ফার্মে মাছি ও ইঁদুর ,মশা,জোক কেন হয়, কি কি রোগ ছড়ায় এবং করণীয় (বিস্তারিত)
মাছি কিভাবে ক্ষতি করে;
#খামারে_অত্যাধিক_মাছি_হবার_কারনঃ
১. মাছি ১৬-৪০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার মাঝে ভাল বংশবৃদ্ধি করতে পারে। ১২ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার নীচে এদের বংশবৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে এরা সক্রিয় হয় এবং বংশবৃদ্ধি ঘটায়।
তবে ৪৫ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডের উপর তাপমাত্রায় মাছির ডিম ও লার্ভা মারা যায়।
২. লিটার অব্যবস্থাপনাঃ ভেজা, স্যাঁতস্যাতে লিটার। দলা পাকানো লিটার।
পুরাতন লিটার খামারের পাশে রাখা।
পূর্বের ফ্লকের লিটার নতুন ফ্লকে ব্যবহার করা।
লিটার ট্রিটমেন্ট না করে ব্যবহার করা।
নিয়মিত লিটার উলোট-পালোট না করা।
৩.বর্ষাকালে বাতাসে জলীয়বাষ্প বেশী থাকার কারনে লিটার সহজেই স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যায়। যা মাছি উৎপাদনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে।
৪. খামারের কাছাকাছি পচনশীল বস্তু থাকলে। যেমনঃ মরা মুরগী খামারের কাছাকাছি ফেলে রাখলে, বিভিন্ন ফলের খোসা, ফলের অবশিষ্টাংশ খামারের কাছাকাছি ফেললে মাছির উপদ্রব বেড়ে যায়।
৫. মুরগীর পায়খানা নিয়মিত পরিষ্কার না করলে।
৬. মুরগী পাতলা পায়খানা করলে খামারে মাছি বেড়ে যায়।
৭.কক্সিডিওসিস হলেও খামারে মাছি বেড়ে যেতে পারে।
১. মাছি বিভিন্ন রোগের ভেক্টর বা বাহক হিসেবে কাজ করে।
২. রানীক্ষেত, ফাউল পক্স, সালমোনেলোসিস, ই-কোলাই ইনফেকশন, এন্টারাইটিস, লিউকোসাইটোজেনোসিস ইত্যাদি।
৩. কক্সিডিওসিসের জীবানু বহন করতে মাছি সাহায্য করে। এমন কি খাঁচায় পালন করা লেয়ার মুরগীতেও মাছির কারনে কক্সিডিওসিস হতে পারে।
৪. ফিতা কৃমি বা টেপ ওয়ার্ম ইনফেস্ট্রেশনের জন্যও মাছি দায়ী।
৫. ফার্মের বায়ো-সিকিউরিটির জন্যও মাছি হুমকিস্বরূপ।
৬. অনেক সময় ব্রয়লার বা লেয়ারের ভেন্ট বা পায়ু পথে ঘা হতে দেখা যায় এবং পরে সেখানে পোকা হয়ে যায়। এর জন্যও মাছি দায়ী। মাছি পায়ু পথে গিয়ে ডিম পারে। পরে ডিম থেকে লার্ভা ও পোকা সৃষ্টি হয়।
৮. অত্যধিক মাছি লেয়ার মুরগীতে বিরক্তির কারন হতে পারে। এর ফলে ডিম উৎপাদন হ্রাস পেতে পারে।
#মাছির থেকে বাঁচতে করনীয়ঃ
ক. ব্যবস্থাপনাগত প্রতিরোধঃ
১. লিটার পরিষ্কার ও শুকনো রাখতে হবে। ভেজা বা স্যাঁতস্যাঁতে লিটার দ্রুত পরিবর্তন করতে হবে।
২. মৃত মুরগী খামার থেকে দুরে মাটিতে পুতে ফেলতে হবে।
৩. মুরগীর পায়খানা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
৪. খামারের চারপাশ পরিষ্কার-পরিছন্ন রাখতে হবে। এবং নিয়মিত চুন, ব্লিচিং পাউডার ও জীবানু নাশক ব্যবহার করতে হবে।
৫. মাছির উৎস খুঁজে বের করতে হবে এবং তা ধ্বংস করতে হবে।
৬. পূর্বের ব্যাচের লিটার খামারে আশে পাশে না রেখে দুরে কোথাও ফেলে আসতে হবে।
খ. ক্যামিক্যাল ট্রিটমেন্টঃ
১. খামারের চারপাশে তারপিন তেল স্প্রে করতে পারেন। এটা মাছি তাড়াতে সাহায্য করবে।
