খামারিদের জন্য সুখবর যারা দেশের বিভিন্ন জেলায় আছেন কিন্তু ল্যাবের সুবিধা নাই,টেস্ট করার ইচ্ছা আছে কিন্তু করতে পারছেন না।তারা এখন থেকে আমেনা পোল্ট্রি কেয়ার ল্যাবে টেস্ট করতে পারবেন।
কিভাবে রক্ত বা সিরাম পাঠাবেন তা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ,না বুঝলে মোবাইলে কল দিলে বুঝিয়ে দেয়া হবে,এমন কি প্রয়োজনে হাতে কলমে শিখিয়ে দেয়া হবে কিভাবে কি করতে হবে।একবার শিখিয়ে দিলে সারা জীবন কাজে লাগবে।
স্পেশাল যে সুবিধা পাবেন তা হলো সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৬ টা পর্যন্ত ল্যাব খোলা থাকবে কিন্তু টেস্টের কাজ রাতেও করা হবে তাই প্রতিদিনের টেস্ট প্রতিদিন পাবেন মানে টাটকা রিজাল্ট পাবেন। মানে ল্যাব ১৫ ঘন্টা খোলা থাকবে যা অন্য কোথাও নাই।
ল্যাবে কি কি পাঠানো হয়
রক্ত বা
সিরাম
ফর্মালিন ফিক্সড টিস্যু
সোয়াব(ট্রাকিয়াল,ছোনাল,choanal,অরোফ্যারিংজিয়াল ,ক্লোকাল,অর্গান,জয়েন্ট
আপাতত খামারিদের রক্ত বা সিরাম পাঠালেই হবে।
নিচের বিষয় গুলো লিখে দিতে হবে
লোকেশন,ফ্লক নাম্বার
বয়স
তারিখ( কবে স্যাম্পল পাঠানো হয়েছে)
টিকা দেয়ার তারিখ এবং ভ্যাক্সিন সিডিউল
ফ্লক হিস্ট্রি(প্রডাকশন ,মর্বিডিটি ,মর্টিলিটী ,কত দিন ধরে সমস্যা)
সিরাম কালেকশনের গাইড লাইন
২০টা স্যাম্পল এলাইজার জন্য (টাইটার ,সালমোনেলা,মাইকোপ্লাজমার জন্য ৮ -১০টা স্যাম্পল হলেই হয় প্রতি ফ্লকের জন্য ১০০০-৩০০০ মুরগি।এর বেশি থাকলে প্রতি ৩০০০ এর জন্য ৮টি)
আমেনা পোল্ট্রি কেয়ারে এলাইজা হয় না।
প্রতি মুরগি থেকে ২-৩মিলি ব্লাড নিতে হয় যদি এলাইজা টেস্ট হয় সেটা দিয়ে এন ডি, ই ডি এস ,আই বি ,আই বি ডি করা হয়।
যদি এইচ আই টেস্ট হয়,(রেপিড সালমোনেলা ,মাইকোপ্লাজমা এবং এইচ আই টাইটার এর জন্য ১মিলি রক্ত হলেই হয়,গরমে কম লাগে আর শীতে একটু বেশি লাগে)
ব্লাডের অর্ধেক সিরাম হয় যদি ব্লাড ২মিলি হয় সিরান হবে ১মিলি।
নতুন এবং পরিস্কার নিডল দিয়ে ব্লাড নিতে হবে (৩-৫মিলি সিরিঞ্জ দিয়ে)
সিরিঞ্জের ভিতর প্লাঞ্জার দিয়ে জোরে চাপ দেয়া যাবে না এতে ক্লোটেড রক্ত আর সিরাম মিশে যায়।
রক্ত যাতে জমাট বাধতে পারে সেজন্য কাত করে রেখে দিতে হবে তবে একদম উলটা করে মানে সুই এর মাথাটা নিচের দিকে করে আনা যাবে না।
রক্ত যখন জমাট বাধতে থাকে তখন ঝাকি লাগানো যাবে না এবং ফ্রিজে রাখা যাবে না।
জমাট বাধার পর সিরাম টা(পাতলা পানির মত উপরের দিকে জমা হয়) এপেন ড্রপে নিতে হবে।
জমাট বাধার পর সিরাম আলাদা করে পাঠাতে হবে
পরে আইস বক্সে করে ল্যাবে পাঠাতে হবে।
