ভিনেগার_বা_সিরকা ভিনেগার বা সিরকা হলো একটি রাসায়নিক তরল যা ৫-২০% এ্যসিটিক এসিড,পানি ও সামান্য পরিমান অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের সমন্নয়ে গঠিত। এটি মূলত ইথালনকে ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে ফারমেনটেশন করে বা গাঁজন প্রক্রিয়ায় প্রস্তত করা হয়।দৈনন্দিন রান্নায় এর ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে।এর ব্যবহার শুধু রান্নার স্বাদ বৃদ্ধি করে তাই নয় মানব স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও এটি অত্যান্ত কার্যকারী।তবে মানব স্বাস্থ্যের পাশাপাশি প্রাণী স্বাস্থ্যেও এটির গুরত্বপূর্ন উপকারী গুন বিদ্যমান।পোল্ট্রি রোগের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের উন্নতিতে এটির গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখড়নিচে এর উপকারিতার একটি ছোট্ট তালিকা দেয়া হলোঃ ১ভিনেগারের একটি গুরত্বপূর্ন গুন হলো এর অ্যন্টিমাইক্রোবিয়াল প্রভাব।যখন পানিতে এটি ব্যবহার করা হয় তখন এতে বিদ্যমান জৈব এসিড (এসিটিক এসিড) ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীর ভেদ করে ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে। ২। এছাড়া পানিতে এটি ব্যবহার করলে,এটি অন্ত্রের পিএইচ কমিয়ে দেয়।ফলে ই. কোলাই, সালমোনেলা, ক্লোসট্রেডিয়াম সহ ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া সেখানে বৃদ্ধি পেতে পারে না। ৩। ভিনেগার বা সিরকার অ্যন্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ঠ্য বিদ্যমান যা মুরগীর কোষকে ড্যামেজ হওয়া থেকে প্রতিহত করে। ৪। এছাড়া এটি রক্তে গ্লুকোজের (চিনি) পরিমান কমাতে সাহায্য করে।এটি কিছু কিছু এনজাইমকে নিষ্ক্রিয় করে দেয় ফলে সেগুলো শর্করাকে ভেঙ্গে গ্লুকোজ বা চিনিতে পরিনত করতে পারে না।ফ্যাটি লিভার সিনড্রোম,ওবিসিটি সহ বেশ কিছু সমস্যার ক্ষেত্রে এটি ব্যবহারে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। ৫। ভিনেগার ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা বা প্রতিরোধে গুরত্বপূর্ন কাজ করে।ভিনেগার লিউকোমিয়া সেল (শ্বেত রক্ত কণিকার ক্যান্সার) বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। ৬।এটি উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তের ক্লোসটেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাই অত্যাধিক গরমের সময় ব্রয়লারের হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে ভিনেগার ব্যবহার করলে অধিক ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। ৭। ভিনেগারে বিদ্যমান এ্যসিটিক এসিড বিভিন্ন পুষ্টি (বিশেষভাবে মিনারেল) শোষনে গুরত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।তাই মিনারেলের অভাবজনিত সমস্যাগুলোতেও ভিনেগার ব্যবহার করা যেতে পারে। ৮। এটি পানিশূণ্যতা থেকে রক্ষা করে। ৯। মুরগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ১০। খাদ্যতন্ত্র ভাল রাখে।ইনডাইজেশন, ডায়রিয়াতে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। ১১। ডিম পরিষ্কার ও জীবানুমুক্ত করতেও ভিনেগার সল্যুশন ব্যবহার করা যায়। ১২। মুরগীর পায়খানার দুর্গন্ধ দুর করে। ১৩।এটি মুরগীর শরীরের ফ্যাট বা চর্বিকে ভেঙ্গে অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে। ১৪।এটি খাদ্যস্থিত আমিষ হজম করতে সাহায্য করে। ১৫।হ্যাচিং এগ উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত মুরগীতে ভিনেগার ব্যবহার করলে ডিমের ফার্টিলিটি বা উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। ১৬।এটি মুরগীর দ্রুত পালক জন্মাতে সাহায্য করে। ১৭।মুরগীর যে কোন ধকল সহজে কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। ১৮।খাদ্য রূপান্তরের হার উন্নত করে। #কখন_প্রয়োগ_করবেনঃ এটি প্রথম সপ্তাহ থেকেই পানিতে ব্যবহার করতে পারবেন।লেয়ারের ক্ষেত্রে প্রতি মাসে ১ সপ্তাহ টানা পানিতে প্রয়োগ করতে পারবেন। #প্রয়োগের_মাত্রাঃ প্রতি লিটার পানিতে ৫-১০ মিলি (৫-১০ মিলি/লিটার পানি) (খামারে ব্যবহৃত পানির পিএইচ মাত্রার উপর ভিত্তি করে এটির প্রয়োগ মাত্রা ভিন্ন হতে পারে) #সতর্কতাঃ ১। এটি যেহেতু এ্যসিডিক তাই মাত্রারিক্ত প্রয়োগে অন্ত্রের ভিলাই ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। ২। ভ্যাকসিনের সময় ৩ দিন ব্যবহার করা যাবে না।