২. ইনসেক্টিসাইড সম্বলিত বিভিন্ন প্রিপারেশন পাওয়া যায়। যেমনঃ SI Fly Trap-G, No Kroach ইত্যাদি। এগুলো নির্দিষ্ট মাত্রায় খামারের চারপাশে ছিটিয়ে দিলে মাছি (প্রাপ্তবয়স্ক) মারা যায়।
৩. (Cyromazine)(লার্ভাকিল,লার্ভোজিন ও লার্ভাডেক্স ১গ্রাম ১কেজি খাবারে ১৫ -৩০দিন) সম্বলিত বিভিন্ন প্রিপারেশন আছে।এগুলো ব্যবহার করলে মাছির ডিম ও লার্ভা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।
লবণ এবং ব্লিচিং পাউডার লিটারে দেয়া যায়
ন্যাপথালিন
নিম পাতা গুড়া করে লিটারে দেয়া যায়
রসুন
রসুন পেস্ট করে রস পানির সাথে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
লেবু এবং লবংগ
লেবু কাটার পর লেবুর ভিতরের লবংগের মাথাটা বাহিরে রেখে ঢুকিয়ে দিয়ে সেডের বিভিন্ন জ্যাগায় রেখে দিতে হবে।
পুদিনা পাতার রস
ইদুর;
##ইঁদুরের_অপকারিতাঃ
a. রোগ বিস্তার
b. অর্থনৈতিক ক্ষতি
Camphylobacteriosis
Mycoplasmosis
Infectious Coryza
Pasteurellosis
Hemorragic Enteritis
ND
LPAIV
HPAIV
Salmonellosis
Colibacillosis
২. কৃমি
Capillariasis
Ascariasis
Hymenolepiasis
৩. উঁকুন
Tick infestation
Mite infestation
Flea infestation
৪. খামারের বায়োসিকিউরিটির জন্য ইঁদুর সবচেয়ে বড় হুমকি।
#অর্থনৈতিক_ক্ষতিঃ
১. ইঁদুরের চলাচলের শব্দে মুরগী ভয় পেতে পারে ফলে মুরগীর ডিম উৎপাদন কমে যেতে পারে।
২. প্রতিটি ইঁদুর দৈনিক প্রায় ৩০ গ্রাম করে খাদ্য খেতে পারে। তাছাড়া এরা প্রচুর খাদ্য নষ্ট করে ও খাদ্যের উপর বিষ্ঠা ও মুত্র ত্যাগ করে খাদ্য দূষিত করে। ইঁদুর তাদের খাবারের চেয়ে ৫ গুন খাদ্য নষ্ট করে।
৩. । ইলেকট্রিক ক্যাবল, পানির পাইপ, ঘরের মেঝে ইত্যাদির ক্ষতিসাধন করে খামারের খরচ বাড়িয়ে দেয়।
৪. ইঁদুর ছোট মুরগীর বাচ্চাকে মেরে ফেলে ও ডিম খেয়ে ফেলতে পারে।
#খামারে_ইঁদুরের_সংখ্যা;
ইঁদুরের প্রজনন ক্ষমতা অত্যাধিক। এরা ২-৩ মাসেই প্রজনন ক্ষমতা লাভ করে।
স্ত্রী ইঁদুরের গর্ভধারন কাল মাত্র ২১-২৫ দিন। এবং এরা একসাথে ৮-১০ টা বাচ্চা প্রসব করে। স্ত্রী ইঁদুর বছরে প্রায় ১২ বার বাচ্চা প্রসব করার ক্ষমতা রাখে।
বাচ্চা মারা যাবার পরেও একটি স্ত্রী ইঁদুর থেকে বছরে ৬০-৭০ টি বাচ্চা পাওয়া যায়।
১. যদি খামারে ইঁদুর চোখে না পড়ে কিন্তু ইঁদুরের কোন চিহ্ন যেমন পায়খানা দেখা যায় তাহলে ১-১০০ টি ইঁদুর আছে।
২. যদি খামারে রাতে মাঝে মাঝে ইঁদুর দেখা যায় তাহলে খামারে ১০০-৫০০ টা ইঁদুর আছে।
৩. যদি প্রতি রাতে ও মাঝে মাঝে দিনেও ইঁদুর দেখতে পান তবে এটা নির্দেশ করে আপনার খামারে ৫০০-১০০০ টা ইঁদুর আছে।
৪. যদি প্রতিরাতে ও দিনের বেলাও ইঁদুর দেখতে পান তবে এটা নির্দেশ করে আপনার খামারে ৫০০০ এর উপর ইঁদুর আছে।
#ইঁদুর_নিধনে_করনীয়ঃ
#অবকাঠামোগতঃ
ক. ইঁদুর যাতে কোথাও বাসা বাঁধতে না পারে সেভাবে শেড নির্মান করতে হবে। সিলিং এর উপড়ে যাতে ইঁদুর প্রবেশ করতে না পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। শেডে সিলিং পার্মানেন্ট ভাবে না বানানো ভাল। সিলিং যাতে নিয়মিত পরিষ্কার করা যায় এমন ভাবে বানানো উচিত।
২. ঘরের মেঝে পাকা করে বানানো উচিত যাতে ইঁদুর গর্ত করতে না পারে। শুধু ঘরের ভিতরের মেঝে নয় ঘরের বাইরে চারপাশ জুড়ে ১.৫-২ ফিট পাকা করে দিতে হবে।
৩. ঘরের দরজা, জানালা, ভেন্টিলেটর ইত্যাদি ছিদ্রবিহীন হতে হবে।
৪. পোল্ট্রি খাদ্য মেঝেতে না রেখে মাচা বানিয়ে রাখতে হবে। এবং চতুর্দিকের দেয়াল থেকে একটু সরিয়ে রাখতে হবে।
#স্যানিটেশনঃ
১. খামারের চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। খামারের চারপাশে প্রায় ৩ ফুটের মাঝে কোন ঝোপ-ঝাড় রাখা যাবে না। আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
২. খামারে আশেপাশে কোন গর্ত রাখা যাবে না। গর্ত থাকলে তা মাটি দিয়ে ভরাট করে দিতে হবে
#ফাঁদঃ
১. ইঁদুর ধরার জন্য বিভিন্ন ফাঁদ ব্যবহার করা যেতে পারে। যে সমস্ত স্থানে ইঁদুরের উৎপাত বেশী (খাদ্য রাখার স্থান, গর্তের মুখ), সে সব স্থানে ফাঁদ বশিয়ে ইঁদুর ধরা যেতে পারে।
২. ঘরের ভিতরে ও বাহিরে প্রতি ৫০-১০০ ফুট দুরে দুরে ফাঁদ পেতে রাখতে হবে। এবং নিয়মিত ফাঁদ গুলোর অবস্থান পরির্বতন করে দিতে হবে।
#বিষ_প্রয়োগঃ
বিষ প্রয়োগেও ইঁদুর মারা যেতে পারে। এক্ষেত্রে পোল্ট্রি খাদ্য, রুটি, ধান, গম ইত্যাদির সাথে বিভিন্ন রকমের বিষ বা Rodenticide মিশিয়ে ইঁদুরের গর্ত সহ যেখানে এদের চলাচল বেশী সে সব স্থানে রেখে দিতে হবে।
সাধারনত দু’ধরনের Rodenticide পাওয়া যায়।
ক. Anticoagulant:
এগুলো রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। ফলে ইঁদুর অন্তঃ রক্তক্ষরনের কারনে মারা যায়।
যেমনঃ
১. Chlorophacinone
৪. Warfarin
৫. Brodifacoum
৬. Bromadiolone(রোমা ইয়ন কোম্পানী)
খ. Non-Anticoagulant:
১. Bromethalin:
এটি একটি neurotoxic agent. এটি central nurvous system কে depressed করে। ফলে ইঁদুর paralysis এ আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
২. Cholecalciferol:
এটা মুলত ভিটামিন ডি৩। যা ইঁদুরের জন্য Toxic. এটি রক্ত ক্যালসিয়ামের পরিমান বাড়িয়ে দেয় যার ফলে দেহে স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধা পায় ও মৃত্যু ঘটে।
৩. Zinc phosphaid:
ইঁদুর মারা বিষ হিসেবে এটা বহুল ব্যবহৃত হয়। যখন এই বিষ ইঁদুর খায় এটা ইঁদুরের পাকস্থলীতে বিদ্যমান HCl এসিডের সাথে যুক্ত হয়ে Phosphine গ্যাস নির্গত করে। ফলে paralysis, convulsion, coma সর্বোপরি অক্সিজেনের অভাবে ইঁদুরের মৃত্যু ঘটে।
লোকাল ব্যবস্থাপনা
যদি খড়ে ইঁদুর হয়
কালিজিরা ও লবণ স্তরে স্তরে ছিটিয়ে দিতে হবে।
গোল মরিচ ছিটানো যেতে পারে।
বিড়াল পালা যেতে পারে।
ফাঁদ দেয়া
পিঁপড়া হলে মসলা লং দিবেন
জোঁক হলে
ইউরিয়া সার ছিটিয়ে দিতে হবে।
তুঁতে ১গ্রাম ১লিটার পানিতে ছিটিয়ে দিতে হবে।
খামারে মশা ও মাছি তাড়ানোর অর্গানিক পদ্ধতিঃ
খামারে মশা ও মাছি তাড়ানো বাধ্যতামূলক আমাদের জন্যে।এদিকে শতকরা ৮০ ভাগ খামারীর কনোই নজর বা সচেতনতা নাই।কারন মশা ও মাছি হাজারটা রোগের বাহক।তাছাড়া পশুকে রাতে আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি না করে দিলে দুধ ও মাংসের উৎপাদন কম হবে।তাই বছরে আপনার মশা তাড়াতে কতো টাকা ব্যায় হচ্ছে।তাছাড়া কয়েলে রাসায়নিক পদার্থের ক্ষতি রয়েছে,অনেক সময় কয়েল থেকে আগুন লেগে খামার পুড়ে ছাই হতে পারে।
যাই হোক আপনি সহজেই মশা ও মাছি তাড়াতে নিচের পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।
(১)ধোঁয়া সৃষ্টি করে এমন শুকনা জিনিস যেমনঃকাঠের গুড়ো/কোকো পিট/শুকনা খড় বা কাঠ/শুকনা গোবর।যার যেটা সুবিধা হয়।
(২)শুকনা নিম পাতা/পুদিনা পাতা/চা পাতা।গুড়ো করে আগুনে জালিয়ে ধোঁয়া তৈরী করতে পারলে হলো মশার পালিয়ে যাবে।
আর যদি লিকুয়িড তরল স্প্রে করতে চান তবে রসুনকে বেটে ভালোভাবে গুলিয়ে পশুর শরীরে ও খামারের আশে পাশে স্প্রে করে দিন মশা পালিয়ে যাবে।কর্পুর গুলিয়ে স্প্রে করলেও মশা পালিয়ে যাবে।
মাছি তাড়াতে অর্গানিক পদ্ধতি ব্যবহারঃকমলা লেবুর খোশার শুকনা/পুদিনা পাতা/লবংগ মশলার গুরা/খামারের আশে পাশে ছিটিয়ে দিন।
অথবা কর্পুর গুরো করে ধোঁয়া দিন খামারে মাছি আসবেনা।অথবা গোল মরিচ গুরো করে পানিতে গুলিয়ে স্প্রে করুন মাছি আসবেনা।
যেটা আপনার সহজ হবে সেটা করবেন।
পুকুর পাড় ও ঘর ইঁদুরের যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে করনীয়!!
গত কয়েকদিনে মাছ চাষি ভাইয়েরা জানিয়েছেন ইঁদুরের অত্যাচারে তারা অতিষ্ট, পুকুরের পাড় গুলো ইঁদুর নষ্ট করের প্রতি বছর, আজ এক ভাই একই সমস্যার জন্য ম্যানশন করেছেন, নতুন পুরনো, মূল্যবান কিংবা সস্তা যাই হোক সব জিনিস সহজেই অচল করে দেয় ইঁদুর।সুযোগ পেলে ইঁদুর আপনার ক্ষতি করতে ছাড়বে না। তাই ইঁদুরকে প্রশ্চয় দেয়ার কিছু নেই। তাই ভাবলাম ইঁদুরের উপর একটি পোস্ট দেয়া যেতে পারে যাতে সবাই উপকৃ্ত হয়-
যা করবেন
১) ইঁদুর পুদিনার পাতা, পুদিনার তেল ও মেন্থলের গন্ধ একদম সহ্য করতে পারে না। তাই যদি ইঁদুর কে আপনার পুকুর পার থেকে বাইরে রাখতে চান তাহলে পুকুর পারের প্রতিটা কোণা ও ইঁদুর থাকার জায়গাগুলোতে পুদিনা পাতা রেখে দিন।
২) আপনার পুকুরের আশেপাশে যাতে ইঁদুর ঘোরাঘুরি করতে না পারে এর জন্য পুকুরের পারে চারপাশে পুদিনা গাছ লাগান।
৩) ইঁদুর থেকে মুক্তি পাওয়ার সব থেকে সহজ ও কার্যকর উপাদান হচ্ছে মানুষের চুল। চুল মুখে গেলে বা পায়ে জড়িয়ে গেলে ইঁদুরের মৃত্যু অবধারিত। তাই ইঁদুর তাড়াতে রাতের বেলা আপনার ঘরের মেঝেতে ও ইঁদুরের প্রিয় জায়গাগুলোতে চুল ফেলে রাখতে পারেন।
৪) ইঁদুর সমূলে মারতে অ্যামোনিয়া কাজে লাগাতে পারেন। কোন ইঁদুর যদি একবার অ্যামোনিয়ার ঘ্রাণ নেই তাহলে তার মৃত্যু নিশ্চিত। আপনার পুকুরের পারের ইঁদুরের আনাগোনা বেশী হওয়া জায়গাতে তরল অ্যামোনিয়া দিয়ে রাখুন।
৫) শুনে হাসি আসলে ও আপনাকে বিশ্বাস করতেই হবে যে ইঁদুর মারতে শুকনো গোবর খুব কাজের। কোন ইঁদুর যদি শুকনো গোবর খেয়ে ফেলে তবে তার মৃত্যু ঠেকানো যাবে না।
৬) ইঁদুর মারতে গোল মরিচের জুড়ি নেই। আপনার বাড়ির ইঁদুরের বাসস্থানে গোল মরিচ রেখে দেখুন ইঁদুর মরবেই। গোল মরিচের কটু গন্ধে শ্বাস নেওয়াতে ইঁদুরের ফুসফুসে আঘাত লাগায় এরা মারা যায়।
৭) ইঁদুর মারতে আপনি আপনার সু-পরিচিত মসলার অন্যতম উপাদান পেঁয়াজ ব্যবহার করতে পারে। ইঁদুরের গর্তের মুখে পেঁয়াজ কেটে রেখে দিন আর এতেই কাজ হয়ে যাবে।
৮) ২-৩ টি জ্যান্ত ইদুর ধরে ইদুরের পায়খানার রাস্তা বন্ধ করে ছেরে দিন, বাদ বাকি কাজ উরাই করে দিবে আপনার ভাবতে হবেনা, এই ইদুর পাগল হয়ে সব ইদুরকে কামরাবে আর সব ইদুর এই ইদুরের ভয়ে পুকুর থেকে পালাবে
৯) জিঙ্ক ফসফাইড শুটকী আর গমের সাথে মিশিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় দিন কাজ হয়ে যাবে,
১০) তেজপাতার ব্যবহার
তেজপাতা খুবই উপকারী একটি মসলা যা প্রত্যেকের ঘরেই রয়েছে। এই উপকারী মসলাটিও ইঁদুর থেকে বাঁচতে ব্যবহার করতে পারেন অনায়েসেই। তেজপাতাকে ইঁদুরেরা নিজেদের খাবার মনে করে। কিন্তু তেজপাতা খাওয়ার পর তারা এটি হজম করতে পারে না একেবারেই। তেজপাতা গুঁড়ো করে ছড়িয়ে রাখুন উপদ্রবের
স্থানগুলোতে কিছুদিনের মধ্যেই ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন।
১১) পিপারমিন্ট অয়েল
ইঁদুর পিপারমিন্ট অয়েল গন্ধ সহ্য করতে পারে
না, সেই সাথে পিপারমিন্ট অয়েলও অনেক কার্যকরী। এগুলর গন্ধ ইঁদুর একেবারেই সহ্য করতে পারে না। ঘরে পিপারমিন্ট অয়েল একটি তুলোর বলে লাগিয়ে ইঁদুরের উপদ্রবের স্থানে রাখলে বা ঘরে এমনিতেই ছড়িয়ে রাখলে ইঁদুরের উপদ্রব থেকে সহজেই
মুক্তি পেতে পারেন। যদি ঘরে পিপারমিন্ট অয়েল না থাকে তাহলে,
পুদিনা পাতা ছেঁচে অলিভ অয়েলে দিয়ে ফুটিয়ে নিন এবং ঠাণ্ডা করে ব্যবহার করতে পারেন।
১২) জৈবিক পদ্ধতিতে ইঁদুর দমন
শিয়াল, বেজি, বনবিড়াল, গুঁইসাপ, পেঁচা ইত্যাদি প্রাণী ইঁদুর মেরে থাকে। সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে এদের সংরক্ষণ ও বংশবিস্তারের সুযোগ করে দিয়ে প্রাকৃতিকভাবেই ইঁদুর দমন করতে হবে,
১৩) ইঁদুরের গর্তে মরিচ পোড়ার ধোঁয়া দিয়ে ইঁদুরকে মারার ব্যবস্থা করা;
১৪) গরম পানিতে গুরা মরিচ মিশিয়ে ইঁদুরের গর্তে দিন, কাজ হয়ে যাবে,
ইঁদুর আপনার সর্বনাশ করার আগেই ইঁদুরের সর্বনাশ করতে এই পদ্ধতিগুলো প্রয়োগ করুন।
Salah Uddin Sarker Tapan
Sarker AGRI Complex
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা পূরণ করার জন্য বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিকভাবে মুরগির উৎপাদন দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশে নিম্ন মধ্যম আয়ের কৃষক মুরগির খামারকে বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং এ শিল্প আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে গড়ে উঠছে। যদি মুরগির খামারের আশপাশে ময়লা আবর্জনা, বিষ্টা, মৃত মুরগি এসব থাকে যা ইঁদুর ও অন্যান্য পোকা মাকড়ের প্রধান আবাসস্থল। পরজীবী ও মাটির উপরে অবস্থানকারী উভয় ধরনের বালাই পোলট্রি পরিবেশে দেখা যায়। বহিঃপরজীবী জীব হলো মাইট, লাইস, ফ্লি ও টিকস এবং বহিভাগে অবস্থানকারী জীব হলো বিটল, ফ্লাইস, মথ, তেলেপোকাও ইঁদুর। মুরগির খামারের কাচা ভিটি, নোংরা পরিবেশ, নিকটস্থ ফসলের মাঠ ইত্যাদির কারণে এ সব জীব মুরগীর খামারের স্থানান্তরিত হয়ে অর্থনৈতিক ক্ষতি করে থাকে। এসব বালাইয়ের মধ্যে ইঁদুর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। ইঁদুর গর্ত তৈরি ও কাটাকুটি স্বভাবের মাধ্যমে মুরগির খামারের কাঠামো ক্ষতি করে। এরা ডিম, মুরগির বাচ্চা ও মুরগির খাবার খেয়ে ক্ষতি করে, তাছাড়া ইঁদুরের মলমূত্র ও পশম মুরগির খাবারের সাথে মিশে পরোক্ষভাবে ক্ষতি করে। তদুপরি মুরগি ও মুরগির বাচ্চা এবং খামারের কর্মীর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের রোগ বিস্তার করে।
মুরগির খামারে কয়েকটি প্রজাতির ইঁদুরের প্রকোপ দেখা যায় তা হলো
মাঠের কালো ইঁদুর, ছোট ব্যান্ডিকুট ইঁদুর/ছোট কালো ইঁদুর/ছোট ব্যান্ডিকুট/কালো ইঁদুর,গেছো ইঁদুর,ঘরের নেংটি ইঁদুর এছাড়াও ছুচো নামক বড় বড় নিসাচর ইদুর খামারের ক্ষতিসাধন করে থাকে।
মুরগির খামারের ইঁদুরের ক্ষয়ক্ষতি
ক. মুরগির খাবারের ক্ষতি
ইঁদুর মুরগির খাবার খায় এবং খাবার নষ্ট করে এবং যে পরিমাণ খায় তার চেয়ে বেশি নষ্ট করে থাকে। ১টি ইঁদুর তার শরীরের ওজনের তুলনায় ১০ শতাংশ খাবার খায় এবং প্রতিদিন ২৫ গ্রাম যা বছরের ৯.১ কেজি খাবার খায়, ইঁদুরের মলমূত্র ও পশমের মাধ্যমে মুরগির খাবার দূষিত করে।
খ. মুরগির ডিমের ক্ষতি
বিভিন্ন পর্যবেক্ষণে দেখা গিয়েছে, ইঁদুর দ্বারা ডিমের ক্ষতির পরিমাণ ০৫% এবং তা ১০% পর্যন্ত হতে পারে যদি সংরক্ষণের অবস্থা দুর্বল থাকে। ডিমের প্লাস্টিক ট্রে ও ইঁদুর কেটে নষ্ট করে। ইঁদুর প্রায়ই ৩০ দিন বয়স পর্যন্ত বাচ্চাকে আক্রমণ করে এবং প্রায় একটি খামারে ৫.৯% বাচ্চাকে মেরে ফেলে। ইঁদুর প্রায়ই মুরগিকে ভয় দেখায় ও কামড় দিয়ে থাকে এবং মুরগির ডিম পাড়া, বৃদ্ধি ও খাদ্য গ্রহণে প্রভাব ফেলে থাকে।
গ. অবকাঠামোর ক্ষতি
খামারের ঘর ও যন্ত্রপাতির নষ্ট করার মাধ্যমে বাস্তবিক পক্ষে ক্ষতি অনেক ব্যয়বহুল।
ইঁদুরের কাটাকুটি স্বভাবের জন্য মুরগির ঘর ও দেয়াল দুর্বল হতে পারে। তারা খাবারের পাত্র, পানির পাত্র কেটে নষ্ট করে। মুরগির খামারের মেঝেতে প্রচুর গর্ত তৈরি করে যা বর্ষাকালে ঘরে পানি ঢুকে এবং অবকাঠামো দুর্বল হয়ে পরে। ইঁদুর বৈদ্যুতিক ইনসুলেটর ও তার কেটে শর্টসার্কিট সৃষ্টির মাধ্যমে খামারের ক্ষতি করে থাকে।
ঘ. বিভিন্ন রোগের বাহক ও সংরক্ষক
ইঁদুর বিভিন্ন সংক্রামক রোগের বাহক ও সংরক্ষক হিসাবে কাজ করে । ইঁদুর প্রাথমিকভাবে মলমূত্র ও পশমের মাধ্যমে মুরগির খাবার সংক্রমিত হয়। ইঁদুর প্রায় ৬০ ধরনের বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে থাকে যা দ্বারা মুরগির ও খামার কর্মী আক্রান্ত হয়ে থাকে। ইঁদুর বিভিন্ন মুরগির রোগ যেমন- সালমোনেলোসিস, কলিব্যক্সিলোসিস, মাইকোপ্লাজমেসিস ইত্যাদি, ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত রোগগুলো হলো লেপটোসপাইরোস, টিউবারকোলোসিস, ফাউল কলেরা, ফাউল টাইফয়েড, এভিয়ান প্যারাটাইফয়েড, ভাইরাল ডিজিজ, ক্যাটল ডিজিজ, এবং প্রটোজোয়ান সংক্রমণ যেমন টক্সোপ্লাজমোসিস, কক্সিডোসিস এসব রোগ ছড়িয়ে থাকে। সবগুলো রোগ মুরগির ডিম, মাংস উৎপাদনের মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলে এ রোগ গুলোর মধ্যে সালমোনেলা ও ফাউল কলেরা মুরগির খামার উৎপাদনকারীদের জন্য একটি বড় দুশ্চিন্তার কারণ। বিভিন্ন প্রকার রোগের আক্রমণের ফলে প্রায়ই মুরগি মারা যায়। কাজেই ইঁদুর দ্বারা খাবার সংক্রমণ হওয়া কমানো এবং ইঁদুরের সংখ্য কমানোই হল মুরগির খামারির প্রধান কৌশল।
ইঁদুর দমন ব্যবস্থাপনা
ইঁদুর দমন ব্যবস্থাপনার জন্য যথাযথ পরিকল্পনা নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইঁদুর প্রত্যক্ষকরণ, ইঁদুরের মল, পায়ের চিহ্ন, গর্ত, চলাচলের রাস্তা, নতুন কাটাকুটির চিহ্ন এবং মৃত ইঁদুর লক্ষ্য করা ইত্যাদি তথ্যের মাধ্যমে ইঁদুরের উপস্থিতি বুঝা যায়। পরিদর্শনের মধ্যে ময়লার স্তূপ, ড্রেন, চ্যানেল, পাইপ, গর্ত, বৈদ্যুতিক বা টেলিফোনের তার দরজার মধ্যে ফাঁকা স্থান, পানির পাইপ ইত্যাদি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
ইঁদুর দমন
মুরগির খামারিরা ইঁদুরের আক্রমণ বা উপস্থিতি সম্পর্কে সচেতন নয় এবং পোলট্রি ও জনগণের স্বাস্থ্য বিষয় কমই নজর দিয়ে থাকে। তবে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা
ইঁদুর পরিষ্কার পরিবেশ পছন্দ করে না । খামারের যন্ত্রপাতি পরিষ্কার রাখা, আগাছা, আবর্জনার স্তূপ পরিষ্কার করে ইঁদুরের উপদ্রব কমানো যায়। খামারের আশপাশে গাছ ও গাছের ডালপালা কেটে পরিষ্কার রাখতে হবে যাতে ইঁদুর বাসা তৈরি করতে না পারে।
খামারে মেঝে ইটের কনক্রিট দিয়ে তৈরি করতে হবে দেয়াল এবং দরজার বড় ছিদ্র ও ফাঁকা বন্ধ করতে হবে। খামারের বাহিরের অংশ ঢালু রাখতে হবে যাতে ইঁদুর উঠতে না পারে।
ইঁদুরের প্রতিবন্ধকতা সব সময় কার্যকর নয় তখন দমন ব্যবস্থাপনা অন্যান্য পদ্ধতি বিবেচনায় আনতে হবে যেমন ফাঁদ ও রাসায়নিক পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে।
ফাঁদ (Trapping)
ফাঁদ হল একটি দ্রুত কার্যকরী এবং পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি, মুরগির খামারে ইঁদুর ধরার জন্য বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ ব্যবহার করা হয় সেগুলো হলো, গ্লু-ট্র্যাপ, মরণফাঁদ, জীবন্তফাঁদ এসব। সট্র্যাপ, গ্লু-বোর্ড সাধারণ কাডবোর্ড শিট বা প্লাস্টিক শিটের হয়ে থাকে যেখানে উচ্চ মাত্রার আঠা ব্যবহার করা হয় সেখানে ইঁদুর আটকে থাকে। গ্লু-বোর্ড নেংটি ইঁদুরের জন্য বেশি কার্যকর। ভিজা এবং ময়লা আবর্জনাযুক্ত জায়গায় গ্লু-বোর্ড দেয়া যাবে না।
মরণফাঁদ (Kill/snap trap)
এ ধরনের ফাঁদ কাঠের ও ধাতব পাতের হয়ে থাকে এ ফাঁদ সাধারণ, কম খরচ এবং কার্যকরী হয়ে থাকে যদি ভালোভাবে পাতা হয়। এ ধরনের ফাঁদ লেয়ার হাউসে ব্যবহার করা উচিত সেখানে মুরগির খাচার ভেতর নিরাপদে থাকে। ফাঁদ সাধারণত ইঁদুরের চলাচলের পথে এবং দেয়াল ঘেসে পাততে হবে কারণ ইঁদুর দেয়াল ঘেসে চলাচল করে। টোপ হিসেবে শুঁটকি মাছ, আলু, নারিকেল, পাউরুটি এসব ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
জীবন্তফাঁদ (Live trap)
জীবন্ত ইঁদুর ধরার জন্য এ ধরনের ফাঁদ ব্যবহার করা হয়। জীবন্ত ফাঁদের ইঁদুর ধরে এদের না মেরে ছেড়ে দেয়া যাবে না কারণ ছেড়ে দিলে ইঁদুরের হোম রেঞ্জের মধ্যে আবার খামারে চলে আসবে। এ জন্য জীবন্তফাঁদ কয়েক মিনিট পানিতে ডুবিয়ে রাখলে ইঁদুর মারা যাবে। জীবন্তফাঁদ ও ইঁদুরের চলাচলের রাস্তায় ও দেয়াল ঘেসে স্থাপন করতে হবে। তাছাড়া বাঁশের ফাঁদ, টিনের ফাঁদ নামে স্থানীয়ভাবে পাওয়া যাবে। ফাঁদ ব্যবহারে পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না এবং পরিবেশ দূষণ করে না।
রাসায়নিক পদ্ধতিতে দমন
রাসায়নিক পদ্ধতিতে ইঁদুর দমন হল সারাবিশ্বে সবচেয়ে পরিচিত এবং বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি। বড় খামারে এবং বাণিজ্যিকভাবে ইঁদুর দমনের জন্য রাসায়নিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। সারাবিশ্বে অনেক ইঁদুরনাশকের বিভিন্ন ফরমুলেশনের পরীক্ষা করা হয়েছে এবং ব্যবহার করা হচ্ছে। যখন ইঁদুরের সংখ্যা বেশি থাকে তখন বিষটোপ দিয়ে ইঁদুর দমন সবচেয়ে ভালো উপায়। ইঁদুর দমনের জন্য সাধারণত দুই ধরনের ইঁদুরনাশক ব্যবহার করা হয়।
১. তাৎক্ষণিক বা তীব্র ইঁদুরনাশক (Acute rodenticide) যেমন- অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড, জিংক ফসফাইড ইত্যাদি।
২. দীর্ঘমেয়াদি ইঁদুরনাশক (Chronic rodenticide) যেমন- ওয়ারফারিন, ব্রোমাডিয়োলন ইত্যাদি।
দীর্ঘমেয়াদি বিষটোপের মধ্যে একক মাত্রার বিষটোপ (ব্রোমাডিওলন, ব্রডিফেকাম এবং ফ্লোকোমাফিন) বহুমাত্রার বিষটোপ হতে বেশি কার্যকর এবং পৃথিবীব্যাপী বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ক. তীব্র/তাৎক্ষণিক ইঁদুরনাশক : তাৎক্ষণিক ইঁদুরনাশক দ্রুত কার্যকর এবং সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইঁদুর মারা যায়। দুটি অজৈব রাসায়নিক দ্রব্য এই ইঁদুরনাশকের অন্তর্ভুক্ত। তারা হলো বেরিনাম কার্বোনেট এবং জিঙ্ক ফসফাইড। তাদের মধ্যে ফসফাইড বেশি ব্যবহৃত হয়।
জিঙ্ক ফসফাইড : জিঙ্ক ফসফাইড ধূসর কাল রঙের। রসুনের মতো গন্ধ, পাউডার আকৃতি, সরাসরি জিঙ্ক ও ফসফাইড সমন্বয়ে গঠিত। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত তীব্র ইঁদুরনাশক। এটি পানি এবং অ্যালকোহলে অদ্রবণীয়। শুষ্ক অবস্থায় অপরিবর্তনীয়। আর্দ্র আবহাওয়ায় আস্তে আস্তে কার্যকরিতা কমে যায়। এ বিষ এসিড মাধ্যমে দ্রুত কার্যকরী হয়ে প্রাণঘাতী ফসফিন গ্যাসে পরিবর্তিত হয় যা স্তন্যপায়ী প্রাণীর জন্য খুবই বিষাক্ত। বিষটোপ সাবধানে সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে যেন মুরগি খেতে না পারে।
খ. দীর্ঘস্থায়ী ইঁদুরনাশক (Anticoagulants)
আস্তে আস্তে কার্যকরী সব ইঁদুরনাশক দীর্ঘমেয়াদি বিষের অন্তর্ভুক্ত। যা প্রাথমিকভাবে রক্ত জমাট বাধতে বাধা সৃষ্টি করে। এর সুবিধা হল এ যে এ বিষ প্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনকারী প্রজাতির উপর ভালোভাবে কাজ করে মেরে ফেলে এবং পরিমাণ ও কম লাগে।
সারাবিশ্বে পোলট্রি শিল্প ইঁদুর দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে এবং পোলট্রি উৎপাদনকারীদের অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে। পোলট্রি শিল্পে ইঁদুর দ্বারা অর্থনৈতিক ক্ষতির দিকে লক্ষ্য রেখে মুরগির খামারিদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে যাতে সমন্বিতভাবে ইঁদুর দমন করে এবং খাদ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন প্রতিরোধক পদ্ধতি ব্যবহার করার পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং বিভিন্ন ফাঁদ ও ইঁদুরনাশক প্রয়োগ করে ইঁদুর দমন করা। বিভিন্ন পদ্ধতির সমন্বয় করে সম্মিলিত উপায়ে ইঁদুর দমন করলেই মুরগির খামারে ইঁদুরের উপদ্রব কমানো সম্ভব।
Ilias IBn Rafiq