Breaking News

ভেটেরিনারি সার্জনের নামের ইতিহাস

ভেটেরিনারি সার্জনের নামের ইতিহাস
আমার কথা আমি এভাবে বলতে চাই ১৯৮৭ সালে পাবলিক সার্ভিস কমিশন আমাকে VAS (Veterinary assistant surgeon) হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে। আমি পাবনা সদর উপজেলায় যোগদান করি। জেলা অফিস আমাকে সহকারী পশুচিকিৎসক হিসেবে পত্র প্রদান করে।আমি জেলা অফিসকে পত্র মারফত জানাই যে, পাবলিক সার্ভিস কমিশন আমাকে ভেটেরিনারি সহকারী সার্জন হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেছে বিধায় আমার পদবি সে ভাবে লিখার জন্য।আমি আরও জানাই যে, Encyclopaedia Britannica তে veterinary এর প্রতিশব্দ veterinary রাখাই যৌক্তিক । Encyclopaedia তে veterinary শব্দকে বলতে বুঝানো হয়েছে এ ভাবে veterinary means breeding, feeding,handling and treatment of ailing animals. কাজেই পশুচিকিৎসা ভেটেরিনারি শিক্ষার খন্ডিত অংশ বুঝায়।পরর্তীতে জেলা অফিস আমাকে পদবির বিষয়ক পত্রের জন্য ব্যাখা তলব করে।আমি বিস্তারিত ব্যাখাসহ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মতামত জানার কথাও পত্রে উল্লেখ করি।সবে মাত্র চাকরিতে ঢুকেছি এতটা শিষ্টাচার জানা ছিল না। তাই আমার পদবি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মত রাখাই যৌক্তিক বলে জানাই। বাংলায় পদবি সহকারী পশুচিকিৎসক আমার শিক্ষা সাথে সম্বনয়হীন বলে মামলা করার বিষয়টি জানিয়ে পত্র লিখি। জেলা অফিস তাদের পত্রটি আমার ব্যাখাসহ তৎকালীন পরিচালক, পশুপালন বর্তমানে ডিজি প্রাণিসম্পদ বিভাগে প্রেরণকরতঃ আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করে।পশুপালন থেকে প্রাণিসম্পদে রুপান্তরের কাহিনী অন্যসময় লিখব ইনশা-আল্লাহ। ডিজি অফিস আমার ব্যাখা সম্বলিত পত্রটি পাবলিক সার্ভিস কমিশনে পাঠায়। পাবলিক সার্ভিস কমিশন বিষয়টি তাদের মতামতসহ তৎকালীন মহামান্য রাষ্ট্রপতি হোসেন মুহাম্মদ এরশাদ এর নিকট প্রেরণ করে।মহামান্য রাষ্ট্রপতি ভেটেরিনারি সার্জন এর কতটি পদ আছে তা পিএসসি ও ডিজি অফিসের কাছে জানতে চায়।ডিজি অফিস জানায় ভেটেরিনারি সার্জন নামে কোন পদ নেই। রাষ্ট্রপতির দপ্তর veterinary শব্দের ব্যাখা এবং ভেটেরিনারি সার্জন হিসেবে পদোন্নতিযোগ্য পদ না থাকায় Veterinary assistant surgeon পদ থেকে assistant কর্তনকার করে Veterinary surgeon পদবি নির্ধারণ করে পত্রজারি করে।তখন থেকে আজকের ভেটেরিনারি সার্জন।

এখন অনেক রাত রমজান মাস তবুও ভেটেরিনারি বা পশুচিকিৎসক হতে বের হতে পারিনি। আমি যুগ্ম সচিব হিসেবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদান করতে গেলাম তৎকালীন মন্ত্রী কিছু অছিয়ত নছিয়ত করলেন আমি বল্লাম সবকিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেয়া সঠিক হবে স্যার।উনি বুঝলেন আমি আইনের বাইরে কিছু করবো না। উনি জানতে চাইলেন আমি কিসের ডাক্তার । আমি বল্লাম স্যার আমি গরুর ডাক্তার। উনি বল্লেন আপনি এভাবে বলছেন কেন? আমি বল্লাম আপনি মনে হয় এভাবেই জানতে চেয়েছেন।

যুগ্ম সচিব বা সচিব হয়েও veterinary ডিগ্রি থাকায় অনেকেই এ বিরামবনা এড়াতে পারেননি । জনৈক উপসচিবকে ডিসি ফিট লিষ্ট পরীক্ষায় ড. সাদাত হোসেন জানতে চাইলেন তুমার পড়াশুনা । শুনে বললেন ও পশুচিকিৎসা! সেবার না হলেও পরেরবারে তিনি ডিসি হতে পেরেছিলেন।

ব্রিটিশ সিলেবাস বিবেচনায় এবং পড়াশুনার জন্য প্রয়োজনীয় মেধার গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে গরুর ডাক্তারদের প্রথম শ্রেনীর মর্যাদা দিয়েছিলেন।এদেশের আমলা বলুন আর কিছু শিক্ষিতের নামে অশিক্ষিত যেমন ডা. তোষার সাহেবরা একই। তবে এদেশে যারা কামলা হিসেবে বিবেচিত তারা ঠিকই ই জানে পশু হাসপাতাল কোথায় আছে।

ছাত্রেনেতা হিসেবে রাষ্ট্রপতি এরশাদ সাহেবের সাথে বঙ্গভবনে দেখা করতে গেলে কেবিনেট সেক্রেটারি মরহুম এম কে আনোয়ার সাহেবের সাথে কৃষিবিদের পদ থেকে অকৃষিদের সরিয়ে দেবার প্রশ্নে গোলমাল বেধে যায়।এক পর্যায়ে তাকে বলে ফেলি আমরা আপনার মত বেকার হতে পড়াশুনা করিনি।আমরা একটা ব্যাগ নিয়ে ছনের ঘরে বসলে আমাদের দিন চলে যাবে তবে আপনাকে চাকরী ছাড়লে থালা হাতে বটতলায় বসতে হবে।তবুও ধন্যবাদ সাবেক মহামান্য রাষ্ট্রপতি এরশাদ সাহেব ও মরহুম এম কে আনোয়ারকে সে সময়ে বিসিএস -এ কৃষির সকল বিভাগে একটি পত্রের পরির্বতে দুটিপত্রের পরীক্ষার দাবী মেনে নেওয়ায়। সে কারনেই ১৯৮৫ সালের বিসিএসে কৃষি সেক্টরের প্রধান্য।
সময় হলে আবার আসবো।

ডা শহীদ মোতাহার হোসেন

যুগ্ন সচিব

Please follow and like us:

About admin

Check Also

খামারীদের কেমন পরামর্শ দেয়া উচিত,কোনটা উচিত না এবং কিছু আলোচনা।

খামারীদের কেমন পরামর্শ দেয়া উচিত,কোনটা উচিত নাএবং কিছু আলোচনা। খামারীদের পরামর্শ দিতে গিয়ে যাতে সেটা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »