ব্রুডিং এ টার্কি বাচ্চার যত্ন
টার্কি বাচ্চার ক্ষেত্রে সাধারণত ০ – ৪ সপ্তাহ কে ব্রুডিং বলা হয়।তবে শীত হলে ব্রুডিং পিড়িয়ড আরো বাড়াতে হবে।টার্কির বাচ্চা ব্রুডিং এর সময়ে মুরগির বাচ্চার দ্বিগুণ হোভার ও জায়গা দিতে হবে।টার্কির বাচ্চা ব্রুডিং এর সময় ইনফ্রারেড রেড বাল্ব অথবা গ্যাস ব্রুডার ব্যবহার করা যেতে পারে।
ব্রুডিং
। এক সপ্তাহ পূর্ব থেকে ব্রুডার ঘর প্রস্তুত রাখা দরকার।
১। ০ – ৪ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত ১.৫ বর্গফুট বরাদ্দ দেয়া দরকার।২। ব্রুডারের উপকরণ সমূহ বৃত্তাকারে ২ মিটার ব্যাস পরিমাণে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়া উচিত।৩। পোল্ট গার্ডের এর উচ্চতা এক ফুট হওয়া ভাল।৪। শীতকালীন ব্রুডিং এর সময় টার্কি বাচ্চাকে কুসুম কুসুম গরম পানি এবং গরম কালে শীতল পানি সরবরাহ দিতে হবে।৫। ১ম সপ্তাহে ৯৫ – ১০০ ৹ফাঃ । পরবর্তীতে তা সপ্তাহ শেষে ৫৹ফাঃ করে কমাতে হবে বাচ্চার বয়সের চতুর্থ সপ্তাহ পর্যন্ত। ৬।ব্রুডিং এর ১ম ৪ সপ্তাহ টার্কি বাচ্চার দিন খারাপ যায়।
সে কারণেই বেশি যত্নের প্রয়োজন হয়।
ব্রুডিং এ মৃত্যুর হার ৬ – ১০% হতে পারে।বাচ্চা টার্কি প্রকৃতিগত ভাবেই জন্মের পর নিজের থেকে কয়েকদিন খাদ্য ও পানি কম খায়।দুর্বল বাচ্চাকে খামারী নিজে খাদ্য খাওয়াতে দিতে হবে।প্রাথমিকভাবে দুর্বল দৃষ্টি শক্তি ও স্নায়ুবিক দুর্বলতার কারণে জন্মের পর থেকে তাদের জোর পূর্বক ( force fed) খাদ্য খাওয়াতে হবে।টার্কির বাচ্চার প্রাথমিক অবস্থায় মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো জন্মের পর বাচ্চা টার্কি নিজে নিজে খাদ্য ও পানি খেতে চায় না।যা টার্কি পালনে একটি বড় সমস্যা। তাই খাদ্য ও পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে খামারিকে বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত।বাচ্চা টার্কি যাতে অতি সহজেই ও খুবই কাছে থেকে খাদ্য ও পানির পাত্র দেখতে পায় এমন আলোকিত স্থানে খাদ্য ও পানির পাত্র স্থাপন করতে হবে।বাচ্চা টার্কিকে জোর পূর্বক খাদ্য ও পানি গ্রহণের ক্ষেত্রে টার্কি বাচ্চাকে প্রথম ১৫ দিন প্রতি ১০টি বাচ্চার জন্য প্রতিদিন ১০০মিলি দুধ ও একটি সিদ্ধ ডিম প্রতি লিটার পানিতে গুলিয়ে খেতে দেয়া উচিত।এতে বাচ্চা টার্কির প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও এনার্জির ঘাটতি পূরণ হবে।টার্কি সবুজ ও কচি লতা পাতা খেতে ভাল বাসে।।যা কুঁচি কুঁচি করে কেটে সরবরাহ করতে হবে। এতে বাচ্চা টার্কির খাদ্য গ্রহণে আগ্রহ বেড়ে যাবে।সিদ্ধ ডিম রঙিন পাত্রে রেখে দিলে বাচ্চা টার্কির খাদ্য গ্রহণে আগ্রহ বেড়ে যাবে।
লিটার ব্যবস্থাপনা
বাচ্চা টার্কির বিছানা অবশ্যই নরম ও শুকনা হতে হবে। লিটার হিসেবে ব্যবহৃত উপকরণ সমূহ ছত্রাক মুক্ত হতে হবে।স্যাতস্যাতে লিটার উপকরণ কখনোই ব্যবহার করা উচিত না। কাঠের গুঁড়া টাটকা শুকনা হওয়া ভাল।তবে লিটার বেশি শুকনো হলে যদি ধূলিকণা উড়ে তবে তাহলে স্প্রে করা উচিত।লিটার হিসেবে সাধারণত তুষ,কাঠের গুড়ো,বাদামের খোসা কিংবা শুকনা ,পরিস্কার ও নরম খড় কুঁচি কুঁচি করে কেটে ব্যবহার করা হয়।শুরুতেই লিটারের পুরুত্ব হতে হবে ২ ইঞ্চি। পরবর্তীতে তা ধীরে ধীরে চতুর্থ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত লিটারের পুরুত্ব পর্যায়ক্রমে ৩ – ৪ ইঞ্চি পর্যন্ত রাখতে হবে।লিটার নিয়মিত কয়েক দিন পর পর ওলটপালট করে দিতে হবে।যাতে লিটার উপকরণ সমূহ চাকা চাকা বা শক্ত হয়ে না যায়। লিটার চাকা আকৃতির হলে খামারে এমোনিয়া গ্যাস বেড়ে যাবে।তাতে বাচ্চা টার্কির বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।এমোনিয়া গ্যাসের উপদ্রব বেড়ে গেলে টার্কির চোখে সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং ভ্যাকসিন ভাল কাজ করে না।
মুক্তভাবে বায়ু চলাচল
ব্রুডিং পিড়িয়ডে ব্রুডিং ঘরে অবশ্যই মুক্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে।মুক্তভাবে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা না থাকলে ব্রুডিং ঘরে অক্সিজেনের ঘাটতি হবে এবং কার্বন- ডাই-অক্সাইড ,কার্বন- মনো-অক্সাইড ও এমোনিয়া নামক বিষাক্ত গ্যাসের সৃষ্টি হবে।এ জাতীয় বিষাক্ত গ্যাস বাচ্চা টার্কির জন্য ক্ষতিকর ।