Breaking News
গর্ভপাত কি,কেন হয়
গর্ভপাত কি,কেন হয়

এবোরশন ও অনুর্বরতা INFERTILITY কি? কেন হয়?বিস্তারিত

পাঠ ১।

#এবোরশন (abortion) কি? কেন হয়?
#এমব্রায়ো ডেথ ( embryo death) কি? কেন হয়?

এবরশন(abortion):
সহজ ভাবে বলা হলে, জরায়ু থেকে ভ্রুণ বের হয়ে যাওয়া যেটার জীবিত থাকার সম্ববনা থাকে না। তাকে এবোরশন বলে।

এবোরশন ২ ধরনের হয়ে থাকে,

১.Early abortion ( কনসিভ করার ১০ থেকে ২০ সপ্তাহ এর মধ্যে)

ক্যাম্পাইলোব্যাক্টেরিওসিস(placentitis,bronchopneumonia)

Trichomoniasis(2-4month)placentitis and bronchopneumonia)

২.Late abortion ( কনসিভ করার ২০ থেকে ৩০ সপ্তাহ এর মধ্যে)।

ব্রুসেলোসিস( Fibrinous serositis,placentitis,bronchopneumonia)

listeria monocytogenes(8-9 month).placentitis.

Infectious bovine rhinotracheitis( 5-9month) necrosis of liver and lung.

leptospirosis (6-8 month,placentitis,yellowish cotyledon)

এমব্রায়ো ডেথ্(Embryo death) :
জরায়ুর ভেতরে ভ্রুন মারা গেলে তাকে এমব্রায়ো ডেথ বলে।

#এবোরশন ও এমব্রায়ো ডেথ্ হওয়ার কিছু কারন(non infectious causes):

★ অজানা জেনেটিক্স ফ্যাক্টর, যার ফলে সেই গাভির ক্রমাগত পর পর এবোরশন হয়।

★ভিটামিন A, E, সেলেনিয়াম( se), আয়রন এর অভাবে।

★ অতিরিক্ত গরমের কারনে High maternal temperature হয় ফলে এমব্রায়ো মারা যায়।

★ অসাবধানতা বশত আঘাতে বা অপরিকল্পিত ভাবে গাভিন গরু পরিবহণ করে আনা- নেওয়া করা।

★মাইকো টক্সিন ( mycotxin) : যা খাবের সাথে গাভিতে প্রবেশ করে, ইদুরের বিস্টা ও জুটাতে, ছএাক, ফাংগাস,, ইত্যাদির মাধ্যমে হ্মতিকর টক্সিন প্রবেশ করে।

★ হ্মতিকর টক্সিন ঘাস যা আমরা ঝোপ ঝাড়, জঙ্গল থেকে এনে গাভীকে দেই,, এ সব অচেনা ঘাসে এলকালয়েড থাকে যা এবোরশনের জন্য দ্বায়ী।

★ নাইট্রেট এর উপস্হিতি।

উপরোক্ত কারন গুলোর সমাধান করলে গাভিকে এবোরশন হতে বাচানো সম্ভব.

ধন্যবাদান্তে
ডাঃ আজহার

পাঠ ২।

গর্ভপাত কেন হয়? এর একাধিক কারণ রয়েছে।

একটি গাভী যখন বীজ কনসেপ্ট করে গর্ভ ধারণ করে ৩ মাস……. ৬,৭,৮,৯ মাসে গর্ভপাত ঘটায় তা আসলে দুঃখ জনক।
কারণ

১।বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস এর কারনে গর্ভপাত ঘটে যায়।

২।গাভী গাভীন হলে যদি খুরা রোগ দেখা দেয় সেই সময়ে ও গর্ভপাত ঘটে থাকে, অনেক সময় দেখা যায় বাচ্চা জীবিত প্রসব করলে পরে মারা যায়।

৩।কিছু কিছু ইনজেকশন গর্ভকালে ব্যবহার করলে ও গর্ভপাত ঘটতে পারে।

যেমনঃ  অক্সিটোসিন,জেন্টামাইসিন, পেনিসিলিন, ডেক্সামেথাসন এই ধরণের ইনজেকশনের কারণে হতে পারে।

৪।গর্ভবতী গাভী বিষক্রিয়ার কারণে ও গর্ভপাত ঘটে থাকে।

৫।গাভীর শরীলে পুষ্টির অভার থাকলে ভিটামিনের ঘাটতি হলে ও স্বাস্থ্যহীনতা দেখা দিলে ও গর্ভপাত ঘটে থাকে।

৬।গর্ভকালে কৃমিনাশক ঔষুদ/অন্যান্য মেডিসিন খাওয়ালে যদি গাভী লাফালাফি করে জোরাজোরি করে ঔষুদ খাওয়ানো হয় সেই সময়ে গর্ভপাত ঘটে যেতে পারে।
গর্ভপাত হওয়ার এই কারণটি বিভিন্ন এলাকাতে দেখা যায়।

৭।গর্ভকালে গাভীকে গাড়িতে উঠানামা করলে অথবা গাভী পড়ে গিয়ে আচার গেলে ও দৌড়াদৌড়ি করলে গাভীকে কোন লাঠি বা বেত দিয়ে আঘাত করলে ও গর্ভপাত ঘটে যেতে পারে।

৮।রৌদ্রে সারাদিন বেঁধে রেখে গাভী যদি অতিরিক্ত পানি পিপাসা লেগে থাকে সেই সময় যদি প্রতিদিনের তুলনায় অতিরক্ত পানি খেয়ে থাকে সেই সময় সমস্যা হতে পারে

প্রতিরোধ
উপরোক্ত বিষয় গুলো খেয়াল রেখে মেনে চলবেন পাশাপাশি খামার পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রেখে জীবাণুমুক্ত রাখবেন ।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ গর্ভপাত ঘটলে গাভীকে পরপর নূন্যতম ২টি হিট মিস করে ৩য় হিটে বীজ/পাল দিবেন তবে আশা করা যায় উক্ত সমস্যাটি হবে না ইনশাআল্লাহ্।

মোঃ জুলমত আলী

পাঠ ৩।

গর্ভপাত
ABORTION

স্ত্রী গবাদিপশুর ব্যাপক হারে প্রজনন রোগ দেখা দিয়ে থাকে। তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো গর্ভপাত (Abortion) হওয়া।

যা অন্যান্য পশুর চেয়ে গরুতেই বেশি লক্ষ করা যায়।

এই প্রজনন তন্ত্র রোগে গাভীর মৃত্যুর হার কম হলেও অর্থনৈতিক ভাবে ব্যাপক ক্ষতির সমুঙ্খীন হতে হয়।

যে সময়ে বাচ্চা প্রসব হওয়া উচিত, তার আগেই জরায়ু থেকে বাচ্চা বের হওয়াকে গর্ভপাত (Abortion) বলা হয়।

এসব বাচ্চা মৃত অবস্থায় ভুমিষ্ট হয় অথবা ভুমিষ্ট হওয়ার পর মারা যায়।

কারন

১। গর্ভাবস্থায় গাভীতে ব্রুসেলোসিস, ট্রাইকোমোনিয়াসিস রোগ-জীবানুর সংক্রমণ গর্ভপাতের প্রধান কারন। ট্রাইকোমোনিয়াসিস এর লিংক স্ট্রেপটোক্কাই, স্ট্রেফাইলোক্কাই, করিনোব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক এর আক্রমন অনেক সময় গর্ভপাত ঘটিয়ে থাকে।

এছাড়াও গলাফুলা, লেপ্টোস্পাইরোসিস, ক্ষুরা রোগ প্রতেক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে গাভীর গর্ভপাত ঘটিয়ে থাকে।

২। গর্ভাবস্থায় পটাশিয়া আয়োডাইড, এন্টিমনী এবং কিছু কিছু কৃমিনাশক ইনজেকশন দিলে গর্ভপাত হতে পারে।

এছাড়াও প্রোষ্টাগ্লানডিন, অরাডেক্সসন, পেনিসিলিন, জেন্টামাইসিন, স্ট্রেপ্টোমাইসিন, ডেক্সামেথাসন, প্রেডনিসোলন এন্টিবায়োটিক মেডিসিন প্রয়োগ করলে গর্ভপাত হয়ে থাকে এবং অক্সিটোসিন জাতীয় ইনজেকশন এবং ভিটামিন এডি৩ই ইনজেকশন প্রয়োগ করলে গর্ভপাত হতে পারে।

৩। রাষায়নিক ও ভেষজ দ্রব্য যেমন…. পটাশিয়াম নাইট্রেট, আর্সেনিক, সীসা, তাম্র, ক্লোরিনেটেড হাইড্রোকার্বন প্রভুতির বিষক্রিয়ায় গর্ভপাত হয়ে থাকে।

গর্ভবতী গাভীকে অতিরিক্ত পিপাসায় মাত্রাতিরিক্ত পানি পান করানোর ফলে গর্ভপাত হতে পারে।

৪। পুষ্টির অভাব হলে খাদ্যে ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং স্বাস্থ্যহানির কারনে গর্ভপাত অথবা দুর্বল বা মৃত বাচ্চা হতে পারে।

এছাড়াও শারীরিক আঘাত গর্ভাবস্থায় আছার খেয়ে পরা, অতিরিক্ত লাফালাফি, গাড়িতে স্থানান্তর করা গর্ভপাতের কারন হতে পারে।

লক্ষন

> গর্ভকালের প্রথম দিকে অগোচরেই গর্ভপাত হয়ে যায় এবং গর্ভকালের শেষের দিকে হলে স্বাভাবিক লক্ষনের মতই লক্ষন প্রকাশ পাবে।

> অনেক সময় যোনীদ্বার দিয়ে পানি বা মরা রক্ত বের হতে দেখা যাবে এবং গাভী অস্বস্তি অনুভব করে বার বার উঠা বসা করতে দেখা যাবে।

> কোন কোন ক্ষেত্রে জরায়ু বিদরন, জরায়ু প্রদাহ, রক্তপাত, যোনী প্রদাহ, যোনী বিদরন হতে দেখা যায়।

> দিন দিন স্বাস্থ্য শুকিয়ে যাবে এবং গর্ভপাতের পর গর্ভফুল আটকে যাবে।

চিকিৎসা

বৈশিষ্ট্যপুর্ন লক্ষন প্রকাশ পেলে রেজিষ্টার্ড পশু চিকিৎসকের পরামর্শে নিন্মের চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহন করা যেতে পারে।

® গর্ভপাতের লক্ষন শুরু হলে চিকিৎসা দিয়ে কোন ভাল ফল পাওয়া যায় না। অতএব যত তাড়াতাড়ি বাচ্চা হবে ততই গাভীর জন্য মঙ্গল।

বাচ্চা প্রসবে বিলম্ব অথবা প্রসব বিঘ্ন হলে অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ান দ্বারা জরায়ু থেকে বাচ্চা ও গর্ভফুল বের করতে হবে।

® গর্ভপাত হয়ে গেলে Accriflevin solution 1% দ্বারা জরায়ু ওয়াশ করতে হবে ২-৩ দিন।

® অক্সিটেট্টাসাইক্লিন গ্রুপের inj: Renamycin-100. 100ml (Renata) 10cc/100kg b.wt অনুযায়ী এ.আই টিউবের মাধ্যমে জরায়ুতে ৩-৫ দিন দিতে হবে।

প্রতিরোধ

গাভীর গর্ভপাত হওয়ার অভ্যাস থাকলে ইনজেকশন প্রোজেস্টারন হরমোন প্রয়োগের মাধ্যমে গর্ভপাত রোধ করা যায়।
> গর্ভাবস্থায় গাভী যাতে বেশি লাফালাফি না করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং গর্ভকালের শেষ পর্যায়ে
> রাষায়নিক ও ভেষজ দ্রব্য যাতে গাভী না খায় সেজন্য সতর্ক থাকুন।
> গর্ভপাত হওয়া গাভীকে পর পর ২টা হিট মিস দিয়ে ৩য় বারের সময় প্রজনন করালে আর গর্ভপাত হয় না।

পাঠ ৪।

গর্ভপাত হওয়া (Abortion).
“””””””””””””””””””””””””””””””
যে সময়ে বাচ্চা প্রসব হওয়া উচিত, তার আগেই জরায়ু থেকে বাচ্চা বের হওয়াকে গর্ভপাত (Abortion) বলা হয়। এসব বাচ্চা মৃত অবস্থায় ভুমিষ্ট হয় অথবা ভুমিষ্ট হওয়ার পর মারা যায়।
কারনঃ-
= গর্ভাবস্থায় গাভীতে রোগ-জীবানুর সংক্রমন হলে যেমন….ব্রুসেলোসিস, ট্রাইকোমোনয়াসি গর্ভপাতের প্রধান কারন।
= লেপ্টোস্পাইরোসিস, গলাফুলা, ক্ষুরারোগ, গাভীর গর্ভপাত ঘটিয়ে থাকে।
= রাষায়নিক ও ভেষজ দ্রব্য যেমন….. পটাশিয়াম নাইট্রেট, আর্সেনিক, সীসা, তাম্র, ক্লোরিনেটেড হাইড্রোকার্বন প্রভুতির বিষক্রিয়ায় গর্ভপাত হয়ে থাকে।
= পুষ্টির অভাব হলে যেমন….. খাদ্যে ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, স্বাস্থ্যহানির কারনে গর্ভপাত অথবা দুর্বল বা মুত বাচ্চা হতে পারে।
= শারীরিক আঘাত যেমন….. গর্ভাবস্থায় আছার খেয়ে পরা, অতিরিক্ত লাফালাফি গর্ভপাতের কারন হতে পারে।
= গর্ভাবস্থায় গাভীকে অক্সিটোসিন জাতীয় ইনজেকশন প্রয়োগ করলে গর্ভপাত হয়।
লক্ষনঃ-
= ২/৩ মাসেরর গর্ভবতী গাভী গর্ভকালিন সময়ে অগোচরেই গর্ভপাত হয়ে যায়।
= গর্ভকালের শেষের দিকে হলে স্বাভাবিক লক্ষনের মতই লক্ষন প্রকাশ পাবে।
= অনেক সময় যোনীদ্বার দিয়ে পানি বা মরা রক্ত বের হতে দেখা যাবে।
= গাভী অস্বস্তি অনুভব করে বার বার উঠা বসা করতে দেখা যাবে।
= কোন কোন ক্ষেত্রে জরায়ু বিদরন, জরায়ু প্রদাহ, রক্তপাত, যোনী প্রদাহ, যোনী বিদরন হতে দেখা যায়।
চিকিৎসাঃ-
= গর্ভপাতের লক্ষন শুরু হলে চিকিৎসা দিয়ে কোন ভাল ফল পাওয়া যায় না। অতএব যত তাড়াতাড়ি বাচ্চা হবে ততই গাভীর জন্য মঙ্গল। বাচ্চা প্রসবে বিলম্ব হলে অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ান দ্বারা জরায়ু থেকে বাচ্চা ও গর্ভফুল বের করে ফেলুন।
= inj: Renamycin-100 এ আই টিউবের মাধ্যমে ৪০ সিঃসি করে পর পর ৩ দিন জরায়ুতে দিতে হবে।
প্রতিরোধঃ-
= গাভীর গর্ভপাত হওয়ার অভ্যাস থাকলে ইনজেকশন প্রোজেস্টারন হরমোন প্রয়োগের মাধ্যমে গর্ভপাত রোধ করা যায়।
= গর্ভাবস্থায় গাভী যাতে বেশি লাফালাফি না করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
= রাষায়নিক ও ভেষজ দ্রব্য যাতে গাভী না খায় সেজন্য সতর্ক থাকুন।
= গর্ভপাত হওয়া গাভীকে পর পর ২টা হিট মিস দিয়ে ৩য় বারের সময় প্রজনন করালে আর গর্ভপাত হয় না।

পাঠ ১।

অনুর্বরতা
INFERTILITY

প্রজনন একটি শারীরিক কার্যক্রম। প্রজননের ধারাতেই বংশ রক্ষা ও বংশ বৃদ্ধি ঘটে।

গবাদিপশু প্রাপ্ত বয়ষ্ক হলে প্রজনন করার সক্ষমতা অর্জন করবে এটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু গবাদিপশু যেমন বকনা বা গাভী প্রাপ্ত বয়ষ্ক হওয়া সত্ত্বেও সময় মত ডাকে না আসা বা ডাকে আসলেও গর্ভধারনে ব্যর্থ হওয়া এটি একটি অন্যতম সমস্যা। এই সমস্যার মুল একটি কারন হলো অনুর্বরতা।

যা বিভিন্ন পুষ্টির অভাবে হয়ে থাকে। বাংলাদেশে পুষ্টির অভাবে বকনা বা গাভীর অনুর্বর হওয়া একটি Common সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। অনুর্বরতার কারনে অনেক মুল্যবান বকনা বা গাভীকে অকালে বাতিল করতে হয়।

প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব ও অন্যন্য পারিপার্শ্বিক পরিবেশ প্রজনন ক্রিয়াকে ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত করে।

সঠিক প্রজনন ব্যবস্থাপনা, খাদ্য ব্যবস্থাপনা, গাভী পালন ব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার প্রতি অধিক গুরুত্ব দিলে এই অনুর্বরতা বহুলাংশে সংশোধন করা সম্ভব।

নিন্মে অনুর্বরতার বেশ কয়েক কারন নিয়ে আলোচনা করা হলো।

অনাহার ও অর্ধাহার

বকনা বা গাভীকে প্রয়োজনীয় পরিমানের খাবার রুটিন মোতাবেক না দিতে পারলে যৌবন প্রাপ্ত হতে দেরি হয়।

অনিয়মিত অর্ধাহার বা অনাহারের কারনে ফলিকুল পুর্নতা প্রাপ্ত হতে পারে না এবং ফলিকুল আটকে থাকে (Follicular atresia) যার ফলে যৌন উত্তেজনা কম হয় এবং সহজে গরম হয় না বা গরম হলেও প্রজনন করালে তা গর্ভধারনে ব্যর্থ হয়।

অর্ধাহার, অনাহার, অল্প শক্তিসম্পন্ন, কম ক্যালরীযুক্ত খাদ্য অনুর্বরতার একটি মুল কারন।

এদিকে আবার বয়ষ্ক গাভীকে নিন্মমানের ও কম পরিমানের খাবার দেওয়ার ফলে পিটিউটারী গ্রন্হি হতে Gonadotropin হরমোনসহ অন্যান্য হরমোন নিঃসরন হওয়া কমে যায়।

যার ফলে গাভী অনুর্বরতায় ভুগে এবং প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
গর্ভবতী গাভীকে অর্ধাহার বা কম শক্তিসম্পন্ন নিন্মমানের খাদ্য খাওয়ালে প্রসব জঠিলতা-সহ দুধের উৎপাদন কম হওয়া, বাচ্চা অপুষ্ট এবং পরবর্তী গর্ভধারনের হার কমে যায়।

স্থুলতা

হিতে বিপরিত। মাত্রাতিরিক্ত বা বেশি পরিমানে খাদ্য খাওয়ানোর ফলে বকনা বা গাভীর অস্বাভাবিক ওজন বেড়ে যাওয়াকে স্থুলতা বলা হয়।

অনেক প্রানী চিকিৎসক এই স্থুলতাকে অনুর্বরতার কারন হিসাবে মনে করেন।

স্থুলতার কারনে ওভারিয়ান Bursae তে চর্বি জমা হওয়া, স্বাভাবিক ডিম্বক্ষরন ও পরিবহন ব্যাহত হওয়া এবং ডিম্বাশয় খুব ছোট হওয়ায় গরম হতে ব্যর্থ বা বিলম্বিত গরম হওয়া ইত্যাদি জঠিলতা দেখা দিয়ে থাকে।

আমিষের অভাব

বকনা বা গাভীর প্রজনন তন্ত্রের জন্য আমিষ জাতীয় খাদ্য খুবই গুরুত্বপুর্ন। অল্প পরিমানে আমিষ জাতীয় খাদ্য খাওয়ালে গাভীর মোট খাদ্য চাহিদার পরিমান কমে যায়, যার ফলে গাভী গরম হতে বিলম্বিত হয়।

আমিষ জাতীয় খাবারের অভাব হলে ভিটামিন-এ এবং ফসফরাস এর ঘাটতি হয়ে প্রজনন তন্ত্রের জঠিলতার সৃষ্টি করে। যা প্রজনন ক্রিয়াকে ব্যাহত করে এবং হিটে আসতে বিলম্বিত করে।
আমিষের শ্রেষ্ট উৎস তুলা বীজ, আলফা-আলফা ঘাস, গমের ভুষি, খৈল ইত্যাদি।

ভিটামিনের অভাব

গাভীর অনুর্বরতার সঙ্গে বেশ কয়েকটি ভিটামিন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জরিত।
® ভিটামিন-এ এর অভাবে প্রায় সকল প্রজাতির প্রানীতে প্রজনন প্রতিক্রিয়ায় বিরূপ প্রভাব ফেলে। ষাঁড় গরুর চেয়ে বকনা বা গর্ভবতী গাভীতে ভিটামিন-এ এর প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। কারন ভিটামিন এ এর অভাবে হলে গাভী ডাকে আসে না।

গর্ভকালিন সময় ভিটামিন-এ এর অভাবে গর্ভপাত (Abortion) দুর্বল বাছুর প্রসব, গর্ভফুল আটকে যাওয়া, জরায়ু প্রদাহ ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।
® ভিটামিন-বি এর অভাবে গাভীর খাদ্য গ্রহনের মাত্রা কমে যায়।

এ কারনে প্রজনন ব্যাহত হয়ে থাকে। ভিটামিন বি সমুহ সাধারনত গরুর রুমেনেই তৈরী হয় তবে বি-১২ উৎপাদনের জন্য কোবাল্টের প্রয়োজন হয়। তাই খাদ্যে কোবাল্টের অভাব থাকলে বি-১২ প্রস্তুত হবে না। ফলে গরুর ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়।
® ভিটামিন-সি গবাদিপশুতে সহজে অভাব ঘটে না। কাজেই ভিটামিন-সি তেমন জরুরী না।
® ভিটামিন-ডি সরাসরি প্রজননের সাথে জরিত নয়। কাঁচা ঘাস খাওয়ালে ও রৌদ্রে রাখলে ভিটামিন-ডি শরীরে স্বয়ংক্রিয় ভাবে উৎপন্ন হয়।
® ভিটামিন-ই প্রজনন ক্রিয়ার সাথে সরাসরি জরিত। গর্ভের ভ্রুন ও বাছুর দ্বারা এই ভিটামিন বেশি শোষিত হয়। এজন্য ভিটামিন-ই কে Antisterility বলে। এছাড়াও যৌন উত্তেজনা ও সময়মত ডাকে আসায় ভিটামিন-ই এর গুরুত্ব অনেক।

খনিজের অভাব

অনুর্বরতার জন্য খনিজ পদার্থের অভাব অন্যতম দায়ী। নিন্মে উল্লেখ্যযোগ্য কয়েকটি খনিজ পদার্থের আলোচনা করা হলো।

® ফসফরাস এর অভাব হলে বকনা বা গাভী গরম হতে ২-৩ বছর পর্যন্ত সময় লাগে এবং প্রজনন করালেও তা গর্ভধারনে ব্যর্থ হয়।

এছাড়াও ফসফরাস এর অভাবে গরু নিঃস্তেজ হয়ে পরা, চামড়া ও পশম নষ্ট হয়ে যাওয়া, অগ্রীম বাচ্চা প্রসব, অপুষ্ট বাচ্চা, গর্ভপাত ইত্যাদি জঠিলতা দেখা দেয়।

গাভীর দুগ্ধপ্রদান কালে শরীরের রক্তে ১০০মিলি/৪-৮ মি.গ্রাম ফসফরাস থাকা দরকার এবং দৈনিক খাবারে ১০-১২ গ্রাম ফসফরাস যুক্ত থাকা আবশ্যক।

তুলা বীজ, ডিসিপি, কাঁচা ঘাস, Mono sodium phosphate, দানাদার খাদ্য, অন্যন্য খনিজ মিশ্রন ফসফরাস এর অন্যতম উৎস।
® কোবাল্টঃ রক্ত উৎপাদন, রুমেনের ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি সাধন এবং ভিটামিন বি-১২ উৎপাদনে কোবাল্টের প্রয়োজন হয়। কোবাল্ট এর অভাবে গরুর ক্ষুধামন্দা দেখা দেয় এবং অন্যন্য কু-খাদ্য, অখাদ্য খাওয়ার বদ অভ্যাস তৈরী হয়ে যায়।

যার ফলে গরু ধীরে ধীরে অনুর্বর হয়ে পরে। কাঁচা ঘাসে প্রচুর পরিমানে কোবাল্ট থাকে।
® কপার ও আয়রন এর অভাবে রক্তস্বল্পতা, দুর্বলতা, অরুচি এবং পর্যায়ক্রমে খাদ্য গ্রহনের মাত্রা কমে যায়।

রক্তে হিমোগ্লোবিন ৮.০-৮.৫ গ্রাম/১০০ মিলি এর নিচে থাকলে বকনা বা গাভী সহজে ডাকে আসে না এবং গর্ভবতী গাভী বাচ্চা প্রসবের পর হিটে আসতে অনেক সময় লাগে ও পুনঃপুনঃ গরম হবে।
® জিংক সরাসরি প্রজননের সাথে জড়িত না। তবে চর্ম, ক্ষুর ব্যবস্থাপনা, বাছুরের ডায়রিয়া পরবর্তী চিকিৎসায় প্রয়োজন।
® আয়োডিনঃ এর অভাবে থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যাবলী হ্রাস পায় এবং Hyperthyroidism Gonadotropin হরমোন নিঃসরন কমিয়ে দেয়।

যার ফলে গাভীর গর্ভধারনে হার কমে যায় এবং বাচ্চার গইটার (ঘ্যাগ) রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এজন্য গরুকে আয়োডিনযুক্ত লবন খাওয়াতে হবে।

তথ্য ও সহযোগীতায়
ডাঃ মনোজিৎ কুমার সরকার।
DVM; MSc (obstetrics)
উপজেলা প্রানীসম্পদ অফিসার, কাউনিয়া, রংপুর।

পাঠ ২।

————–
সাময়িক বন্ধ্যাত্ব (Infertility).
“”””””””””””””””””””””””””””””””””
সাধারনত নিয়মিত বাচ্চা উৎপাদন ক্ষমতা লোপ পেলে তাকে সাময়িক বন্ধ্যাত্ব (Infertility) বলে।
অর্থাৎ গাভী বাচ্চা প্রসবের পর যে সময়ের মধ্যে হিটে আসার কথা তার চেয়ে অনেক বেশি সময় নেয়া এবং বকনার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ে হিটে আসা কে সাময়িক বন্ধ্যাত্ব বলে।
কারনঃ-
= গাভীর ডিম্বাশয়ে কর্পাস লিউটিয়াম স্থায়ীভাবে অবস্থান করলে।
= জরায়ুতে জীবানুর সংক্রমন, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, ওভারীতে সিষ্ট হলে হিট আসতে বিলম্বব হয়।
= গাভী কৃমিতে আক্রান্ত থাকলে।
= কাচা ঘাস ও ভিটামিন এডিই এর অভাবেও গাভী বা বকনা হিটে আসতে বিলম্বিত হয়।
= বাচ্চা প্রসবের পর গর্ভফুলের কিছু অংশ জরায়ুতে থেকে গেলে।
= জরায়ু ইনফেকশন, বাচ্চা ও গর্ভফুল হাত দিয়ে বের করার সময় হাত জীবানু মুক্ত না করেই ভিতরে প্রবেশ করালে।
লক্ষনঃ-
= গাভীর ক্ষেত্রে বাচ্চা প্রসবের ৩ মাস অতিবাহিত হওয়া সত্বেও হিটে না আসা এ রোগের অন্যতম প্রধান লক্ষন।
= বকনার ক্ষেত্রে ১৮ মাস পার হয়ে যাওয়া এবং শরীরের লোম বড় হয়ে যাওয়া, চামড়া মোটা ও শক্ত হওয়া।
চিকিৎসা ও প্রতিরোধঃ-
= inj: Dinoprost প্রয়োগের মাধ্যমে ২/৩ দিনের মধ্যে গাভী/বকনাকে হিটে আনা যায়।
= নিয়মিত কৃমিমুক্ত করে syr: ESKAVIT ADE খাওয়ালে অথবা inj: Tokovita ADE মাত্রা অনুযায়ী দিতে হবে।
= খাদ্য তালিকায় কাচা ঘাসের সরবরাহ নিশ্চিত করুন।
= গাভী বাচ্চা প্রসবের পর ২.৫ সিঃসিঃ FERTILON মাংশে অথবা রক্ত শিরায় দিলে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
= বকনার ক্ষেত্রে বয়স ১৮ মাস পার হলে ই-সেলেনিয়াম খাওয়ানো ও inj: FERTILON 5cc মাংশে দিলে ২০ দিনের মধ্যে হিটে আসে।
————–

——-সংগৃহীত

 

Please follow and like us:

About admin

Check Also

বাছুরের ডায়রিয়ার কারণ

Couses of diarrhea in neonatal rumenants ?Bacterial: ?Escherichia coli ?Salmonella spp. ?Campylobacter fecalis ?Campylobacter coli …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »