ফার্মে লাভ লসের কারণ
কেন লাভ হয় না এবং কোন কোন ফ্যাক্টর জড়িত
১রেডি মুরগির দাম উঠানামা করে।
রেডি ব্রয়লার ৮৫-১৪০টাকা, ব্রয়লার বাচ্চা ১০-৬০টাকা,রেডি সোনালী ১৫০-২০০টাকা,সোনালী বাচ্চা ১০-৩০টাকা,লেয়ার রিজেক্ট ১৫০-১৮০টাকা কেজি।লেয়ার বাচ্চা ১০-৬০টাকা।
দাম আরো কম বেশি হয় তবে ম্যাক্সিমাম কত আপ ডাউন হয় তা দেখানো হল।
২.ওজন কম আসা এখানেও অনেক কারণ জড়িত(খাবার,ব্যবস্থাপনা,বাচ্চা।রোগ )
১০০০ব্রয়লার ৫০বস্তা খাবার খেয়ে ১৫৫০-১৮০০ গ্রাম ওজন আসে।
৩ মুরগির ঘর যদি সঠিকভাবে করা না হয়।
সেডের উচ্চতা এবং পর্দা ব্যবস্থা ভাল না হলে গরম(গরমে খাবার কম খায় ,ওজন কম আসে) এবং শীতে(এমোনিয়া গ্যাস হয়ে মাইকোপ্লাজমা,আই বি রানিক্ষেত হয়) বিভিন্ন রোগ ব্যধি হয়ে লসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
৪.পালন সম্পর্কিত সঠিক ধারনা না থাকা
৫।রোগ বালাই , ২০০০ লেয়ার মুরগি ২০ সপ্তাহ পর্যন্ত পালন খরচ ৭-৮লাখ টাকা অথচ রোগের কারণে ৭দিনেই মরে যেতে পারে এমন কি ২-৩দিনে।
৬.বায়োসিকিউরিটি না থাকা ফলে রোগ ব্যাধি বেশি হয় ।
৭..বাচ্চা ভাল মানের না হওয়া ,বাচ্চার মান ভাল না হলে ওজন এবং প্রডাকশন ভাল আসবে না।
৮.টিকার ট্রেইন লোকাল না অনেকগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করা এবং টিকা দেয়ার পদ্ধতিও অনেক সময় সঠিক হয় না ।
অসুস্থ ফার্মে ভ্যাক্সিন বা এন্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন দিয়ে সুস্থ ফার্মে টিকা দিলে
তাড়াতাড়ি টিকা দেয়,ভ্যাক্সিন নরমালে আসার আগেই টিকা দিয়ে দেয়।এতে ভ্যাক্সিনের ইফিকেসি পাওয়া যায় না।
ভ্যাক্সিনের ডোজ মানে না.১২০০মুরগিকে ১০০০ডোজ দেয়.১০০০ পক্সের টিকা দিয়ে ১৫০০-২০০০ মুরগিকে টিকা দেয়।
৯..বাচ্চার দাম বেশি হলে
১০. খাবারের দাম বেশি হলে
১১.মুক্ত বাজারনীতি মানে দামের উপর সরকারের কোন নীতিমালা নেই.
১২. দেশে কতগুলো ফার্ম আছে,কতগুলো বাচ্চা উৎপাদিত হয় এবং আমাদের চাহিদা কতটুকু তার কোন সঠিক হিসেব নেই ও সে অনুযায়ী কোন ব্যবস্থা নেই.
১৩।সাপ্লাই বেশি হলে দাম কমে সাপ্লাই কম হলে দাম বাড়ে এভাবেই চলছে পোল্ট্রি শিল্প
১৪।ভাগ্য,অনেক সময় ভাল করলেও লস হতে পারে যদি ভাগ্যে না থাকে।আবার খারাপ ব্যবস্থাপনায়ও অনেকের ভাল হয় ।
১৫।শিক্ষা এবং ট্ট্রেনিং এর ঘাটতি।
১৬।সঠিক চিকিৎসা ঃসঠিক চিকিৎসা এবং পরামর্শ না পেলে ১০লাখ টাকার মুরগি ২লাখ টাকায় বিক্রি করে দিতে হয়।এই রকম ঘটনাও ঘটে।
যে মুরগি ৯০ সপ্তাহ পর্যন্ত ডিম দিবে সে মুরগি ২৫-৩০ সপ্তাহে এমন কি যে কোন বয়সে বিক্রি করে দেয় বা দিতে হয়।।
১৭।বাকী ব্যবসাঃ
ডিলারের কাছ থেকে বাকীতে খামারী সব নেয়।আর বাকী নেয়ার কারণে ডিলার ও বেশি লাভ করে।
বাকীতে সব নেয়ার কারণে ১০০০ ব্রয়লার পালনে ১০০০০-১২০০০ টাকা বেশি ডিলারকে দিতে হয় মানে লাভ টাই চলে যায়।
১৮।মেডিসিন ও ভ্যাক্সিনের দাম
আমাদের দেশের পোল্ট্রি শিল্পের সাথে যারা জড়িত তারা অধিকাংশ এত শিক্ষিত না ।তাছাড়া তাদের ট্রেইনিং করানো হয় নি ,আবার ট্রেনিং থেকে শিখতে গেকেও কিছুটা শিক্ষার প্রয়োজন হয়।যা তাদের নেই।
তবে এখন শিক্ষিত লোকজন এই শিল্পের সাথে জড়িত হচ্ছে।
সঠিকভাবে পালন করতে পারলে লস হবেনা ,হয়ত লাভ কম হবে কিন্তু বাংলাদেশে সঠিকভাবে ফার্ম চালাতে গেলে কোন ফার্মই থাকবে না।
কারণ ফার্ম গুলো কাছাকাছি,
একই ফার্মে এমন কি একই সেডে বিভিন্ন বয়সের মুরগি।
একটা ব্যাচ বিক্রির পর সোনালী বা ব্রয়লারের ক্ষেত্রে ১৪দিন আর লেয়ারের ক্ষেত্রে ৩ মাস গ্যাপ দিতে হয় কিন্তু আমাদের দেশে এই নিয়ম মানা হয় না।
লেয়ারের টাইটার দেখে টিকা দিতে হবে কিন্তু তা করা হয় না।তাছাড়া টেস্ট করে চিকিৎসা করলে খরচ অনেক কম হয়।
ফার্মে যত রোগ হয় তার মধ্যে ২০% সমস্যার ক্ষেত্রে টাইটার না দেখে ভ্যাক্সিন করার কারণে হয় এবং রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা না করার কারণে ৫০% খরচ বেশি হয় এবং ফার্ম গুলিতে ঝুঁকিতে পড়ে ।ফলশ্রুতিতে মুরগি রাখা সম্বব হয় না।
রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা করা উচিত।
অসুস্থ ফার্মের মুরগি এখানে সেখানে ফেলানো হয় ফলে কুকুর,শিয়াল এই গুলো ভাল ফার্মের সামনে বসে মজা করে খায় আর মনে মনে বলতে থাকে জীবাণূ দিয়ে গেলাম কিছুদিন পর তোমাদের মুরগি খাব।
ফার্মের আশেপাশে দেশি মুরগি চলাচল করে যারা টাইফয়েড,কলেরা,রানিক্ষতে,পক্স,,কৃমি ,মাইকোপ্লজমার জীবাণূ বহণ করে।
শালিক,চড়ুই,বন্য পাখি মাইকোপ্লাজমা আর বার্ড ফ্লুর জীবাণূ নিয়ে সেডের ভিতর আসা যাওয়া করে অনুমতি ছাড়াই।
সেডে প্রচুর মাকড়সার জাল যেন জীবাণূর বাসরঘর।
একসাথে ৩-৪টা এক্টিবায়োটিক না দিলে খামারীর মন ভরে না।মুরগির কথা কোন দিন চিন্তা করে না।
এতএব দেখা যাচ্ছে অনেকগুলো হাত এখানে জড়িত।কাজেই কেউ একা ইচ্ছে করলেও ভাল করতে পারবে না।
তবে কেউ যদি এককভাবে কয়েক টা কাজ করে যেমন , ঙ্গদ ব্যবসা করে, নিজেই কাচামাল কিনে খাবার বানায় ,ভাল ব্যবস্থাপনা,নিজেরাই বিক্রি করতে পারে তাহলে লাভ বেশি হবে।
যেমন কোম্পানীর ফার্মে লাভ বেশি কারণ তারা নিজেরাই সব ব্যবস্থা করতে পারে কিন্তু খামারীরা তা পারেনা।খামারীদের বিভিন্ন আইটেমের জন্য বিভিন্ন জনের কাছে যেতে হয় ফলে সবাই লাভ করার পর যদি কিছু থাকে তা খামারী পায়।
ফার্মে কিভাবে লাভ করা যায়ঃ
উপরের বিষয়গুলি মেনে চললেই হবে।
নোটঃএখানে ১৮টা কারণ দেখানো হয়েছে কেউ ১ বা ২ টা কারণ নিয়ে আলোচনা করতে যাবেন না