Breaking News
ফেসবুক আর বাস্তবের ফার্ম আলাদা
ফেসবুক আর বাস্তবের ফার্ম আলাদা

ফেসবুকে_খামারী_হওয়া_যত_সহজ_বাস্তবে #আরো_ভয়ানক_কষ্ট।

ফেসবুকে_খামারী_হওয়া_যত_সহজ_বাস্তবে #আরো_ভয়ানক_কষ্ট

তবে সেই কষ্টে আছে হাজারো সুখের মেলা!

 

আমি খামার শুরু করেছি বিগত ৬ বছর প্লাস।
১মে আমার ছিল দেশি গরুর খামার কিন্তু ১ বছর পর দেশি গরু পরিবর্তন করে ডেইরীতে এসেছি।

মাএ ১ টি গাভী আর ১ টি বকনা ছিল আমার সম্ভল। গাভীটি কিনেছিলাম ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়ে আর বকনাটি কিনেছিলাম ৪৫০০০ হাজার টাকা দিয়ে, আর একটা টিন সেড ঘর করে ছিলাম গরু রাখার জন্য ২০,০০০ হাজার টাকা দিয়ে।

মোট ১ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা ছিল শুরুটা।
শুরু করার কিছু দিন পরই গরু রাখার জন্য ৩০০০০ হাজার টাকা খরচ করে যে গোয়াল ঘরটি করেছিলাম তা ভেঙ্গে ফেলতে হয়েছিল একটু সমস্যার কারণে।

তখন হাতে ছিল না টাকা কিন্তু মনে ছিল দৃড় মনোবল তখন আল্লাহ উপর ভরসা করলাম।

ঐ টিন সেড টা ভাঙ্গার পর পরে আবার গরু গুলোর জন্য একটা ছোট্ট কুঁড়ের ঘর করলাম।
গরু গুলোকে নিয়মিত ভাল ভাবেই দেখাশুনা করে যাচ্ছিলাম ভালো ভাবেই চলছিল আমাদের দিনকাল।

হঠাৎ এক বিপদ এসে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা গাভীটি পেঠ ফাঁপা হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে, তারপর ভেটেরিনারী সাজন কে ডাকা হয় পরিশেষে গাভীটি মারাই যায়, নেমে আসে পরিবারে দুঃখের ছায়া।
যায় না ভূলা গরুর ছবিটি তাও আবার ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মায়া।

আল্লাহ উপর ভরসা করে পরে আবার ২ টি ষাঁড় কিনলাম কোরবানির কে লক্ষ করে অল্প কয়েকদিন রেখে ভালো রেজাল্ট চলে এসেছে।
তখন আমি একদিন জরুরি এক কাজে বাহিরে গিয়েছিলাম আমার ছোট ভাই একটি ষাঁড় কে গ্যাসের ঔষুদ খাওয়ানোর সময় সেই ঔষুদ চলে যায় গরুটির শ্বাসনালীতে।

তারপর আমায় কল করে বলল ষাঁড়টি হাঁপাচ্ছে
পরে আমি বাড়ি আসলাম।
ভেটেরিনারি ডাক্তার ডাকা হয়,
স্যার এসে বললঃ গরুর শাস্বনালীতে ঔষুদ গেলে শতকরা ১ টা বাঁচলে বাঁচতে ও পারে।
চিকিৎসা দেওয়ার ৫ মিনিট পর ৭০/৮০ হাজার টাকা দামের ষাঁড়টি ও আমাদের ছেড়ে মৃত্যু নামক শব্দটির সাথে মিল হল।
মারা গেল ষাঁড়টি।

নিজে ও জানলাম না কখন যে আমার চোখে ২ ফোটা পানি চলে আসল।

তখন খামারী হওয়ার স্বপ্নটা বাদ দিয়ে দিবো ভাবলাম।
পরিবার থেকে ও সাপোর্ট পাচ্ছি না।আরো হতাশায় পড়ে গেলাম। প্রায় শুরু করাতেই ২/৫০ লক্ষ টাকা ধরা গেয়ে গেলাম।

যাক আবার ভাবলাম যেখানে হারায় সেখানে খুঁজ করা উওম।

আবার নিজেকে শক্ত করলাম আল্লাহ উপর ভরসা করলাম পরিবারকে কন্ট্রোল করলাম।

এত কিছুর পরপরই আমার ১ম কিনা বকনা টা একটা সুন্দর টুকটুকে বকনা জন্ম দিল।
এবং কয়েকদিন পর থেকে ১৩/১৪ লিঃ দুধ পাচ্ছি।

আরো একটু উসাহ্ পেলাম। তখন কেউ আমার পাশে ছিল না আমাকে ঘুড়ে দাঁড়ানোর গল্পটা কেউ আমায় বলেনি।

সবাই খালি গলাটা উচু করে বলতঃ “আমরা তো আগেই বলেছি তোমার দ্বারা এইটা সম্ভব না”

আবার দাঁড়ানোর গল্প নিয়ে ভাবতে ভাবতে আবার শুরু করলাম আরো একটি গাভী নিলাম।
এভাবে হতে হতে ২০ টি গরু তে গিয়ে দাঁড়ালো
মাঝখানে আরো অনেক বকনা/ ষাড়/ গাভী বিক্রি ও করেছি……আলহামদুলিল্লাহ!

এবং ২ লক্ষ প্লাস হবে টাকা খরচ করে ৭/৮ মাস হলো নতুন করে একটি আধুনিক খামার সেড ও করেছি।

সামনে আরো পরিকল্পনা আছে……..
সকলের কাছে দোয়া চাই।

এখানেই তো গল্প শেষ নয় ঃ
খামার করার শরুতে এখন পযন্ত আমার এলাকায় কারেন্ট নাই।

পানির ব্যবস্থার জন্য দেওয়া হলো স্কীনে দেখানো টিউবওয়েলটি আর স্কীনে দেখানো যে বালতিটি সেই বালতিটি দিয়ে প্রতিদিন ২০০ শত বালতি পানি টিউবওয়েল চেপে বের করতে হয়।

রৌদ্র ও বৃষ্টি শত কিছুর মাঝেও।

গরু গুলোর খাবার পানি ও ২ বেলা গরু গুলো গোসল করানো ২ বেলা খামার পরিস্কার করার জন্য।

ভেটেরিনারি সাজনঃ আমায় বলেছিল জুলমত কারেন্ট ছাড়া তুমি যেভাবে খামার করেছো এবং পরিচালনা করছো তা আমি এই প্রথম দেখলাম।

ভেটেরিনারি সাজন ডাঃ তারেক আহমেদ স্যার আমার প্রিয় মানুষ যিনি আজো আমায় গাইড দিচ্ছেন। স্যারেরর জন্য রইল শুভ কামনা।

মাথার গাম পায়ে ফেলে পরিশ্রম করতে হয়।
কারেন্ট নাই বিধায়!
মাঝে এমন কষ্ট হয় তখন মনে হয় খামার ছেড়ে এসির ভিতরে বসে থাকি!

কিন্তু তা কি আর হয়?
হয় না।

শত কিছুর পরে ও থেমে যায়নি।

সুতরাং আজ খামার করলেন আগামীকাল বা পরশু খামার বিক্রি করে দিবেন এমন খামার কেউ করবেন না।

আর ফেসবুকে মাঝে মাঝে দেখি খামার করা খুবই সহজ!

না না না এত সহজ নয়।
ফেসবুক খুললেই দেখি অনেকেই নামের আগে টাইটেল দিয়ে দিলো “রাখাল”

“রাখাল” শব্দটা ছোট্ট বাট এর গভীরতা বিশাল।

যারা নতুন খামারী হতে চান তাদের জন্য আমার সাজেশন হলোঃ

১।শুরুটা ছোট্ট পরিসরে করবেন।
২।যদি নিজস্ব লোক না থাকে তো ভেবে চিন্তা করে খামার সেক্টরে আসবেন!
৩।ধৈর্যশীল না হতে পারলে খামার সেক্টরে আসবেন না,কারণ এখানে ধৈর্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪।খামার বিষয়ে কিছু জেনে শুনে শুরু করবেন,একবারে কিছু না জেনে না বুঝে আসবেন না।
৫।নিজস্ব জমি,গোখাদ্য বাজার, দুধের বাজার,
কারেন্ট আছে কিনা আপনার এলাকায় এগুলো বিবেচনা করবেন।

শত কষ্টের পরে মনে হয় আমি সুখী।
আলহামদুলিল্লাহ!
শত বিপদ ও কষ্টের ফলে আজ ঘুড়ে দাড়ালাম কিছুটা….! আপনাদের দোয়াই।

যাক আমি যখন খামার সেক্টরে আসি কাউকে পাইনি একটু কথা দ্বারা সাহায্য করবে।

কিন্তু আজ নতুন পুরাতন অনেক খামারীরা
বিভিন্ন ভাবে উপকৃত হচ্ছেন,,,
ডেইরী বিষয়ক বিভিন্ন ফোরামের মাধ্যমে।
আলহামদুলিল্লাহ!

বিষেষভাবে ধন্যবাদ জানাই যারা খামারীদের কথা দিয়ে হউক সাহস দিয়ে হউক, যারা খামারীদের কষ্টটা কিছুটা হলে ও বুঝে সেই সকল ভাইদের।

আর অনেকে খামারীদের ভালোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে…

শাহ ইমরান শাহ ভাই (আমরা ডেইরী ফামারস)

MD Shohel ভাই (ডেইরী নিভ’র আত্নকম’সংস্থান ও বেকারত্ব দূরীকরণ)

নাহিনূর রহমান ভাই #BMDFFS

আবু সানজিদাহ, Md Saiful Islam Rubel,
শাম ডেইরী ফাম’ এর রুহুল ভাই
(সততা ডেইরী এন্ড ফেটেনিং ফারমাস অফ বাংলাদেশ)
Al Amin Farmar #BDFF

জুলমত আলী

 

Please follow and like us:

About admin

Check Also

গবাদী পশুর ফার্ম লাভজনক করার উপায়

গবাদী পশুর ফার্ম লাভজনক করার জন্যে করনীয়..

গবাদী পশুর ফার্ম লাভজনক করার জন্যে করনীয়.. ১* খামার করার পূর্বেই সার্বিক বিষয় নিয়ে পরিকল্পনা করতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »