Breaking News
ছাগল পালনের A টু Z গাইড
ছাগল পালনের A টু Z গাইড

ছাগল পালনের A to Z গাইড

ছাগল পালনের A to Z গাইড

ছাগল পালন কি, কেন, উদ্দেশ্য, সমস্যা ও প্রতিকার:

নাম: শাপলা

জাত: দেশী ক্রস ( বাবা ” কটা বা হরিয়ানা ” ক্রস, মা ব্লাক বেঙ্গল ” বৈরাগী “)

বয়স: দুই বছর চার মাস বা ছয় দাঁত।

এটা আমার খামারের অন্যতম প্রিয় একটা ছাগী। এর জন্মের সময় ওজন ছিল ২.৫ কেজি।

এটা হাঁটতে শেখে জন্ম নেয়ার খুবই অল্প সময়ের মধ্যে। বলা যায় এটা হচ্ছে খামারের সবচাইতে বুদ্ধিমতি ও দুষ্ট।

এর খাদ্য কে পুষ্টিতে রুপান্তর করার হার তুলনামূলকভাবে অন্য গুলোর চাইতে বেশি।

যার জন্য একে তুলনামূলক কিছুটা কম খাবার খাওয়ালেও ওজন বৃদ্ধির হার বেশি।
এর বাচ্চা দেয়ার হার ব্লাক বেঙ্গল এর মতোই, বছরে দুইবার ( হ্যাঁ ঠিক শুনেছেন, চৌদ্দ মাসে না, বার মাসের ভেতর দুইবার )।

কিন্তু স্বাস্থ্যগত সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় একবার বাচ্চা হওয়ার ৪৫ দিন পর প্রজনন করিয়ে থাকি।

আর এর উর্বরতা অনেক ভালো। এর থেকে প্রথমবারই দুটি বাচ্চা পেয়েছিলাম।
শারীরিক ভাবে এরা অনেক শক্তিশালী। যদি প্রয়জনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সরবরাহ করা যায়, তবে এদের রোগ বালাই কম হয়ে থাকে।
এখন আসি মূল কথায়।

ইদানিং দেখা যাচ্ছে কিছু অখামারি, নতুন খামারি বা প্রবাসী, যাদের ছাগলের খামার সম্পর্কে তেমন কোনও ধারণা নাই, তাঁরা খামার নিয়ে খুব আক্রমণাত্মক ও বিতর্কিত ব্যবহার ও কথাবার্তা বলে যাচ্ছেন, যা এ সেক্টরের জন্য মঙ্গলজনক নয় বলে মনে করি।

তাদের কথা বার্তায় বোঝা যায়, তারা ছাগলের খামার কেন করছেন, এমন কোনও লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য তাদের সামনে নাই, তাদের উদ্দেশ্যে আজ আমি কিছু কথা আমার বাস্তব ভিত্তিক অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।
একটা খামার শুরুর আগে আমাদের উচিত আগে এ সম্পর্কে যথোপযুক্ত জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ এবং লক্ষ্য স্থির করা,

আমরা খামারটি কেন করছি? আমি যেসব খামারিদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের বেশির ভাগেরই এসব বিষয়ে বিস্তারিত কেন সল্প মাত্রায়ও ধারণা থাকে না।

তারা এ সেক্টরে দুই ভাবে আসে বা আসতে উদ্বুদ্ধ হয়,
১. অপরকে কে দেখে
২. ইন্টারনেট এর মাধ্যমে
আপনি যদি ছাগলের খামার করতে আগ্ৰহী হোন তাহলে প্রথমেই আপনাকে এ বিষয়ে জ্ঞান অর্জন ও প্রশিক্ষণ গ্ৰহণ করা উচিত।

প্রশিক্ষণ হতে পারে সরকারি বা বেসরকারি। উপযুক্ত জ্ঞান বা প্রশিক্ষণ ছাড়া খামার সাধারণত বেশীদিন টিকে থাকে না।
এরপর যারা এখনও লক্ষ্য হীন ভাবে খামার করে যাচ্ছেন বা খামার করতে আগ্রহী তাদেরকে প্রথমেই লক্ষ্য স্থির করতে হবে আপনি কেন খামার করবেন?

সেটা হতে পারে এরকম-
ক) দুধের জন্য
খ) মাংসের জন্য
গ) দুধ, মাংস উভয়ের জন্য
ঘ) এর উপজাত এর জন্য, যেমন ছাগলের লোমের জন্য
ঙ) ব্রিডিং বা প্রজননের জন্য পাঁঠা বা পাঠী উৎপাদন
চ) শহরের পরিবেশে পালন উপযোগী ছাগল পালন

ওপরের যেসব বিষয় গুলো উল্লেখ করেছি, তা বিবেচনা করে আপনাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে তুলনা করার পর সিদ্ধান্ত নিন, আপনি কি ধরনের খামার করতে চান?

কারন প্রতিটা ধরন ( ক থেকে চ ) পর্যন্ত উল্লেখ করেছি তার জন্য ভিন্ন ভিন্ন জাতের ছাগলের প্রয়োজন হবে।

কারন আজকাল দালাল, ফেসবুক, ইউটিউব খামারিদের জন্য নতুন উদ্যোক্তাগণ বুঝে উঠতে পারছে না তারা কিভাবে, কোন পরিবেশে কোন জাত দিয়ে খামার শুরু করবেন।

দারিদ্র্য বিমোচনে ছাগল পালন প্রকল্প
।।।————————————।।।
ছাগল বাংলাদেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ পশুসম্পদ। ছাগল আমাদের দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস।

বাংলাদেশে বেকার সমস্যা ও দারিদ্র্য হ্রাস মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি ও বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে ছাগল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

উল্লেখ্য যে এদেশের মোট প্রায় আড়াই কোটি ছাগলের অধিকাংশই ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের।

ছাগল পালনের সুবিধাদিঃ
।।।————————————।।।
* ছোট প্রাণীর খোরাক তুলনামূলকভাবে অনেক কম, পালনের জন্য অল্প জায়গা লাগে এবং মূলধনও সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে থাকে।
* গবাদিপশুর তুলনায় ছাগলের রোগবালাই কম।
* তুলনামূলক কম সময়ে অধিক সংখ্যক বাচ্চা পাওয়া যায়। বছরে দুইবার বাচ্চা প্রসব করে এবং প্রতিবারে গড়ে ২-৩ টি বাচ্চা হয়ে থাকে।
* দেশে ও বিদেশে ব্ল্যাক ছাগলের চামড়া, মাংস ও দুধের বিপুল চাহিদা আছে।
* ছাগলের দুধ যক্ষ্মা ও হাঁপানি রোগ প্রতিরোধক হিসাবে জনশ্রুতি রয়েছে এবং এজন্য এদের দুধের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।
* ছাগল ভূমিহীন ক্ষুদ্র ও মাঝারী চাষীদের অতিরিক্ত আয়ের উৎস হিসাবে বিবেচিত হয়।

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বৈশিষ্ট্যঃ
।।।————————————।।।
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বক্ষস্থল চওড়া, কান কিছুটা উপরের দিকে ও শিং ছোট থেকে মাঝারী আকৃতির হয়ে থাকে।

দেহের গড়ন আটসাট পা অপেক্ষাকৃত খাটো ও এবং লোম মসৃন হয়।

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনের সুবিধাঃ
।।।————————————।।।
সাধারণতঃ ১২-১৫ মাস বয়সে প্রথম বাচ্চা দেয়। একটি ছাগী বছরে দুইবার বাচ্চা প্রসব করলেও উপযুক্ত ব্যবস্থাপনায় ছাগী ২-৮ টি পর্যন্ত বাচ্চা পাওয়া যেতে পারে।

২০ কেজি দৈহিক ওজন সম্পন্ন একটি ছাসী থেকে কমপক্ষে ১১ কেজি খাওয়ার যোগ্য মাংস এবং ১.-১.৪ কেজি ওজনের অতি উন্নতমানের চামড়া পাওয়া যায়।

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের চামড়া একটি অতি মূল্যবান উপজাত।

দেখা গেছে, সেমি-ইন্টেনসিভ পদ্ধতিতে ২৫টি ছাগীর খামার থেকে ১ম বছরে ৫০,০০০ টাকা, ২য় বছরে ৭৫,৩৩৭ এবং ৩য় বছরে ১,০২,৬০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব (সূত্রঃ ছাগল পালন ম্যানুয়েল)।

ছাগল ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিবেচ্য গুণাবলীঃ
।।।————————————।।।
পাঠাঁর ক্ষেত্রেঃ
* পাঠাঁর বয়স ১২ মাসের মধ্যে হতে হবে, অন্ডকোষের আকার বড় এবং সুগঠিত হতে হবে।
* পিছনের পা সুঠাম ও শক্তিশালী হতে হবে।
* পাঠাঁর মা, দাদী বা নানীর বিস্তারিত তথ্যাদি (অর্থাৎ তারা বছরে ২ বার বাচ্চা দিত কীনা, প্রতিবারে একটির বেশি বাচ্চা হতো কীনা, দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ইত্যাদি গুণাবলী) সন্তোষজনক বিবেচিত হলেই ক্রয়ের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
ছাগীর ক্ষেত্রেঃ
* নির্বাচিত ছাগী হবে অধিক উৎপাদনশীল বংশের ও আকারে বড়।
* নয় বা বার মাস বয়সের ছাগী (গর্ভবতী হলেও কোনো সমস্যা নেই) কিনতে হবে।
* ছাগীর পেট তুলনামূলকভাবে বড়, পাজরের হাড়, চওড়া, প্রসারিত ও দুই হাড়ের মাঝখানে কমপক্ষে এক আঙ্গুল ফাঁকা জায়গা থাকতে হবে।
* নির্বাচিত ছাগীর ওলান সুগঠিত ও বাঁট সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

বয়স নির্ণয়ঃ
ছাগলের দাঁত দেখে বয়স নির্ধারণ করতে হয়।

বয়স ১২ মাসের নিচে হলে দুধের সবগুলোর দাঁত থাকবে, ১২-১৫ মাসের নিচে বয়স হলে স্থায়ী দাঁত এবং ৩৭ মাসের ঊর্ধ্বে বয়স হলে ৪ জোড়া স্থায়ী দাঁত থাকবে।

স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়াদিঃ
।।।————————————।।।
গ্রহণযোগ্য ছাগল অবশ্যই সকল ধরনের সংক্রামক ব্যাধি, চর্মরোগ, চক্ষুরোগ, যৌনরোগ ও বংশগত রোগমুক্ত হতে হবে।

পিপিআর খুবই মারাত্মক রোগ বিধায় কোনো এলাকা থেকে ছাগল সংগ্রহ করার আগে উক্ত এলাকায় পিপিআর রোগ ছিল কীনা তা জানতে হবে।

উক্ত এলাকা কমপক্ষে ৪ মাস আগে থেকে পিপিআর মুক্ত থাকলে তবেই সেখান থেকে ছাগল সংগ্রহ করা যেতে পারে।

ছাগল ক্রয়ঃ
।।।————————————।।।
সাধারণত যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের চর অঞ্চল, ময়মনসিংহের ত্রিশাল, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, বগুড়ার ধুনট, ফরিদপুর, মেহেরপুর ও কয়েকটি স্থানে উন্নতমানের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পাওয়া যায়।

এসব স্থান থেকে ব্যক্তিগতভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ছাগল ক্রয় করা যেতে পারে।

বাছাইকৃত ছাগলের পরিবহন ব্যবস্থাঃ
।।।————————————।।।
নির্বাচিত ছাগলকে পূর্বে পিপিআর ভ্যাকসিন দেয়া না থাকলে পরিবহনের ২১ দিন পূর্বে পিপিআর ভ্যাকসিন দিতে হবে।

পরিবহনের পূর্বে ছাগলকে পর্যাপ্ত পরিমাণ লবণ ও চিটাগুড় মিশ্রিত পানি (পানি ১ লিটার, লবণ ১০ গ্রাম ও চিটাগুড় ৩০ গ্রাম) খাওয়াতে হবে। অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা কিংবা ঝড়-বৃষ্টিতে এদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পরিবহন করা মোটেও উচিত নয়।

জৈব নিরাপত্তাঃ
।।।————————————।।।
খামার এলাকার বেড়া বা নিরাপত্তা বেস্টনী এমনভাবে নির্মান করতে হবে যাতে সেখানে অনাকাঙ্খিত ব্যক্তি, শেয়াল-কুকুর ও অন্যান্য বন্যপ্রাণী প্রবেশ করতে না পারে।

প্রবেশপথে ফুটবাথ বা পা ধোয়ার জন্য ছোট চৌবাচ্চায় জীবাণুনাশক মেশানো পানি রাখতে হবে।

খামারে প্রবেশের আগে খামারে গমনকারী তার জুতা/পা ডুবিয়ে জীবাণুমুক্ত করবেন।

খামারের জন্য সংগৃহীত নতুন ছাগল সরাসরি খামারে পূর্বে বিদ্যমান ছাগলের সাথে রাখা যাবে না।

নূতন আনীত ছাগলদেরকে স্বতন্ত্র ঘরে সাময়িকভাবে পালনের ব্যবস্থা করতে হবে।

এ ধরনের ঘরকে পৃথকীকরণ ঘর বা আইসোলেশন শেড বলে। অন্ততপক্ষে দুই সপ্তাহ এই শেডে রাখা বিশেষ জরুরি।

এসব ছাগলের জন্য প্রাথমিক কিছু চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রথমে এদেরকে কৃমিনাশক খাওয়াতে হবে। এজন্য বহিঃপরজীবী এবং আন্তঃ পরজীবীর জন্য কার্যকর কৃমিনাশক প্রয়োগ করতে হবে।

চর্মরোগ প্রতিরোধের জন্য প্রতিটি ছাগলকে (০.৫%) শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ ম্যালাথিয়ন দ্রবণে গোসল করাতে হবে।

আইসোলেশন শেডে ছাগল রাখার পর ১৫ দিনের মধ্যে যদি কোনো রোগ না দেখা দেয় তাহলে প্রথমে পিপিআর রোগের ভ্যাকসিন এবং সাত দিন পর গোটপক্সের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে।

শেষ টিকা প্রদানের সাত দিন পর এসব ছাগলকে মূল খামারে নেয়া যেতে পারে।

প্রতিদিন সকাল এবং বিকালে ছাগলের ঘর পরিষ্কার করতে হবে।

কোনো ছাগল যদি অসুস্থ হয় তাহলে তাকে আলাদা করে আইসোলেশন শেডে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

যদি কোনো ছাগল মারা যায় তবে অবশ্যই তার কারণ সনাক্ত করতে হবে।

ল্যাবরেটরিতে রোগ নির্ণয়ের পর তদনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বিশেষ করে অন্যান্য ছাগলের অন্য নিতে হবে।

মৃত ছাগলকে খামার থেকে দূরে নিয়ে মাটির গভীরে পুতে বা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

রোগাক্রান্ত ছাগলের ব্যবহার্য সকল সরঞ্জামাদি ও দ্রব্যাদি সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

ছাগলের বাসগৃহঃ
।।।————————————।।।
ছাগলের ঘর শুষ্ক, উচুঁ, পানি জমে না এমন স্থানে স্থাপন করা উচিত।

পূর্ব পশ্চিমে লম্বালম্বি, দক্ষিণ দিক খোলা এমন করতে হবে। এক্ষেত্রে কাঠাঁল, ইপিল ইপিল, কাসাভা ইত্যাদি গাছ লাগানো যেতে পারে।

এছাড়া পানি নিষ্কাশনের জন্য উত্তম ব্যবস্থা আছে এমন স্থানকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। ছাগল ঠাসাঠাসি অবস্থায় বাস করতে পছন্দ করে না।

এরা মুক্ত আলো বাতাস এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্থানে থাকতে পছন্দ করে। এক জোড়া ছাগলের জন্য ৫ ফুট লম্বা, ১.৫ ফুট চওড়া এবং ৬ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট খোয়াঁড় প্রয়োজন।

প্রতিটি পূর্ণ বয়স্ক ছাগলের জন্য গড়ে ১০-১৪ বঃ ফুট এবং বাড়ন্ত বাচ্চার জন্য ৩-৮ বঃ ফুট জায়গা প্রয়োজন।

ছাগলের ঘর ছন, গোলপাতা, খড়, টিন বা ইট নির্মিত হতে পারে।

তবে ঘরের ভিতর বাঁশ বা কাঠের মাচা প্রস্তুত করে তার উপর ছাগল রাখা উচিত।

মাচার উচ্চতা ১ মিটার (৩.৩৩ ফুট) এবং মাচা থেকে ছাদের উচ্চতা ৬-৮ ফুট হবে।

মল-মূত্র নিষ্কাষনের গোবর ও চনা সুবিধার্থে বাঁশের চটা বা কাঠের মাঝে ১সেঃ মিঃ ফাক লাখতে হবে।

মেঝে মাটির হলে সেখানে পর্যাপ্ত বালি দিতে হবে। বৃষ্টি যেন সরাসরি ঘরের ভিতর প্রবেশ না করতে পারে সে জন্য ছাগলের ঘরের চালা ১-১.৫ মিঃ (৩-৩.৫ ফুট)
ঝুলিয়ে দেয়া প্রয়োজন।

শীতকালে রাতের বেলায় মাচার উপরের দেয়ালকে চট দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

পাঠাঁর জন্য অনুরূপভাবে পর্যাপ্ত আলো বাতাস ও মল-মূত্র নিষ্কাষনের উত্তম সুবিধাযুক্ত পৃথক খোয়াড় তৈরি করতে হবে।

শীতকালে মাচার উপর ১.৫ ইঞ্চি পুরু খড় বিছিয়ে তার উপর ছাগল রাখতে হবে।

প্রতিদিন ভালোভাবে পরিষ্কার করে রৌদ্রে শুকিয়ে পুনরায় বিছাতে হবে।

ছাগলের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাঃ
।।।————————————।।।
একথা মনে রাখা প্রয়োজন যে মুক্তভাবে ছাগল প্রতিপালনের তুলনায় আবদ্ধ অবস্থায় ছাগল পালন অনেক বেশি ঝুকিপূর্ণ।

এ ব্যবস্থায় বৈজ্ঞানিক চিন্তা-ভাবনা ও প্রযুক্তির সমন্নয় না ঘটালে খামারীকে বিস্তর সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

এটা একটি বাস্তব উপলদ্ধি।

এজন্য ছাগলের সুখ-সাচ্ছন্দ্য ও স্বাস্থ্যর প্রতি খামারীকে স্বতন্ত্র ভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।

ছাগলের খামারে রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটলে মারাত্মক ক্ষতি হয়ে থাকে। তাই বিভিন্ন রোগ দমনের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া অত্যন্ত জরুরি।

তা না হলে খামার থেকে লাভের আশা করা যায় না। খামারে ছাগল আনার পর থেকে প্রতিদিনই প্রতিটা ছাগলের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে।

প্রথম পাঁচ দিন সকাল ও বিকালে দুবার থার্মোমিটার দিয়ে ছাগলের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে হবে।

হঠাৎ কোনো রোগ দেখা মাত্রই পশু চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।

তীব্র শীতের সময় ছাগী বা বাচ্চাদের গায়ে চট পেঁচিয়ে দেয়া যেতে পারে।

মাচার নিচ এবং ঘর প্রতিদিন সকালে পরিষ্কার করতে হবে এবং কর্মসূচি অনুযায়ী জীবাণুনাশের ব্যবস্থা নিতে হবে।

সুস্থ ছাগলের বৈশিষ্ট্যঃ
।।।————————————।।।
সুস্থ ছাগলের নাড়ীর স্পন্দন প্রতি মিনিটে ৭০-৯০ বার, শ্বাস-প্রশ্বাস প্রতি মিনিটে ২৫-৪০ বার এবং তাপমাত্রা ৩৯.৫ সেঃ হওয়া উচিত।

সুস্থ ছাগল দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করে, মাথা সবসময় উঁচু থাকে, নাসারন্ধ থাকবে পরিষ্কার, চামড়া নরম, পশম মসৃন ও চকচকে দেখাবে এবং পায়ু অঞ্চল থাকবে পরিচ্ছন্ন।
ছাগল সুস্থ রাখতে যেসব ব্যবস্থাদি গ্রহণ করা আবশ্যক সেগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ

কর্মসূচি অনুযায়ী টিকা প্রদানঃ
।।।————————————।।।
ভাইরাসজনিত রোগ যেমন পিপিআর, গোটপক্স, ক্ষুরারোগ ইত্যাদি এবং ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ

যেমন এনথ্রাক্স, ব্রুসেলোসিস ইত্যাদি খুবই মারাত্মক বলে এগুলোর বিরুদ্ধে যথারীতি টিকা প্রদান করতে হবে।

যেসব ছাগীকে পূর্বে পিপিআর, গোটপক্স, একথাইমা, ব্রুসেলোসিস ইত্যাদি টিকা দেয়া হয়নি তাদেরকে গর্ভের ৫ম মাসে উক্ত ভ্যাকসিনগুলি দিতে হবে। বাচ্চার বয়স যখন ৫ মাস তখন তাকে পিপিআর ভ্যাকসিন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন দিতে হবে।

ছাগলের টিকা প্রদান কর্মসূচি

কৃমিনাশক ঔষধ প্রয়োগঃ
।।।————————————।।।
সকল ছাগলকে নির্ধারিত মাত্রায় বছরে দুইবার কৃমিনাশক ঔষধ প্রদান করতে হবে।

কৃমিনাশক কর্মসূচি অনুসরণের জন্য পশু চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ
।।।————————————।।।
ছাগলকে রাস্তার ধার, পুকুর পাড়, জমির আইল, পতিত জমি বা পাহাড়ের ঢালে বেঁধে বা ছেড়ে ৮-৯ ঘন্টা ঘাস খাওয়াতে পারলে খুব উপকার হবে।

এ ধরনের সুযোগ না থাকলে প্রতি ২০ কেজি ওজনের ছাগলের জন্য দৈনিক ০.৫-১ কেজি পরিমাণ কাঠাঁল, ইপিল ইপিল, ঝিকা, বাবলা পাতা অথবা এদের মিশ্রণ দেয়া যেতে পারে।

প্রতিটি ছাগলকে দৈনিক ২৫০-৩০০ গ্রাম ঘরে প্রস্তুতকৃত দানাদার খাদ্য দেয়া যেতে পারে।

১০ কেজি দানাদার খাদ্য মিশ্রণে যেসব উপাদান থাকা প্রয়োজন তা হচ্ছেঃ চাল ভাঙ্গা ৪ কেজি, ঢেঁকি ছাঁটা চালের কুড়া ৫ কেজি, খেসারি বা অন্য কোনো ডালের ভূষি ৫০০ গ্রাম, ঝিনুকের গুড়া ২০০ গ্রাম এবং লবণ ৩০০ গ্রাম।

ইউরিয়া দ্বারা প্রক্রিয়াজাত খড় ও সাইলেজ খাওয়ালে ভাল হয়।

কারণ প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে আমিষের পরিমাণ বেশি থাকে এবং পরিপাকও ভালোভাবে হয়। জন্মের পর থেকেই ছাগল ছানাকে আঁশ জাতীয় খাদ্য যেমন কাঁচা ঘাস ইত্যাদিতে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে।

দানাদার খাদ্য খাওয়ানোর পর ছাগলকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পরিষ্কার পানি খেতে দিতে হবে।

বাড়ন্ত ছাগলকে দৈনিক প্রায় ১ লিটারের মতো পানি পান করা উচিত। কাঁচাঘাস কম বা এর অভাব ঘটলে ছাগলকে ইউরিয়া-চিটাগুড় মেশানো খড় নিম্নোক্ত প্রণালীতে বানিয়ে খাওয়াতে হবে।

উপকরণঃ
।।।—————-।।।
২-৩ ইঞ্চি মাপের কাটা খড় ১ কেজি, চিটাগুড় ২২০ গ্রাম, ইউরিয়া ৩০ গ্রাম ও পানি ৬০০ গ্রাম।

এবারে পানিতে ইউরিয়া গুলে তাতে চিটাগুড় দিয়ে খড়ের সাথে মিশিয়ে সরাসরি ছাগলকে দিতে হবে।

খাসীর ক্ষেত্রে তিন-চার মাস বয়সে দুধ ছাড়ানোর পর নিয়মিত সঠিকভাবে এই প্রক্রিয়াজাত খাদ্য খাওয়ালে দৈনিক ৬০ গ্রাম করে দৈহিক ওজন বাড়ে ও এক বছরের মধ্যে ১৮-২২ কেজি ওজন প্রাপ্ত হয়ে থাকে।

খাসীকে দৈহিক ওজনের উপর ভিত্তি করে মোট ওজনের ৭% পর্যন্ত পাতা বা ঘাস জাতীয় খাদ্য দানাদার খাদ্যের মিশ্রণ

(চাল ভাঙ্গা ৪০%, কুড়া ৫০%, ডালের ভূষি ৫৫, লবণ ৩% এবং ঝিনুকের গুড়া ২%) ১০০ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ গ্রাম ও ভাতের মাড় ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত খেতে দেয়া যেতে পারে।

খাসীর ওজন ২০ কেজির বেশি হয়ে গেলে এদের দেহে চর্বির পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই এ সময়েই এদেরকে বাজারজাত করা উচিত।

ছাগল খামারের খাদ্য খরচ মোট খরচের ৬০-৭০% হওয়া আবশ্যক। বাণিজ্যিক খামারের লাভ-লোকসান তাই খাদ্য ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভরশীল।

 

অন্যান্য ব্যবস্থাপনাঃ
।।।———————–।।।
সঠিক অনুপাতে (১০ টি ছাগীর জন্য ১টি পাঠাঁ) ছাগী ও পাঠাঁ পালন করতে হবে।

পাঠাঁ এবং ছাগীকে কখনও একত্রে খাদ্য খেতে ও মাঠে চরানো যাবে না, কারণ পাঠাঁ ছাগীকে খাদ্য খেতে অসুবিধার সৃষ্টি করে এবং অনেক সময় মারামারি করে ক্ষতের সৃষ্টি করে থাকে।

প্রজননক্ষম পাঠাঁ ছাগীকে নিয়মিত (বছরে ৫-৬ বার) ০.৫% মেলাথিয়ন দ্রবণে চুবিয়ে বহিঃপরজীবী থেকে মুক্ত রাখতে হবে।

বাচ্চার ক্ষেত্রে যাতে উক্ত দ্রবণ নাকে বা কানে যেন প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

(গর্ভের ১ম মাসে ১-১.৫ মিলি ভিটামিন এ.ডি.ই এবং গর্ভের শেষ দুই সপ্তাহে ১-১.৫ মিলি ৪৮ ঘন্টা পরপর ইনজেকশন দিতে হবে)।

প্রসবের লক্ষণ দেখা দিলে ছাগীর পিছনের অংশ ও ওলান পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট এর ০.৫-১% দ্রবণ দিয়ে ধুয়ে মুছে দিতে হবে।

বাচ্চা প্রসবের পর জীবাণুমুক্ত সার্জিক্যাল চাকু বা ব্লেড দ্বারা নাভি ২-৩ সেঃমিঃ রেখে বাকি অংশ কেটে দিতে হবে।

(এ সময় ছাগীর জরায়ুতে যাতে ইনফেকশন না হয় সেজন্য পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গনেট দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে এবং এরপর ক্যাপলেট (মাত্রাঃ১ ক্যাপলেট/১০-২০ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য) অথবা বোলাস (মাত্রাঃ ১-২ বোলাস) জরায়ুতে দিতে হবে)।

প্রসবের ২৪ ঘন্টা পরও ফুল বা প্লাসেন্টা না পড়লে অক্সিটোসিন (মাত্রাঃ ১-২ মিলি/ ১০ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য) ইনজেকশন দিতে হবে।

বাচ্চার বয়স যখন ৩-৫ সপ্তাহ তখন শিং ওঠা বন্ধ করা উচিত। বাচ্চা বয়স ২-৪ সপ্তাহ হলে তাকে খাসী করানো উচিত।
খাসী করতে হলে টেবিল বা এ জাতীয় উচু জায়গায় রেখে পিছনের পা দুটো টেনে সামনে নিয়ে আসতে হবে।

এরপর অন্ডকোষকে ৩% টিংচার দ্রবণ দিয়ে ভাল করে মুছে দিতে হবে। অন্ডকাষকে চামড়ার বিপরীতে চেপে ধরে চামড়ার নিচের দিকে একটি মাত্র পোচে কেটে অন্ডকোষ দুইটি বের করে রগ (Spermatic cord) কেটে দিতে হবে।

এরপর অন্ডকোষ থলিকে টিংচার অব আয়োডিন দ্বারা পরিষ্কার করে ক্ষতস্থানে পাউডার লাগিয়ে দিতে হবে।

বাজারজাত করার প্রকৃত সময়ঃ
।।।————————————।।।
এ প্রকল্পের সফলতা নির্ভর করে পশুটির যর্থাথ ও উপযুক্ত দামের উপর।

কাজেই বিক্রির জন্য যে বাজারে তুলনামূলকভাবে বেশি মূল্য পওয়া যাবে সেখানে ছাগল নেয়া যেতে পারে।

তবে মূল্য বেশি হবে এই ধারনায় ছাগলদেরকে দীর্ঘ পথ পায়ে হাঁটিয়ে বা গাড়িতে করে পরিবহন করা যুক্তিযুক্ত নয়।

অস্বাস্থ্যকর প্রতিকূল পরিবেশে এধরনের ভ্রমণের ফলে ছাগলের ধকলজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়া অত্যন্ত স্বাভাবিক এবং এর ফলে রোগাক্রান্ত হলে খামারীর প্রভৃতি ক্ষতি হতে পারে।

এজন্য বাজারজাত করণের প্রভূত ক্ষেত্রে কোনো ঝুকিপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা ঠিক হবে না।

এ ক্ষেত্রে খামারীর নিজেরই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত।

সংগৃহীত
তথ্য ইন্টারনেট

ছাগল পালন পদ্ধতি
————————-
ছাগলের খাবার চাহিদা নির্ভর করে কতগুলো বিষয়ের উপর
১. জন্ম থেকে মায়ের দুধ ছাড়া পর্যন্ত
২. সাবলম্বী বা দুধ ছাড়ার পর থেকে সম্পূর্ণ ঘাস ও দানাদার খাওয়া শেখা
৩. বাড়ন্ত সময় বা সাবলম্বী থেকে পূর্ণ বয়স্ক
৪. প্রজনন
৫. গর্ভবতী অবস্থা প্রথম দিকে
৬. গর্ভবতী অবস্থা শেষ ৫০ দিন
৭. দুগ্ধবতি
৮. dry period বা দুধ বন্ধ হওয়ার পর
৯. মাংস উৎপাদন

১. জন্ম থেকে মায়ের দুধ ছাড়া পর্যন্ত বা সাবলম্বী হওয়া

প্রথম ৩ দিন মায়ের শাল দুধ দিতে হবে পরিমান ৩৫০ মিলি দিনে ৩ বার

৪ দিন থেকে ১৪ দিন মায়ের দুধ অথবা মিল্ক রিপ্লেসার ৩৫০মিলি দিনে ৩ বার

১৫ থেকে ৩০ দিন সমপরিমান দুধের সাথে ক্রিপ ফিড এবং গাছের পাতা ( কাটার একদিন পর যাতে একটু শুকনা হয় ) সামান্য পরিমান
৩১ দিন থেকে ৬০ দিন ৪০০ মিলি দুধ ২ বার সাথে ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম ক্রিপ ফিড সাথে পর্যাপ্ত একদিনের শুকনা ঘাস ৫০% ও পাতা ৫০%

৬১ থেকে ৯০ দিন ২০০ মিলি দুধ ২ বার সাথে ২০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম ক্রিপ ফিড সাথে পর্যাপ্ত একদিনের শুকনা ঘাস ৫০% ও পাতা ৫০%
(ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল ছোট তাই ৩৫০ মিলি এর জায়গায় ২০০ মিলি যথেষ্ট)

ক্রিপ ফিড ফর্মুলা :
১. ভুট্টা ভাঙা ৫০%
২. সয়াবিন খৈল ৪০%
৩. চিটা গুড় ৪%
৪. লবন ১%
৫. চুনাপাথর ৩%
৬. চিলেটেড মিনারেল মিক্স ২% ( চিলেটেড ব্যবহার করা উত্তম )
Percent TDN 69.7
Percent CP 19.3%
Percent Ca 1.754%
Percent P 0.611%
Ca:P ratio 2:871
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখবেন ছাগলের বাচ্চা দুধ খাওয়া ছেড়ে দেয়ার পর স্বাস্থ ভেঙে যায় এই ভেঙে যাওয়া রোধ করতে ক্রিপ ফিড ফর্মুলা।

দুধের পাশাপাশি ১৫ দিন বয়স থেকে দিলে আস্তে আস্তে অভস্থ হয় যাবে।

ছাগলের বাচ্চার মূলত প্রথম ৩ মাস খুব দ্রুত ওজন বাড়ে তাই এই সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

বাচ্চার একটা সময় প্রজন্ত দুধ তার ওজন বৃদ্ধিতে কাজে লাগে তারপর বাড়তি খাবার ছাড়া সম্ভব না।

মূলত ২ সপ্তাহ থেকে ৬ সপ্তাহ ছাগীর দুধ উৎপাদন সর্বোচ্চ হয় তাই ১৫ দিন থেকে ক্রিপ ফিড ফর্মুলা দিলে বাচ্চা মোটামুটি ১ মাস পরথেকে ভালো ভাবে তা গ্রহণ করতে পারে ফলে মায়ের দুধ কমে গেলেও স্বাস্থ হানি ঘটেনা।

এইখানে যে ফর্মুলা দেয়া হলো তা দেশি ক্রস বা যমুনাপারি, বিটাল জাতের জন্য যাদের প্রতিদিন ওজন বৃদ্ধি পায় ১০০ গ্রাম।

বোয়ার বা অন্যান জাট যেগুলোর ওজন ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম বাড়ে তাদের CP ক্রুড প্রোটিন হতে হবে ২৩% TDN টোটাল ডিজেস্টিভ নিউট্রেন্ট ৮৯%

২. বাড়ন্ত সময় বা সাবলম্বী থেকে পূর্ণ বয়স্ক

১. ভুট্টা ভাঙা ৪৭%
২. সয়াবিন খৈল ৩০%
৩. চিটা গুড় ৭%
৪. গমের ভুষি ১০%
৪. লবন ১%
৫. চুনাপাথর ৩%
৬. চিলেটেড মিনারেল মিক্স ২% ( চিলেটেড ব্যবহার করা উত্তম )
Percent TDN 67.8%
Percent CP 16.9%
Percent Ca 2.075%
Percent P 5.443%
Ca:P ratio 0.381
প্রতিদিন ১০০ থেকে ৫০০ গ্রাম নির্ভর করে সাইজও জাতের উপর।

সাথে ঘাস ৫০% এবং লিগুম বা পাতা ৫০% পর্যাপ্ত পরিমান ( ঘাস ও লিগুম এ প্রচুর ক্যালসিয়াম আছে যা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস অনুপাত ঠিক রাখবে ) বেশি দানাদার দিলে অবশ্যই খাবারে এমোনিয়াম ক্লোরাইড ব্যবহার করতে হবে।

পরিমান হবে ১% মোট দানাদার খাবারের।

এর ফলে পাঠা বা খাসির প্রস্রাব রাস্তা পাথর হবেনা।

৩. প্রজনন
এই সময় ছাগীর বডি স্কোর ৩.৫ থেকে ৪ প্রজন্ত রাখা উচিত এর বেশি হলে বা কম হলে ছাগী সময় মতো ডাকে আসবে না।

তাই বাচ্চা হওয়ার পরথেকে বা নতুন ছাগীর ক্ষেত্রে বাড়তি কিছু দানাদার খাবার দিয়ে বা দানাদার খাবার বন্ধ করে বডি স্কোর ৩.৫ থেকে ৪ মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।

৪. গর্ভবতী অবস্থা প্রথম দিকে
এই সময় খুব একটা বাড়তি খাবারএর দরকার হয়না শুধু ঘাস খাওয়ালে চলে।

এই সময় প্রোটিন দরকার হয় ৫.৭% এবং TDN ৫৩.৭% যা যেকোনো ঘাস থেকে পাওয়া যায়।

৫. গর্ভবতী অবস্থা শেষ ৫০ দিন

এই সময় ভ্রূণ দ্রুত বাড়া শুরু করে তাই এই সময় বাড়তি দানাদার খাবার দেয়া উচিত।

শুরুতে ১০০ গ্রাম আস্তে আস্তে পরিমান বাড়িয়ে শেষ ৩০ দিন ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম প্রজন্ত দেয়া যেতে পারে।

নির্ভর করে জাত, ছাগীর শারীরিক অবস্থা ইত্যাদির উপর সাথে অবশ্যই ঘাস ও লিগুম বা পাতা যত খেতে পারে। এর ফলে বাচ্চার জন্মের সময় ওজন বেশি হয়।

আমাদের ফার্ম এ এই ফর্মুলা ব্যবহার করে প্রতিটি বাচ্চার জন্ম ওজন ২ কেজির উপর ছিল এবং সর্বোচ্চ ওজন ৪.২ কেজি পেয়েছি।

যার ফলে বাচ্চার মৃত্যুর হার ছিল মাত্র ১%

১. ভুট্টা ভাঙা ৫০%
২. সয়াবিন খৈল ৩৭%
৩. চিটা গুড় ৬%
৪. লবন ১%
৫. চুনাপাথর ৩%
৬. চিলেটেড মিনারেল মিক্স ২%

Pounds in batch 100.0
Percent TDN 69.8%
Percent CP 19.8%
Percent Ca 1.027%
Percent P 0.979%
Ca:P ratio 1.049

৬. দুগ্ধবতি ছাগী
বাচ্চা হওয়ার দিন থেকে মূলত ৩ মাস প্রজন্ত দুগ্ধ কালীন সময়।

যেহেতু বাচ্চা হওয়ার আগে থেকে পর্যাপ্ত দানাদার খাবার দেয়া হয়েছে তাই বাচ্চা হওয়ার পর ছাগী ভালো দুধ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়ে থাকে। গর্ভবতী কালীন সময় যে দানাদার খাবার দেয়া হয়েছে তাই চলবে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত তারপর আস্তে আস্তে দানাদার খাবার বন্ধ করতে হবে এবং ১০ সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে হবে।

কারণ ছাগী কে কোনো ভাবেই ১০ সপ্তাহের পর দুধ উৎপাদন করতে দেয়া যাবেনা।

এই পদ্ধতি শুধু মাত্র মাংস উৎপাদন করি জাতের জন্য যারা দুধ উৎপাদন জাত নিয়ে কাজ করেন তাদের জন্য নয়।

৭. Dry period বা দুধ বন্ধ হওয়ার পর
এই সময় ছাগী মূলত গাভিন এর প্রথম পর্যায় তাই কোনো বাড়তি খাবার লাগবেনা শুধু ঘাস দিলে চলবে।

ছাগীকে মূলত ৪ মাস দানাদার খাবার দিতে হবে প্রতি ৮ মাসে।

আর পাঠাকে শুধু প্রজনন কালীন সময় দানাদার খাবার দিতে হবে (২ থেকে ৩ মাস) অন্যান্য সময় শুধু ঘাস দিলে চলবে।

মনে রাখবেন পাঠা যেন বডি স্কোর ৪ এর উপর না উঠে তাহলে ক্রস করাতে সমেস্যা হবে।

খাসির ক্ষেত্রে
নিম্ন লিখিত ফর্মুলা ব্যবহার করতে পারেন। মনে রাখবেন দানাদার খাবার পরিমান আস্তে আস্তে বাড়ান এবং ঘাস এর পরিমান আস্তে আস্তে কমান। দানাদার খাবার ছাগলের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে এবং বেশি দানাদার দিলে অবশ্যই খাবারে এমোনিয়াম ক্লোরাইড ব্যবহার করতে হবে। পরিমান হবে ১% মোট দানাদার খাবারের। এর ফলে পাঠা বা খাসির প্রস্রাব রাস্তা পাথর হবেনা।

১. ভুট্টা ভাঙা ৪৭%
২. সয়াবিন খৈল ৩০%
৩. চিটা গুড় ৭%
৪. গমের ভুষি ১০%
৪. লবন ১%
৫. চুনাপাথর ৩%
৬. চিলেটেড মিনারেল মিক্স ২% ( চিলেটেড ব্যবহার করা উত্তম )
Percent TDN 67.8%
Percent CP 16.9%
Percent Ca 2.075%
Percent P 5.443%
Ca:P ratio 0.381

৫টি ছাগী পালনের লাভ লস

১টির দাম ২৫০০ তাহলে ৫টির দাম ২৫০০*৫ঃ১২৫০০টাকা

খরচঃছাগীর বাচ্চা দেয়ার ১মাস আগে আবং বাচ্চার দেয়াএ পরে ১ মাস দানাদার খাবার দিতে হবে।

১টি ছাগীর দিনে দানাদার খাবার লাগবে ৩০০গ্রাম, ১বছরে লাগবে (৩০+৩০)*২*৩০০গ্রামঃ৩৬কেজি।

১কেজি খাবারের দাম ২০টাকা হলে ৩৬*২০ঃ৭২০টাকা

৫টি ছাগীর জন্য লাগবে ৭২০*৫ঃ১৩৬০০

আয় ঃ৬মাস পর ৫টি ছাগী ২টি করে ১০টি বাচ্চা দিবে,১৫মাস পর ১০টি বাচ্চা  বিক্রি করা যাবে ।প্রতিটির দাম ২০০০ টাকা করে ১০টির দাম ঃ২০০০০টাকা।

লাভঃ২০০০০-১৩৬০০ঃ১৬৪০০

এই লাভ ৫টি ছাগীর দাম বাদ দিলে মোট লাভ থাকে ১৬৪০০-১২৫০০ঃ৩৯০০টাকা।

দানাদার খাবারের খরচ টা যদি কমানো যায় তাহলে লাভ বেশি হবে।

নিজের বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত ঘাস এবং দানাদার খাবার থাকে তাহলে লাভ হবে।

সব কিছু কিনে খাওয়ালে লাভ কম হয়।

যদি পিপিয়ার বা অন্য কোন রোগের আক্রমণ ঘটে তাহলে সব মারা ও যেতে পারে ফলে সব লস হবার সম্বাবনা থাকে তাই লাস লস হিসেব করে ফার্মে আসা উচিত।

Note : এইখানে যা কিছু দিয়া আছে তা ইন্টারনেট থেকে নেয়া।

বিভিন্ন পেজ এবং বিভিন্ন সফল খামারিদের তথ্যের উপর ভিত্তি করে নেয়া যা আমার খামারে প্রয়োগ করে ভালো ফলাফল পেয়েছি।

এটা আপনার খামারে প্রয়োগ করার আগে চাইলে কোনো এক্সপার্ট কে দেখিয়ে নিতে পারেন।

প্রতিটি খামার ব্যাবস্থাপনা আলাদা আলাদা তাই সকল ক্ষেত্রে যে এই ফর্মুলা কাজ করবে এমন কোনো কথা নাই।

আপনাদের জানার জন্য আমার ফার্মের ব্যবহৃত পদ্ধতি শেয়ার করলাম।
Collected

Please follow and like us:

About admin

Check Also

বগুড়ার শেরপুরে এক ছাগল থেকে সফল খামারি মজিদা

বগুড়ার শেরপুরে এক ছাগল থেকে সফল খামারি মজিদা দিবস টিভি নিউজ ডেক্স: সংসার বুঝে উঠার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »