমোরাল এন্টিবডি তৈরি হয়।লাইভ ভ্যাক্সিনে লোকাল প্রটেকশন বেশি দেয় যেমন ট্রাকিয়া ভাল রাখে কিন্তু কিল্ড ভ্যাক্সিনে সেই সুবিধা কম পাওয়া যায় ।
৭।ফিল্ড ভাইরাস এটাক/এন্টিজনিক টাইটার এবং ভ্যাক্সিন টাইটার
এন্টিজেনিক টাইটারঃস্ট্যান্ডার্ড টাইটার থেকে যদি বেশি হয় তাহলে তাকে এন্টিজেনিক টাইটার বলা হয়।বয়স অনুযায়ী স্ট্যান্ডার্ড টাইটার আছে।
ভ্যাক্সিন টাইটারঃভ্যাক্সিন দেয়ার পর যে স্ট্যান্ডার্ড টাইটার উঠে।
৮।স্ট্যান্ডার্ড টাইটার
১-৫ সপ্তাহ ৪-৫
৬-১০ সপ্তা ৫-৬
১১-১৭ সপ্তাহ ৬-৭
১৮-২০ সপ্তাহের পর স্ট্যান্ডার্ড টাইটার ৭-১০।
তাই টাইটার ৫-৬ দেখে খারাপ বলা যাবে না আগে দেখতে হবে বয়স কত।
৯।এন ডি ভাইরাস
রানিক্ষেত প্যারামিক্সোভিরিডি গ্রোত্রের,জেনাস এভোলাভাইরাস
প্যারামিক্সো ভাইরাসের ১৫টি সেরোটাইপ আছে
এভিয়ান প্যারামিক্সোভাইরাস(APMV-1) ১-১৫
AMPV- টাইপ১ হল রানিক্ষেতের সেরোটাইপ।
এটা আবার ২ভাবে বিভক্ত
ক্লাশ ১ ও ক্লাশ ২
ক্লাশ ১ এর মাত্র ১টা geno টাইপ যা বন্য পাখিতে থাকে।
ক্লাশ ২ সেখানে ১৮টি জেনোটাইপ আছে যা মুরগিতে রানিক্ষেত করে থাকে (১,২,১০ সেরোটাইপ ছাড়া)
AMPV 1 জিনোমের ৬টি জিন থাকে যেমন নিওক্লিওক্যাপ্সিড প্রোটিন( এন পি) ও,ফস্ফোপ্রোটিন(পি),লার্জ প্রোটিন(এল) যা রেপিকেশন করে।
ফিউশন প্রোটিন ও হেমাগ্লোটিনিন নিউরামিনিডেজ প্রোটিন(এইচ এন ) যা ইনফেকশন করে।
ম্যাট্রিক্স প্রোটিন যা আকৃতি দান করে।
প্যাথোজেনেসিটি অনুযায়ী ৪ধরণের
১।ভেলোজেনিকঃ
ভিসেরোট্রপিক ভেলোজেনিক অন্ত্রে হেমোরেজিজ নেক্রোসিস
নিউরোট্রপিক ভেলোজেনিক রেস্পিরেটরী ও নার্ভাস সাইন দেখা যায়।.
২।মেসোজেনিক রেস্পিরেটরী সাইন দেখা যায় তবে নার্ভাস সাইন ও হয়
৩।লেন্টোজেনিকঃমাইল্ড বা সাবক্লিনিকেল রেস্পিরেটরী ইনফেকশন হয়।
৪।এসিস্টোমেটিক এন্টেরিকঃসাব ক্লিনিকে এন্ট্রেরিক ইনফেকশন।
প্রধান ভ্যাক্সিন গুলোর নাম এইচ বি১,লাসোটা,এফ,ভি জি-ভিএ,ভি৪,১-২,কমোরোভ,মুক্তেশ্বর,রোয়াকিন,উলস্টার।
আই সি পি আই(intracerebral pathogenecity Index)ঃ
B1 type nonvirulent strain 0-0.19(2)
MDT 104-116hrs
Lasota 0.02-0.37 (4)MDT 92-116
Clone30 0.11, MDT 104hrs
Ulster ICPI 0,MDT >150hrs
VG-VA 0.03 MDT 140hrs
C2 o.04,MDT 140hrs
MDT:Maximum Death Time
Immunogenicity criteria is most important.
১০।ভ্যাক্সিন টেকনোলজিঃ
প্রচলিত যে ভ্যাক্সিন আছে সেগুলো প্রটেকশন দেয় কিন্তু ্মাঝে মাঝে নিজেই ডিজিজ তৈরি করে,থার্মোলায়াবিলিটি,কম প্রটেকশন,পোস্ট ভ্যাক্সিন রিয়েকশন,পূর্বের এন্টিবডিকে নিউট্রালাইজ করে।
এসব দিক বিবেচনা করে এডভান্স টেকনোলজিতে ক্লোন ও ভেক্টর ভ্যাক্সিন বানানো হচ্ছে যে গুলোতে সাইড ইফেক্ট কম বা নাই।(এইচ ভি টি)
ND clone vaccine are developed by bringing a copy of desirable gene into natural live non -virulant virus that makes the vaccine free from some undesirable outcome like post vaccination reaction,thermal damage,neutralization of pre existing Ab .
Expression of NDV F gene in a vector virus (for example Turkeys virus or APMV 3).
সেটাই রানিক্ষেতের ভাল ভ্যাক্সিন যা শুধু ভাল প্রটেকশনই দেয় না পাশাপাশি কোন রিয়েকশন করে না,এন্টিবডি নিউট্রালাইজ করে না।
লাসোটা লেন্টোজেনিক ভ্যাক্সিন কিন্তু হাইলি ইমোনোজেনিক ও তাড়াতাড়ি টাইটার উঠে।
ক্লোন ভ্যাক্সিনের প্যাসেজ টাইম বেশি যার কারণে ডিজিজ হবার সম্বাবনা /সাইড ইফেক্ট কম,নিরাপদ।
প্যাসেজ টাইম বেশি মানে হল অনেকবার ভাইরাসটি মিডিয়ায় গ্রো করানো হয়েছে।
এফ স্ট্রেইনে টাইটার দেরীতে উঠে এবং কম উঠে কিন্তু রিয়েকশন কম করে।এটা দিয়ে প্রাইমিং করা হয়,ব্রুস্টারিং না।
লাসোটাতে টাইটার বেশি আসে এবং ভাল প্রটেকশন দেয় কিন্তু ভ্যাক্সিন রিয়েকশন হয়(কারণ এটি ট্রাকিয়ার সিলিয়া ড্যামেজ করে) যদি মুরগির বয়স কম হয় বা অসুস্থ হয় তাই কম বয়সে এবং অসুস্থ মুরগিতে দেয়া যাবে না।
আমাদের দেশে রানিক্ষেত হবার বা ভ্যাক্সিনের পর ঠান্ডা লাগার অন্যতম কারণ না জেনে লাসোটা ভ্যাক্সিন দেয়া।
তাছাড়া টাইটারের ইউনিফর্মিটি খারাপ হলে লাসোটা দেয়া যাবে না,দিলে অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।
সেই ক্ষেত্রে ক্লোন টিকা দিতে হবে।ক্লোন টিকাতে টাইটার ভাল আবার পোস্ট ভ্যাক্সিন রিয়েকশন নাই।তাছাড়া যে কোন বয়সে করা যায়।
লাসোটা দিয়ে শুধু ব্রুস্টারিং করা হয় এবং পরে যে কোন সময় দেয়া যায়।
তবে ক্লোন ও লাসোটা পর্যায়ক্রমে দেয়া উচিত।এক নাগারে এক ভ্যাক্সিন দেয়া ঠিক না কারণ সব ধরণের স্টেইনের মোকাবেলা করতে হবে।
১১।সিডিউল(সিডিউল অনেক গুলো ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে যা আমার একটা লেখায় আছে দরকার হলে পড়ে নিবেন)
প্রাইমিংঃ
১-৭দিনে MA5clon30
১-৭দিন বলা হয়েছে কারণ বাচ্চার ম্যাটার্নাল এন্টিবডি,সিজন,কোম্পানীর সিডিউলের কারণে আগে পরে হতে পারে।
ব্রুস্টারিংঃ
১৭-২৫দিনে
ব্রুস্টারিং এর পর কিল্ড দেয়া ভাল
এর পর প্রতি ৪৫দিন পর পর লাইভ টিকা দিতে পারেন বা টাইটার দেখে যখন দরকার হবে।
অনেকে ১০সপ্তাহের দিকে ১টা কিল্ড টিকা দেয়।
২৫দিনে ব্রুস্টারিং করি তাহলে ৪৫দিন পর ৭০দিনে ১টা লাইভ আবার ১৫ সপ্তাহের দিকে আরেকটা লাইভ দেয়া যায়।
তার পর ই ডি এস।
২৯-৩০ সপ্তাহের আগে কোন ভ্যাক্সিন হবে না।
৩০ সপ্তাহে রানিক্ষেতের লাইভ টিকা( ক্লোন বা লাসোটা)
৩০ সপ্তাহের পরে ৪৫-৬০দিন পর পর বা টাইটার দেখে লাইভ টিকা দেয়া ।
তবে কেউ কেউ লাইভ না দিয়ে শুধু কিল্ড দেয় ৪-৫ মাস পর পর।
তবে ৪৫ সপ্তাহের দিকে একটা কিল্ড দিলেই যথেস্ট।
বিক্রির আগ পর্যন্ত শুধু লাইভ দিলেই হবে।
লাইভ টিকা কখন দেব,কয়টা দিবো ও কেন দেবো
লাইভ টিকা আগে দিতে হয় যদি ফার্মে দেয়া লাগে,প্রাইমিং ও ব্রুস্টারিং ২টিই দিতে হবে কারণ ১টা ভ্যাক্সিন দিলে মেমোরী সেল তৈরি হয় যা ২য় ভ্যাক্সিন দেয়ার পর চিনে ফেলে এবং বেশী টাইটার উঠে যা অনেকদিন থাকে।যদি ১টা ভ্যাক্সিন করি তাহলে টাইটার অল্প উঠবে এবং কিছুদিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।
২টি লাইভ টিকা দেয়ার পর কিল্ড টিকা দেয়া উচিত( তবে অনেকেই একটা লাইভ টিকা দিতে পরে কিল্ড দেয়,আবার একটা লাইভ দেয়।)
লাইভ টিকায় সেলোলার ও হিউমোরাল ২ ধরণের টাইটার উঠে আর কিল্ড টিকায় শুধু হিউমোরাল টাইটার উঠে যা দিয়ে লোকাল ইনফেকশন( ট্রাকিয়ার ইনফেকশন দূর করা যায় না) তাই লাইভ ও কিল্ড ২ ধরণের টিকাই দেয়া উচিত।
সেনা,বিমান ও নৌ ৩ ধরণেই বাহনীই ৩দিকে কাজ করে।তেমনি মুরগির ক্ষেত্রেও সব দিক কভার দিতে হয়।
১২।টাইটার কত প্রকারঃ
স্ট্যান্ডার্ড টাইটার
কম টাইটার( যে কোন ভ্যাক্সিন দেয়া যাবে ক্লোন বা লাসোটা বা এভিনিউ
বেশি টাইটার(যদি মারা না যায় বা প্রডাকশন না কমে তাহলে সমস্যা নাই)
সমস্যা হলে কিল্ড টিকা
রোলিং টাইটার(ইনফেকশন)( এইটাই সবচেয়ে বেশি খারাপ,অনেক মারা যায় যেতে পারে।
টাইটারের ভেরিয়েশন বেশি হয়। সি ভি ৩০এর বেশি হয়।
লাসোটা দেয়া যাবে না।ক্লোন টিকা দিয়ে কিল্ড টিকা দিতে হবে