সুস্থ গরু চেনার উপায়।
মোটা গরু মানেই কিন্তু সুস্থ গরু নয়। কোরবানির গরু কেনার সময় অভিজ্ঞ কাউকে সংগে নিবেন, যিনি সুস্থ গরু দেখে চিনতে পারেন। এক্ষেত্রে গরুর বয়স কমপক্ষে দুই বছর হতে হবে। সাধারণত এটা আমরা দাঁত দেখে বুঝতে পারি। ছাগলের ক্ষেত্রে কমপক্ষে এক বছর বয়স হতে হবে। উটের ক্ষেত্রে কমপক্ষে পাঁচ বছর হতে হবে। কোরবানির পশু ক্রয়ে যে বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে, তা হলো-
১। পশু সর্বদাই লেজ নাড়িয়ে মশা-মাছি তাড়াতে ব্যস্ত থাকবে ও কিছুক্ষণ পর পর নড়াচড়া করবে।
২। খাবার দিলে তা স্বাভাবিকভাবে খাবে ও অবসর সময়ে জাবর কাটবে।
৩। চোখ বড় ও উজ্জ্বল দেখাবে।
৪। নাকের নিচের কালো অংশ (মাজল) ভেজা ভেজা থাকবে, মনে হবে যেন ফোঁটা ফোঁটা শিশির জমেছে।
৫। শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে, অস্বস্থিতে ছটফট করবে না।
৬। গরু-মহিষের ক্ষেত্রে বয়স দুই বছরের বেশি এবং ছাগল-ভেড়ার ক্ষেত্রে এক বছরের বেশি হতে হবে।
৭। সম্ভব হলে পশুর প্রস্রাব ও গোবর স্বাভাবিক কি না তা যাচাই করতে হবে।
৮। গর্ভবতী পশু কোরবানি দেওয়া যায় না। তাই কেনার আগে সেটা নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।
৯। সুস্থ পশুর পিঠের কুঁজ মোটা ও টান টান হয়, তাই এটি দেখে নিতে হবে।
১০। গরু কিনতে চাইলে দেশীয় গরু কিনতে চেষ্টা করুন। কারণ সীমান্ত পার হয়ে আসা গরুগুলো অনেক দূর থেকে আসে বলে ক্লান্ত হয়। অনেক সময় সেগুলো ছোট-খাট আঘাতপ্রাপ্তও হয়। আর দুর্বল গরু সুস্থ নাকি অসুস্থ সেটা বোঝা বেশ কষ্টকর।
১১। পশু কেনার আগে এর শরীরের কোথাও ক্ষত আছে কিনা পরীক্ষা করে নিন।
১২। শিং ভাঙা আছে কিনা, লেজ, মুখ, দাঁত, খুর এ সবকিছুই পরীক্ষা করে দেখুন, কোন ত্রুটি চোখে পড়ে কিনা। এ সবকিছুই লক্ষ্য করলে দেখবেন অতি সহজেই সুস্থ পশু কেনা আপনার জন্য অনেক সহজ হবে।
সংগৃহীত
পরামর্শ:
– মোটা গরুর পরিবর্তে সুস্থ গরু কোরবানি দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হোন
– দিনের আলোতে গরু কিনে ফেলুন
সুস্থ ও কোরবানির উপযুক্ত গরু চেনার উপায়ঃ
১. গরু চটপটে ও স্বভাবগত নড়াচড়া করবে; ইশারা করলে তাকাবে
২. তাপমাত্রা- স্বাভাবিক (১০১-১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) থাকবে; শরীরে হাত দিয়ে বুঝতে হবে
৩. নাকের ওপরটা ভেজা ভেজা বা বিন্দু বিন্দু ঘাম থাকবে
৪. স্বাভাবিকভাবে নিঃশ্বাস নেবে এবং ছাড়বে
৫. মুখের সামনে খাবার ধরলে সেটা টেনে খাবে; জাবর কাটবে
৬. শরীরের রঙ উজ্জ্বল থাকবে; লোম মসৃন থাকবে
৭. গরুর পিঠের কুজ মোটা, টানটান ও দাগমুক্ত হবে
কোরবানির উপযুক্ত গরুঃ
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত-
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কুরবানির ইচ্ছা করলে দু’টি মোটাতাজা, মাংসল, শিংযুক্ত, ধুসর বর্ণের ও খাসি করা মেষ ক্রয় করতেন। অতঃপর এর একটি নিজ উম্মাতের যারা আল্লাহর একত্বের সাক্ষ্য দেয় এবং তার নবুয়াতের সাক্ষ্য দেয় তাদের পক্ষ থেকে এবং অপরটি মুহাম্মদ (সাঃ) ও তার পরিবারবর্গের পক্ষ থেকে কুরবানি করতেন। (হাদিস নং ৩১২২; সুনানে ইবনে মাজাহ)
১. বয়সঃ ন্যূনতম দুই বছর হলেই গরু বা মহিষ এবং ৬ মাস বয়সের ছাগল বা ভেড়া কোরবানির জন্য উপযুক্ত হবে। এক্ষেত্রে গরুর নীচের পাটিতে যদি দুধ দাঁতের পাশাপাশি সামনে অন্তত দুটি কোদালের মতো স্থায়ী দাঁত থাকে তাহলে বুঝতে হবে গরুটি কোরবানির উপযুক্ত হয়েছে।
২. ক্ষত চিহ্নঃ শরীরের কোথাও (মুখ, জিহ্বা, শরীর, পা, ক্ষুর, গোড়ালি) ক্ষত চিহ্ন থাকবে না
৩. শিং ভাঙ্গা, লেজ কাটা থাকবে না
৪. গাভীঃ গর্ভবতী গাভী কোন অবস্থাতেই কোরবানি দেয়া যাবেনা
ক্ষতিকর হরমোন ব্যবহার করা গরু চেনার উপায়ঃ
১. গরু হবে খুব শান্ত; অধিকাংশ সময় গরু ঝিমাবে, সহজে নড়াচড়া বা চলাফেরা করবে না
২. আঙ্গুল দিয়ে গরুর শরীরে চাপ দিলে সেখানে ডেবে গিয়ে গর্ত হয়ে থাকবে; সহজে আগের অবস্থায় ফিরে আসে না
৩. গরু দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করে; একটু হাঁটলেই হাঁপায়
৪. বিশেষ করে গরুর পা ও মুখ ফোলা থাকবে
৫. শরীর থলথল করবে
ডা মো ইসমাইল (চট্রগ্রাম)