তবে যদি ৪-৫ ঘন্টার মধ্যে আসা যায় এবং পরিবেশের তাপমাত্রা ২৭-৩৮ এর মধ্যে হয় তাহলে বরফ ছাড়া আনা যাবে।
কখন টেস্টের জন্য সিরাম পাঠাতে হয়
১০-১২ সপ্তাহে
ট্রান্সফার করার সময়,১৬-১৭ সপ্তাহে
প্রডাকশনের সময় ১০-১২ সপ্তাহ পর পর
সেরোলজিঃ
সেরোলজি তে সিরাম এন্টিবডি লেভেল নিয়ে আলোচনা করে ,এ কে টাইটার নামে ডাকা হয়।
ফ্লকের এন্টিবডি টাইটার দ্বারা ভ্যাক্সিনের ইফিকেসি,ফিল্ড ভাইরাস চ্যালেঞ্জ এবং রোগ নির্ণয় করা হয়।
সিরামের কোয়ালিটির উপর টেস্টের মান নির্ভর করে।
বার্ড সিলেকশন, ব্লাড কালেকশনের পদ্ধতি, ব্লাড এবং সিরাম হ্যান্ডিং ইত্যাদির উপর রিজাল্ট নির্ভর করে।
রুটিন টেস্টের জন্য নরমাল ও সুস্থ মুরগি থেকে ব্লাড নিতে হবে।
যদি খাচায় হয় তাহলে একই খাচা থেকে একই মুরগি থেকে প্রতিবার রক্ত নিতে হবে।
যদি ফ্লোরে হয় তাহলে পাখায় রং দিয়ে দিলে সেগুলো থেকে রক্ত নেয়া ভাল যদি সম্বব না হয় তাহলে যে এক সাইড থেকে নিলেই হবে।
রোগ নির্ণয়ের জন্য অসুস্থ মুরগি থেকে রক্ত নিতে হবে এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্ত নিতে হবে।
এ ই(এন্সেফালোমায়েলাইটিস) এবং এ আই টেস্ট ঃআগারজেল ইমোনোডিফিশন টেস্ট দিয়ে করা হয়।
এম জি,এম এস,পুলোরাম এবং টাইফয়েড(পিটি) প্লেট এগ্লুটেশন টেস্ট
লাইভ টিকা দেয়ার ২ সপ্তাহ পর এবং কিল্ড টিকা দেয়ার ৩-৪ সপ্তাহ পর টেস্ট করা হয়।
ইকোপমেন্টঃ
পাখা থেকে নিডল লেন্থ .৫-১ ইঞ্চি ২০-২২ গজ
কার্ডিয়াক /হার্ট থেকে দেড় ইঞ্চি ১৮-২০ গজ
মেডিসিনের দোকান থেকে ৩ বা ৫ মিলি সিরিজ
সিরিঞ্জের ৩ টা অংশ থাকে
নিডল
প্লাঞ্জার যেটা ওপর নিচে উঠানামা করানো যায়
সিরিঞ্জ
সিরিঞ্জ ফ্লাট/হরিজোন্টাকি/অনূভুমিকভাবে রাখতে হবে যাতে সারফের এরিয়া বেশি পায়।যত সারফেস এরিয়া বেশি হেব সিরাম তত বেশি হবে।
কিভাবে কালেকশন করা হয়
বিভিন্নভাবে ,বিভিন্ন জায়গা থেকে নেয়া যায় তবে পাখা থেকে সবচেয়ে সহজঃ
৪ সপ্তাহের পর থেকে পাখা নেয়া যায়.১৪ নিচে হলে ভেইন ছোট থাকে তাই নেয়া কঠিন।
একজন মুরগিকে উলটা করে ২টি পা বাম হাত দিয়ে ধরে,ডান হাত দিয়ে মুরগির নিচে এক পাখা সহ বডিটাকে উপরের দিকে ধরে রাখবে।এটা প্রচলিত এবং সবচেয়ে সহজ।
আরেক টা পাখা থেকে আরেক জন রক্ত নিবে।
একজন লোক মুরগি ধরবে আরেক জন ব্লাড নিবে।
যে মুরগি ধরবে তার দিকে সুইয়ের মাথা টা থাকবে।
চেয়ারে বসে নেয়া ভাল তবে দাড়িয়েও নেয়া যায়।
যে ধরবে তার দিকে পা থাকবে আর যে রক্ত নিবে তার দিকে মাথা থাকবে তবে মাথাটা নিচের দিকে থাকে।
অপর জন যে রক্ত নিবে সহজে পাখা নিচে ব্রাকিয়াল ভেইন দেখতে পারবে ,যদি ছোট পালক থাকে তাহলে তুলে ফেলবে যাতে ভেইন সহজে দেখা যায়।
পরে ভেইন বরাবর চামড়ার নিচে সুই দেয়ার পর ভেইনে সুই ঢুকাতে হবে।কনুই এবং সোল্ডার জয়েন্ট বরাবর সুই ঢুকাতে হয়।
সুই ঢুকানোর পর সহজেই রক্ত সিরিঞ্জে চলে আসে।
রক্ত সিরিঞ্জে আসার পর সিরিঞ্জের মাথায় লাল হয়ে যায় আর তখন ই প্লাঞ্জারে চাপ দিতে হবে।রক্ত আসার আগে চাপ দেয়া ঠিক না। আস্তে আস্তে প্লাঞ্জার চাপ দিয়ে রক্ত বের করতে হয়।
সিরিঞ্জের উপরের দিকে ১/২-১ ইঞ্চি ফাকা রাখতে হবে।
সিরিঞ্জ বের করার পর ভেইনে একটু চাপ দিলে রক্ত পড়া বন্ধ হয় মানে ক্লোটিং তাড়াতাড়ি হয়।
ইঞ্জেকশনের জায়গায় হেমাটোমা বা ব্লাড ক্লোট কমন।
সুই ঢুকানোর পর যদি ব্লাড বের হওয়ার আগেই হেমাটোমা হয়ে যায় তাহলে সেখান থেকে সুই বের করে নিতে হবে এবং অপর পাখা থেকে নেয়া যায় বা অন্য মুরগি থেকে নিতে হবে।
কোন ধরণে সিরাম নেয়া যাবে না
স্লিমি,লাল(হেমোলিয়াসি) ,ফ্যাটি ,ক্লোটেট ,জেল
খাবার দেয়ার পর যদি ব্লাড নেয়া হয় সেটাতে ফ্যাট বেশি থাকে।
ব্লাড ক্লোটিং শুরু করার সময় নাড়াচাড়া করা যাবে না,ক্লোটিং হতে ১২-১৮ ঘন্টা সময় লাগে(২৭-৩০ ডিগ্রি সেন্টগ্রেট তাপমাত্রায়) তবে আমরা নরমালি ১-২ ঘ ন্টায় প্রয়োজনীয় সিরাম পেয়ে যাই ।তাওমাত্রা বেশি হলে তাড়াতাড়ি সিরাম হয় আর কম হলে বেশি সময় লাগে,
বার্ড যদি ডিহাইড্রেড এবং ধকলে তাকে তাহলে জেল ধরণের সিরাম হয় যা ভাল না।
সিরাম হবার আগে ব্লাড ফ্রিজে রাখা যাবে না।
ব্যাক্টেরিয়া বা মোল্ড কন্টামিনেশন হলে সইরাম স্লামি হয় এবং চিজি পার্টিকেল থাকে।
রাফলি (জোরে নাড়াচাড়া) হ্যান্ডলিং করলে রেড সেল ভেংগে যায় ( হেমোলাইসি )হয়ে যায় ফলে সিরাম লাল হয়।
কালেকশনের সময় যদি ব্লাড না আসে তাহলে বুঝতে হবে নিডল ভেইনে যায় নি বা নিডলে ক্লোট ব্লাড আছে বা ভেইন পাংচার হয়ে হেমাটোমা হয়ে গেছে।
ব্লাড কালেকশনের সময় যদি প্লাঞ্জার জোরে টান দেয়া হয় তাতে নেগেটিভ প্রেসারের কারণে ভেইন কলাপ্স হয়ে যায় এতে ব্লাড আসা বন্ধ হয়ে যায়।
৩-৫দিনের মধ্যে ব্যব হার করলে ডিপ ফ্রিজে রাখার দরকার নাই।
নরমাল সিরামের কালার হবে ক্লিয়ার এবং পেল ইয়েলো।
সিরাম কিভাবে পাঠাবেনঃ
৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট তাপমাত্রায়(বরফে করে) পাঠাতে হবে।
বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন মানের ফ্লাক্স পাওয়া যায় ,এমন কি বিভিন্ন মেডিসিন ও ভ্যাক্সিন কোম্পানির কাছে ভাল মানের এবং সাইজের ভ্যাক্সিন কেরিয়ার পাওয়া যায় সেগুলো দিয়েও সিরাম আনা যায়।
প্রত্যেক টি স্যাম্পল আলাদা প্যাকেটে করে নাম,বয়স,ঠিকানা দিয়ে পাঠাতে হবে।
সিরাম নরমালে রেখে ৫দিন পর্যন্ত ভাল থাকে আর ডিপ ফ্রিজে রাখলে ৩০দিন ভাল থাকে মানে এগুলো দিয়ে টেস্ট করা যায়।
মুরগির রক্ত কালেকশনের পর ১ঘন্টা থেকে ৩ ঘন্টার মধ্যে সিরাম বের হবার পর সেই সিরাম অন্য আরেকটি সিরিঞ্জে নিতে হবে,সেই সিরিঞ্জ আইচ বক্সে নিয়ে কুরিয়ারে পাঠাতে হবে।
রক্ত /সিরাম পাঠানোর ঠিকানাঃ
ডাঃ মো সোহরাব হুসাইন
ভৈরব বাসস্ট্যান্ড,কিশোরগঞ্জ।
০১৭১৭৩০০৭০৬
ল্যাবের ঠিকানা
১।আমেনা পোল্ট্রি কেয়ার এন্ড কনসালট্যান্সি সার্ভিস ।
মরজাল,বেলাবো রোড।নরসিংদী
(নিচের ঠিকানায় চালু হবে ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে )
২।বটেশ্রর,হাই স্কুলের পূর্ব পাশে( বাছেদের দোকান ,ডাক্তার বাড়ি ডা মো সোহরাব হুসাইন)
বেলাবো, নরসিংদী
০১৭১৭৩০০৭০৬
নোটঃ
আমেনা পোল্ট্রি কেয়ার কেন স্পেশাল এবং কেন পছন্দের তালিকায় রাখবেন
১।অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা ব্লাড কালেকশন,পরিবহন,টেস্ট রিপোট এবং টেস্টের প্রেক্ষিতে প্রসক্রিপশন সব এক সাথে যা ল্যাবের এমন জগতে আর নাই
তাই টেস্টের রিপোট হবে সবচেয়ে ভাল।
২।সরাসরি মুরগির দেখার পর ব্লাড কালেকশন ,পোস্ট মর্টেম,টেস্ট ,রিপোট করার পর যে সাজেশন দেয়া হয় তা সবচেয়ে ভাল হয়।কোন জায়গায় ভুল হবার সুযোগ নাই।
৩।স্ট্যান্ডার্ড সংখ্যক(৮) স্যাম্পল দিয়ে টেস্ট করা হয়,২বা ৩ টা দিয়ে নয়।
৪।প্রতিদিন আর বি সি বানানো হয়।
৫।নিজে একজন খামারী,ডাক্তার,ল্যাবে অভিজ্ঞ,সব কাজ নিজে করা এবং আন্তরিকতা থাকার দরুণ সব কিছু হয় সঠিক।
কোন জায়গায় ভুল হবার সুযোগ নাই।
৬।একজন মানুষ যেমন তার সব কাজও তেমন তাই কোন প্রতিস্টানের রিজাল্ট বা মান কেমন হবে তার জানার জন্য মালিক কেমন তা জানলেই হবে আর কিছু খোজ করার দরকার নাই।সব কিছুই মালিকের প্রতিচ্ছবি।
মালিক যদি ভাল হয় তার কাজও ভাল হবে আর মালিক যদি খারাপ হয় তার কাজ ও খারাপ হবে এটা ১০০% সত্য কথা।
রক্ত জমাট বাধার পর উপরের দিকে সাদা পানির মত যা জমা হয় তাই সিরাম।সেটা দিয়েই টেস্ট করা হয়।
রক্ত জমাট বাধার পর উপরের দিকে সাদা যে সিরাম জমা হয় সেগুলো আলাদা সিরিঞ্জে নিতে হয়।
আর এই সাদা সিরাম টাই পাঠাতে হয়।
ফার্ম কাছাকাছি হলে মানে যদি ৩-৪ ঘন্টার মধ্যে ল্যাবে আসা যায় এবং তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি হয় তাহলে সিরাম আলাদা না করলেও হবে।