#Rabis ( র্যাবিস)
হুক্কা হুয়া, হুক্কা হুয়া । কে ডাকছে ? বাড়ীর পাশের
জঙ্গলের শিয়াল । মাঝে মধ্যে তারা ঢুকে পড়ছে
মানব বসতির আশে পাশে । কিন্তু সেখানে
টেরিটোরি তৈরী করে রেখেছে বেওয়ারিশ
কুকুর । এবার যুদ্ধের ডাক টেরিটরি রক্ষা করার । কুকুর
ডাকছে আই হুয়া তে নাই হুয়া, কেয়া হুয়া? কেয়া হুয়া?
এক পর্যায়ে সংঘর্ষ । আহত বেওয়ারিশ কুকুর ।
শরীরে বাইটিং উন্ড । ক্ষতের মধ্যে শিয়ালের লালা
। শিয়াল রেবিসের রিজার্ভার কিন্তু তার মধ্যে
রেবিসের লক্ষন নাই । সংক্রমিত হল কুকুর । হয়ে
গেল পাগল । সে কামড়াচ্ছে আরও সুস্থ কুকুরকে ।
এবার কুকুর বয়ে বেড়াচ্ছে রেবিসের ভাইরাস ।
কুকুরের সাথে বিড়ালের সম্পর্ক তিক্ত টাইপের
দেখলেই বিড়ালকে একটা ধাওয়া দিতে হবে এবং
দেয় ও বটে । অন্য দিকে স্ক্যাভেঞ্জিং বার্ড শকুন
স্থানীয়ভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় মরদেহ ভক্ষনে
সেকেন্ড লাইন স্ক্যাভেঞ্জার হিসাবে এগিয়ে
যাচ্ছে কুকুর সেখানেও শিয়ালের সাথে দ্বন্ধে
জড়িয়ে পড়ছে । এই হ’ল সিলভেটিক রেবিস এবং ডগ
রেবিসের মধ্যে সম্পর্ক । বাংলাদেশ এগিয়ে
যাচ্ছে ২০২২ সালের মধ্যে রেবিসমুক্ত করার জন্য
।
mবিশ্ব রেবিস দিবস -২০১৮
প্রতিপাদ্য বিষয় : শেয়ার দি ম্যাসেজ । সেইভ এ লাইফ
।
একজন ভেটেরিনারিয়ান হিসাবে আমি যা শেয়ার করতে
চাই ।
১) জলাতংক কোন রোগের নাম নয় ইহা রেবিস
রোগের অন্যতম একটি উপসর্গ মাত্র ।
২) যে সকল প্রাণি রেবিস ছড়ায় আমি তাদের চিকিৎসক
। তাদের শারীরিক পরীক্ষা কীংবা চিকিৎসা
প্রদানকালে আমি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বিদ্যমান । ২০১৮
সালের রেবিস দিবসে আমি রেবিসের প্রি-
এক্সপোজার ভ্যাকসিন নিয়েছি সকল
ভেটেরিনারিয়ানদেরকে নেওয়ার জন্য অনুরোধ
করছি ।
৩) বিশেষজ্ঞরা বলছেন ৯৯% রেবিস কুকুরের
কামড় থেকে ছড়ায় তাই কুকুরের কামড় প্রতিরোধ
করতে হবে ।
৪) রেবিস নিয়ন্ত্রনের জন্য বেওয়ারিশ কুকুর হত্যা
করা যাবেনা তবে রেবিস আক্রান্ত কুকুরকে হত্যা
করার বিকল্প নেই ।
৫) মালিকানাধীন কুকুর বিড়ালকে শতভাগ রেবিস
ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনতে হবে । মাস ডগ
ভ্যাকসিনেশন তো চলছেই ।
৬) বেওয়ারিশ কুকুরকে ঘরে ফিরিয়ে নিতে হবে
অর্থ্যাৎ তারও একটা মালিকানা থাকবে যার হাতে এতটুকু
তথ্য থাকবে যে কখন প্রাণিটির ভ্যাকসিনেশন
হয়েছিল । মালিকানাধীন থাকলে তাদের টেরিটরি
থাকবে মানুষ কেন্দ্রীক । বন্য প্রাণির সাথে
দ্বন্ধে যাবেনা এবং তারাও রেবিস দ্বারা আক্রান্ত হবে
না । কারণ বন্য প্রাণিই হচ্ছে রেবিসের
এসিম্পটমেটিক ক্যারিয়ার ।
৭) কুকুর ও মানুষের সম্পর্ক উন্নয়ন করতে হবে
ক) দুর কুত্তা শোলভ মনোভাব পরিহার করে সম্ভব
হলে এদের খাবার দিতে হবে, আদর করতে হবে ।
খ) ভ্যাকসিনেশনের সময় গলায় একটি বেল্ট পরিয়ে
সম্ভব হলে একটি নাম দিতে হবে যাতে মানুষ বুঝতে
পারে সে কারও মালিকানাধীন ।
গ) অযথা বিরক্ত করা থেকে বিরত থাকতে হবে ।
৮) খোঁজাকরণের মাধ্যমে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা
নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে ।
৯) কুকুরের কামড়কে অবহেলা করার সুযোগ নেই
। বাধ্যতামূলক টিকা দিতে হবে। রেবিস হয়ে গেলে
মৃত্যু অবধারিত । বর্তমানে জেলা পর্যায়ে মানুষের
হাসপাতালসমূহে পোস্ট এক্সপোজার ভ্যাকসিন পাওয়া
যাচ্ছে । এখন আর নাভির নিচে পেইনফুল ১৪ টি
ভ্যাকসিন দিতে হয় না । ইন্ট্রাডার্মাল ৫টি দিলেই চলে ।
১০) কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে :
ক) কুকুরে কামড় দিলে মানুষের পেটে কুকুরের
বাচ্চা হয় না ।
খ) কোন গাছের পাতা, ঝাড় ফুক কীংবা কবিরাজের
কোন ক্ষমতা নাই রেবিস ভাইরাস ধ্বংশ করার বরং
কামড়ানোর সাথে সাথে বাংলা সাবানের দ্বারা ২০ মিনিট
ধৌত করলে স্থানীয় ভাবে ভাইরাস বিনষ্ট হবে । কারণ
এলকালাইন মিডিয়াতে রেবিস ভাইরাস ধ্বংশ হয় ।
১১) কামড় কীংবা আচড়ে রক্ত বেরিয়েছে কীনা
। রক্ত বের হইলে ভ্যাকসিন লাগবে রক্ত বের না
হইলে ভ্যাকসিন লাগবে না এই কথার কোন ভিত্তি নাই ।
কারণ ভাইরাস নার্ভ ধরে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের
দিকে প্রবাহিত হয় রক্তের মাধ্যমে নয় । । আচড়
কাটাই যথেষ্ট সংক্রমনের জন্য । কুকুর বিড়াল নখ
হরহামেশাই তাদের মুখে নেয় । ভাইরাস থাকে
ফ্রেশ লালায় ।
১২) শতভাগ রেবিস মুক্ত হতে হলে সিলভেটিক
রেবিসও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ।
বাংলাদেশ রেবিস মুক্ত হউক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে । আমরা
আশাবাদি ।
Courtesy : Zoo Vet Nazmul Hoda sir.
পাগলা কুকুর/শিয়াল কামড় দিলে ইঞ্জেকশন দিতে হবে র্যাবিসিন।
১,৭ এবং ২১ তম দিনে দিতে হবে।
ছাগলের জন্য ২১১ মানে ১ম দিন ২ এম এল ,৭তম দিনে ১ এম এল আর ২১তম দিনে ১ এম এল।
বাছুরের জন্য ৩২২ মানে ১ম দিন ৩ এম এল ৭তম দিনে ২ এম এল আর ২১তম দিনে ২ এম এল।
বড় গরুর জন্য ৪৩৩ মানে ১ম দিন ৪ এম এল.৭তম দিনে ৩ এম এল আর ২১তম দিনে ৩এম এল।
কামড়ের আশেপাশে ইঞ্জেকশন দিলে ভাল ।অন্য জায়গায় দিলে ও হবে।