Breaking News

মাংস সংরক্ষণের কয়েকটি পদ্ধতি

মাংস সংরক্ষণের কয়েকটি পদ্ধতি
লেখকঃ
লেঃ কর্নেল মোঃ তুহিন হাসান, পিএসসি
পরিচালক (ভেটেরিনারিয়ান) বিজিবি

প্রাথমিক কথা:
আগামী ১২ আগস্ট ২০১৯ তারিখে পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা।কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে ঘরে ঘরে প্রচুর কাঁচা মাংস থাকবে। সঠিক পদ্ধতিতে মাংস সংরক্ষণ করলে মাংস তাজা, স্বাস্থ্যকর ও ব্যাকটেরিয়ামুক্ত অবস্থায় খাওয়ার উপযোগী থাকে।

১। ফ্রিজিং।
ডিপ ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ করা হলো সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি। মাংসের ৫০-৭৫ ভাগ পানি থাকে যা পচনশীল জীবাণু সংক্রমিত করতে ঝুঁকি বাড়ায়। শূন্য ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার নিচে ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ করা উচিত এবং -২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নিচে ওই পানির শতকরা প্রায় ৯৮ ভাগই ক্রিস্টাল হয়ে পচন রোধ করে। তবে ফ্রিজে মাংস রাখার আগে খেয়াল রাখতে হবে :

ক। মাংস কাটার ধরন বা পদ্ধতি:
মাংস কাটতে হবে স্লাইস অর্থাৎ পাতলা করে। মোটা ছোট ছোট টুকরা করে নয়। একেবারে অনেক মাংস একসঙ্গে না রেখে ছোট ছোট প্যাকেটে মাংস রাখা ভালো।

খ। চর্বি ছাড়া মাংস:
দীর্ঘদিন ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণের জন্য মাংস থেকে চর্বি সরিয়ে ফেলতে হবে। অর্থাৎ, চর্বি ছাড়া মাংস ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হবে।

গ। ভ্যাকিউম-সিল্ড ব্যাগ ব্যবহার করা:
প্লাস্টিক ব্যাগ/বক্স ব্যবহার না করে ভ্যাকিউম-সিল্ড ব্যাগ ব্যবহার করা স্বাস্থ্যসম্মত।

২। ড্রাইং পদ্ধতি:
মাংস রোদে বা চুলায় জ্বাল দিয়ে ৭০ থেকে ৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় সম্পূর্ণ পানি শুকিয়ে নিতে হয়। এই পদ্ধতিতে মাংসের চর্বি ফেলে দিয়ে পাতলা করে কেটে ভ্যাকিউম-সিল্ড করে ফ্রিজে ১ বছর পর্যন্ত রাখা যায়।

৩। স্মোকিং:
এটি একটি পুরোনো পদ্ধতি যাতে তাপের ধোঁয়ায় মাংসের মাইক্রোবসগুলো নষ্ট হয়ে যায়।

ক। হট স্মোকিং: ৩০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় মাংস পোড়ানো হয়।

খ। কোল্ড স্মোকিং : এ পদ্ধতিতে ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা ধরে স্মোকিং আগুনে ৮৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় পোড়াতে হয়।

গ। তরল স্মোক প্রিপারেশন: সাধারণত মাংস ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করে থাকেন।

৪। সল্টিং বা লবণ পদ্ধতি:
এই পদ্ধতিতে মাংসের অক্সিডেটিভ ও মাইক্রোবিয়াল পচন প্রতিরোধ করে বলে মাংস সবচেয়ে বেশি ফ্রেশ এবং পুষ্টিগুণসম্পন্ন হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে খাওয়ার লবণ, কিউরিং লবণ, মসলা এবং ব্রাউন চিনি অথবা খাবার লবণ, সোডিয়াম নাইট্রেট ও সোডিয়াম ল্যাকটেট দিয়ে মাংস মেখে ২৪ ঘণ্টা রেখে ফ্রিজে ১ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।

৫। ক্যানিং পদ্ধতি বা থার্মাল স্টেরিলাইজেশন:
প্রথমে মাংস প্রায় ২৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় ড্রাই করে ঠান্ডা করা হয়। কাচের জার বা বয়ামের মুখ আটকে রেখে মাংস প্রায় এক বছর রাখা যায়। তবে মাংস কাটা, রান্নার আগে সিমিং, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, ঠান্ডা করা ইত্যাদি খেয়াল রাখতে হবে।

৬। কোল্ড স্টেরিলাইজেশন:
এ পদ্ধতিতে মাংস সংরক্ষণ করা আরও বেশি নির্ভরযোগ্য। অধিকাংশ মাইক্রো অর্গানিজম মেরে ফেলা হয়। ফলে মাংস স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন হয়ে থাকে।এই পদ্ধতিতে মাংসের সঙ্গে আয়োনাইজড রেডিয়েশন, অর্থাৎ কোবাল্ট‌, গামা রেডিয়েশন, ইউ-ভি রেডিয়েশন ইত্যাদির মতো রেডিয়েন্ট এনার্জি ব্যবহার করা হয়।

শেষ কথা:
মাংস সংরক্ষণের আগে প্রয়োজন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে মাংস কাটা, ধোয়া এবং সঠিক পাত্র ব্যবহার করা। মাংসের পুষ্টিমান ও স্বাদ ভালো রাখতে চাইলে গরুর মাংস ৮-১২ মাস এবং যেকোনো ধরনের মুরগির মাংস ৩-৬ মাসের বেশি ফ্রিজে সংরক্ষণ করা উচিত নয় ।

সূত্র: ইন্টারনেট

Please follow and like us:

About admin

Check Also

টিকা ও ওষুধের ব্যবহার পদ্ধতি (এম এ ইসলাম)

টিকা ও ওষুধের ব্যবহার পদ্ধতি  টিকা ও ওষুধের সঠিক ব্যবহার রোগপ্রতিরোধ ও নিরাময় নিশ্চিত করে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »