ঘোড়া সিরিজ পর্বঃ০১
ঘোড়া হাজার হাজার বছর মানুষের সঙ্গী হয়ে আছে। ঘোড়াকে সম্ভ্রান্ত জীব বলা হয়ে থাকে। ঘোড়া মানুষের সবচেয়ে ভালো বন্ধু। যে কোনো জায়গায় পৌঁছে দিতে ঘোড়া মানুষকে সহযোগিতা করে আসছে। এমনকি যুদ্ধক্ষেত্রেও এরা সাহায্য করে। এই শতাব্দীতেও ঘোড়ার কদর কমে যায়নি।
* জন্মের একঘণ্টা পরই ঘোড়া দৌড়তে পারে।
* কোনো গন্ধ ভালো না খারাপ তা বোঝার জন্য ঘোড়া তার নাককে বর্ধিত করার একটি বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে যাকে ফ্লিমেন বলে। এটি করার সময় ঘোড়াকে দেখে মনে হয় হাসছে।
* একসময় মনে করা হতো ঘোড়া বর্ণান্ধ। কিন্তু আসলে এটি ঠিক নয়। তারা রক্তবর্ণ বা বেগুনি বর্ণের চেয়ে হলুদ বা সবুজ রঙ ভালো দেখে।
* ঘোড়ার দাঁত দেখেই স্ত্রী ও পুরুষ শনাক্ত করা যায়। পুরুষ ঘোড়ার ৪০টি দাঁত থাকে এবং স্ত্রী ঘোড়ার থাকে ৩৬টি।
* মানুষের চুল ও নখ যে ধরনের প্রোটিন দিয়ে গঠিত ঘোড়ার খুরও একই প্রোটিন দ্বারা গঠিত।
* যুক্তরাজ্যের লর্ড জর্জ বেন্টিঙ্ক নামের এক ব্যক্তি তার ৬টি ঘোড়া এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রথম ‘দ্য হর্স ট্রেইলার’ বা ‘হর্স বক্স’ উদ্ভাবন করেন।
* ঘোড়া দাঁড়িয়ে ও শুয়ে দু’ভাবেই ঘুমাতে পারে।
* চোখগুলো মাথার দু’পাশে অবস্থিত বলে ঘোড়া ৩৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত দেখতে পায়।
* সত্যিকারের বুনো ঘোড়ার প্রজাতি প্রিজওয়ালস্কির অস্তিত্ব এখনও আছে। এদের মঙ্গোলিয়াতে পাওয়া যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বন্য ঘোড়া পাওয়া যায় যেমন- মাসটাং পাওয়া যায় উত্তর আমেরিকায়।
* ঘোড়া মেজাজ প্রকাশের জন্য নাক, কান ও চোখ ব্যবহার করে। মুখের অভিব্যক্তির মাধ্যমে এরা অনুভূতি প্রকাশ করে।
* অনেকগুলো ঘোড়া একসঙ্গে কখনই ঘুমায় না। অন্তত একজন সজাগ থাকে সঙ্গীদের সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য।
* একটি পূর্ণবয়স্ক ঘোড়ার মস্তিষ্কের ওজন সাধারণত ২২ আউন্স হয়।
* বিভিন্ন সংস্কৃতিতে ঘোড়ার সম্মানজনক অবস্থান আছে। যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ কীর্তিকলাপের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে ঘোড়া, বিশেষ করে চীনে।
* ঘোড়া বমি করতে পারে না। কারণ তাদের খাদ্যনালীর স্ফিংক্টার অন্য যে কোনো প্রাণীর চেয়ে বেশি শক্তিশালী থাকে।
* গৃহপালিত ঘোড়ার একটি প্রজাতিই আছে। কিন্তু ৪০০ বিভিন্ন প্রজাতির ঘোড়া আছে যারা গাড়ি টানা থেকে শুরু করে রেসিং পর্যন্ত সব কাজে লাগে।
* ঘোড়া রাতে মানুষের চেয়ে ভালো দেখে। তবে আলো থেকে অন্ধকারে বা অন্ধকার থেকে আলোতে মানিয়ে নিতে মানুষের চেয়ে ঘোড়ার বেশি সময় লাগে।
* ঘোড়া মিষ্টি স্বাদ পছন্দ করে এবং টক বা তিক্তস্বাদ প্রত্যাখ্যান করে।
* বন্য ঘোড়ারা সাধারণত ৩ থেকে ২০টির দল করে থাকে। এ দলের নেতৃত্ব দেয় একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ঘোড়া, যাকে স্ট্যালিয়ন বলে। পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী ঘোড়াকে মেয়ার বলা হয়। তরুণ পুরুষ ঘোড়াকে বলা হয় কোল্ট এবং তরুণ স্ত্রী ঘোড়াকে ফিলি।
* ঘোড়া একদিনে প্রায় ১০ গ্যালন লালা উৎপাদন করে।
* ঘোড়ার খুরের নিচের দিকে একটি ত্রিকোণাকার অংশ থাকে যাকে ফ্রগ বলে। এটি রক্ত পাম্প করতে সাহায্য করে।
* ঘোড়ার উচ্চতা মাপার একককে হ্যান্ডস বলে। এক হ্যান্ডস সমান ৪ ইঞ্চি। পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ ঘোড়ার দৈর্ঘ্য ছিল ২১.২ হ্যান্ডস (৭ ফুট ২ ইঞ্চি)।
* ঘোড়ার হৃদপিণ্ডের ওজন ৯ থেকে ১০ পাউন্ড।
* বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, ঘোড়ার প্রথম পূর্বপুরুষ ৫০ মিলিয়ন বছর পূর্বে বেঁচে ছিল। এই প্রাগৈতিহাসিক ঘোড়াকে ইয়োহিপ্পাস বলে। এদের সামনের পায়ে ৪টি করে প্যাড যুক্ত আঙুল ছিল এবং পেছনের পায়ে ছিল তিনটি প্যাড যুক্ত আঙুল।
* ঘোড়া দৈনিক ২৫ গ্যালন পানি পান করতে পারে। গরমের সময় আরও বেশি পান করে।
* ঘোড়ার খুর পুনরায় সম্পূর্ণরূপে জন্মাতে ৯ থেকে ১২ মাস সময় লাগে।
* ঘোড়ার প্রতিটা কানে ১৬টি মাংসপেশি থাকে, যার ফলে তারা কানকে ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘোরাতে পারে।
* যে ঘোড়ার লেজে মালিক লাল রিবন বেঁধে দেন, বুঝতে হবে সেই ঘোড়া লাথি মারে।
* ঘোড়া সামাজিক প্রাণী তাই একা থাকলে নিঃসঙ্গতা অনুভব করে এবং সঙ্গীর মুত্যুতে শোকগ্রস্ত হয়।
* এক গবেষণায় জানা গেছে, ঘোড়া বুদ্ধিমান প্রাণী। বিশেষ করে স্মৃতিশক্তির ক্ষেত্রে। ঘোড়ার সঙ্গে সদয় আচরণ করলে ঘোড়া তা আজীবন মনে রাখে এবং তাকে বন্ধু ভাবে। এরা স্থান চিহ্নিত করতে পারে।
* অ্যারাবিয়ান ঘোড়াকেই সবচেয়ে সুন্দর ঘোড়া বলা হয়।
রেফারেন্স :যুগান্তর