Breaking News

ছাগলের খাবার চাহিদা নির্ভর করে কতগুলো বিষয়ের উপর

ছাগলের খাবার চাহিদা নির্ভর করে কতগুলো বিষয়ের উপর
১. জন্ম থেকে মায়ের দুধ ছাড়া পর্যন্ত
২. সাবলম্বী বা দুধ ছাড়ার পর থেকে সম্পূর্ণ ঘাস ও দানাদার খাওয়া শেখা
৩. বাড়ন্ত সময় বা সাবলম্বী থেকে পূর্ণ বয়স্ক
৪. প্রজনন
৫. গর্ভবতী অবস্থা প্রথম দিকে
৬. গর্ভবতী অবস্থা শেষ ৫০ দিন
৭. দুগ্ধবতি
৮. dry period বা দুধ বন্ধ হওয়ার পর
৯. মাংস উৎপাদন

১. জন্ম থেকে মায়ের দুধ ছাড়া পর্যন্ত বা সাবলম্বী হওয়া

প্রথম ৩ দিন মায়ের শাল দুধ দিতে হবে পরিমান ৩৫০ মিলি দিনে ৩ বার
৪ দিন থেকে ১৪ দিন মায়ের দুধ অথবা মিল্ক রিপ্লেসার ৩৫০মিলি দিনে ৩ বার
১৫ থেকে ৩০ দিন সমপরিমান দুধের সাথে ক্রিপ ফিড এবং গাছের পাতা ( কাটার একদিন পর যাতে একটু শুকনা হয় ) সামান্য পরিমান
৩১ দিন থেকে ৬০ দিন ৪০০ মিলি দুধ ২ বার সাথে ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম ক্রিপ ফিড সাথে পর্যাপ্ত একদিনের শুকনা ঘাস ৫০% ও পাতা ৫০%
৬১ থেকে ৯০ দিন ২০০ মিলি দুধ ২ বার সাথে ২০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম ক্রিপ ফিড সাথে পর্যাপ্ত একদিনের শুকনা ঘাস ৫০% ও পাতা ৫০%
(ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল ছোট তাই ৩৫০ মিলি এর জায়গায় ২০০ মিলি যথেষ্ট)

ক্রিপ ফিড ফর্মুলা :
১. ভুট্টা ভাঙা ৫০%
২. সয়াবিন খৈল ৪০%
৩. চিটা গুড় ৪%
৪. লবন ১%
৫. চুনাপাথর ৩%
৬. চিলেটেড মিনারেল মিক্স ২% ( চিলেটেড ব্যবহার করা উত্তম )
Percent TDN 69.7
Percent CP 19.3%
Percent Ca 1.754%
Percent P 0.611%
Ca:P ratio 2:871
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখবেন ছাগলের বাচ্চা দুধ খাওয়া ছেড়ে দেয়ার পর স্বাস্থ ভেঙে যায় এই ভেঙে যাওয়া রোধ করতে ক্রিপ ফিড ফর্মুলা। দুধের পাশাপাশি ১৫ দিন বয়স থেকে দিলে আস্তে আস্তে অভস্থ হয় যাবে। ছাগলের বাচ্চার মূলত প্রথম ৩ মাস খুব দ্রুত ওজন বাড়ে তাই এই সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চার একটা সময় প্রজন্ত দুধ তার ওজন বৃদ্ধিতে কাজে লাগে তারপর বাড়তি খাবার ছাড়া সম্ভব না। মূলত ২ সপ্তাহ থেকে ৬ সপ্তাহ ছাগীর দুধ উৎপাদন সর্বোচ্চ হয় তাই ১৫ দিন থেকে ক্রিপ ফিড ফর্মুলা দিলে বাচ্চা মোটামুটি ১ মাস পরথেকে ভালো ভাবে তা গ্রহণ করতে পারে ফলে মায়ের দুধ কমে গেলেও স্বাস্থ হানি ঘটেনা। এইখানে যে ফর্মুলা দেয়া হলো তা দেশি ক্রস বা যমুনাপারি, বিটাল জাতের জন্য যাদের প্রতিদিন ওজন বৃদ্ধি পায় ১০০ গ্রাম। বোয়ার বা অন্যান জাট যেগুলোর ওজন ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম বাড়ে তাদের CP ক্রুড প্রোটিন হতে হবে ২৩% TDN টোটাল ডিজেস্টিভ নিউট্রেন্ট ৮৯%

২. বাড়ন্ত সময় বা সাবলম্বী থেকে পূর্ণ বয়স্ক

১. ভুট্টা ভাঙা ৪৭%
২. সয়াবিন খৈল ৩০%
৩. চিটা গুড় ৭%
৪. গমের ভুষি ১০%
৪. লবন ১%
৫. চুনাপাথর ৩%
৬. চিলেটেড মিনারেল মিক্স ২% ( চিলেটেড ব্যবহার করা উত্তম )
Percent TDN 67.8%
Percent CP 16.9%
Percent Ca 2.075%
Percent P 5.443%
Ca:P ratio 0.381
প্রতিদিন ১০০ থেকে ৫০০ গ্রাম নির্ভর করে সাইজও জাতের উপর। সাথে ঘাস ৫০% এবং লিগুম বা পাতা ৫০% পর্যাপ্ত পরিমান ( ঘাস ও লিগুম এ প্রচুর ক্যালসিয়াম আছে যা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস অনুপাত ঠিক রাখবে ) বেশি দানাদার দিলে অবশ্যই খাবারে এমোনিয়াম ক্লোরাইড ব্যবহার করতে হবে। পরিমান হবে ১% মোট দানাদার খাবারের। এর ফলে পাঠা বা খাসির প্রস্রাব রাস্তা পাথর হবেনা।

৩. প্রজনন
এই সময় ছাগীর বডি স্কোর ৩.৫ থেকে ৪ প্রজন্ত রাখা উচিত এর বেশি হলে বা কম হলে ছাগী সময় মতো ডাকে আসবে না। তাই বাচ্চা হওয়ার পরথেকে বা নতুন ছাগীর ক্ষেত্রে বাড়তি কিছু দানাদার খাবার দিয়ে বা দানাদার খাবার বন্ধ করে বডি স্কোর ৩.৫ থেকে ৪ মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।

৪. গর্ভবতী অবস্থা প্রথম দিকে
এই সময় খুব একটা বাড়তি খাবারএর দরকার হয়না শুধু ঘাস খাওয়ালে চলে। এই সময় প্রোটিন দরকার হয় ৫.৭% এবং TDN ৫৩.৭% যা যেকোনো ঘাস থেকে পাওয়া যায়।

৫. গর্ভবতী অবস্থা শেষ ৫০ দিন

এই সময় ভ্রূণ দ্রুত বাড়া শুরু করে তাই এই সময় বাড়তি দানাদার খাবার দেয়া উচিত। শুরুতে ১০০ গ্রাম আস্তে আস্তে পরিমান বাড়িয়ে শেষ ৩০ দিন ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম প্রজন্ত দেয়া যেতে পারে। নির্ভর করে জাত, ছাগীর শারীরিক অবস্থা ইত্যাদির উপর সাথে অবশ্যই ঘাস ও লিগুম বা পাতা যত খেতে পারে। এর ফলে বাচ্চার জন্মের সময় ওজন বেশি হয়। আমাদের ফার্ম এ এই ফর্মুলা ব্যবহার করে প্রতিটি বাচ্চার জন্ম ওজন ২ কেজির উপর ছিল এবং সর্বোচ্চ ওজন ৪.২ কেজি পেয়েছি। যার ফলে বাচ্চার মৃত্যুর হার ছিল মাত্র ১%

১. ভুট্টা ভাঙা ৫০%
২. সয়াবিন খৈল ৩৭%
৩. চিটা গুড় ৬%
৪. লবন ১%
৫. চুনাপাথর ৩%
৬. চিলেটেড মিনারেল মিক্স ২%

Pounds in batch 100.0
Percent TDN 69.8%
Percent CP 19.8%
Percent Ca 1.027%
Percent P 0.979%
Ca:P ratio 1.049

৬. দুগ্ধবতি ছাগী
বাচ্চা হওয়ার দিন থেকে মূলত ৩ মাস প্রজন্ত দুগ্ধ কালীন সময়। যেহেতু বাচ্চা হওয়ার আগে থেকে পর্যাপ্ত দানাদার খাবার দেয়া হয়েছে তাই বাচ্চা হওয়ার পর ছাগী ভালো দুধ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়ে থাকে। গর্ভবতী কালীন সময় যে দানাদার খাবার দেয়া হয়েছে তাই চলবে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত তারপর আস্তে আস্তে দানাদার খাবার বন্ধ করতে হবে এবং ১০ সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে হবে। কারণ ছাগী কে কোনো ভাবেই ১০ সপ্তাহের পর দুধ উৎপাদন করতে দেয়া যাবেনা। এই পদ্ধতি শুধু মাত্র মাংস উৎপাদন করি জাতের জন্য যারা দুধ উৎপাদন জাত নিয়ে কাজ করেন তাদের জন্য নয়।

৭. Dry period বা দুধ বন্ধ হওয়ার পর
এই সময় ছাগী মূলত গাভিন এর প্রথম পর্যায় তাই কোনো বাড়তি খাবার লাগবেনা শুধু ঘাস দিলে চলবে।

ছাগীকে মূলত ৪ মাস দানাদার খাবার দিতে হবে প্রতি ৮ মাসে। আর পাঠাকে শুধু প্রজনন কালীন সময় দানাদার খাবার দিতে হবে (২ থেকে ৩ মাস) অন্যান্য সময় শুধু ঘাস দিলে চলবে। মনে রাখবেন পাঠা যেন বডি স্কোর ৪ এর উপর না উঠে তাহলে ক্রস করাতে সমেস্যা হবে।

খাসির ক্ষেত্রে
নিম্ন লিখিত ফর্মুলা ব্যবহার করতে পারেন। মনে রাখবেন দানাদার খাবার পরিমান আস্তে আস্তে বাড়ান এবং ঘাস এর পরিমান আস্তে আস্তে কমান। দানাদার খাবার ছাগলের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে এবং বেশি দানাদার দিলে অবশ্যই খাবারে এমোনিয়াম ক্লোরাইড ব্যবহার করতে হবে। পরিমান হবে ১% মোট দানাদার খাবারের। এর ফলে পাঠা বা খাসির প্রস্রাব রাস্তা পাথর হবেনা।

১. ভুট্টা ভাঙা ৪৭%
২. সয়াবিন খৈল ৩০%
৩. চিটা গুড় ৭%
৪. গমের ভুষি ১০%
৪. লবন ১%
৫. চুনাপাথর ৩%
৬. চিলেটেড মিনারেল মিক্স ২% ( চিলেটেড ব্যবহার করা উত্তম )
Percent TDN 67.8%
Percent CP 16.9%
Percent Ca 2.075%
Percent P 5.443%
Ca:P ratio 0.381

Note : এইখানে যা কিছু দিয়া আছে তা ইন্টারনেট থেকে নেয়া। বিভিন্ন পেজ এবং বিভিন্ন সফল খামারিদের তথ্যের উপর ভিত্তি করে নেয়া যা আমার খামারে প্রয়োগ করে ভালো ফলাফল পেয়েছি। এটা আপনার খামারে প্রয়োগ করার আগে চাইলে কোনো এক্সপার্ট কে দেখিয়ে নিতে পারেন। প্রতিটি খামার ব্যাবস্থাপনা আলাদা আলাদা তাই সকল ক্ষেত্রে যে এই ফর্মুলা কাজ করবে এমন কোনো কথা নাই। আপনাদের জানার জন্য আমার ফার্মের ব্যবহৃত পদ্ধতি শেয়ার করলাম।

Please follow and like us:

About admin

Check Also

ছাগলের নিউমোনিয়া

ছাগলের নিউমোনিয়া  সঠিক সময় চিকিৎসা না দিলে ছাগল টিকানো কঠিন হয়ে পরে। লক্ষণ গুলো নিম্ন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »