Breaking News
গর্ভবতী গাভীর পরিচর্যা
গর্ভবতী গাভীর পরিচর্যা

গর্ভবতী গাভীর যত্নঃবিস্তারিত

গর্ভবতী গাভীর যত্ন

একটি গাভীকে অন্যন্য সময়ের তুলনায় গর্ভকালিন সময়ে সব চাইতে বেশি পরিচর্যা করতে হয়।

এই পরিচর্যার উপর নির্ভর করবে আগত বাছুর, দুধের উৎপাদন, গাভীর সুস্থতা, প্রসব পরবর্তী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি।

পরিচর্যা শুরু করতে হবে গাভী বাচ্চা প্রসব করার তিন মাস আগ থেকেই। এ সময় গাভীকে নিয়মিত সুষম দানাদার খাদ্য, সবুজ তাজা ঘাস, পরিমান মত খড় ও বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন এবং মিনারেলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

গর্ভবর্তী গাভীকে যেমন তার নিজের জন্য দানাদার খাদ্য দিতে হবে তেমনি তার গর্ভস্থ বাছরের জন্যও দিতে হবে। তা নাহলে গর্ভস্থ বাছুর পুষ্ট হবে না এবং গাভীও প্রসব কালীন সমস্যায় পড়তে পারে।

গর্ভবতী গাভীর দুধ দহন বন্ধ করণ
গাভী বাচ্চা প্রসবের কমপক্ষে ৫০-৬০ দিন আগে থেকে দুধ দহন বন্ধ করতে হবে। এ সময় গাভীর ওলানের বিশ্রাম হবে এবং নষ্ট ও দুর্বল হয়ে পড়া টিস্যু পুনঃগঠিত হবে (Regenarate mammary tissue). একটি সুন্দর পরিকল্পনার মাধ্যমে দুধ দহন বন্ধ করতে হয়।

দুধ দহন বন্ধ করতে প্রায় ১৪-১৫ দিন সময় লাগে। আর এই দুধ দহন বন্ধ করন প্রক্রিয়া টি শুরু করতে হবে ৭ মাস গর্ভকালীন সময় থেকে।

ধীরে ধীরে অধিক শক্তি সমপন্ন দানাদার খাদ্য ও কাচা ঘাস কমিয়ে আনতে হবে এবং খড়ের পরিমান একটু বাড়িয়ে দিতে হবে যাতে দুধ উৎপাদন কমে যায়।

> দিনে ২ বার দহন বন্ধ করে ১ বার দহন করতে হবে।

এভাবে ৫-৭ দিন দহনের পর পর্যায়ক্রমে ৩৬ ঘন্টা পর একদিন দহন। তারপর ৪৮ ঘন্টা পর এভাবে ৬০ ঘন্টা ৭২ ঘন্টা এবং সর্বশেষ ৯৬ ঘন্টা অর্থাৎ ৪ দিন পর দহন করতে হবে।

ওলানে দুধ জমলে প্রয়োজনে ৫ দিন পর আবার দহন করতে হবে।
> যদি তাতেও দুধের উৎপাদন না কমে যায়, তাহলে কয়েক দিনের জন্য দানাদার খাবার বন্ধ করে রাখতে হবে এবং পানির পরিমান কমিয়ে দিতে হবে।
> এই প্রক্রিয়াটি চলাকালে ম্যাসটাইটিস রোধের জন্য Pow: MASTICARE PLUS 100mg (Square) প্রিপারেশন গ্রহন করা যাবে।
> প্রয়োজনে ওলানে Teat infusion প্রয়োগ করা যেতে পারে।

গর্ভবতী গাভীর খাদ্য
দুধ উৎপাদনে শেষ ভাগে গাভীর দেহে সঞ্চিত ভিটামিন,খনিজ পদার্থ, চর্বি ও অন্যন্য পুষ্টিকর উপাদান সমুহ প্রায় নিঃশ্বেষ হয়ে যায়।

তাই এই সময় পুষ্টিকর খাদ্য ও অতিরিক্ত পরিচর্যার প্রয়োজন।

> গাভী এবং তার গর্ভস্থ বাছুরের জন্য প্রতিদিন সুষম দানাদার খাদ্য (৩+১)=৪ কেজি দিতে হবে। সুষম দানাদার খাদ্যের মান বৃদ্ধির জন্য শতকরা ১% হারে ডিসিপি প্লাস যোগ করতে হবে।
> সবুজ তাজা ঘাস দৈনিক কমপক্ষে ২০-২৫ কেজি খাওয়াতে হবে। মনে রাখতে হবে এ সময় গাভীর জন্য কাচা ঘাসের গুরুত্ব খুবই বেশি।
> দৈনিক খড়ের পরিমান মাঝারি ও বড় গাভীর জন্য ৩-৪ কেজি খাওয়ানো দরকার।
> পর্যাপ্ত পরিমানে বিশুদ্ধ পানি (Free of choice) হিসাবে সামনে রাখতে হবে।

ঔষধ সরবরাহ
গাভীকে প্রজনন করার ২-৩ মাসের মধ্যে ভেট চিকিৎসক বা এ আই কর্মী দ্বারা চেক করে Confirm হতে হবে। Confirm হলে তখন থেকে শুরু করে বাচ্চা প্রসব হওয়া পর্যন্ত আয়রন Pow: FEROPLUS দৈনিক ২-৩ চামুচ করে খাওয়ানো আবশ্যক।

কারণ গর্ভকালের শেষ পর্যায়ে শাল দুধে প্রচুর Immunoglobulis/Gamaglobuins-Antybody থাকে যা গাভীর শরীরের রক্ত থেকে তৈরী হয়।

তাই রক্ত বৃদ্ধির জন্য আয়রন খাওয়ানো Continue রাখতে হবে।
> কমপক্ষে শেষ তিন মাসের ১ম দশ দিন দৈনিক ক্যালসিয়াম Syr: CALPLEX 1ltr (Square) 50ml করে খাওয়াতে হবে। প্রসব পরবর্তী রোগ জরায়ু বের হওয়া ও মিল্ক ফিভার রোধে ক্যালসিয়ামের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।
> ভিটামিন এডি৩ই Syr: Eskavit AD3E (SK-F) 20ml করে প্রতি মাসের দৈনিক ১০-১৫ দিন খাওয়াতে হবে।

এতে করে গর্ভফুল আটকে যাওয়ার হার ৫১% থেকে কমে ৯% এ চলে আসে এবং বাছুরের অন্ধত্ব রোধ হয়।
> বাচ্চা প্রসবের ১০ দিন আগে থেকে ও ১০ দিন পর পর্যন্ত Pow: MASTICARE PLUS 100mg (Square) দৈনিক ১০-২০ গ্রাম করে খাওয়াতে হয়।

এতে Mastitis হওয়ার ঝুকি কম থাকে।

গর্ভাবস্থার শেষ দুই মাসের পরিচর্যা

> এই সময়ে গাভীকে পুর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে এবং গাভীকে অবশ্যই পাল থেকে সরিয়ে আলাদা স্থানে রাখতে হবে।
> দিনের বেশির ভাগ সময় শেড থেকে বের করে মাটিতে রাখতে হয়।
> গাভী যাতে কোন রকম দৌড়ঝাপ বা অন্যন্য গরুর সাথে লড়াই না করে সে দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
> গর্ভবতী গাভীর দ্বারা হালচাষ, শষ্য মাড়াই এর কাজ করানো যাবে না।
> বাচ্চা প্রসবের ২-৩ দিন পুর্বে গাভীকে প্রসব ঘরে বা বিশেষ স্থানে রাখা উচিত। এ সময় মেঝেতে খড় বা রাবার ম্যাট বিছিয়ে দিতে হবে।
> প্রসব ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে প্রসব ঘড় বা স্থান অবশ্যই জীবানূ মুক্ত রাখতে হবে।

প্রসব পুর্ববতী লক্ষণ
সাধারনত প্রজনন করার দিন থেকে ২৮০ (+ – ৫) দিন এর মধ্যেই গাভী বাচ্চা প্রসব করে থাকে।

প্রসবের সময় যত এগিয়ে আসবে সেই সঙ্গে উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা যাবে।

গর্ভাবস্থার শেষ দিকে বাচ্চা দ্রুত বড় হওয়ার ফলে গাভীর পেটের ডান দিক খুব স্ফিত হবে।

> ওলান বেশ বড় ও বাটগুলো সচেজ ও টানটান দেখা যাবে।
> যোনিমুখ স্ফীত ও শিথিল এবং থলথলে হবে।
> যোনিমুখ দিয়ে পরিষ্কার পদার্থ নির্গত হবে।
> গাভীর রুচি হ্রাস পেতে পারে এবং খাদ্য গ্রহণ কমিয়ে দিতে পারে।
> বাচ্চা প্রসবের পুর্ব মুহূর্তে প্রচন্ড ভীত ও উৎকণ্ঠিত দেখায়।
> সাধারণত গাভী মেঝেতে শুয়ে পড়ে এবং বাচ্চা প্রসব আরম্ভ হয়।
> স্বাভাবিক প্রসবে বাচ্চার সামনের দুটি পা এবং নাক মুখ একসাথে যোনি দারে প্রথমে বের হয় এবং ক্রমশ ধীরে ধীরে ঘাড় ,দেহের মধ্যাংশ ,কোমরের নিম্নগাভ এবং অবশেষ পিছনের পা বের হয়ে আসে।

এর ব্যতিক্রম ঘটলে তা প্রসব কালীন সমস্যা ধরা হয়। তখন প্রসবে অভিজ্ঞ বা ভেটেরিনারিয়ানের সাহায্য নিতে হয়।

প্রসব কালীন সময়ে সৃষ্ট জটিলতা অনভিজ্ঞ, ভেটেরিনারিয়ান নয় এমন ব্যক্তি দ্বারা করালে মারাত্বক ক্ষতি হওয়ার আশংখ্যা থাকে।
> প্রসব ব্যথার ৪ ঘন্টার মধ্যে স্বাভাবিক ভাবে বাচ্চা ডেলিভারি না হলে দ্রুত ডাক্তারের ব্যবস্থা নিতে হবে।

বাচ্চা প্রসবের পর গাভীর যত্ন
> বাছুর হওয়ার পরপরই গাভীকে আগের শেডে ফিরিয়ে আনা ঠিক না। কারন প্রসবের পর গাভী দুর্বল ও ধকল জনিত অবস্থায় থাকে এবং বাচ্চার জন্য ছটফট করতে থাকে। এদিকে শেড পিচ্ছিল থাকার কারনে বাচ্চা ঠিকমত দাড়াতে পারে না।
> বাচ্চা প্রসবের ৩০ মিনিট পর কুসুম কুসুম গরম পানি ও ৫০০ গ্রাম গুড় মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
> এই সময় গাভীকে সহজ পাচ্য খাবার সরবরাহ করতে হবে, কাচা ঘাস দেয়া যেতে পারে।
> ২৪ ঘন্টার মধ্যে গর্ভফুল না পরলেও হাত দিয়ে বের করা যাবে না। কয়েক দিনের মধ্যেই আপনা আপনি পঁচে পড়ে যাবে।

সাবধানতা
গর্ভাবস্থায় গাভীতে ডেক্সামেথাসন, পেনিসিলিন, স্ট্রেপ্টোমাইসিন, জেন্টামাইসিন, অটোহিমোথেরাপি এ ধরনের ঔষধ ব্যবহার করা যাবে না।

গাভীর গর্ভাবস্থায় উপরোক্ত পরিচর্যা গুলো মেনে চললে আমরা পেতে পারি একটা সুন্দর বাছুর আর সুস্থ গাভী। সেই গাভী থেকে পেতে পারি পর্যাপ্ত পরিমানে দুধ। যা আমাদের নিজেদের চাহিদা যেমন পুরণ হবে, সাথে সাথে দেশের জাতীয় চাহিদা পুরনে সামান্য হলেও অবদান রাখা যাবে।

গাভীর গর্ভকালীন এবং প্রসবকালীণ পরিচর্যা:
——————————————-
বন্য প্রাণিদের বাচ্চা হয় প্রকৃতির যত্নে কিন্তু আমাদের অধীনস্ত গৃহপালীত প্রাণিদের বংশ বৃদ্ধিতে আমাদের রাখতে হয় সতর্ক দৃষ্টি। কারণ তাদের ভাল বাচ্চা ধারণ ও প্রসবের জন্য প্রয়োজন হয় অতিরিক্ত যত্নের ।

যেমন আমরা আমাদের মায়েদের জন্য যত্ন নেই।
একটি সুস্থ গাভী জন্ম দিতে পারে একটী সুস্থ বাচ্চা। শুধু তাই নয় সাথে সাথে দিতে পারে চাহিদামত দুধ। আমাদের একটু সচেতন দৃষ্টি ভঙ্গি এবং প্রাণিদের প্রতি সহানুভব দৃষ্টি ভঙ্গি তথা গর্ভাবস্থায় ও প্রসবকালীন গাভীর বিশেষ যত্ন পর্যাপ্ত দুধ ও সুস্থ সবল বাছুর পেতে সহায়ক ।

যা শুধু তাদের জন্যই ভাল নয় বরং তা মালিকের অর্থনৈতিক চাহিদা পুরণেরও একটা বিশেষ সুযোগ হয়ে দ্বাড়ায়।

গাভীর গর্ভকালঃ

গাভীর গভর্কাল সাধারণত (২৮২ +/- ৫) দিন বা প্রায় সাড়ে ৯ মাস। গর্ভাবস্থায় বয়স অনুযায়ী খাদ্য ও যত্নের প্রয়োজন। তাই প্রতিটি গাভীর প্রজননের সঠিক সময় জানা অত্যন্ত জরুরী।

গর্ভকাল নির্ণয়ের জন্য করণীয়ঃ
বীজ দেয়ার (ষাড় দেখানোর) আড়াই থেকে তিন মাস পর প্রাণি চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা করে গর্ভ ধারণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তা থেকে বাচ্চা প্রসবের সম্ভব্য দিন নির্ণয় করা হয়।

গর্ভবতী হওয়ার পর থেকে বাচ্চা প্রসবের দুই মাস পুর্ব পর্যন্তঃ
১. এই সময় যথেষ্ঠ পরিমাণ সুষম ও সহজ পাচ্য খাদ্য সরবরাহ করতে হবে । সেই সাথে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিটামিন ও মিনারেল থাকা বাঞ্ছনীয়। যাতে করে রুচি সহকারে তৃপ্তির সঙ্গে খাদ্য খেতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।,
২. গাভীকে যথাসম্ভব আলাদা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. গাভী যাতে কোন রকম দৌড়ঝাপ বা অন্য প্রাণির সাথে লড়াই না করে সে দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
৪. তাজা ঘাস সরবরাহ করতে হবে। দানাদার খাদ্যের পাশাপাশি আশ জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে।
৫. গর্ভবতির গাভীর দ্বারা হালটানা , শষ্য মাড়াই এর কাজ করানো যাবে না।

গর্ভবস্থার শেষ দুই মাসের পরিচর্যাঃ
দুধ উৎপাদনে শেষভাগে গাভীর দেহে সঞ্চিত ভিটামিন,খনিজপদার্থ ও চর্বি ও অনান্য পুষ্টিকর উপাদান সমুহ প্রায় নিশ্বেষ হয়ে যায়। তাই এই দুই মাসে অতিরিক্ত পরিচর্যার প্রয়োজন। এই সময়ে-
১. গাভীকে পুর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে।
২. সাস্থের উপর বিবেচনা করে দানাদার খাদ্যের পরিমাণ কমিয়ে সহজ পাচ্য খাদ্যের পরিমান বাড়াতে হবে। সাথে কাচা ঘাস খাওয়ালে ভাল হয়।
৩. এই সময় গাভীকে অবশ্যই পাল থেকে সরিয়ে আলাদা যায়গায় রাখতে হবে।
৪. গাভীকে সপ্তাহে দুইদিন গোসল করানো উত্তম।
৫. ২-৩ পুর্বে গাভীকে প্রসব ঘরে বা বিষেষ করে খড় বিছানো মেছেতে নিতে হবে। প্রসব ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই জীবানূমুক্ত রাখতে হবে।

প্রসব পুর্ববর্তী লক্ষণঃ

প্রসবের সময় যত এগিয়ে আসবে সেই সঙ্গে উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা যাবে। যা
গর্ভাবস্থার শেষ দিকে বাচ্চা দ্রুত বড় হওয়ার ফলে গাভীর পেটের ডান দিক খুব স্ফিত হয়।
ওলান বেশ বড় ও বাটগুলো সতেজ ও টানটান হয়।
যোনিমুখ স্ফীত ও শিথিল ও থলথলে হবে।
যোনিমুখ দিয়ে পরিষ্কার পদার্থ নির্গত হবে।
গাভীর রুচি হ্রাস পায় এবং খাদ্য গ্রহণ কমিয়ে দেয়। নিচু স্বরে শব্দ করে।
বাচ্চা প্রসবের পুর্ব মুহূর্তে প্রচন্ড ভীত ও উৎকণ্ঠিত দেখায়।
সাধারণত গাভী মেঝেতে শুয়ে পড়ে এবং বাচ্চা প্রসব আরাম্ভ হয়।
প্রসূতির ঘরঃ
আসন্ন প্রসবা গাভী অনান্য প্রাণির সাথে রাখলে নানা রূপ সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আলাদা ভাবে রাখার জন্য প্রসূতি ঘরের প্রয়োজন।খামারে প্রজনক্ষম গাভীর মোট সংখ্যার পাঁচ ভাগ প্রসূতি ঘর রাখা হয়। প্রসূতি ঘরের মেঝে পাকা হওয়া প্রয়োজন ।ঘরের মেঝেতে খড় বিচালী দিতে হয়। প্রসুতি ঘরে একটি করে পানি ও খাবার পাত্র থাকে।

বাচ্চা প্রসব প্রস্তুতিঃ
* বাচ্চা প্রসব হওয়ার লক্ষণ প্রসব পাওয়ার পর বাচ্চা প্রসবের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে।
*প্রতিকুল অবহাওয়ায় গাভীর আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
* প্রসব ঘরে গাভীকে রাখার পুর্বে যত্ন সহকারে পরিস্কার পরিছন্ন জীবানূ মুক্ত করতে হবে।
*স্বাভাবিক প্রসব হলে বাচ্চাকে মায়ের কাছে রাখতে হবে।
*এই সময় ধারলো জীবানূমুক্ত ছুরী দ্বারা দ্রুত নাভি কেটে দিতে হবে।
* গাভীর প্রসবের রাস্তা জীবানূ নাশক ডেটল বা স্যাবলন মিশ্রিত পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে।
*সহজে গর্ভফুল মাটিতে পড়ার জন্য কুসুম কুসুম গরম পানি সরবরাহ করতে হবে।
*পানিতে পড়ার সাথে সাথে গর্ভফুল মাটিতে পুতে দিতে হবে, কেননা গর্ভফুল কোনক্রমে গাভী খেয়ে ফেললে দুদ্ধ উতপাদনের ক্ষমতা মারাত্বক ভাবে কমে যায়।
*প্রসবের পর মায়ের প্রথম শালদুধ বাচ্চাকে খেতে দিতে হবে এবং বাচ্চাকে বাট চুষতে দিতে হবে।
* এই সময় গাভীকে সহজ পাচ্য খাবার সরবরাহ করতে হবে, কাচা ঘাস দেয়া যেতে পারে।

প্রসব কালীন সমস্যাঃ
স্বাভাবিক প্রসবে বাচ্চার সামনের দুটি পা এবং নাক মুখ একসাথে যোনি দারে প্রথমে বের হয় এবং ক্রমশ ধীরে ধীরে ঘাড় ,দেহের মধ্যাংশ ,কোমরের নিম্নগাভ এবং অবশেষ পিছনের পা বের হয়ে আসে। এর ব্যাতিক্রম ঘটলে তা প্রসব কালীন সমস্যা ধরা হয়। তখন প্রসবে অভিজ্ঞ বা ভেটেরিনারিয়ানের সাহায্য নিতে হয়। প্রসব কালীন সময়ে সৃষ্ঠ জটীলতা অনভিজ্ঞ, ভেটেরিনারিয়ান নয় এমন ব্যক্তি দ্বারা করালে মারাত্বক ক্ষতি হওয়ার আশংখ্যা থাকে।

যখন ডাক্তারের সাহয্য নিবেনঃ
১. পানি থলী বের হওয়ার ২-৪ ঘন্ঠার মধ্যে বাচ্চা প্রসব না হলে।
২. ২-৪ ঘন্ঠার মধ্যে কোথ দেয়ার পর বাচ্চা প্রসব না হলে ।
৩. বাচ্চার সামনের পা ছাড়া অন্য কোন পা প্রথমে বের হলে।

সতর্কতাঃ

বাচ্চা গাভীর পায়ের দিকে বা নিচের দিকে টানতে হয়। কুসুম কুসুম গরম পানি মৃদু সাবান যোনি দারের চারদিকে লাগাতে হয় ।
অপ্রয়োজনীয় দৈহিক বল প্রয়োগ করে বাচ্চা টানা উচিত নয়।

যত্নহীন বা অস্বাস্থ্যকর পদ্ধতি অবলম্বন হতে বিরত থাকতে হবে।
দেশি গরু বা ছোট আকৃতির গাভীতে বড় আকৃতির ষাড়ের বীজ দেয়া হতে বিরত থাকতে হবে।
গাভীর গর্ভাবস্থায় উপরোক্ত পরিচর্যা গুলো মেনে চললে আমরা পেতে পারি একটা সুন্দর বাছুর আর সুস্ত্য গাভী। সেই গাভী থেকে পেতে পারি পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ।

যা আমাদের নিজেরদের চাহিদা যেমন পুরণ হবে , সাথে সাথে দেশের জাতিয় চাহিদা পুরণে সামান্য হলেও অবদান রাখা যাবে।

সংগৃহীত

Please follow and like us:

About admin

Check Also

নবজাতক বাছুরের যত্ন ও করণীয় :

নবজাতক বাছুরের যত্ন ও করণীয় : স্তন্যপায়ী প্রায় সকল প্রাণীর জন্মপ্রক্রিয়া প্রায় একই হলেও কিছু …

Translate »