খামারীদের কেমন পরামর্শ দেয়া উচিত,কোনটা উচিত না
এবং কিছু আলোচনা।
খামারীদের পরামর্শ দিতে গিয়ে যাতে সেটা অতিরঞ্জিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
নিচের কিছু উদাহরণ দেয়া হল।
১.বলা হয় ৩৩ বা ৫০টা বাচ্চার জন্য একটা খাবার পাত্র। এত গুলো পাত্র দিলে বাচ্চা ব্রুডার থেকে বের করে দিতে হবে কারণ একটা ব্রুডারে প্রায় ৫০০বাচ্চা থাকে।১১৩ বর্গফুটের জায়গায় প্রতি বাচ্চার জন্য ০.২৩বর্গফু জায়গা থাকে।তাই ইচ্ছে করলেই এত গুলো পাত্র সম্বব না।।তাই এটা কাল্পনিক চিন্তাভাবনা।বাস্তবে সম্বব না।
বেশি ভাল কিন্তু ভাল না।
২.১০০০মুরগিকে ৫-৭দিনের জন্য প্রেস্ক্রিপশনে যে মেডিসিন দেয়া হয়েছে তার খরচ প্রায় ১৫০০০-২০০০০টা।
এটা কোন ভাবেই ঠিক হতে পারেনা।
৩.ব্রুডিংএ প্রতি মুরগির জন্য ২ওয়াট হিসেব করে তাপ/বালব দেয়া।এটাও ঠিক না।
বালব কয়টা দিতে হবে তা নির্ভর করবে তাপমাত্রার উপর।(শীত এবং গরম এর উপর নির্ভর করবে)
৪.পর্দা হিসাবে পলিথিন/ত্রিপল দেয়া যাবে না,এতটুকু উপরে/নিচে দিতে হবে,এতদিন দিতে হবে,কাপড় বা চট ভাল।
এতটুকু খোলা রাখতে হবে।এসব সব ভুল।
সব কিছু নির্ভর করে বাচ্চার বয়স,তাপমাত্রা,লিটারের অবস্থা,মুরগির ঘনত্ব এসবের উপর।নির্দিস্ট করে বলার সুযোগ নাই।তাছাড়া প্রাপ্যতার উপরও নির্ভর করে।
যেমন চট ও চুষ অনেক জায়গায়ই পাওয়া যায় না।
তাছাড়া লিটার হিসাবে কি দিবো এটাও কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে।বালি,তুষ,কাঠের গুড়ি সবই অবস্থা অনুযায়ী ভাল বা খারাপ।
৫।ব্রুডিং ৫দিন করবেন,৭দিন,১০দিন,১৫দিন।
এভাবে বলা যায় না।নির্ভর করে পরিবেশের তাপমাত্রার উপর। বাচ্চার নরমাল একটা কালার আছে সেটার পরিবর্তনের আগ পর্যন্ত ব্রুডিং করতে হয়।
৬.ব্রয়লার এবং লেয়ার গ্রোয়ারকে কখনো টিয়ামোলিন গ্রুপের এন্টিবায়োটিক দেয়া যাবে না কারণ খাবারে এন্টিকক্সিডিয়াল(মনেন্সিন,নারাসিন,সেলিনোমাইসিন)দেয়া থাকে যা মুরগির পায়ে সমস্যা করে।
অনেক সময় বস্তার গায়ে লেখা থাকে আবার লেখা থাকলেও বুঝা যায় না তাই রিক্স না নেয়াই ভাল।
৭.ম্যাক্রোলয়েড গ্রুপ ও এনরোফক্সাসিলিন গ্রুপের সাথে পি এইচ দেয়া ঠিক না।
৮.কারণ ছাড়াই বা পানির পি এইচ না জেনে পি এইচ না দেয়াই ভাল।
নরমালী গরমে,স্টেস কন্ডিশনে,ঠোটকাটার পর এবং পানির পি এইচ বেশি থাকলে পি এইচ দেয়া হয়।পানিতে জীবাণুর লোড থাকলেও দেয়া হয়।
তাছাড়া অনেক সময় বলা হয় পানিতে ব্লিচিং বা ফিটকিরি দিয়ে পানি ব্যবহার করার জন্য প্রতিবার সব সময়. এটা কি কমার্শিয়াল ব্রয়লার/লেয়ার ফার্মে সম্বব?যদি কেউ দিতে পারে ভাল।
নিয়ম হল ভাল জায়গায় ফার্ম করা যেখানে পানিতে জীবানূর লোড কম থাকে।আগেই টেস্ট করে নেয়া যদি সম্বব হয়।
এই পরামর্শ আসলে কেউ মানেনা।
৯.ব্রয়লারকে ক্যালসিয়াম দেয়া যাবে না এটা বলা ঠিক না।নরমালী লাগেনা কিন্তু খাবারে ক্যালসিয়ামের কোয়ালিটি ভাল না হলে এবং সমস্যার কারণে মুরগির ঘাটতি থাকলে দেয়া যাবে যা ডাক্তার ঠিক করবে।
ক্যালসিয়ামে অনেক ভেজাল থাকে তাই ঘাটতি হতেও পারে।
১০.মাইক্রোনিড/ইরাইভেট/ফিরম্যাক প্লাস/মিরামিডকে একটা এন্টিবায়োটিক মনে করে এর সাথে আরো১-২টা এন্টিবায়োটিক দেয়া হচ্ছে। অথচ এসব গ্রুপের এন্টিবায়োটিকে ৩টি এন্টিবায়োটিক থাকে।
১১.অনেক রোগ/সমস্যায় এন্টিবায়োটিক লাগেনা যেমন আই বি এইচ,গাউট,মেটাবলিক ডিজিজ(ফ্যাটি লিভার).
তাছাড়া ভাইয়াল রোগে ১ম ৩দিন এন্টিবায়োটিক না দিলেও হয়।এসব ক্ষেত্রে যাতে অনর্থক এন্টিবায়োটিক না দেই।
১২.মুরগির রোগ ডায়াগ্নোসিস না করেই চিকিৎসা দেয়া হয়।যা ঠিক না।
১৩.টার্গেট নিয়ে মেডিসিন লেখা/দেয়া বন্ধ করতে হবে।
১৪.ক্ষমতার অপব্যবহার করে খামারিকে গিনিপিগ যাতে না বানাই।
খামারিকেও সস্তা/ফ্রি এর পিছনে দৌড়িয়ে নিজের ক্ষতি না করি।
কেউ কেউ আছে যারা সংখ্যায় হাতে গোনা,তারা চিকিৎসায় ফি নেয় খুবই সামান্য (সামান্য নেয় খামারিকে ভালবেসে না,অন্য কারণ আছে),ফার্মেও যায় না,মুরগিও তেমন কাটেনা,কাটলেও —?।.
সব খাতায় লিখে দেয় এভাবে বছরের পর বছর চলছে গাড়ি যাত্রাবাড়ি।খামারি উপস্থিত থাকুক বা না থাকুক লিখে যাবেই,রুটিন কাজ।ফার্মের অবস্থা জানারও দরকার হয় না।দোকানদার সেটা প্যাকেট করে দিচ্ছে খামারী নিয়ে যাচ্ছে।খামারী খুব খুশি। কিন্তু খামারী একবার ভেবে দেখেনা খামারীর কাছ থেকে সরাসরি হয়ত বেশি কিছু নিচ্ছে না কিন্তু বিভিন্ন কোম্পানীর টার্গেট পূরণ করার জন্য রেজিস্টার খাতায় মাসের পর এন্টিবায়োটিক /মেডিসিন লিখে যাচ্ছে আর ( ) পাচ্ছে আর সুদে আসলে আদায় করে নিচ্ছে।এমন কি অপ্রয়োজনীয় জিনিসও লিখছে।
খামারী সামনে গেলে বুঝে পিছনে গেলে বুঝে না।
আমাদের দেশে সবই সম্বব।কারন আমাদের খামারী সচেতন না।
নোটঃ সব দোষ খামারির না। অন্যদের ও আছে।
সব দোষ খামারীর না।
এ এম আর নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে সব দোষ কোয়াক,খামারী আর ডিলারকে দেয়া হচ্ছে। ডাক্তাররাও লোভে পড়ে কম যায় না।