Breaking News
গাভীর ক্ষুরের ব্যবস্থপনা
গাভীর ক্ষুরের ব্যবস্থপনা

গবাদিপশুর ক্ষুরের ব্যবস্থাপনা

গবাদিপশুর ক্ষুরের ব্যবস্থাপনা সুশৃঙ্খল গবাদিপশু পালন এবং উত্তম উৎপাদনের জন্য একটি অতীব জরুরী বিষয়!
————————————————-
আজকের পোস্ট টপিকটি অনেক খামারী ভাইয়ের কাছে অজ্ঞাত বা তেমন প্রয়োজনীয় মনে না হলেও ব্যপারটি গবাদিপশুর সুস্বাস্থ্য এবং উত্তম উৎপাদনের সাথে ওতোপ্রত ভাবে জড়িত!
উন্নত দেশ গুলিতে, বিশেষ করে যে সব দেশ গুলি মাংস ও দুধ উৎপাদনে অগ্রবর্তী সে সব দেশে বিশেষত গরুর খামার গুলিতে হুফ ম্যানেজমেন্ট বা গরুর ক্ষুরের পরিচর্যা একটি বিশেষ বিষয়। ডেইরী বা বিফ ক্যাটেল, দুইটাতেই হুফ ম্যানেজমেন্ট খুব গুরুত্ববহ। ক্ষুর হচ্ছে গরুর দেহের শরীরবৃত্তীয় নিরাপত্তার সর্বপ্রথম সুরক্ষা প্রাচীর! কিভাবে? এই ক্ষুর তথা পায়ের মাধ্যমেই বিভিন্ন জীবাণু বা রোগের অনুজীব গুলি গরুর শরীরে প্রবেশ করে। হতে পারে সেটা ফাঁটা বা আঘাতগ্রস্ত ক্ষুরের অভ্যন্তরে সৃষ্ট ঘাঁ বা ক্ষতের মাধ্যমে। তাছাড়া ক্ষুরের অগ্রভাগের অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণে গরুর পায়ে ব্যাথার সৃষ্টি হয়ে থাকে ফলে, এই ব্যাথার কারণে গাভীর দুধ উৎপাদন কমে যায় এবং ষাঁড়ের বৃদ্ধি কমে যায়। আবার ক্ষুর ফেঁটে গেলে কোন কারণে, ক্ষুরের ভিতরের নরম অংশ সহজে আঘাতপ্রাপ্ত হয়,সেখান থেকে সৃষ্টি হয় ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন ফলে সেখান থেকে দেখা দেয় নানান জটিলতা। ফুট রট রোগের সৃষ্টি এভাবেও হয়! যেহেতু,ক্ষুরের ভিতরের স্তরের সাথে পায়ের নার্ভগুলির একটা যোগাযোগ আছে তাই গরু পক্ষাঘাতগ্রস্তও বা প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারে। একটি গাভী বা ষাঁড়ের ক্ষুরের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা তাতে আঘাতের ফলে সৃষ্ট ইনফেকশন বা প্রদাহের কারণে তাদের শরীরবৃত্তীয় কাজ গুলি রোহিত হয়। এসব কারণে গরুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল হয়ে পরে এবং গরু সহজেই অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়। ফল স্বরুপ, দুধ ও মাংস উৎপাদনে ধ্বস নামে। তাই হুফ ম্যানেজমেন্ট গবাদিপশু তথা গরুর জন্য একটি অতীব জরুরী বিষয়। নীচে গবাদিপশুর ক্ষুরের পরিচর্যা বা হুফ ম্যানেজমেন্ট এর কিছু বিষয় পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হল।
১। গরুর ক্ষুর সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত। এই দুভাগের মধ্যে একদিকের ক্ষুর মাঝে মধ্যে অতিরিক্ত বৃদ্ধি পায়। ফলে গরু ঠিক ভাবে দাঁড়াতে বা হাঁটা চলা করতে পারে না এবং এর ফলে ব্যাথা অনুভব করে। তখন এই অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়া অংশ ছেঁটে ফেলতে হবে। দরকার হলে এটা দুই বারে করতে হবে।
২। ক্রেকড হুফ বা ক্ষুর ফাঁটা, এই সমস্য যদি গরুতে দেখা দেয় তবে অভিজ্ঞ ভেটের শরণাপন্ন হয়ে তার চিকিৎসা করাতে হবে। চিকিৎসাকালীন সময়ে গরুকে জিংক বা বায়োটিন ইত্যাদি সাপ্লিমেন্ট সরবরাহ করা যেতে পারে যাতে ফাঁটার বিস্তার বৃদ্ধি না পায়। এই ব্যপারটি যদি খামারীরা অবহেলা করে তবে ক্ষুর আলগা হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। ফলে আপনাদের খামারের মুল্যবান গাভী বা ষাঁড়টি বাতিল হয়ে যেতে পারে।
৩। ক্ষুরের গঠন সাধারণত দুই স্তর বিশিষ্ট। বাহিরের স্তরটি কোন কারণে আঘাতপ্রাপ্ত হলে বা অতিরিক্ত ঘর্ষনের ফলে ক্ষয়ে গিয়ে অসমান হয়ে গেলে তা ফাইল বা শিরিষ কাগজ দিয়ে ঘষে মসৃণ এবং সমান করে দিতে হবে।
৪। বর্ষাকালীন সময়ে বা আদ্র আবহাওয়াতে ক্ষুরের তলার অংশ নরম থাকে, ফলে তখন সহজেই অল্প আঘাতে সেখানে প্রদাহ বা ইনফেকশনের সৃষ্টি হতে পারে। তাই ওই সময়ে যাতে গরুর পায়ের নীচের মাটি শুষ্ক এবং মোলায়েম হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এক্ষেত্রে রাবারের ম্যাট ব্যবহার করা যেতে পারে।
৫। গরুর ক্ষুরের তলায় অবাঞ্ছিত ময়লা যেমন,গোবর, কাঁদামাটি ইত্যাদি নিয়মিত পরিষ্কার করা বাঞ্ছনীয়। এ থেকে অনেক সময় ইনফেকশন হয়। তাছাড়া গরুর ক্ষুর দুই একদিন পর পর এন্টিসেপটিক বা জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে যাতে রোগের সংক্রমণ না হয়।

ক্ষুর ব্যবস্থাপনা
Hoof Management

গরুর বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে পায়ের ক্ষুর একটি গুরুত্বপুর্ন অঙ্গ। যার উপর ভর করে গরু দাড়িয়ে থাকে এবং হাটা চলা ফেরা করে। ক্ষুরের যে কোন সমস্যা হলে গরু স্বাভাবিক ভাবে দাড়িয়ে থাকতে বা হাটা-চলা ফেরা করতে পারে না এমনকি খাদ্য গ্রহন কমিয়ে দেয়। এজন্য দুধ ও মাংশের উৎপাদন কমে যাওয়া থেকে শুরু করে চিকিৎসা খরচ বেড়ে যায় এবং প্রায়ই ভালো মানের গাভীকে অকালে বাতিল করতে হয়। যার ফলে একজন খামারীকে অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুক্ষীন হতে হয়।
গাভীর পায়ের ক্ষুরের স্বাভাবিক ভারসাম্য রক্ষা ও সুস্থ রাখার জন্য এবং ক্ষুরের বিভিন্ন ত্রুটি সংশোধনের জন্য ক্ষুর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে আমাদের জানতে হবে। ক্ষুর সাধারনত যে ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত হয় তা হলো Hoof Over growth, Hoof wall fissures, Foreign body penetration of the sole, Laminitis, Heel erosions, Double or split soles, Ulcer ইত্যাদি।

ক্ষুর ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব
Important of hoof management

ক্ষুর হচ্ছে গরুর দেহের শরীর বৃত্তীয় নিরাপত্তার সর্বপ্রথম সুরক্ষা প্রাচীর! এই ক্ষুর তথা পায়ের মাধ্যমেই বিভিন্ন জীবাণু বা রোগের অনুজীব গুলি গরুর শরীরে প্রবেশ করে। হতে পারে সেটা ফাঁটা বা আঘাতগ্রস্থ ক্ষুরের অভ্যন্তরে সৃষ্ট ঘাঁ বা ক্ষতের মাধ্যমে। তাছাড়া ক্ষুরের অগ্রভাগের অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণে গরুর পায়ে ব্যাথার সৃষ্টি হয়ে থাকে ফলে, এই ব্যাথার কারণে গাভীর খাদ্য গ্রহন ও দুধ উৎপাদন কমে যায়। আবার ক্ষুর ফেঁটে গেলে বা কোন কারণে ক্ষুরের ভিতরের নরম অংশ আঘাত প্রাপ্ত হলে সেখান থেকে সৃষ্টি হয় ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন। যার ফলে সেখান থেকে দেখা দেয় নানান জটিলতা। যেহেতু ক্ষুরের ভিতরের স্তরের সাথে পায়ের নার্ভগুলির একটা যোগাযোগ আছে তাই গরু প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারে। একটি গাভীর ক্ষুরের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা তাতে আঘাতের ফলে সৃষ্ট ইনফেকশন বা প্রদাহের কারণে তাদের শরীর বৃত্তীয় কাজ গুলি রোহিত হয়। এসব কারণে গরুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল হয়ে পরে এবং গরু সহজেই অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়। ফল স্বরুপ, দুধ ও মাংস উৎপাদনে ধ্বস নামে। তাই ক্ষুর ব্যবস্থপনা (Hoof management) গবাদিপশু তথা গরুর জন্য একটি অতীব জরুরী বিষয়।

ক্ষুর অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়া
Hoof Over growth

নিবিড় ভাবে বা আবদ্ধ অবস্থায় এবং শুষ্ক পরিবেশে গাভী পালন করলে অনেক গাভীর পায়ের ক্ষুর স্বাভাবিক ভাবে ক্ষয় (Aberrations) হওয়ার পরিবর্তে অতিরিক্ত বৃদ্ধি (Over growth) পেয়ে থাকে। ক্ষুর অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেলে, ক্ষুর বিকৃত আকার (Deformit) ধারন করে এবং ক্ষুরের দেয়াল (Wall) ও ক্ষুরের তলা বড় (Heel both) হয়ে যায়। এর কারন হিসাবে ধরা হয়, নিবিড় ভাবে বা আবদ্ধ পরিবেশ, অতিরিক্ত শুষ্ক পরিবেশ এবং বংশগত ত্রুটি। অতিরিক্ত শুষ্ক পরিবেশে গাভী লালন পালন করলে ক্ষুর সহজেই শক্ত হয়ে যায়। শক্ত হওয়ার ফলে ক্ষুর স্বাভাবিক ক্ষয় না হয়ে সামনের দিকে বেকে যেতে থাকে। ভিতর পাশের ক্ষুরের তুলনায় বাহির পাশের ক্ষুর অস্বাভাবিক বড় হয়ে গেলে Hoks joint ভিতরের দিকেও বেকে যায়।

ক্ষুর অতিরিক্ত ক্ষয় হওয়া

ধারনা করা হয়… গাভীকে পর্যাপ্ত পরিমানে আঁশ জাতীয় খাবার না দিয়ে শুধুমাত্র উচ্চ মাত্রায় শক্তি সম্পন্ন দানাদার খাদ্য খাওয়ালে ক্ষুর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি নরম হয়ে যায়। যার ফলে ক্ষুর খুব সহজে ক্ষয়ে যায়, ভেঙ্গে যায়, ধ্বসে যায় এবং আঘাত প্রাপ্ত হয়। অবশ্য খুব ঘন ঘন পানি দিয়ে ক্ষুর ভেজালে বা সব সময় ভেজা, গোবরে, কাদাযুক্ত স্থানে রাখলে নরম ও ভঙ্গুর হতে পারে। এবং জিংক এর অভাব হলেও এমন হতে পারে।

ক্ষুর Over growth হলে করনীয়

ক্ষুর বড় হয়ে বেকে গেলে কেটে দিতে হবে এটাই চুরান্ত সিদ্ধান্ত। ক্ষুরের আকার ও আকৃতি বড় হওয়ার ধরনের উপর ভিত্তি করে ছয় মাস বা এক বছর পরপর দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি বা পশু চিকিৎসক দ্বারা ক্ষুরেরর বাড়তি অংশ কেটে (Hoof trimming) দিতে হবে।
Hoof trimming করার জন্য যেসব যন্ত্রপাতি প্রয়োজন তা হলো (Hoof knives, Triangular file, Chain saw file, Hoof cutter) ইত্যাদি।

 

ক্ষুর সুস্থ্য রাখার উপায়

১. প্রতিদিন গাভীকে গোসল করানোর সময় পায়ের ক্ষুর ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করে দিতে হবে।
২. গাভীকে ব্যায়ামের ব্যবস্থা করতে হবে অর্থাৎ দৈনিক যেন ২ ঘন্টা করে হাটা চলা করতে পারে এমন ব্যবস্থা জরুরী।
৩. গরু রাখার জন্য সঠিক নিয়মে মেঝে তৈরি করতে হবে। যাতে প্রসাব ও পানি আটকে না থাকে। মেঝে নিয়মিত গোবর পরিষ্কার ও কাদা মুক্ত রাখতে হবে।
৪. আবদ্ধ, নিবির ও শুষ্ক পরিবেশে গাভী লালন পালন পরিহার করা উচিত।
৫. ক্ষুর যাতে সব সময় ভেজা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৬. আঁশ জাতীয় খাবার যেমন ঘাসের ব্যাপক সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং মাত্রাতিরিক্ত দানাদার খাবার দেওয়া যাবে না।
৭. ফুট বাথ (Foot bath) ব্যবহার করে গাভীর পায়ের ক্ষুর সুস্থ রাখা যায়।
Common footbathing solutions
10% Zinc Sulphete অথবা 10% Copper Sulphete অথবা 5% Formaldehyde
৮. গরুর ক্ষুরের তলায় অবাঞ্ছিত ময়লা যেমন,গোবর, কাঁদামাটি ইত্যাদি নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। এ থেকে অনেক সময় ইনফেকশন হয়। তাছাড়া গরুর ক্ষুর ২-৩ দিন পর পর এন্টিসেপটিক বা জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে যাতে রোগের সংক্রমণ না হয়।
উপরের উল্লেখিত নির্দেশনা অনুযায়ী ক্ষুর ব্যবস্থাপনা (Hoof management) সম্পন্ন করলে খামারের গবাদিপশুর সুস্বাস্থ্য এবং উত্তম উৎপাদন নিশ্চিত করার পথ অনেকটাই সুগম হবে বলে ধরে নেয়া যায়।

গাভী ক্ষুরে ব্যথা পাইলে ১৫% দুধ কমে যায়।

কি কি কারণে ল্যামিনাইটিস(laminitis) হয়

মেটাবলিক ডিজিজ,হঠাত খাবার পরিবর্তন করলে বা খাবারের ফরমুলা পরিবর্তন করলে,ফ্লোর যদি পিচ্ছিল হয় এবং গাভী যদি ঘন হয়।

কি কি ডাজিটাল ডার্মাটাইটিস হয়

কংক্রামক রোগ

Foul in Foot(infectious diseases)

S0ul ulcers কেন হয়

যদি কোন কারণে  পায়ে ব্যথা পায়(ট্রমা,ফ্লোর পিছলে ব্যথা পেলে),ফ্লোর যদি উচানিচা হয়।

কালেক্টেড

mukti mahmud

 

Please follow and like us:

About admin

Check Also

নবজাতক বাছুরের যত্ন ও করণীয় :

নবজাতক বাছুরের যত্ন ও করণীয় : স্তন্যপায়ী প্রায় সকল প্রাণীর জন্মপ্রক্রিয়া প্রায় একই হলেও কিছু …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »