কমার্শিয়াল ছাগল বা ভেড়ার ফার্ম
কমার্শিয়াল বা বাণিজ্যিক ফার্ম অনেকেই করছেন বা শুরু করবেন তাদের উদ্দেশে কিছু এডভান্স লেভেল এর উপদেশ
কমার্শিয়াল ফার্ম এ প্রথম কথা হলো কম খরচে বেশি মুনাফা। সে ক্ষেত্রে প্রাথমিক ইনভেস্টমেন্ট বেশি হবে। যার কিছু মূল বিষয় আছে তা নিম্ন বর্ণিত:
১. আধুনিক শেড (লেবার খরচ কম হবে)
২. খাদ্য নিজেকে প্রোডাকশন করতে হবে
৩. ভালো জাতের পাঠা থাকতে হবে
৪. ভালো জাতের পাঠি বাছাই করে কিনতে হবে
৫. সারা বছর কৃমি ওষুধ নির্দিষ্ট সময় পর পর দিতে হবে
৬. খামারে প্রোডাকশন রেকর্ড রাখতে হবে
৭. ভ্যাকসিন নিয়মিত দিতে হবে
৮. সঠিক সময় গাভিন করতে হবে
৯. বাচ্চার মৃত্যুর হার কমাতে হবে
১০. দ্রুত ওজন বৃদ্ধি ও সঠিক সময় বিক্রয় উপযুক্ত করতে হবে
১. আধুনিক শেড (লেবার খরচ কম হবে) :
ষ্টল ফিডিং শেড বানাতে হবে যেখানে ছাগল ফ্রি ভাবে ঘুরে বেড়াবে গলায় কোনো দড়ি থাকবে না। এই পদ্ধতিতে ছাগল সব সময় মাচা থাকবে মাঝে মধ্যে নির্দিষ্ট উঠান বা padock এ ঘুরে বেড়াবে। এতে ছাগলের রোগ বালাই কম হবে এক group এ ১০ টি করে থাকবে তাতে প্রতিটা ছাগল কে close মনিটর করা যাবে। গাভিন করতে গেলেও সহজে করা যাবে। পাঠা কে ওই গ্রুপ এ ছেড়ে দিলে সব গুলাকে ক্রস করানো যাবে যাতে অন্য গ্রুপ এর ছাগী গাভিন হবেনা এতে inbreeding এড়ানো যাবে এবং ব্রিডিং রেকর্ড রাখা যাবে। এই ধরণের শেডে একসাথে ২০০ ছাগল রাখা যাবে যার জন্য ২ জন মানুষ যথেষ্ট। লেবার কস্ট কম পড়বে। গ্রুপ ধরে যেকোন treatment ভ্যাকসিন দেয়া অনেক সহজ হয়।
২. খাদ্য নিজেকে প্রোডাকশন করতে হবে
corn silage ও legume Hay এর বিকল্প নাই commercial ছাগল ও ভেড়ার ফার্ম এ। এতে একমাত্র খাবার খরচ কমানো যায়। প্রতিদিন ২ থেকে ৫ কেজি corn silage ও ০.৫ থেকে ১ কেজি legume hay দিলে দানাদার খাবার না দিলেও চলবে। নিজে জমি লিজ নিয়ে করতে পারলে এতে খাবার খরচ অনেক কমে যাবে।
৩. ভালো জাতের পাঠা থাকতে হবে:
একটা পাঠা একটা ফার্ম এর ভিত্তি। একটা পাঠি বছরে ২ থেকে ৪ টা বাচ্চা দেয় কিন্তু একটা পাঠা বছরে ৫০ থেকে ৮০ টি বাচ্চা প্রোডাকশন দেয় এবং তাদের প্ৰডাকশন এর জন্য সরাসরি দায়ী। তাই পাঠা যদি কোনো কারণে জেনেটিক সমেস্যা থাকে তা ওই ফার্ম কে ধংস করার জন্য যথেষ্ট এবং যত প্রোডাকশন হবে ওই পাঠা দিয়ে সব গুলোতে ওই সমেস্যা থেকে যাবে। পাঠা নির্বাচনে নিম্ন বর্ণিত বিষয় গুলো দেখা খুব জরুরি।
১. পাঠা জন্ম ওজন
২. জন্মের সময় কয়টি ভাই বোন হয়েছিল।
৩. জন্মের সময় কোনো জটিলতা ছিল কিনা মায়ের
৪. ৩ মাসের সময় তার ওজন কতটুকু ছিল ও ১ বছর বয়সে কত হলো
৫. তার মায়ের রেকর্ড কয়টি করে বাচ্চা দেয়। প্রথম গাবিন কত বছর বয়সে হয়েছে
৬. পাঠার বাবা মায়ের ৩ পুরুষের রেকর্ড যদি সম্ভব হয় সাথে ছবি যদি থাকে ( শুধু ইমপোর্টেড সিমেন বা পাঠার ক্ষেত্রে পাওয়া যাবে তাই pedigree কনফার্ম করে সিমেন দিবেন )
৭. পাঠার বুকের দিকে যত চওড়া হবে তার immunity সিস্টেম তত ভালো হবে রোগ বালাই তত কম হবে। দীর্ঘ ও প্রস্থ যত বেশি হবে তত মাংস বেশি হবে। অন্ডকোষ বড় ও চওড়া ও সমান হতে হবে।
৮. মুখের গড়ন ঠিক হতে হবে। নিচের চোয়াল ও উপরের পাটি যেন সমান হয়। নিচের চোয়াল কখন ছোট বা বড় হতে পারবেনা। তাতে তারা মাঠে চরে খেতে পারবেনা।
৪. ভালো জাতের পাঠি বাছাই করে কিনতে হবে
১. পাঠির জন্ম ওজন
২. জন্মের সময় কয়টি ভাই বোন হয়েছিল।
৩. জন্মের সময় কোনো জটিলতা ছিল কিনা মায়ের
৪. ৩ মাসের সময় তার ওজন কতটুকু ছিল ও ১ বছর বয়সে কত হলো
৫. তার মায়ের রেকর্ড কয়টি করে বাচ্চা দেয়। প্রথম গাবিন কত বছর বয়সে হয়েছে
৬. পাঠির বাবা মায়ের ৩ পুরুষের রেকর্ড যদি সম্ভব হয় সাথে ছবি যদি থাকে।
৭. পাঠার বুকের দিকে যত চওড়া হবে তার immunity সিস্টেম তত ভালো হবে রোগ বালাই তত কম হবে। দীর্ঘ ও প্রস্থ যত বেশি হবে তত মাংস বেশি হবে। গলা লম্বা ও শুরু এবং পিছনের দিক ভারী হবে। পিছনের পা দুটির দূরত্ব যত বেশি হবে তত ভালো। পাঁজরের হার এর দূরত্ব যত বেশি হবে তত ভালো। পেট এর গভীরতা বেশি হলে বাচ্চা বড় ও বেশি ধারণ করতে পারবে।
৮. মুখের গড়ন ঠিক হতে হবে। নিচের চোয়াল ও উপরের পাটি যেন সমান হয়। নিচের চোয়াল কখন ছোট বা বড় হতে পারবেনা। তাতে তারা মাঠে চরে খেতে পারবেনা।
৫. সারা বছর ক্রিমি ওষুধ নির্দিষ্ট সময় পর পর দিতে হবে:
প্রতি ৩ মাস পরপর ক্রিমি নাশক ব্যবহার করতে হবে। একএক বার এক এক গ্রুপ ব্যবহার করতে হবে আর বাচ্চাদের প্রতি মাসে একবার ৬ মাস পর্যন্ত। মাঝে মধ্যে পায়খানা ল্যাব টেস্ট )fecal test) এ পাঠাতে হবে এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে।
৬. খামারে প্রোডাকশন রেকর্ড রাখতে হবে
এটা খুব জরুরি। প্রতিটি ছাগল কে ear tag করে তার জন্ম তারিখ, জন্মের সময় ওজন, কয় ভাই ও বোন ( তাদের ও রেকর্ড ) ৩ মাসে কতটুকু ওজন হলো, ভ্যাকসিন কি কি দেয়া হলো, ক্রিমি নাশক কবে দেয়া হয়েছিল, বাবা কে মা কে ইত্যাদি।
৭. ভ্যাকসিন নিয়মিত দিতে হবে :
PPR, FMD, ET ( এন্টারোটক্সিমিয়া ), CL বা cheesy gland, phenomena, এনথ্রাক্স ও বাদলা ভ্যাকসিন দিতে হবে।
৮. সঠিক সময় গাভিন করতে হবে :
সঠিক সময় গাভিন না হলে বিসনেস লস হবে সে ক্ষেত্রে পাটি বাচ্চা বয়স ২ মাস হলে এক্সট্রা দানাদার খাবার দিয়ে বডি কন্ডিশন ৪ এ নিতে হবে সাথে মিনারেল ও ADE৩ দিতে হবে। তাও যদি না হয় হরমন ব্যবহার করে গাভিন করতে হবে। প্রতি ৮ মাসএ বাচ্চা প্রোডাকশন করতে হবে নইলে লস হবে।
৯. বাচ্চার মৃত্যুর হার কমাতে হবে :
এই ক্ষেত্রে প্রথম যেটা করতে হবে গাভিন সময় মাকে দানাদার খাবার শেষ ২ মাস বাড়াতে হবে। জাত ভেদে ৩০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি দিতে হবে যাতে বাচ্চা বড় হয় ও মা এর দুধ প্রোডাকশন বেশি হয়। বাচ্চার ওজন ১ কেজি থেকে ৪ কেজি জন্ম ওজন হতে হবে জাত ভেদে ব্ল্যাক বেঙ্গল ১kg বোয়ার ৪ কেজি প্লাস হতে হবে। জন্মানোর সাথে সাথে শাল দুধ খাওয়াতে হবে। ১৫ দিন হলে hay ও কিছু দানাদার সবসময় সামনে রেখে দিতে হবে যাতে দ্রুত খাবার ধরে। ১ মাস হলে ক্রিমি নাশক দিতে হবে। বাচ্চাদেরকে রাতে একসাথে রাখলে এক কোনায় একটা বালব দিতে হবে শীত কালে যাতে ঠান্ডা না লাগে। বাচ্চাদের মৃত্যু হার বাড়ার ৩ তা প্রধান কারণ আমরা শনাক্ত করেছি। ১ ক্রিমি, ২ Phenomena ও এন্টেরোটক্সিমিয়া।
১০. দ্রুত ওজন বৃদ্ধি ও সঠিক সময় বিক্রয় উপযুক্ত করতে হবে
ভালো জেনেটিক্স ও সঠিক খাদ্য ব্যবস্থা এর বিকল্প নাই।
SR ফার্মস
সভাপতি BGSFA