Breaking News

গো-খাদ্য হিসাবে চিটাগুড় ও চিনির ব্যবহারঃ পুষ্টিগুন ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ।

গো-খাদ্য হিসাবে চিটাগুড় ও চিনির ব্যবহারঃ পুষ্টিগুন ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ।

অনেকেই চিটাগুড়ের পরিবর্তে চিনি ব্যবহারের কথা বলে আসছেন। এতে অনেক নতুন খামারী কোনটা ব্যবহার করবেন ঠিক সিদ্ধান্তে আসতে পারছেন না। চিনি একটি উচ্চ শক্তি সম্পন্ন সহজলভ্য উপাদান হলেও বর্তমানে এর দাম অনেক বেশি। অন্যদিকে গো খাদ্য হিসাবে চিটাগুড়ের ব্যবহার যুগযুগ ধরে সারা পৃধিবীতে হয়ে আসছে। চিটাগুড় চিনির একটি উপজাত পণ্য হওয়ায় একটু কম দামেই পাওয়া যায়। নিন্মে চিনি ও চিটাগুড়ের পুষ্টিগুন ও অর্থনৈতিক পর্যালোচনা দেওয়া হল।

দামঃ
→ বর্তমান বাজার অনুযায়ী ১ কেজি চিনির মূল্য ৬০ টাকা।
→ বর্তমান বাজার অনুযায়ী ১ কেজি চিটাগুড়ের মূল্য ২১-২২ টাকা(মিল থেকে ক্রয় করলে)। তাহলে কোন ট্রেডার থেকে ক্রয় করলে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা খরচ পরবে।
→ অতএব ১ কেজি চিনির মূল্য দিয়ে ২.৪০ কেজি চিটাগুড় ক্রয় করা সম্ভব।

পুষ্টিগুনঃ
→ চিনির পুষ্টিগুনঃ খাদ্য উপযোগী চিনির মূল্য নিন্ম রূপঃ

ড্রাই ম্যাটারঃ ৯৭%
শক্তিঃ ১৬.২৩ মেগাজুল/কেজি, কিন্তু ১৩.৫ মেগাজুল রুমিনেন্ট এর জন্য।
প্রোটিনঃ ০.০%
ফাইবারঃ ০.০%
ফ্যাটঃ ০.০%
অ্যাশঃ ১.২%
মিনারেলসঃ ০.০%

→ চিটাগুড়ের পুষ্টিগুনঃ
ড্রাই ম্যাটারঃ ৭১%
শক্তিঃ ৯.৬ মেগাজুল/কেজি,
প্রোটিনঃ ৫.৫%
ফ্যাটঃ ১.০%
ফাইবারঃ ০.১%
অ্যাশঃ ১৪.৬%
ক্যালসিয়ামঃ ৯.২ গ্রাম/কেজি
ফসফরাসঃ ০.৭ গ্রাম/কেজি
পটাশিয়ামঃ ৫১.০ গ্রাম/কেজি
ম্যাগনেসিয়ামঃ ৪.০ গ্রাম/কেজি
ম্যাঙ্গানাজঃ ৭৪.০ গ্রাম/কেজি
জিংকঃ ১৮ গ্রাম/কেজি
আয়রনঃ ১৭৩ গ্রাম/কেজি

পুষ্টিগুন পর্যালোচনাঃ
চিনি ও চিটাগুড়ের পুষ্টিগুন পর্যালোচনা করলে দোখা যায় যেঃ
→ ১ কেজি চিনির শক্তি
= ১.৪১ কেজি ড্রাই চিটাগুড়ের শক্তির সমান
= ১.৯৯ কেজি ভাল মানের চিটাগুড়ের সমান

→ তাছাড়া চিটাগুড়ে ৫.৫% প্রোটিন সহ উচ্চ মাত্রার মিনারেল আছে যা চিনিতে নেই।

দাম ও পুষ্টিগুন পর্যালোচনাঃ
→ চিটাগুড় ও চিনির শক্তিমান পর্যালোচনা করা হলে দেখা যায় যে, ১.৯৯ কেজি চিটাগুড়ের শক্তি ১৩.৫ মেগাজুল যার দাম ৪৯.৭৫ টাকা = ১ কেজি চিনির শক্তি ১৩.৫ মেগাজুল যার দাম ৬০ টাকা
→ অতএব সমান শক্তির জন্য চিনির পরিবর্তে চিটাগুড় ব্যবহার করলে খরচ কম হবে ১০.২৫ টাকা,
→ বোনাস হিসাবে পাবেন ১১০ গ্রাম প্রোটিনসহ প্রচুর পরিমাণ মিনারেলস যার মূল্যও কমপক্ষে ১০ টাকার কম নয়।
→ সে হিসাবে চিনির পরিবর্তে চিটাগুড় ব্যবহার করলে কমপক্ষে ২০ টাকা,
→ চিটাগুড় ব্যবহারের অন্যতম একটি উদ্দেশ্য হল খড়/পানি/অন্যান্য খাবারকে টেস্টি করা যাতে গরু সহজেই খায়। যা আপনি চিনি থেকে পাবেন না।

ব্যক্তিগত মতামতঃ
ভাল মানের চিটাগুড় সন্ধান করতে পারলে চিনির পরিবর্তে চিটাগুড় ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন, শক্তির তুলনায় প্রোটিন ও মিনারেলের গুরুত্ব অনেক বেশি। সার্বিক দিক বিবেচনা করলে এবং চিনির বর্তমান বাজার দর অনুসারে কোন মতেই চিটাগুড়ের পরিবর্তে চিনি ব্যবহার করতে পারবেন না। চিনি ব্যবহার করলে খরচও বেশি হবে আর প্রোটিনসহ সকল প্রকার মিনারেলের সহজপ্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত হবেন।

বিঃদ্রঃ পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, দুধের গরুর ক্ষেত্রে চিনি ব্যবহার না করার জন্য বিশেষ ভাবে পরামর্শ দিয়েছেন, এমনি নিষেধ করেছেন।

পুষ্টি তথ্য সূত্রঃ
১. FAO’s Animal Feed Resources Information System (1991-2002)
২. Bo Göhl’s Tropical Feeds (1976-1982)
৩. Figueroa et al., 1990
৪. Sugarcane molasses, Tim Smith (Animal Science consultant).

ফেসবুক থেকে নেয়া

Please follow and like us:

About admin

Check Also

মোলাসেস (লালি/লাভ)

মোলাসেস ৫% ভুট্রার পরিবর্তে মোলাসেস দেয়া যায়। কিন্তু এটি দিলে মশা মাছির(ফ্লাই) উপদ্রব বেড়ে যায়। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »