গবাদীপশুর শুকানো খড় কেন খাওয়াবেন এবং কিভাবে খাওয়াবেনঃ
গবাদী পশুর খাবার শ্রেণীবিভাগ করলে
১.পেট ভরাবার জন্য খাদ্য
।২.সারবান খাদ্য এই দুটি ভাগেভাগ করা যায়।
এই খাদ্যের আবার দুটি ভাগ রয়েছে।(ক)নিরস খাদ্য(খ)সরস খাদ্য।
#নিরস খাদ্যঃ ধানের,গমের খড় এবং বিভিন্ন শ্রেণীর শুকনো ঘাসকে বুঝি।ঘাসের মধ্যে পড়ে বরবটি ,বারসিম,লুর্সাণ,ওটস ইত্যাদি। এছাড়া ভারতের কোন কোন রাজ্যে যব ও ভুট্টা গাছের শুকনো ডাল-পালা ও পাতাকে ঘাস হিসা গরুকে খেতে দেওয়া হয়।পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য ভুট্টা ও গেমা ঘাস সামান্য পরিমাণ জমিতে চাষ করে সেটা শুকিয়ে ঘাস হিসেবে গবাদিপশুদের খেতে দেওয়া হয়।
#খড়ঃ শুকনো খড় হলো গবাদীপশুর পেট ভরার জন্য খাদ্য। গবাদীপশুর পেট ভর্তি না হলে প্রথম পাকস্থলী কাজ করেনা।প্রথম পাকস্থলীতে কোন পাচক রস থাকেনা। তবে এমন কতগুলো জীবাণু থকে যারা ছিবড়ে জাতীয় খাদ্যকে কেবল হজম করতে সাহায্য করে।শুকনো খড়ের মধ্যে আমিষ জাতীয় কোন খাদ্য উপাদান থাকেনা। তবে কিছু পরিমাণে সুপাচ্য পুষ্টির উপাদান আছে। সে কারেণে পেটটি ভরিয়ে ফেলা ছাড়া আর কোন উপকার শুকনো ধান অথবা গমের খড়ের মধ্যে নেই।
#ধানের খড়েতে ক্ষার জাতীয় পটাশ ও অক্সালেটের পরিমাণ বেশী থাকে। অক্সালেটের অধিকাংশেই প্রথম পাকস্থলীতে পচে যায়। এছাড়াও পটাশ ও অক্সালেটের জন্য খাদ্যের ক্যালসিয়াম পরিপাকের ব্যাঘাত ঘটায়।
তবে খড়কে কিছু সময় পানিতে ভিজিয়ে রাখা যায় তাহলে পটাশ ও অক্সালেট পানিতে গুলে খড় থেকে বেরিয়ে যায়।
#সেজন্য গবাদীপশুর শুকানো খড় খায়ানোর আগে ৩/৪ ঘন্টা ঠান্ডা পরিষ্কার পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।এরপর আবার একবার পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে খেতে দিলে পটাশ ও অক্সালেটজনিত দোষ থাকেনা।
#গরুর ক্ষেত্রে ২ বৎসর বয়সের জন্য দৈহিক ওজনের শতকরা ৩ ভাগ এবং ২ বৎসরের অধিক বয়সের গরুর জন্য শতকরা ২ভাগ শুকনো খড় ৩ইঞ্চি করে কেটে এক রাত লালি/চিটাগুড় মিশ্রিত পানিতে ভিজিয়ে ২-৩ কেজি শুকনো খড় প্রতিদিন সরবারহ করতে হবে।
১০০লিটার পানিতে ৫ কেজি চিটাগুড়-এই অনুপাতে মিশ্রণে শুকনো খড়কে একরাত জিয়ে পশুকে সরবারহ করতে হবে এতে খড় সহজপাচ্য হয় এবং পশু মোটাতাজাকরণে সহায়ক হয়ে থাকেবে।(দুগ্ধজাত পশু পালন;অধ্যাপক কফিল উদ্দিন)
#২.সারবান খাদ্য/খাদ্যসরস খাদ্য।
.গবাদী পশুর সারবান খাদ্য/সরস খাদ্য।
সরস খাদ্য বলতে আমরা কাঁচা ঘাসকে বুঝি।এটাকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয়-
(ক)সাধারণ ঘাস যা গবাদী পশু মাঠে চরে খায়।
(খ)শাক-সজির পাতা এবং লতা গুল্ম শ্রেণীর গাছপালা।
(গ)সাইলেজ পদ্ধতিতে সংরক্সণ করা খাদ্য।
(ঘ)শিম জাতীয় ও বিভিন্ন প্রকার চাষযোগ্য ঘাস।এরমধ্যে পড়ে নেপিয়ার ঘাস,প্যারাঘাস,
লুর্সাণঘাস,জোয়ার,ভুট্টা,গেমা,টিওসিনটি,গাই-মুগ, বারসীম বিশাল-সিম, মটরশুঁটি, বরবটি, ওটস, প্রভৃতি। এসব গবাদীপশুর খুবই পুষ্টিকর খাদ্য এবং ওদের শরীর রক্ষার জন্য একান্ত প্রয়োজন। শাক-সবজি বলতে কাটা নোটে, গাজর গাছ বাঁধাকপি ফুলকপির পাতা, লালআলুরগাছ, লাউ এবং কুমড়ো শাকের বড় পাতা ইত্যাদি।
#কাঁচাঘাস কিভাবে খেতে দেবেনঃ প্রতিদিন ৬-৮ কেজি তাজা ঘাস বা শস্য জাতীয় তাউদিএদর উপজাত দ্রব্য সরবরাহ করতে হবে। তাঁজা ঘাসের ক্ষেত্রে উন্নতমানের ঘাস যথা-নেপিয়ার, পারা, জার্মান ইত্যাদি বা দেশজ মাটি কলাই, খেসারি, দুর্বা এই সব ঘাস সরবরাহ করতে হয়।(দুগ্ধজাত পশু পালন;অধ্যাপক কফিল উদ্দিন)
(বিঃদ্রঃ ছাগলের ক্ষেত্রে আমরা-নেপিয়ার, পারা, জার্মান ইত্যাদি ঘাস খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে বলবো কারণ এই গুলি ছাগলের কোন উপকার বাস্তব অভিজ্ঞতায় পাইনি বরং ক্ষতির দিকটি উপলদ্ধি করেছি;তারপরও খাওয়ানো না খাওয়ানো আপনাদের ব্যাক্তিগত ব্যাপার
এম এ ইসলাম