কাউ পক্স/ওলানে বসন্ত
Cow pox/Udder pox
গবাদিপশুর ভাইরাস জনিত রোগের মধ্যে ওলানে বসন্ত/কাউ পক্স হওয়া এটি একটি Common সমস্যা। প্রায়ই দেখা যায় দুগ্ধবতী গাভীর ওলানে, বাটে, বাটের ছিদ্রে, বুকে বা পেটের নিচে ছোট ছোট ফুসকি উঠতে।
মুলত এই রোগটিকে কাউ পক্স বা ওলানে বসন্ত (Cow pox/ Udder pox) রোগ বলা হয়।
প্রথম দিকে ফুসকি পানি বা পুজসহ দেখা দিলেও পরবর্তিতে শক্ত ও কালো হয়ে যায়। আক্রান্ত ওলানে বাছুর দুধ খাওয়ার মাধ্যমে বাছুরের মুখের চারপাশও এই বসন্ত হয়ে থাকে।
আক্রান্ত গাভী থেকে দুধ দোহন কারীর হাতের মাধ্যেম সুস্থ গাভীতে এ রোগ সংক্রামিত করে থাকে।
এ রোগের একমাত্র কারন হলো Viroola Vaccina নামক ভাইরাস। রোগটি অতি ছোঁয়াচে হওয়ায় এর সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারনা জানা জরুরী।
লক্ষণ
১. আক্রান্তের প্রথম দিকে ওলানে ছোট ছোট ফোস্কা পরতে দেখা যাবে।
২. ফোস্কা গুলোতে পানি বা পুজ এবং মামড়ি হবে।
৩. পরবর্তিতে বাটে কালো স্পট দেখা যাবে এবং ফোস্কা গুলো শক্ত হয়ে যাবে।
৪. দুধ দোহনের সময় ব্যাথা অনুভব করবে এবং দোহনকারীর দোহনে অসুবিধা হতে পারে।
৫. বাটের ভিতরে পক্স উঠলে বেশির ভাগ সময় বাট বন্ধ হয়ে যেতে পারে।।
৬. অনেক সময় ব্যাথার কারনে জ্বর হতে পারে এবং খাবার রুচি কমে যেতে পারে।
৭. গাভী বাচ্চা কে দুধ খাওয়ানোর সময় অস্থিরতা বা ছটপট করতে পারে।
৮. দুধের উৎপাদন কমে যেতে পারে।
সম্ভাব্য ব্যবস্থা
কাউ পক্স/ওলানে বসন্ত রোগটি ভাইরাস জনিত হওয়ায় এর সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই।
তবে ভাইরাস জনিত রোগের দ্বিতীয় পর্যায়ে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমন প্রতিরোধ,
যেমন বসন্ত (Pox) এর ব্যাপক আকার ধারন রোধে এবং দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য একজন রেজিস্টার ভেটেরিনারিয়ানের পরামর্শ অনুযায়ী নিন্মলিখিত ব্যবস্থা গ্রহন করা যেতে পারে।
® স্ট্রেপটোমাইসিন ও পেনিসিলিন জাতীয় ঔষধ যেমন inj: Streptopen vet 2.5mg (Renata) দৈহিক 50kg b wt/2-3ml হিসাবে গভীর মাংশপেশীতে দিতে হবে ৩-৫ ডোজ।
গর্ভাবস্থায় বিপদজ্জনক।
অথবা
® সালফাডিমিডিন গ্রুপের inj: Diadin vet 100ml (Renata) দৈহিক 50kg b wt/15ml হিসাবে মাংশে প্রথম দিন এবং ২য় দিন থেকে এর অর্ধেক মাত্রা প্রযোজ্য। এভাবে ৩-৫ ডোজ দিতে হবে।
® Ointment- Betnovet or Nebanol এর যে কোন একটি ক্রীম দিনে ৩-৪ বার আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে।
® বাঁটে ক্ষতের সৃষ্টি হলে বাচ্চাকে দুধ খেতে দেওয়া বন্ধ রাখতে হবে এবং ক্ষত স্থানে দিনে ২ বার জীবানুমুক্ত করা প্রয়োজন।
প্রতিরোধ
গবাদিপশুর বাসস্থান নিয়মিত জীবানুমুক্ত রাখতে হবে।
দোহনকারীকে এক খামারে দুধ দোহন করে অন্য খামারে দোহনের পুর্বে হাত জীবানুমুক্ত করে নিতে হবে।
সংক্রমন রোধের জন্য আক্রান্ত গাভীকে সবার শেষে দোহন করতে হবে।
লেখক শাম ডেইরী ফারম