লিটার অর্থ মুরগির বিছানা
লিটার হিসেবে নিন্ম লিখিত জিনিস গুলি ব্যবহৃত হয়ঃ
ধানের তুষ.
করাতের গুড়া
ছোট ছোট টুকরা করা ধান বা গমের খড়
ভুট্রার খোসা চূর্ণ
বাদামের খোসা চূর্ণ
আখের ছোলা
বালি
চট
কন্টোল হাইজের অটো সিস্টেমের লিটারঃ
লিটার সরাসরি বাহিরে চলে যায় কিন্তু ব্যয়বহুল
যারা মাচায় পালে তারা বেশির ভাগ চট ব্যবহার করে.
লিটারের মধ্যে তুষ বেশি ভাল কিন্তু খামারীর অভিযোগ এতে লিটার বেশি ভেজা থাকে।
ফ্লোর পাকা হলেও লিটার ভেজা থাকে তাই অনেক খামারী ফ্লোর কাচা রাখতে চায় যদিও কাঁচা ফ্লোর ভাল ভাবে পরিস্কার করা যায় না।
ভাল লিটারের গুণাগুণ
ওজনে হালকা ,ছোট থেকে মাঝারি,নরম ও আরামদায়ক হবে।
দ্রুত জলীয়তা শোষণ করার ক্ষমতা থাকতে হবে কিন্তু আবহাওয়ার আর্দ্রতা কম শোষণ করবে।
দ্রুত শুকানোর ক্ষমতা থাকতে হবে এবং তাপ পরিবহন ক্ষমতা কম হবে।
সুলভ ও সহজলভ্য এবং সার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
২০-২৫% আর্দ্রতা থাকবে তা নাহলে লিটার মুরগির শরীর থেকে জলীয় অংশ শুষে নেবে এবং বাচ্চা মুরগির পানিশূণ্যতা জনিত অসুস্থায় ভুগতে পারে।
লিটার বেশি শুকনা বা বেশি ভেজা থাকবে না ,শুকনা হলে নাকে গিয়ে ঠান্ডা লাগবে আর ভেজা থাকলে আমাশয় এবং এমোনিয়া গ্যাস হবে।
লিটার স্থা্পন
লিটার পদ্ধতিতে মুরগি পালন করতে হলে,মেঝে শুকনা হতে হবে ।লিটার শুকনা হতে হবে।
ব্রুডিং এর সময় চিকব্রুস্ট ব্যব হার করলে বারবার পরিবর্তন করতে হয় না.৫-৭দিন পর সরালেই হয়,
পেপার দিলে এক বারে ১০-১২টি এক সাথে দিলে পরে প্রয়োজন অনুযায়ী উপর থেকে২টি করে সরালেই হয়।
গরমকালে ১-২ ইঞ্চি এবং শীতকালে ৩-৪ ইঞ্চি রাখতে হবে।
ডিপ লিটার হলে ৪-৬ ইঞ্চি দিতে হবে।
বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্রয়লার লিটারে পালন করা হয়,কিছু পালন করা হয় মাচায়
মাচায় ১০ দিন পালার পর লিটার থাকেনা বলে আমাশয় কম হয়,গ্যাস হয়না ফলে গাম্বোরু ও রানিক্ষেত কম হয়,ওষধের ব্যয় কম হয় ,লাভ বেশি হয়।১০দিন লিটারে পালা হয়।
লেয়ার খাচায় বেশি পালন করা হয়, কিছু আছে মাচায় যার অধিকাংশ সরুপকাঠি,পিরোজপুর জেলায়।মাচায় পালন করলে লিটার তেমন লাগেনা,বেশির ভাগ চট ব্যবহার করে।
মাচা ২ ধরনের পানির উপর মাচা এবং মাটির উপর মাচা
পানির উপর মাচায় লাভ আরো বেশি কারণ নিচে অনেকে মাছ পালন করে আর উপরে মুরগি পালে ফলে ২ দিকে লাভ।
এক সময় লিটারে লেয়ার র্বেশি পালন করা হত,এখন অল্প কিছু দেখা যায়।।পৃথিবীর অধিকাংশ উন্নত দেশে খাচায় লেয়ার পালন করা নিষিদ্ধ।
সেসব দেশে সেমি ইনসেন্টিভ সিস্টেম।
লিটারের সুবিধাঃ.
লিটারে পালন করলে খাচার খরচ কমে যায়.
লিটার নিয়ে সমস্যা হয় না বরং তা বিক্রি করে টাকা আয় করা যায়
গন্ধ থাকেনা
একই সেডে ব্রুডিং এবং ডিম পাড়ার জন্য পালা যায় যদিও গ্যাপ দিয়ে নিতে হয়।
অসুবিধাঃ
কর্মচারী বেশি লাগে
জায়গা বেশি লাগে প্রতি মুরগির জন্য ২ফুট
লিটার ভেজা এবং আর্দ্রতা বেশি থাকলে বিভিন্ন রোগ হয়।
ডিম ভাংগে বেশি
খাচার সুবিধাঃ
অল্প জায়গায় বেশি মানে ডাবল পালা যায়।
কর্মচারী কম লাগে।
লিটার জনিত রোগ হয়না।
৫% ডিম বেশি পাড়ে।
খাচার অসুবিধা;
খরচ বেশি
লিটার রাখা নিয়ে সমস্যা এবং লিটারের জন্য আলাদা জায়গা লাগে।
গন্ধ হয়।
ইউরোপের অনেক দেশে খাচায় মুরগি পালা নিষিদ্ধ ।
বালিঃ
সুবিধাঃ
দাম কম কাঠের গুড়ার তুলনায় অর্ধেক
গ্যাস হয় না।
মুরগির আমাশয় কম হয় ,অন্যান্য রোগ কম হয়
অসুবিধাঃ
কিছু কিছু মুরগি লিটার খেয়ে থাকে
কেউ কেউ বিক্রির সময় ভালি থাকে বলে অভিযোগ করে তবে সবাই না।
লিটার পরিচর্যা
ব্রয়লারের ক্ষেত্রে দিনে ২ বার আর লেয়ারের ক্ষেত্রে দিনে ১ বার লিটার উলটে পালটে দিতে হয়।
লিটার হাতে নিয়ে চাপ দিলে যদি জমাট না বাধে বা ঝুর ঝুর করে তাহলে লিটার ভাল আছে।হাতের মুঠো ছেড়ে দিলে লিটারে ফাটল দেখা দেবে।
লিটার হাতে নিয়ে চাপ দিইয়ে ১ফুট উপর থেকে ফেলে দিতে হবে যদি ভেংগে যায় তাহলে ভাল।যদি না ভাংগে তাহলে লিটার বদলাতে হবে।
বাতাসে উড়ে বা ঝুর ঝুরা লিটার ভএল না এগুলো নাকে ,চোখে গিয়ে সমস্যা করে।
লিটার যদি ভেজা হয় তাহলে চুন দিতে হবে এতে এসিডিটি কমে যাবে এল্কালাইন হবে ফলে অনেক জীবাণু মারা যাবে.১০০০ বর্গফুটের জন্য ১-২ বস্তা লাগে তা লিটারের অবস্থার উপর নির্ভর করবে।
লিটারে পানি পড়লে তা বদলাতে হবে এবং সম পরিমান শুকনা লিটার দিতে হবে।
ডিম পাড়া মুরগির ক্ষেত্রে ৮ সপ্তাহের পর প্রতি সপ্তাহে ১০০ মুরগির জন্য ২২৫ গ্রাম পাথরের গুড়া বা কাকর লিটারের উপর ছিটিয়ে দিতে হবে।
১ ব্যাচ ব্রয়লার পালতে ১-২ বার লিটার পাল্টাতে হতে পারে কিন্তু সব সরানো যাবে না ২৫-৫০% লিটার সরানো যেতে পারে এবং নতুন লিটার পুরান লিটারের সাথে মিক্স করে পরে সব জায়গায় ছড়িয়ে দিতে হবে।সব লিটার পরিবর্তন করলে আমাশয় হবে কারণ পুরান লিটারে যে কক্সি ছিল সেগুলো মুরগির জন্য রেজিস্ট্যান্ট ছিল কিন্তু নতুন লিটারের সাথে নতুন কক্সি আসায় নতুন করে আমাশয় হবে।
।নতুন জায়গায় নতুন লিটার দিলে মুরগি আঁচড়াইয়ে ফেলে নাকে/চীখে ধুলা যায় এতে ঠান্ডা লাগে।
দুপুরে লিটার উলটানো ঠিক না এতে গরম বেড়ে যায়
আবার খাবার দেয়ার পর ও লিটার উল্টালে খাবার ও পানিতে ময়লা হয় তাই খাবার ও পানি দেয়ার পর লিটার উল্টাতে হবে।
লিটারের অবস্থা পরিবর্তনের কারণ
বর্ষাকালে ঘরের বাহিরের তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা বেড়ে যাবার কারণে লিটার খারাপ হয়।
ঘরে বেশি মুরগি পালন করলে এবং মুরগির বয়স বেশি হলে।
ঘরে বাতাস কম প্রবেশ করলে।
লিটারের মধ্যে পানি এবং খাবার ছিটকে পড়লে।
মুরগি বিভিন্ন কারণে যেমন আমাশয় ,মাইকোটক্সিন বা ধকল বা অন্য কোন কারণে পানি বেশি খেলে পায়খানার সংগে পানি বেশি আসে ফলে লিটার নষ্ট হ য়,
খাবার পাত্র ও পানির পাত্র সরাসরি লিটারের উপর স্থাপন করলে।লোহার স্ট্যান্ডের উপর পানির ও খাবারে পাত্র রাখতে হবে।
লিটার পরিশুদ্ধকরণ
তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা কমাতে হবে।
বাতাসের প্রবাহ বাড়াতে হবে।
লিটারের পি এইচ যদি ৭ এর নিচে রাখা যায় তাহলে এমোনিয়া কম তৈরি হয়।
এজন্য ফসফরিক এসিড,সুপার ফসফেট বা চুন ,সোডিয়াম বাই সালফেট,ফেরাস সালফেট,ক্যালসিয়াম ফসফেট বা চুন ব্যবহার করা হয়।
তবে এখন পারটেক্স পাওয়া যায় যা ব্যবহার করা হচ্ছে কিন্তু এতে চোখে সমস্যা দেখা দেয়।