Breaking News

টেকসই ডেইরী ফার্মিং এ কালিং কেন গুরুত্বপূর্ণ

#Culling? গাভী ছাটাই ? খামার হতে অনুর্বর কম মেরিটসম্পন্ন গাভী ছাটাই /বাদ দেয়া??

দেশে ছোট থেকে মাঝারি আকারের অনেক ডেইরি খামার গড়ে উঠেছে। ফলে গরু প্রতি গড় দুগ্ধ উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন প্রয়োজন খামারের মানোন্নয়নের জন্য টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করা। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ডেইরি খামারিগণের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

তাই ডেইরি খামারকে লাভজনক করতে হলে আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগী ✅জাত উন্নয়ন, ✅গাভীর প্রজনন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও ✅উৎপাদন ব্যবস্থাপনার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে। উন্নত বিশ্বের অধিকাংশ খামারীরা খামারে অধিক প্রজননক্ষম গাভী রাখেন যারা নির্দিষ্ট সময় অন্তর বাচ্চা দেয়, উৎপাদন বাড়ায়, গাভী ছাটাই অর্থাৎ culling এর হার কমিয়ে কম উৎপাদনশীল গাভীকে উন্নতর বকনা দ্বারা প্রতিস্থাপনের সুযোগ বাড়ায়।

@ Culling অর্থাৎ গাভী ছাটাই একটি গুরুত্বপূর্ণ চলমান পদ্ধতি ➡️➡️যার দ্বারা একজন খামারী তার খামার থেকে সর্বাধিক মুনাফা অর্জন করতে পারেন।

Culling অর্থাৎ গাভী ছাটাই কেন করবেন অন্য অর্থে যদি বলি কোন কোন গাভী আপনার খামারের জন্য লাভজনক হবে, আর কোন কোন গাভী খামারে অলাভজনক হবে তা যাচাই পূর্বক খামার থেকে বাদ দেয়া অর্থাৎ ছাটাই করা।

সেজন্য নিম্নলিখিত বিষয়ের দিকে নজর দিতে হবেঃ-

১। প্রজনন সক্ষমতা –

একটি উন্নত জাতের গাভী থেকে অধিক ফল পেতে হলে তা থেকে নির্দিষ্ট সময়ে অধিক সংখ্যক বাচ্চা পেতে হবে। অর্থনৈতিকভাবে লাভবানের জন্য প্রতি ১২ হতে ১৩ মাস পর পর প্রতিটি গাভী থেকে বাচ্চা নিতে হবে। যখন কোন খামার সর্বোত্তম প্রজনন পারফরম্যান্স এর চেয়ে কম তখন দেখতে হবে প্রসব পরবর্তী গর্ভধারণ সময়কাল বেশি হওয়ার জন্য অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে নাকি গাভী ছাটাই করলে ক্ষতি কম হবে তার মধ্যে একটি ভারসাম্য খুঁজে বের করতে হবে।

?প্রজনন ব্যবস্থাপনার উন্নতির মাধ্যমে calving ব্যবধান কমিয়ে আনা সম্ভব ফলে গাভী ছাটাই এর সংখ্যা হ্রাস করে খামারের সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে রক্ষা করা যায়। আমাদের দেশে অনেক ডেইরি খামারিরা এবিষয়ে কর্ণপাত করেন না। ডেইরীতে সফলকাম হতে হলে এই দিকে নজর দেয়া আবশ্যক। সেজন্যই বাচ্চা দেবার ৩-৪ মাসের মধ্যে গর্ভধারণ করানোর জন্য গাভী ডাকে আসার লক্ষণ সনাক্তকরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা, ডাকে না আসলে অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ান দ্বারা জননাঙ্গ পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেওয়া। বাচ্চা দেবার পর হতে গাভীকে ডাকে আসার জন্য ভিটামিন মিনারেল সাপ্লিমেন্ট সরবরাহ করা।

?এক গবেষণায় দেখা যায় শুধু গাভীর ডাকে আসার লক্ষণ সনাক্তকরণ ১০% উন্নত করায় গরু প্রতি ৪০ ডলার আয় বৃদ্ধি পায়। সেজন্য প্রতিটি গাভীর অতীত রেকর্ড যেমন- বাচ্চা দিবার কতদিন পরে ডাকে আসে, ডাকে আসার লক্ষণসমুহ, কতদিন পর পর ডাকে আসে, জরায়ু হতে কোন ধরনের পুঁজ মিশ্রিত পানি বের হওয়া, বাচ্চা প্রসবকালীন সময়ের যেকোন সমস্যা লিপিবদ্ধ করে রাখা।

RCC ( Red Chittagong Cattle) জাতের গাভী বাচ্চা দেবার ৩০-৪০ দিনের মধ্যে ডাকে আসে এবং প্রায় বছরে একবার বাচ্চা প্রসব করে। ডেইরি খামারিরা নিজস্ব তত্বাবধানে এজাতের গাভীকে ফ্রিজিয়ান, শাহীওয়াল অথবা অন্য কোন উন্নত জাতের সাথে সংকরায়ন করে খামার উপযোগী কাংখিত দুগ্ব উৎপাদনশীল সংকরজাত গাভী সৃষ্টি করতে পারেন। এবিষয়ে জেনেটিক্স ও ব্রিডিং বিষয়ে অভিজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারেন। ↗️ যার ফলে একদিকে খামারে যেমন অধিক দুগ্ধ উৎপাদনশীল গাভী তৈরী হবে তারসাথে calving ব্যবধানও কমে নির্দিষ্ট সময় অন্তর বাচ্চা দিবে, ↗️দুধ উৎপাদন বাড়বে এবং গাভী ছাটাই এর সংখ্যা হ্রাস হবে।

২। দুগ্ধ উৎপাদন-

যেসমস্ত গাভী কম দুগ্ধ উৎপাদনশীল অর্থাৎ তার দুগ্বদানকালে যে পরিমাণ দুগ্ধ উৎপাদন করে তা অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক নয় সেসমস্ত গাভীকে খামার থেকে ছাটাই অর্থাৎ Culling করতে হবে। যে গাভী প্রথম দিকে ১৬-২০ লিটার দুধ দিত, কিন্তু এখন ৭-৮ ↘️লিটার দুধ দেয় এবং গর্ভধারণের প্রচেষ্টা চালানো হলেও গর্ভধারণ হচ্ছে না এই গাভীগুলি ছাটাই করলে খামারের অর্থনৈতিক সুরক্ষা হবে।

৩। ম্যাসটাইটিস অর্থাৎ ওলান ফোলা রোগ-

ম্যাসটাইটিস এর কারণে গাভী ছাটাই করতে হবে কেননা এই রোগটি পুরাপুরি সারে না, দুধ উৎপাদনও পূর্বের ন্যায় পাওয়া যায় না। সেজন্যই ওলান স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করলে ম্যাসটাইটিস হওয়ার প্রবণতা কমবে, দুধ উৎপাদন আশানুরূপ হবে এবং গাভী ছাটাই এর সংখ্যাও কমবে।

অন্যান্য কারণেও গাভী ছাটাই করতে হয় যেমন-

♦️বারবার গর্ভপাত হওয়া,

♦️বারে বারে ডাকে আসায় গর্ভধারণ না হওয়া,

♦️দুরারোগ্য ব্যাধি যেমন হাঁটু ফুলে যাওয়া যা সহজেই ভাল না হওয়া,

♦️বারে বারে বিপাকজনিত সমস্যা দেখা দেয়া,

♦️জরায়ু বর্হিগমন হওয়ার সম্ভাবনা ইত্যাদি।

??নিম্নোলিখিত শর্ত অনুসরণ করে খামার পরিচালনা করলে ডেইরি খামারে আর্থিক ক্ষতি থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে –

♦️?যদি কোন খামারে ?৪০ টি গাভী, ২০টি বাছুর ও ৮-১০টি বকনা পালন করার সক্ষমতা থাকে তবে উক্ত খামার থেকে ভাল ফলাফল পেতে হলে ২০টি গাভী সবসময় গর্ভবতী থাকতে হবে, ২০টি গাভী সবসময় দুগ্ধ উৎপাদনশীল থাকতে হবে। প্রতিবছর ✅৫-৬ টি গাভী ছাটাই পূর্বক উন্নত জাতের অধিক দুগ্ধ উৎপাদন সম্পন্ন গাভী অথবা নিজের খামার থেকে কাংখিত জাতের বকনাকে গর্ভধারণ করিয়ে প্রতিস্থাপন করতে হবে।

?⏩নিম্নে একটি ছোট আকারের ডেইরি খামার যেখানে ৫টি গাভীর মধ্যে কোনটি বারে বারে ডাকে আসে কৃত্রিম প্রজনন করা হয় গর্ভধারণ হয় না, কোনটি বাচ্চা দিয়েছে ৩-৪ মাস হয়েছে ডাকে আসে না, একটির ১০ মাসের ষাঁড় এখনো দুধ ছাড়ে না রীতিমতো ডাকেও আসে না গর্ভধারণ হয় না।

Dr Mohammad Omar Faruk ULO

Please follow and like us:

About admin

Check Also

একজন ভেট এর সাথে কি কি থাকা জরুরি।

একজন ভেট এর সাথে কি কি থাকা জরুরি। আগে জানতে হবে ডাক্তার কোন স্পিসিস নিয়ে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »