Breaking News
বটল জো
বটল জো

বাছুরের বোটল জ্ব ও কৃমি এবং তার পরিনতি।

বাছুরের “”বোটল জ্ব”” এবং তার পরিনতি।

পুর্বে আমরা দেশী গরু পালতাম যার জন্য আমাদের দেশের প্রচলিত খাদ্য যথেষ্ট ছিল।

এই জাতের বকনা ডাকে আসার জন্য কোন ঔষধেরও প্রয়োজন হয় না।এমনকি পুষ্টির অভাবে কোন বাছুরের বোটল জ্ব হয়না। পড়ুটে হয়না,ধরে তুলে দেয়াও লাগেনা।

অথচ ক্রস ব্রিডের যে কোন বয়সের গরুর কথা ধরেন।বাছুর থেকে শুরু করেন ৭/৮ মাস বয়স থেকে ১১/১২ বয়স পর্যন্ত বাছুরের গ্রোথ বন্দ্ধ হয়ে যায়।

গায়ের লোম উসকো খুসকো হয়, পেট মোটা হয়ে যায়। পেট এমন মোটা হয় যে এক জমি থেকে অন্য জমিতে যাওয়ার সময় জমির আইলে পেট বেধে উল্টে পড়ে থাকে।

লিখতে লিখতে মনে পড়ে গেল,বাবর যেমন মাঝে মাঝে রেয়ার কালেকশন পোষ্ট করে, সে রকম একটা স্মৃতি মনে পড়ে গেল ছোট বেলায় পেট মোটা কুনো ব্যাঙ ধরে উল্টে দিতাম আর তার সোজা হওয়ার জন্য কি চেষ্টা, বাছুরগুলো তেমনি পড়ে গেলে আর ঊঠতে পারনা।

বকনা বাছুর যদি ছোট বেলায় পেট মোটা থাকে তাহলে বড় হলে আর ডাকে আসেনা।

শংকর জাতের বাছুর আমরা গ্রহন করি,কিন্তু সঠিক পুষ্টিকর খাদ্য না দেয়ায়,”” আম ছালা সব যায়””।

অর্থাৎ একসময় চিকিৎসার খরচ ও যায়।আবার বাছুর ও মারা যায়।

গাভীর কৃমির বড়ি খাওয়ানোর সময় আমরা দুধ দেবার মাঝে কৃমির বড়ি খাওয়ায়।

ফলে অনেক সময় গাভীর দুধ কমে যায়,দুধ নীল হয়ে যায়,অনেক সময় দুধ হলুদ হয়ে যায়,অথবা

দুধের ছানা কেটে দুধ নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু আমরা যদি ট্রাইক্লোবেনডাজল ও লিভামিজল জাতীয় কৃমির বড়ি গর্ভকালীন ৩ মাসের সময় একবার আর ৯ মাসে বাচ্চা দেবার পুর্বে আর একবার খাওয়ায়।

তাহলে দুধের ক্ষতি হয়না,উপরন্ত কৃমির প্যারেন্ট্রাল ট্রান্সমিশন (প্লাসেন্টার মাধ্যমে) বন্দ্ধ হয়। অবশ্য ইনজেকশনেও দেয়া যায়।ক

গর্ভকালীন যদি কৃমির ঔষধ নাদেয়া হয়,তাহলে বাছুরকে অবশ্যই ১ থেকে দেড় মাস বয়সে একবার ও৪ মাস পুনরায় কৃমির বড়ি খাওয়ানো উচিত।
বাছুরের যখন গ্রোথ বন্দ্ধ হয়ে যায় ও পেট মোটা হয়ে যায়।

তখন এই অবস্হা থেকে গ্রোথ আনার জন্য আপনি নিশ্চিন্তে ব্যাবহার করতে পারেন এস আর এগ্রো -এর নিম্নোক্ত প্রডাক্ট।

এছাড়া শত শত পেট মোটা বাছুর প্রতি বৎসর শীককালে মারা যায়। প্রথমে টুটি ফোলে “”বোটল জ্ব”” ৩/৪ দিনের মধ্যে নিজে নিজেই ভাল হয়ে যায়।

আবার ৩/৪ দিনের মধ্যে আবার টুটি ফোলে ৭/৮ দিনের মধ্যে আবার ভাল হয়ে যায়।এরপর আবার কয়েকদিন পর পুনরায় টুটি ফোলে এবার আর ভাল হয়না।

ক্রমান্বয়ে টুটি ফোলা বাড়তে থাকে।তারপর কয়েকদিন পর পাতলা পায়খানা শুরু হয়। এরপর ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়।

এক সময় নিজে উঠতে পারেনা, তুলে দিলে সারাদিন হেটে হেটে খেয়ে বেড়ায়,এমনকি রাত পর্যন্ত খায়।

যতদিন দিন যায় খাওয়া বাড়তে থাকে।কিন্তু ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে হতে এক সময় তুলে দিলেও আর দাড়াতে পারে না।শেষ পর্যন্ত সব চেষ্টা ব্যার্থ করে দিয়ে মারা যায়।

আমার দীর্ঘকালের অভিজ্ঞতায় দেখেছি টুটি ফোলার পর অত্যন্ত পুষ্টিকর খাদ্য ও চিকিৎসা দিয়েও কোন বাছুর টিকে না, টুটি ফোলার পর নিশ্চিত মৃত্যু মেনে নিতেই হয়।

অবশেষে এই অবস্হা থেকে মুক্তি পেতে এস আর এগ্রো প্রথমে সরাসরি আমদানি পরে আমদানীর পর উৎপাদনে গেছে এবং অবিশ্বাস্য হলে ও সত্য যে এই প্রডাক্ট ব্যাবহারের পর প্রত্যকটা বাছুর সফলভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে।

টুটি ফোলার কারন হিসেবে অনেকে কৃমির সংক্রমন ধরে নিয়ে, শুধু মাত্র কৃমি নিধন করে সফলতা আনতে চেষ্টা করে।

যারা নতুন চিকিৎসক তারা কতটা জানে আমি জানিনা,তবে আমার মত যারা দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ,তারা বলতে পারেন এইসব ক্ষেত্রে ১০০০ টার মধ্যে ১ টাও বাচে না।

২/৩ সপ্তাহের চিকিৎসায় বাছুর সুস্হ হয়,এবং পেট ছোট হয়ে আকর্ষনীয় চেহারা ও দৈহিক বৃদ্ধি ঘটে যা এক কথায় অবিশ্বাস্য।

যদি এমন পেট মোটা বাছুর থাকে আপনি পরীক্ষা করার জন্য একটামাত্র বাছুর চিকিৎসা করে দেখেন।ভাল একটা সফল চিকিৎসা উপহার দিতে পেরে সত্যি খুব তৃপ্ত।

১। এস আর কাফ গ্রোয়ার –২/৩ কেজি।
ব্যাবহারঃপ্রতিদিন ১০০ গ্রাম( দৈহিক ওজন ৪০–৬০ কেজি) তিন ভাগ করে ৩ বারে খাওয়াতে হবে। এক বা দুই বারে খাওয়ালে হজম করতে পারবেনা। পাতলা পায়খানা হবে।
২। এস আর লিভার টনিক–৫০০–১০০০ গ্রাম
ব্যাবহারঃ প্রতিদিন ৩০–৪৫ গ্রাম ৩ বারে ভাগ করে খাওয়াতে হবে।

টুটি ফোলার কারন হাইপো প্রোটিনেমিয়া।পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়ালে সেটা হজম করে কাজে লাগানোর মত ক্ষমতা বাছুরের থাকে না। অধিকন্ত এ্যামাইনো এসিডের প্রিপারেশন শিরায় ইনজেকশন দিলে খাওয়ার রুচি কমে যায়।বিধায় এই চেষ্টাও ব্যার্থ হয়।

মৃত্যুর পর পোষ্টমর্টেম করলে দেখা যায়।বাছুরের ক্ষুদ্রান্ত্র ও বৃহাদান্ত্র ল্যাদারী বা প্লাষ্টিকের মত হয়ে যায়।

ফলে খাদ্য হজমের পর সারবস্তু শোষন করার মত ক্ষমতা অন্ত্রের থাকে না।
ফেসবুক থেকে নেয়া

বাছুরের কৃমিরোগ

অনেকেই মনে করে, দুধ খাওয়া বাছুরের কৃমি হয় না, বিধায় বাছুরকে কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ানো থেকে বিরত থাকে।

কিন্তু আপনারা কি জানেন, বাছুরের কৃমি রোগ একটি মারাত্নক রোগ। যার ফলে প্রতি বছর অনেক বাছুর কৃমিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

কারন
> গাভীকে গর্ভাবস্থায় কৃমিমুক্ত না করলে গর্ভের বাছুর মায়ের পেট থেকে কৃমির ডিম বহন করে।
> গাভীর প্লাসেন্টার মাধ্যমে লার্ভাযুক্ত ডিম দ্বারা সংক্রামিত হয়।
> পানি জমে থাকে এবং শামুক বসবাস করে, এমন জমির ঘাস ও জলজ উদ্ভিদের সংগে সারকেরিয়া যুক্ত ঘাস খাওয়ালে।
> অপরিষ্কার পানি, খাবার, ও খাদ্য পাত্রের মাধ্যমে।
> কলিজার পাতাকৃমি (Liver fluke) এর কারন Fasciola gigantica নামক কৃমি।
> রক্তের পাতাকৃমি (Blood fluke) এর কারন Schistosoma nasalis নামক পাতাকৃমি।
> Rumen fluke এর কারন Paramphistomum cervi প্রজাতির পাতাকৃমি।
> কেঁচো বা বড় গোল কৃমি (Round worm) এর কারন Neoascaris vitulorum নামক কৃমি।
> Stomach worm এর কারন Haemonchous contortus, Mecistocirrus digitatus, Trichostrongylus and Cooperia নামক পাকস্থলী কৃমি।
> Strongyloid গণভুক্ত বিভিন্ন প্রজাতির কৃমি।
> ফিতা কৃমি (Tape worm) এর কারন Moniezia spp. অন্যতম।
> Srephanofilaria assamensis নামক প্রজাতির কৃমি।

ক্ষতির দিকসমুহ

> কৃমি বাছুরের দেহের পুষ্টি উপাদানে ভাগ বসায় ফলে বাছুর পুষ্টিহীনতায় ভুগে।
> বাছুরের দৈহিক বৃদ্ধিতে চরম ভাবে বাধাগ্রস্থ করে। হজম শক্তি হারিয়ে ফেলে।
> খাদ্য পরিপাক ও পুষ্টি শোষনে বাধার সৃষ্টি করে, যার ফলে রক্তশুন্যতার সৃষ্টি হয়।
> পরবর্তিতে বাছুরের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস করাসহ দুধ ও মাংশ উৎপাদনও হ্রাস পায়।
> অন্ত্রনালীতে অনেক সময় কৃমিতে জমাট বেধে ফেলে, যার ফলে খাদ্য চলাচল বন্ধ হয়ে বাছুর মারা যায়।

লক্ষন
> শারীরিক দুর্বলতা ও দিন দিন শুকিয়ে যায়।
> প্রায়ই মাঝে মাঝে পাতলা পায়খানা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা যাবে।
> রক্ত ও মিউকাস মিশ্রিত দুর্গন্ধযুক্ত ডায়রিয়া হতে পারে।
> রক্তস্বল্পতা ও দৈহিক ওজন হ্রাস পায়।
> বাছুর, গাভীর বাটে মুখ লাগাতে অনিহা প্রকাশ করে।
> দুধ খেলেও অন্যন্য খাবারের প্রতি তেমন আগ্রহ দেখায় না।
> পশম উসকো খুসকো হয়ে যায়।
> বাছুরের পেট ব্যথা অনুভুত হয়।
> কাশি এবং শ্বাসকষ্ট হতে পারে তবে কোন জ্বর থাকে না।
> পেট বড় হয়ে যায়।
> চর্ম রোগ দেখা দিবে।
> প্রোটিন সংশ্লেষন হয় না বিধায় গলার নিচে পানি জমে থাকতে দেখা যাবে।

চিকিৎসা
আক্রান্তের ধরন ও তীব্রতা অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হয়।

পাইপেরাজিন সাইট্রেট গ্রুপের কৃমিনাশক পাউডার। ১০ গ্রাম সমপরিমান/Calf.
অথবা
এ্যালবেন্ডাজল গ্রুপের বোলাস। 7.5mg/kg b.wt
অথবা
আইভারমেকটিন গ্রুপের ইন্জেকশন। 1cc/50kg b.wt (SC)
অথবা
নাইট্রোক্সিনিল গ্রুপের ইন্জেঃ। 1.5cc/50kg b. wt (SC)
অথবা
লিভামিসল গ্রুপের বোলাস। 19.5mg/kg b.wt

সতর্কতাঃ ৬ মাস বয়সের নিচে কোন বাছুরকে ট্রাইক্লাবেন্ডাজল গ্রুপের ঔষধ না খাওয়ানোই উত্তম।

প্রতিরোধ
> বাছুর জন্মের ৫-৭ দিনের মধ্যে পাইপেরাজিন সাইট্রেট গ্রুপের Pow: Ascarex 100 or 500mg (ACI) এর ১০ গ্রাম চিটাগুড়ের সাথে মিশিয়ে জিহ্বায় ঘষে দিতে হবে।
> বাছুর জন্মের প্রথম ৬ মাস বয়স পর্যন্ত, প্রতি মাসে একটি করে Albendazole গ্রুপের টাবঃ যেমন ALMEX vet 600mg (Square) 7.5mg/kg b. wt হিসাবে সকালে খালি পেটে গুড় দিয়ে খাওয়াতে হবে।
> গর্ভাবস্থায় গাভীকে নিয়মিত ৩-৪ মাস পরপর কৃমিনাশক ঔষধ ব্যবহার করা, যাতে বাচ্চা কৃমিমুক্ত হয়ে জন্মাতে পারে।
> বর্ষায় জেগে উঠা এবং সকালের ভেজা ঘাস খাওয়ানো যাবে না।
> শামুকের সংখ্যা হ্রাস বা ধ্বংশ করে।
> স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে বাছুর লালন পালন করা।

Please follow and like us:

About admin

Check Also

বাছুরের ডায়রিয়ার কারণ

Couses of diarrhea in neonatal rumenants ?Bacterial: ?Escherichia coli ?Salmonella spp. ?Campylobacter fecalis ?Campylobacter coli …

Translate »