মুরগি ছাটাই,প্রয়োজনীয়তা এবং প্রভাব:
ছাটাই হচ্ছে দুর্বল,অনুৎপাদনশীল এবং রোগাক্রান্ত ইত্যাদি বৈশিষ্টের মুরগিকে ঝাক থেকে আলাদাকরে দেয়া.
প্রয়োজনীয়তা:১০০০ মুরগির প্রডাকশন যদি ৯০% হয়,খাবার যদি ১২০ গ্রাম করে খায়, তাহলে খাবার লাগবে ১২০ কেজি.
এর মধ্যে যদি ৩০ টা মুরগি ডিম না পারে,তাহলে ছাটাই করে দিলে, প্রডাকশন বাড়বে ৩% এবং খাবার কম লাগবে ৩০*১২০:৩৬০০ মানে ৩ কেজি ৬০০ গ্রাম মাসে হবে ১০৫ কেজি. দুই বস্তা খাবার কম লাগবে মানে ১৬০০টাকা করে হলে ৩২০০ টাকা.
তাছাড়া এসব মুরগি সহজে রোগাক্রান্ত হয় এবং ভাল মুরগির জন্য বিপদজনক,তাই মাঝে মাঝে মুরগি ছাটাই করা উচিত.
প্রডাকশন ছাড়াও গ্রোয়িং পিরিয়ডে মুরগি বাছাই করা উচিত.বাচ্চা আনার পর যদি দূর্বল,রোগা,কম ওজনের বাচ্চা দেখা যায় তাহলে সেগুলোকে বাতিল করে দিতে হবে।ইকলাই,সালমোনেলা,কক্সি আক্রান্ত কিছু বাচ্চা যদি থাকে তাহলে সেগুলো ভাল বাচ্চাতে জীবাণু ছড়ায় তাই সব সময় ই বাচ্চা দেখে দেখে বাতিল করতে হবে।অনেকেই মায়া করে অসুস্থ বাচ্চাকে রেখে দেয় এতে ফার্মের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাড়ায়।তাছাড়া ইউনিফর্মিটি নসদট হয়ে যায়।ইউনিফর্মিটি ভাল না হলে বিভিন্ন ধরণের রোগ ব্যাধি চলে আসে।
কোন কোন বৈশিস্ট্যের উপর ভিত্তি করে ছাটাই করা হবে তা নিম্নে দেয়া হল:
বৈশিস্ট্য
১.পেলভিক বোন:
খারাপ হলে হবে
ছোট,কোচকানো ও গোলাকার.শুষ্ক
ভাল হলে হবে
বড়,,মসৃন,ডিম্বাকার,আর্দ্র
২. তলপেট এবং কিলবোন
খারাপ
শক্ত,সংকুচিত,চর্বিযুক্ত, পেলভিকবোন ও বেস্টবোনের মাঝে ১-২ আংগুল ফাক,পেলভিক বোন কাছাকাছি.
ভাল
বেস্টবোন ও পেলভিক বোনের মাঝে ৪-৫ আংগুল ফাক এবং পেলভিকবোনের মাঝে ২-৩ আংগুল ফাক.
৩.ঝুটি
খারাপ
ছোট,শুকনো,ফ্যাকাশে ও পাতলা
ভাল
পুরু,উজ্জ্বল লাল,খাড়া
৪. স্বাস্থ্য
খারাপ
দুর্বল,ওজন কম
ভাল
চটপটে,ভাল ওজন
৫. মাথা
খারাপ
লম্বা,সরু এবং নিচু করে রাখে
ভাল
শক্ত,খাড়া,চওড়া,উপর দিক সমতল.
৬. মুখ মন্ডল
খারাপ
চামড়া পুরু
ভাল
পাতলা,টকটকে লাল ও আকর্ষণীয়.
৭. চক্ষু
খারাপ
ছোট,মাথার পিছনে ও নিচে অবস্থান
ভাল
বড়,সামনের দিকে অবস্থান,পিতল বর্ণ
৮. দেহ
খারাপ
সরু,
ভাল
সহজে বাকানো যায়
৯. পায়ু
খারাপ
গোলাকার চর্বিযুক্ত এবং মোটা আশযুক্ত
ভাল
পাতলা সমতল
১৮-১৯ সপ্তাহে ওজন কম হলে মুরগিগুলো বাতিল করতে হবে তানাহলে এগুলোর প্রলাপ্স হবে।
নিচের অংশটুকু লিখেছেন Dr shubo Datta (নারিশ পোল্ট্রি ফিড রন্ড হ্যাচারী)
পুলেটে_ফিঙ্গার_টেস্ট
“পুলেটের বয়স ২০ বা ২১ সপ্তাহ হয়ে গেছে।পুলেটের ওজনও মোটামুটি ভালই আছে।কিন্তু এখন পর্যন্ত ১% ডিমও পাওয়া যাচ্ছে না বা মুরগী প্রোডাকশনে আশার লক্ষনও দেখা যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় ডিমের প্রোডাকশন আনতে লাইট দেয়া যাবে কি যাবে না? লেয়ার লেয়ার ১ খাদ্য দেয়া যাবে কি যাবে না ইত্যাদি বিষয় নিয়ে খামারীরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকে। লেয়ার খামারীদের জন্য এটি খুবই সাধারন একটি সমস্যা।এই সমস্যা নিয়ে একান্ত নিজস্ব অভিজ্ঞতায় কিছু লিখার চেষ্টা করলাম। বিষয়টা কিছুটা জটিল হলেও আশাকরি অনেকের উপকার হবে।
লেয়ারের ক্ষেত্রে মুরগী কালিং করতে বা মুরগী প্রোডাকশনে আছে কি নেই সেটা পরীক্ষা করার জন্য আমরা খামারীদের পিন বোনে ফিঙ্গার টেস্ট করতে পরামর্শ দিয়ে থাকি।এ টেস্টে লেয়ার মুরগীর পিন বোন (হাড়) দুটির মাঝের দুরত্ব পরিমান করে বলে দেয়া যায় কোন মুরগী ডিম দেয় আর কোন মুরগী ডিম দেয় না।এই ফিঙ্গার টেস্ট যে শুধু মুরগী কালিং করতে বা ডিম পাড়া মুরগী সনাক্ত করতে কাজে লাগে তা নয়।পুলেট মুরগীর জন্যও এই টেস্ট খুবই গুরত্ব বহন করে।
#ফিঙ্গার_টেস্ট_কি
মুরগীর পায়ু পথের কিছু নিচে পেলভিক গার্ডলে মুরগীর দেহের দুপাশে দুটি পিন বোন (হাড়) থাকে। এই দুটি হাড়ের মাঝের দুরত্ব ফিঙ্গার বা আঙ্গুল দিয়ে পরীক্ষা করাকে ফিঙ্গার টেস্ট বলা হয়। এক্ষেত্রে এই দুটি হাড়ের মাঝে ফিঙ্গার বা আঙ্গুল প্রবেশ করে কিনা বা করলেও কয়টি ফিঙ্গার বা আঙ্গুল প্রবেশ করছে সেটা লক্ষ্য করে সিন্ধান্ত নিতে হয়।
#পুলেট_মুরগীতে_এই_টেস্টের_গুরত্ব
১. এই টেস্ট দ্বারা পুলেট মুরগী কবে নাগাদ প্রোডাকশনে আসবে তা জানা যায়।
২. তাছাড়া পুলেট মুরগীর খাদ্য ব্যাবস্থাপনা সম্পর্কেও ধারনা পাওয়া যায়।
৩. অালোক কর্মসূচী কবে থেকে শুরু করতে হবে সে সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। অালোর কারনে প্রোলাপস প্রতিরোধ করা যায়।
৪. প্রোডাকশন দেরীতে শুরু হবার সম্ভাবনা থাকলে আগ্রীম সতর্কতা গ্রহন করা যায়।
#কখন_এ_টেস্ট_করবেন
পুলেট মুরগীর ক্ষেত্রে ১৩ বা ১৪ সপ্তাহ বয়সে প্রথম এই টেস্ট করতে হবে। তারপর নূন্যতম প্রতি ১ সপ্তাহ পরপর এই টেস্ট করতে হবে। এভাবে যতদিন না পুরো ফ্লক প্রোডাকশনে আসে ততদিন এই টেস্ট করতে হবে এবং এই টেস্ট থেকে প্রাপ্ত ফলাফল পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিন্ধান্ত নিতে হবে।