যারা নতুন খামার করবেন তাদের জন্য এই পোস্ট।
পর্ব ১।
_____________________________________________
খামার শুরু করতে হলে কী কী বিষয় গুলো জানতে হবে ।
#গরুর জাত চিনতে হবেঃ
যে জিনিস লালন পালন করবেন সেই বিষয়ে আগে বুঝতে হবে ভালো মন্দের দিক।
গরু বিভিন্ন জাতের রয়েছে তার মধ্যে হলিষ্টিন ফিজিয়ান,জার্সি, সিন্ধী,ভালো মানের ক্রস ফিজিয়ান,
শাহীওয়াল সচরাচর এগুলো পাওয়া যায় ও খামার উপযোগী জাত।
#গরুর খাদ্য প্রদানঃ
এমন অনেকে দেখা যায় বিভিন্ন ফোরামে পোস্ট করে গরুকে কী কী খাদ্য দিবো?
গরুর যত্নে সঠিক সময়ে খাদ্য দেওয়া জরুরী।
গরুকে যে খাদ্য খাওয়াতে হবে ২ বেলা কাঁচা ঘাস,খড়,দানাদার, পযাপ্ত পরিষ্কার পানি।
এর মধ্য রয়েছে বিভিন্ন কোম্পানিরর রেডি ফিড ,তাছাড়া নিজে খাদ্য তৈরী করতে হবে এতে খরচ কম হবে ও ভালো মানের খাদ্য তৈরী হবে।
#ঔষুধ খাওয়ানোর নিয়ম জানতে হবে।
কারণ এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কেননা,শ্বাসনালীতে ঔষুধ গেলে গরু মারা যাবার সম্ভবনা বেশির ভাগ।
গরুকে ঔষুধ খাওয়ানোর সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হলো খাদ্যর সাথে বা পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়ানো।
#ট্রেনিং (০১)করতে হবে খামার শুরু করার আগে ঃ
সীমিত খরচে ৩/৬ মাস মেয়াদী যুব উন্নয়ন বা বেসরকারি ভাবে।প্রাণীসেবা হাসপাতালে সাপ্তাহিক ও মাসিক ট্রেনিং গুলোতে যোগ দিতে হবে।
তবে একদিনে ট্রেনিং করে সব শিখতে চাইয়েন না।কারণ খামার বিষয়ক তথ্য গুলো একদিনে সব আয়ত্ত করা সম্ভব নয়।
#ট্রেনিং২ আপনার পরিচিত কোন খামারে কিছু দিন সময় দেন খেয়াল করুন তার কাজকর্ম।সে কিভাবে কখন গরুকে খাদ্য দেয়,গোসল করাই,খামার পরিস্কার করে। ডাক্তারদের সাথে ভালো সমর্পক গড়ে তুলুন জেনে নিন কোন কোন রোগে কী কী চিকিৎসা অথবা অভিক্ত খামারীদের সাথে আলোচনা করুন বা দেখা করে জেনে নিতে পারেন বহু তথ্য তাতে কোন টাকা লাগবে না।
#খামারে লস বনাম লাভ এপিট ওপিট। তবে ইউটিওব,ফেসবুকের সফলতা আর সফলতা খামার করলেই কোটিপতি।
এমন গল্পে পা দেওয়ার আগে জেনে নিতে হবে বা বুঝতে হবে ৫ মিনিটের ভিডিও তে কোটিপতি হওয়া সহজ তবে বাস্তবে নয়।
#অসাধু দালাল বলতে গরু যিনি বিক্রি করে তিনি একাই নয়,এই সেক্টরে বহু রকমের অসাধু দালাল রয়েছে যাদের উদেশ্য সহজ সরল খামারীদের ঠকিয়ে নিজের উদেশ্য সফল করা।
তাদের কাছে মুরিদ হওয়ার আগে একটু জেনে শুনে হয়েন।তবে খেয়াল রাখিয়েন লাভের তুলনায় লস বেশি যেনো না হয়।কারন খামারে আয় ব্যয়ের হিসাব বলে কথা।
#রোগ খামারে গরুর যে সমস্যা গুলো বেশি হয় তা বিষয়ে জানতে হবে ও সমাধানের উপায় জানতে হবে।
সাধারণত জ্বর সর্দি, খাবারে খেতে রুচি কম,পেট ফাঁপা,ডায়রিয়া,ব্যাথা পাওয়া, হিটে আসার লক্ষণ, বীজ দেওয়ার সঠিক সময় টুকিটাক বিষয় গুলো জানতে হবে।নিজের আয়ত্তাধীন না থাকলে ডাক্তার ডাকতে হবে।
#প্রতিকার নয় প্রতিরোধ করতে হবে। খামারে গরু অসুস্থ হলে চিকিৎসা দেওয়া জরুরী তবে এর চেয়ে জরুরী এই রোগ যেনো না হয় সেই বিষয় লক্ষ্য রাখা।
তাই খামারে বায়োসেকোরিটি জরুরী।
১।খামারে সকল ধরনের লোকের প্রবেশ বন্ধ করতে
হবে।
২।খামার জীবানু মুক্ত করে রাখতে হবে।
৩।খামারে বাহিরে আলাদা জুতা,ভিতরে আলাদা জুতা ব্যবহার করতে হবে।
৪।খামারে নতুন গরু আনলে সরাসরি খামারে নেওয়া যাবে না, আলাদা রেখে পরিষ্কার করে জীবাণুমুক্ত করে সুস্থ আছে কিনা তা খেয়াল করতে হবে।
৫।FMD আক্রান্ত গরু থাকলে থাকে গরুর পাল হতে আলাদা করে রাখতে হবে।
৬।গোয়াল ঘর সবসময় ই পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
৭।খাবারের পাত্র নিয়মিত পরিষ্কার করে নিবেন।
৮।ভ্যাকসিন গুলো সঠিক সময়ে প্রয়োগ করতে হবে।
#বাস্তবতা কে মেনে খামার করতে হবে।ইদানিং ফেসবুকে দেখা যায় কয়েক দিনেই খামার করে সফল কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে, তাদের অনুসারী হয়ে শুরুতে লক্ষ্য কোটি ইনবেস্ট করবেন না,
তাহলে খামার করে টিকে থাকতে পারবেন না।সফলতার গল্প বলা সহজ তবে সফলতা পেতে গিয়ে কতবার যে ব্যথ’ হতে হয়ে যে তার গল্প আড়াল থেকে যায়।
সুতরাং বাস্তবতা কত কঠিন কোন অভিক্ত খামারীর সাথে কথা বলে জেনে নিতে পারবেন।
===জেনে রাখা জরুরী, নতুনদের কাজে আসবে===
১।ভালো জাতের গরু দিয়ে শুরু করতে হবে তো ছোট্ট আকারে বিশাল শেড করে নয়।
২।নিজে দানাদার খাদ্য বানিয়ে খাওয়াতে হবে।
৩।বিভিন্ন রোগ বিষয়ে জানতে হবে,ছোট্ট খাটো বিষয় গুলো নিজে সমাধান করতে হবে ও ইনজেকশন দেওয়া শিখতে হলে ট্রেনিং করতে হবে।
৪।কাঁচা ঘাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫।খামার করার আগে ২/৪ জন খামারী বা ২/৩ টি খামার ভিজিট করে অজানা বিষয় গুলো জানতে পারবেন।
৬।মোটা অঙ্গের ছড়া সুদে লোন নিয়ে শুরু করবেন না।
৭।সাদা রং,বড় ওলান,২৫/৩০ লিটার দুধ,১মও ২য় বিয়ান দেখে যাচাই না করে পাগলা হয়ে কিনলে কপালে খারাপ আছে।
৮।খামারে নিজে শ্রম দিতে হবে,গরু কিনলাম, খাদ্য কিনে দিলাম,রাখাল রেখে দিলাম প্রবাসে বসে খামার পরিচালনা করব করতে পারেন,তবে লসের বোঝা আর গরু বদলাতে বদলাতে লসের ডায়রীর পাতা ভরে যাবে।
সুতরাং প্রবাসে বসে বড় আকারে শুরু করবেন না।
#খামার করবেন লাভের আশায় লস যেনো না হয়।
তাই খেয়াল করুন…….
#লেবার খরচ কমাতে হবে।
#খাদ্য খরচ কমাতে হবে।
#গরু কিনে ধরা ১বার খেলে ২বার সেই ভুল করা যাবে না।
==খামার করবেন নিজের ভিতরে ৪টি বিষয় রাখুন==
১।নিজের খামারে গরু যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন ও শুকরিয়া আদায় করুন।
২।ধৈয’ সহকারে পরিশ্রম করুন।
৩।অন্যর মতো নয়, অন্যর কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেকে নিজের মতো করে গড়ে তুলুন।
৪।সর্ব অবস্থায় আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখুন।
পর্ব ২
খামার করা আর গরুর প্রতি ভালোবাসা ও খামার টিকিয়ে রাখা এক নয়।টাকা থাকলেই খামার করা সম্ভব তবে সবার জন্য নয়।
#টাকা আছে তাই বলে যা ইচ্চা তা করা যাবে না।
টাকার জোরে কোন দাপট ও ভালো না।কারণ অহংকার পতনের মূল,সুতরাং টাকা কে সঠিক পথে ও সঠিক ভাবে ব্যয় করে রুজি অন্বেষণ করতে হবে।কালো টাকা কে সাদা করে নয়।
#ছোট্ট পরিসরে শুরু করতে হবে। কারন যারা খামার সেক্টরে নতুন আসছে তারা অধিকাংশ কোটিপতি নয়।
তাই শুরুতে ২টি ১০-১৫ লিটারের গাভী ও ২/৩ টি বকনা দিয়ে শুরু করলেই ভালো হয়।
আর এগুলো বেশি নয় ৬মাস লালন পালন করলে নিজে নিজেই পরে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। খামার বড় করবেন?না যেখানে আছেন সেখানেই থাকবেন? না ছেড়ে দিবেন।
#শেড করার জন্য শুরুতে লক্ষ লক্ষ টাকা নষ্ট না করে, ছোট আকারে কম খরচে শেড করুন।
সময়ের ব্যবধানে শেড ও বড় করতে হবে তবে তাড়াহুড়ো করা যাবে না।
কোন কারনবশত খামার ছেড়ে দিলেন,গরু বিক্রি করতে পারবেন সুতরাং লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে করা শেড কিন্তু বিক্রি করতে পারবে না, করলে লসের অঙ্কটাই বেশি হবে।সুতরাং ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েন না।
#ভালো মানের গাভী ও বকনা দিয়ে শুরু করুন, এতে গাভীর দুধ সঠিক ভাবে বাজার জাত করতে পারলে।
খামারের খাদ্য থেকে শুরু করে টুকিটাকি খরচ চলে যাবে।খামারের খরচ নিয়ে আলাদা টেনশন করতে হবে না
।হয়তো আপনার নাকে শুরুতে টাকার গন্ধ আসবে কম, কিন্তু ৬মাস বা বছর শেষে ভালো ফলাফল পাবেন।
তাই নতুনদের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
#বকনা দিয়ে খামার শুরু। ভালো তবে এই ভালোটা সকল নতুন খামারীর কপালে জুটবে না।
কারণ এখানে অনেক আনুষাঙ্গিক বিষয় আছে।
১।#শুধু বকনা দিয়ে শুরু করলে খামারের খাদ্য খরচ সহ সকল প্রকার খরচ নিজের জমা টাকা ভেঙ্গে খরচ করতে হবে।
২।#বকনা সঠিক সময়ে হিটে আসতে চাই না,হিটে আসলে ও বীজ কনসেপ্ট করে না,একবার নয় একাধিক বার বীজ দিতে হয়।
এতে নতুন খামারীর খামারের প্রতি দেখা যায় মন মানসিকতা নষ্ট হয়ে যায়।
৩।#বকনা দিয়ে শুরু করলে বকনা বাচ্চা দেওয়ার আগ পযন্ত সমস্ত খরচ নিজের জমা টাকা থেকে খরচ করতে হয়।অনেক সময় দেখা যায় নতুন একজন খামারী একসময় আর তাদের পিছনে খরচ করতে না পেরে বাধ্য হয়ে খামার ছেড়ে দেয়।
সুতরাং বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া উওম।
#ষাঁড় গরু দিয়ে নতুন খামারীরা মোটাতাজা করনে অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করে।ভালো একটি উদ্যোগ।
তবে কেউ ৩মাস মেয়াদী কেউ বা ৬মাস মেয়াদী হয়তো দীর্ঘ মেয়াদী। যাই করুন ৩/৪/৫…টি দিয়ে যদি মোটাতাজা প্রকল্পে হাত দেন তবে ৩/৬ মাসের যে খরচ গুলো হবে তার ব্যবস্থা আছে কিনা তা বুঝে মোটাতাজাতে হাত দিবেন।
কেননা,১মাস পালন করে আর খরচ চালাতে পারবেন না, এমন যেনো না হয়।তাহলে লাভের তুলনায় লসের ঝুঁকি থাকে।
#সিদ্ধান্ত বড় একটি বিষয়।কেউ সঠিক সিদ্ধান্তে উপরে ওঠে ভুলে সিদ্ধান্তে কেউ নিচে পড়ে যায়।অনেকে ২০/৩০/৪০ হাজার মাসিক বেতনে চাকুরী করেন।
ইউটিওউব এর অবাস্তব সফলতার গল্প শুনে। কেউ চাকুরী ছেড়ে দিয়ে খামার করবেন না।কারণ বাস্তবতা বড় কঠিন যিনি তার সম্মুখীন হয়েছেন তিনিই বলতে পারবেন।
#চাকুরী ভালো বেতনে আছেন।তবে আপনার একটি ভুল সিদ্ধান্ত নিলে এর দায়বার শুধু আপনি একা বহন করবেন না,আপনার পরিবার পরিজনদের কে ও কাঁদাবে।
দেশে/প্রবাসী আছেন মাস শেষে ২০/৩০/৪০ হাজার পাচ্ছেন।খামার করলেই কোটিপতি এমন চিন্তা করে চাকুরী ছাড়া যাবে না।
বরং………
১।#চাকুরী থাকা অবস্থায় বাড়িতে/এলাকাতে সবার আগে ছোট্ট আকারে খামার শুরু করতে পারেন।
২।#পরিবারের লোক জন দিয়ে শুরুতে গরু লালন পালন করাতে পারেন।
৩।#অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিন।ধীরে আস্তে খামার বড় করুন উন্নত জাতের গরু দিয়ে।
৪।#খামার বড় হলে গরুর সংখ্যা বাড়লে তখন প্রয়োজনে দক্ষ রাখাল রাখতে পারেন।আর তখন খামার থেকে ভালো একটি ফলাফল বাহির হলে চাকুরী ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিন আগে নয়।
#তবে মনে রাখবেন আবেগের বসে কারো পরামর্শে এত টাকার চাকুরী ছেড়ে দিয়ে এসে খামার করলে মাস শেষে খামার থেকে চাকুরীর সমতুল্য টাকা আসবে না।
তখন হিমসিমে পড়তে হবে।
#আবেগের বসে খামার করার সিদ্ধান্ত নিবেন না।বাস্তবতা টা জানার চেষ্টা করতে হবে।
খামার করা কোন ব্যাপার নয়, সবচেয়ে বড় বিষয় সফল খামারী হওয়া।
খামারে আয়ের তুলনায় লাভের হার বাহির করা ও খামার টিকিয়ে রাখা।
সুতরাং আবেগ আর কল্পনার মুহে পড়বেন না।
#প্রবাসী আছেন মাস শেষে মোটা অঙ্গের বেতন পান।
আলহামদুলিল্লাহ। ফেসবুক ও ইউটিওবে খামারের গুন আর গুনের কথা শুনেই পাগল হওয়া যাবে না।
ভুল করে ও প্রবাসে বসে শুরুতেই ১০/১৫/২০ লক্ষ টাকা ইনবেস্ট করে খামার দিয়ে রাখাল রেখে খামার চালামু এমন চিন্তা করিয়েন না।
কারণ……….
১।#এই সেক্টরে দক্ষ রাখাল বা জনবলের অভাব রয়েছে।
২।#দক্ষ রাখাল পাওয়া খুবই কঠিন।আর অদক্ষ রাখাল দিয়ে খামার চালালে জমি বিক্রি করে খামার চালাতে হবে।
কেননা,তখন আপনাকে ম্যাস্টাটিস সহ নানা সমস্যার পিছনে টাকা খরচ করতে করতেই সময় চলে যাবে।
তাই
“#লাভ আছে লস নাই চলো শেয়ারে খামার গড়াই”
এমনে স্লোগানে পা দেওয়ার আগে শেয়ারে খামার দিবেন কার সাথে শেয়ারে খামার দিচ্ছেন তাহার সমন্ধে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করুন।
নয়তো যা হবে ২দিন আগে নয় পরে তা হলো….
১।#বিভিন্ন হিসাব নিয়ে ঝামেলা হবে।
২।#যখন লস হবে তখন একে অপরের উপর অবিশ্বাস সৃষ্টি হতে থাকবে।
৩।#কেউ খামারে সময় বেশি দিবে, কেউ বা কম এই নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হবে।
৪।#শুরুতে যে সেতুর মিলন মেলা দেখা যায় সময়ের ব্যবধানে অমিল শুরু হবে।
৫।#অনিয়মে খামার চালানো সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকলে খামারে লসের বোঝা ভারী হয়ে গেলে খামার ছেড়ে দিয়ে পত্রিকার হেড লাইন হতে হবে
“৩বন্ধ মিলে খামার ধব্বংসের পথে”
সুতরাং শেয়ারে খামার করলে একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা ভাবনা করিয়া লইয়েন।
#খামার করার শুরুতেই ছড়া সুদে লোন নিয়ে গরু কিনে খামার শুরু করবেন না।এতে মাসিক কিস্তি ও খামার পরিচালনা করা কষ্টকর হবে।তখন খামার টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।আমার দেখা অনেকের এমন হয়েছে আজ তাদের খামার শেড পড়ে রয়েছে তবে খামারে গরু নাই।সুতরাং এমন সিদ্ধান্ত নিবেন না।
#পরিশেষে ২টি কথা বলব=,,,,
১।#সর্ব অবস্থায় আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখুন ও শুকরিয়া আদায় করুন।
২।#অন্যর মত নয়,তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে ধৈয’ সহকারে পরিশ্রম করে নিজের মতো নিজেক প্রতিষ্ঠিত করুন।
পর্ব ৩
_________________________________________________
কী মানতে হবে?
_,,,বাস্তবতা।
বাস্তবতা মেনে যারা খামার করবে তারাই ঠিকে থাকতে পারবে, আর কল্পনাতে নৌকা চালালে সাগর নয় নদী পার হওয়া ও কঠিন হয়ে যাবে।
তাই মানতে চেষ্টা করতে হবে।
#খামারের শুরুতে কেউ গাভীন গরু কিনবেন না।
অনেক সময় দুধ দেওয়া অবস্থায় বাট কানা থাকে,১/২ টি বাট দিয়ে দুধ আসে না,দুধ দেওয়া কালীন লাথি মারে,নড়াচড়া করা ইত্যাদি।
আর সেই গাভী গুলো পরে ৪/৫/৬/৭ মাসের গাভীন রেখে বিক্রি করে।
সুতরাং সাবধান!
#বিশেষ পলিটিক্স এ স্বীকার হয়েন না, আকর্ষণীয় জিনিস থেকে পাগলা না হয়ে স্থীর হবেন, মাথা ঠান্ডা রাখবেন।
তা হলোঃ
#গরুর বড় ওলান
#দুধ ২৫/৩০ লিটারের কাহিনী
#জাতের মাল বকনা সমাচার
#গরুর খাদ্য মন বাই মনের কিচ্ছা
#নয় মাসের গাভীন গরু আপনি নতুন খামারী হিসাবে কখনোই কিনবেন না,নয় মাসের গাভীন ৯ মাস ১০ দিন ও ১০দিন +,_ হলেই দিবে বাচ্চা তবে ১০ দিন পরে বিক্রি করলে তো লাভের হার বেশি হয়, কিন্তু না।তবে ১ম বিয়ান হলে ভিন্ন কথা।
সুতরাং ঘনিষ্ঠ বা জানা শুনার ভিতরে না হলে নতুন হিসাবে ৯ মাস নয় ৯ মাস ৫ দিনের হলে ও বিরত থাকুন।কেননা……
#বাট কানা থাকতে পারে
#লাথি বা নড়াচড়ার অভ্যাস থাকতে পারে
#বাট শক্ত দুধ দহনে সমস্যা
#ম্যাস্টাটিস এর আক্রমন
যা নতুন খামারীর জন্য ঝুঁকিপূণ’ সুতরাং সাবধান!
#পাগলা হয়ে চড়া দামে গরু কিনা। গরুর সুন্দর চেহারা, চিকচিক পশম,সাদা কালো রং এর বাহার,খামারীদের আকর্ষণ করার কবজ
এই মন্ত্র গুলো অনুসরণ করা যাবে না।
অনুসরণ করতে হবে…
#গরুর জাত
#দুধ দেওয়া লক্ষণ গুলো আছে কি না
#শান্ত প্রকৃতির
#জাতের তুলনায় দুধ
#রোগমুক্ত আছে কি না
#শারীরিক গঠন ঠিক থাকতে হবে।
১ম , ২য় ৩য় বিয়ান এর গাভী।গ্লোলোর বাচ্চা ভাল হয়।
এগুলো ঠিক থাকলে ৩ নাম্বার নয় ৪ নাম্বার বিয়ানের গাভী ও ভালো।
#রিস্ক নিবেন তবে শুরুতে ১০/১৫ লক্ষ টাকা খরচ করে এমন রিস্ক নেওয়া থেকে দূরে থাকুন।লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে গরু কিনবেন,শেড করবেন শতশত শতাংশ জমি কিনে/লিজে নিয়ে ঘাস চাষ করবেন।
সাবধান!এমন সিন্ধান্ত নিবেন না।
তবে টপ ট্রেইনারদের কথা মতো করলে করতে পারেন।
তবে মনে রাখিয়েন টাকা কিন্তু আপনার পকেটের।
আর আপনি কোটিপতি হলে তো ভিন্ন কথা।
#অসাধু ব্যবসায়ীদের টার্গেট এই সেক্টরে সমস্ত টার্গেট নতুন খামারীদের উপর বেশি।পুরাতন খামারীরা অনেকেই তা ভালো করে জানে,আর কেউ তো হারে হারে টের পাচ্ছে।
কেউ কারো পক্ষ নিলে সুযোগ পাবে,গরু কিনলে নতুন ১/২ টি রাবার মেট, মেডিসিন,শিখতে চাইলে কলম,কাপড়,বস্তা ভরা গো খাদ্য,খেলতে খেলে চকলেট,পায়েস ইত্যাদি সুযোগের পাল্লাই পড়ে নিজের লোকসান করবেন না।সাবধান!
#ফেসবুকে খামারীদের আয়ত্ত করার নতুন একটি পদ্ধতি এসেছে ফেক আইডি সমাচার।আসল আইডি দিয়ে উওর দিবে ফেক আইডি দিয়ে প্রশ্ন করবে বা তার বিপরীত ও হতে পারে।
সুতরাং নতুন খামারীরা ভাইয়েরা সাবধান!একটু বোঝার চেষ্টা করবেন।
আর এই ফাঁদে বেশী পড়ে কোমল মনের প্রবাসী ভাইয়েরা।
#প্রবাসী ভাইদের বলছি,আপনারা যেমন কোমল মনের মানুষ ঠিক তেমন অনলাইনে খুঁজে পাওয়া কঠিন।
অনলাইনে কেউ সময় দেয় তাদের পিছনে/সামনের ব্যবসা বা উদ্যেশ হাছিল করার জন্য, কেউ বা শ্রম ও মেধা কাটিয়ে সময় দেয় খামারীদের উপকারের জন্য।
তবে ভালো মানুষের সংখ্যা সবসময় ই কম হয়।
মনে রাখবেন শয়তানের দল বড়।
তাই সাবধান!বাস্তবতা মেনে খামার করবেন
আশা নষ্ট হবে না,স্বপ্ন টিকে থাকবে ইনশাআল্লাহ্।
#বাস্তবতা বড়ই কঠিন এই কথাটি আমি সবসময় ই বলে থাকি।
একজন ইরান প্রবাসী ভাই দীর্ঘ ৪/৫ মাস ধরে আমার সাথে প্রতিদিনই সময়ের ফাঁকে ফাঁকে খামার বিষয়ক নানা পরামর্শ নিত।
তিনি বলতেন আমাকে তিনটি কথা….
১।#টাকা যা লাগে ইনবেষ্ট করতে পারব।
২।#ঘাসের জন্য জমি কিনতে পারব।
৩।#কিন্তু আমার লোকের অভাব।
তার জন্য আমার সাজেশন ছিল।আপনার টাকা আছে বলে খামার করে সফল খামারী হয়ে যাবেন এটা কোন সময়ই ভাববেন না।হয়তো টিকিয়ে রাখতে পারবেন লসের বোঝা বয়ে।আর থাকে সবসময় ই বলতাম ছোট্ট পরিসরে শুরু করুন।প্রয়োজনে শুধু ৪/৫ টি ১০__১৫লিঃ দুধের গাভী দিয়ে একজন অভিক্ত লোক রেখে শুরু করুন।৬মাস এভাবে রাখেন পরে সময়ের ব্যবধানে বড় করুন।তাড়াহুড়ো করবেন না।
আরো অনেক কিছুই বলতাম।মোটকথা ছিল ছোট্ট
পরিসরে শুরু করুন এই বিষয়ে হতো আলোচনা।
ওনি আমার কথামতো ঠিক তাই তাই করল।
১মাস পর একটু লাভের মুখ দেখতে পেরেই লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে শেড করল,ঘাসের জমি কিনল,আর ১৪ লক্ষ টাকা দিয়ে গরু কিনল।২য় মাসে মোট প্রায় ২১ লক্ষ টাকা ইনবেষ্ট করল।
আর দুঃখের বিষয় হলো ১ম মাসে আমার সাথে মোবাইলে কথা হতো কিন্তু ২য় মাসে ইনবেষ্ট করার পর আমাকে জানালো।শুনে আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম।
তখন বলেছিলাম এত বড় উদ্যেগ নিয়ে কাজ করলেন আমি একটু জানার ভাগ ও পেলাম না।
ওনি উওর করলেন___ #ভাই আপনাকে বললে আপনি পরিষ্কার না করতেন তাই বলিনী।কাজ শেষ করেই বললাম।
#তখন ওনাকে একটি কথাই বলেছিলাম…
জানি না কার পরামর্শে কী করলেন?যদি নিজের পরামর্শে করে থাকেন তাহলে ও টের পাবেন।আর অন্যর পরামর্শে করলে তাও টের পাবেন।
তখন বুঝবেন হয়তো আমি কি বলতাম।
আমার কথা শুনে রাগ করে দীর্ঘ দিন আর যোগাযোগ রাখে নাই….
#হঠাত একদিন কল করে বলে ভাই আমি শেষ!
আপনার কথাগুলো না মেনে আমি চরম ভুল করেছি।
মাফ করে দিবেন।থাকে বললাম মাফ না হয় আমি করলাম ভুলের মাসুল তো আপনারই দিতে হবে।
জানতে চাইলাম কেনো আপনি শেষ…হলেন বলল একাধিক কারণ…..
★গরু অসুস্থ হয়ে যায় কয়েকদিন পরপর
★ম্যাস্টাটিস হয়ে ৪ টি গাভী নষ্ট হয়ে গেছে
★বকনা গুলো বীজ রাখে না
★২লাখ টাকার গাভী ৯০ হাজার বিক্রি করা
★রাখাল কাজে অবহেলা
★ঘাস আছে গরু নাই
★অসাধু দালালের জন্য ইত্যাদি।
সুতরাং পরিশেষে আমি চলে গিয়েছিলাম তার খামারে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় বাড়ি গিয়ে জানতে পারলাম ইউটিওব,ফেসবুকে এর সফলতার গল্প ও কানামাছি বৌ বৌ লোকের কথা শুনেই খামার টা ২য় মাসে বড় আকার নিয়ে করে ছিল।
তখন মোবাইলে ওনাকে বলেছিলাম #ভাই টাকা গুলো কার পকেটের গেছে।ঐ প্রবাসী ভাই এককথাই বলল,ভাই আমাকে আর লজ্জা দিয়েন না।
তবে আপাতত খামারটি বন্ধ আছে। সম্ভবত কিছুদিন পর থেকে আবার শুরু করবেন।
অনুমতি না পাওয়ার কারণে নাম প্রকাশ করতে পাররলাম না।
*****এমন খামারীর সংখ্যা আরো অনেক আছে যা আমি জানি তবে সবই লেখা সম্ভব নয়।
সুতরাং নতুন খামারী ভাইয়েরা খামার করুণ লস নয় লাভ আছে তবে নিয়ম মোতাবেক সামনে আগাতে হবে।
কারণ আমরা কোটিপতি নয়।
লসের বোঝা বড়ই কঠিন ও যন্তনাদায়ক।
সাবধান!
পোস্ট টি একটু বড় তবে হয়তো সবার কাছে ভালো লাগবে না।কেননা,সত্য কথা লাগে তিতা।তবে মেনে চলতে হবে বাধ্যতামূলক নয়।নতুনদের নিয়ে অনেক পোস্ট দিছি তবে এতোটুকু বলতে পারি কোন নতুন খামারী ৩টি পর্ব কথাগুলো অনুসরণ করে যদি বাস্তবতা মেনে খামার করার চেষ্টা করে পথচুত্য হবেনা ইনশাআল্লাহ্।
হে নতুন খামারী ভাই____________________________,,,
এবার সিদ্ধান্ত আপনার বাস্তবতা মেনে খামার করবেন না কল্পনাতে ভেসে ইউটিউব/ফেসবুকের লাভ আর লাভ এই গল্প গুলো মেনে চলবেন
মোঃ জুলমত আলী