#কি প্ল্যান এখন আপনাদের?
#কিভাবে শুরু করবেন আগামী ঈদের প্রস্তুতি?
#শুধু কি ঈদ নাকি সারা বছরের প্রস্তুতি?
ঈদ পরবর্তী আমরা অনেকেই খেই হারিয়ে ফেলি কি করবো তা ভেবে!!!
★কখন গরু কিনবো?
★কোন জাতের গরু কিনবো?
★কি সাইজের গরু কিনবো?
★কোথা থেকে গরু কিনবো?
★কত দামের কিনবো?
ইত্যাদি ইত্যাদি??????
আসলে আগামী ঈদে বা সারা বছর আপনি কি পরিমান মুনাফা করবেন বা কতটুকু সাফল্য অর্জিত হবে তা মূলত আপনার এখনকার সিদ্ধান্তের উপরই অনেকাংশে নির্ভর করবে তাই এখনকার সিদ্ধান্ত গুলো হতে হবে বেশ বিচক্ষন।
>>> প্রথমেই ঠিক করতে হবে —
১) আগামী কোরবানির জন্য? নাকি
২) আগামী রোজার ঈদের জন্য? নাকি
৩) ৩-৬ মাস বা মিশ্র মেয়াদের জন্য?
ব্যাখ্যা : ১) আগামী কোরবানির জন্য যদি টার্গেট করেন তাহলে ২ ভাবে আগাতে পারেন। প্রথমত ৪০-৫০ হাজারের মধ্যে লাল বা কালো শাহীওয়াল ক্রস বাছুর ক্রয় করতে পারেন যেগুলো আগামী ঈদে ১.৫ – ২ লক্ষ টাকায় বিক্রি উপযোগী হবে। কিন্তু ইহা সবার জন্য উপযোগী নয় কারন এই সাইজের গরুর চাহিদা ঈদে খুব সীমিত তাই যাদের ফিক্সড কাস্টমার আছে তারা বিবেচনা করতে পারেন। ২য়তো ২০-২৫ হাজার টাকার লাল, কালো বা সুন্দর যেকোনো রঙের দেশি বা শাহীওয়াল ক্রস বাছুর ক্রয় করতে পারেন যেগুলো আগামী ঈদে ৮০-১০০ হাজার টাকায় বিক্রির উপযোগী হবে। এই সাইজের গরু ঈদে ব্যাপক চাহিদা থাকে তবে এই সাইজের গরু পালনের ক্ষেত্রে প্রচুর কাচা ঘাসের যোগান নিশ্চিত করতে পারলেই কেবল মুনাফা সুনিশ্চিত হবে।
ব্যাখ্যা : ২) আগামী রোজার ঈদের জন্য যদি টার্গেট করেন তাহলে বেস্ট অপশন হচ্ছে ফ্রিজিয়ান ক্রস কারন তখন একমাত্র ক্রেতা হচ্ছে কসাই আর তারা ৩-৭ মন মাংসের ফ্রিজিয়ান ক্রস গরু গুলো ভাল দামে কিনতে বেশ স্বাচ্ছন্দ বোধ করে কেননা এগুলোতে মিট পার্সেন্টেজ বেশি হয় বিধায় তারা অধিক লাভবান হয়। এমতাবস্থায় এখনই ২০-৫০ হাজার টাকা সাইজের ফ্রিজিয়ান বাছুর ফ্যাটেনিং এর জন্য ক্রয় করা যেতে পারে যেগুলো আগামী রোজার ঈদে ৬০-১৫০ হাজারে বিক্রি উপযোগী হবে।
ব্যাখ্যা : ৩) অনেকেই আছেন যারা বাড়ির কাছাকাছি হাটের সুবিধা পান আবার গরু খুব ভাল চেনেন তারা সারা বছর ব্যাপী বিভিন্ন মেয়াদি প্রজেক্ট প্লান করতে পারেন এক্ষত্রে আপনার এলাকার লোকাল হাটের চাহিদা মাথায় রেখে দেশি কিংবা ক্রস বা ফ্রিজিয়ান যেকোনো বাছুর বা সেমি এডাল্ট গরু ক্রয় করতে পারেন এবং লোকাল হাটের চাহিদা অনুযায়ী ১ মাস, ২ মাস, ৬ মাস, ৮ মাস যেকোনো সময়ে প্রফিট নিশ্চিত হলেই সেল দিতে পারেন।
>>> এবার দ্বিতীয়তো ঠিক করতে হবে —
১) কোথা থেকে কিনবেন?
২) কিভাবে কিনবেন?
৩) কতগুলো কিনবেন?
ইত্যাদি ইত্যাদি???
ব্যাখ্যা : ১) কোথা থেকে কিনবেন এই চিন্তায় আমরা অনেকেই এতো বেশি মাথা ঘামাই আর দৌড় ঝাপ করি যে পরিনাম কোনোভাবেই সুখকর হয় না। অমুক ভাই বর্ডার থেকে খুব সস্তায় এনেছে! অমুক খামারি সিটি হাট থেকে, অমুক ভাই উত্তর বংগ থেকে পানির দামে গরু এনেছে এই ধরনের কথার পিছনে না ছুটে একটু বিচক্ষণ হলে নিজের ঘরের দুয়ারে বসেও ভাল গরু ভাল দামে ক্রয় করা যায় ( শহরের খামারিরা ছাড়া)। নিজের এলাকার হাটগুলোতে রেগুলার যাতায়াত করুন, এলাকার ডেইরি খামারিদের সাথে যোগাযোগ রাখুন কারন তারা ৫/৬ মাস হলেই ষাড় বাছুর গুলো বিক্রি করে দেয়, বেশি পরিমানে ক্রয় করলে বর্ডার এলাকার বিট গুলোর খোজ খবর রাখুন তাছাড়া এলাকার গরুর ব্যাপারীদের সাথে সক্ষতা গড়ে তুলুন যাতে ভাল কোনো মালের খবর সবার আগে আপনাকেই দেয়।
ব্যাখ্যা : ২) গরু কেনায় যদি প্রফিট না করতে পারেন তাহলে গরুর পিছনে আপনার জান কোরবান করে দিলেও বিক্রি করে প্রফিট করতে পারবেন না তাই খুব ধীরে সুস্থে সময় বুঝে ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিবেন। গরু কেনায় কারো সহযোগিতা নেয়া মানে হচ্ছে শিয়ালের কাছে মুরগী বর্গা তাই চেষ্টা করবেন নিজের বুদ্ধি বিবেচনা খাটিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার। হাটে চেষ্টা করবেন পরন্ত বিকেলে ঝোপ বুঝে কোপ মারার, আর ব্যাপারীদের কাছে সব সময় চেষ্টা করবেন নিজেকে ব্যাপারী বা কসাই পরিচয়ে পরিচিত করার। আর গরু প্রতি ৫-১০ হাজার টাকা ব্যবধান ঘটিয়ে দিবে আপনার পোশাক পরিধান ও কথা বার্তা সুতরাং হিরো নয় জিরো হয়ে গরু কিনতে হবে।
ব্যাখ্যা : ৩) কতগুলো গরু কিনলে কত টাকা লাভ হবে? কয়টা গরু দিয়ে শুরু করলে আমার হাত খরচ উঠবে? কয়টা গরু পালা বেশি লাভজনক? ———–এই প্রশ্ন গুলো যাদের মনে উকি দিচ্ছে তাদের জন্য আমার এই লিখা নয়, আসলে আমরা যারা ফ্যাটেনিং খামারি তারা অনেকেই অনেক সময় বিভিন্ন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগি যে কখন কোন সিদ্ধান্ত নিবো। মুলত তাদের সিদ্ধান্তকে সহজ করতেই এই পোস্ট দেওয়া
গ্রীন ফার্ম হাউজ