Breaking News
অরুচি (এনোরেক্সিয়া) কারণ)
অরুচি (এনোরেক্সিয়া) কারণ)

খাদ্য গ্রহনে অনীহা (এনোরেক্সিয়া):বিস্তারিত

অজীর্ণতা বা খাদ্য গ্রহনে অনীহা (Anorexia) খামারের গবাদিপশুর একটি নিত্ত নৈমিত্তিক রোগঃ
——————————————————–
আমাদের দেশের গবাদিপশুর খামার গুলিতে অজীর্ণজনিত রোগ একটি নিত্তনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।

প্রায় খামারেই রোগটির প্রাদূর্ভাব দেখা যায়।

তাই এই পোস্টে এই রোগ বা সমস্যাটির ব্যাপারে কিছুটা আলোচনা করা এর লক্ষণ, প্রতিকার এবং ক্ষতিকর দিক গুলি সম্বন্ধ্যে।
সাধারণত অজীর্ণতা প্রধানত বেঁধে খাওয়ানো রোমন্থক পশুর একটি রোগ৷

এরোগে সাধারণত অস্বাভাবিক খাদ্য খাওয়ানোর কারণে হয়ে থাকে৷ খাদ্যে অরুচি থেকে ক্ষুধামন্দা এ রোগের প্রধান বৈশিষ্ট্য৷
রোগের কারণ:
———————–
পশু যে খাদ্য খেয়ে অভ্যস্থ্য হঠাৎ তার ব্যাতিক্রমে, অত্যধিক খাবার খেলে, হজম করা কঠিন এরূপ খাবার খেলে, নিম্নমানের খাদ্য, বিনষ্ট খাদ্য এবং শস্য জাতীয় খাদ্য অধিক ভক্ষণে পশুর বদহজম হতে পারে৷
শুস্ক ঋতুতে পানি হ্রাস পেলে এবং খরার সময় অপাচ্য খড় (যেমন – পশুর বিছানার খড়) খেলে  অজীর্ণতা  দেখা দেয়৷


অপ্রাকৃতিক খাদ্য যেমন – গর্ভফুল, দীর্ঘ দিন এন্টিবায়োটিক বা সালফোনামাইড গ্রুপের ঔষধ খাওয়ানোর ফলে এইরূপ অজীর্ণতার সৃষ্টি হতে পারে৷
রোগের লক্ষণ:
রুমেনের দুস্পাচ্য খাদ্য জমা হওয়া, প্রোটিনযুক্ত খাদ্য পচন, ইত্যাদি কারণে রুমেনের স্পন্দন হ্রাস পেয়ে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়।
খাদ্যের প্রতি পশুর আকষ্মিক অরুচি হয়
অধিকাংশ পশুর মল কঠিন বা সামান্য পাতলা এবং পরিমাণে কম হয়
ক্রমশ দেহের ওজন কমে যায় ও পশু দুর্বল হয়ে পড়ে।
রক্তাল্পতা উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসাঃ
——————-
সাধারণ অজীণতার কারণ দূর করলে ঔষধ ছাড়াই এ রোগ ভালো হতে পারে
সুনিদিষ্ট কারণ জানা না গেলে সহায়ক চিকিৎসা হিসাবে রুমেনোটনিক ঔষধ

যেমন: এপিভেট বা জাইমোভেট যেকোনো একটি ঔষধের প্রতি প্যাকেট প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে দিনে দুইবার করে দুইদিন খাওয়াতে হবে।
প্রাকৃতিক চিকিৎসাঃ
———————–
প্রাকৃতিক চিকিৎসা হিসাবে গরুকে আদা বাঁটা,বিট লবন,খাওয়ার সোডা ইত্যাদি একসাথে মিশিয়ে একটি কলাপাতায় মুড়ে দিনে দুইবার খাইয়ে দেয়া যেতে পারে।

এভাবে ৩/৪ দিন খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে প্রতি ১০০-১৮০ কেজি দৈহিক ওজনের একটি গরুকে আদা বাঁটা দিতে হবে ৫০ গ্রাম,জিরার গুড়া ২০ গ্রাম,বিট লবণের গুড়া ২০ গ্রাম।
প্রতিরোধঃ
——————-
পশুকে নিম্নমানের খাবার, হজম করা কঠিন এরূপ খাবার, নষ্ট খাদ্য খাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে,নিয়মিত কৃমিনাশক ওষুধপাতি দিতে হবে,গরুর খাদ্যে বিভিন্ন এনজাইমের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে

যেমন মোলাসেস বা চিটাগুড়, লবণ,খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন এবং বিভিন্ন প্রকার ক্ষনিজ উপাদান।

লেখকঃমুক্তি মাহমুদ

গবাদি পশুর ক্ষুধামন্দা ও বদহজম

মানুষের যেমন বিভিন্ন কারণে খাদ্যে রুচি কমে যায়। ঠিক তেমনই গবাদি পশুরও ক্ষুধামন্দা ও বদহজম হয়।

যার ফলে গবাদি পশু না খেতে পেরে মারাত্মক ভাবে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। যা ফলে মোটাতাজা করণ প্রক্রিয়া ও ডেইরীতে সমস্যার সৃস্টি হয়।

কারণ

★ খাদ্য অধিক পরিমানে খাওয়ালে।
★ হঠাৎ করে খাদ্য পরিবর্তন করলে।
★পাকস্থলীর হজমী রস উত্পন্ন কমে গেলে।
★দীর্ঘদিন এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে।
★পুরাতন বাসি পঁচা খাদ্য খাওয়ালে।
★ কৃমির ঔষধ প্রয়োগে ভুল হলে, এই রকম সমস্যা দেখাদিতে পারে।

পরিত্রানের উপায়

★সোডিয়াম বাই কর্বনেট( মানুষের খাবার সোডা) প্রতিবার খাদ্যে ৫ গ্রাম করে মাসে ১৫ দিন খাওয়াতে হবে।
★ দানা রেশনে খাবার সোডা রাখতে পারেন।
★ইউএম এস সামরয়িক বন্ধ রাখতে পারেন।
★গ্লুলোকস্যালাই খাওয়াতে পারেন।
★ রুচি বর্ধক ঔষধ প্রয়োগ করতে পারেন।
★ঠান্তা স্থানে রাখতে হবে, মোলাসেস মিশ্রীত করে খড় ও দানাদার দিতে হবে।
★ ১০০ গ্রাম আঁদা বাটা ও লবণ খাওয়াল ভালো ফল পাওয়া যায়।

সর্বোপরি পরিস্কার, পরিছন্ন রাখতে হবে।বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। ফাংগাস মুক্ত খাদ্য ও বাসি পঁচা খাদ্য পশুকে খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

গরু খায় না (ANOREXIA)

গরু খায় না অসংখ্য কারন বিদ্যমান। প্রথমত তাপমাত্রা দেখতে হবে।

অনেকে ১০১ ডিগ্রি এর উপরে তাপ কে স্বাভাবিক ভাবে।হ্যা কখনো হতে পারে।যেমন সিলেট শহরে অনেকে গরু পালে আটকা ঘরে।চারপাশে চট দিয়ে ঘেরা থাকে।

বিশেষ করে নেপালী যারা শুধু মাত্র গরু পালার উদ্দেশ্যে সিলেটে অবস্হান করে।তারা এই ধরনের পরিবেশে গরু পালে।

এমনকি তারা গরুর খাবার গোয়াল ঘরের মধ্যে জালায়, যারা এই ধরনের গরু পালে, তাদের গরুর তাপ কখনও কখনও ২/৩ ডিগ্রী বেশী থাকে।

তখন নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরো ২/১ টা গরুর তাপ মাপতে হবে। তবে শংকর জাতের তাপ একটু বেশী থাকে।

যাহা সাধারনত ১০১ ডিগ্রীর উপরে উঠে না।

রোগ নির্নয়ঃ

রোগ নির্নয়ে খুব মনযোগী না হলেতো চিকিৎসা সফল হবেনা। যেমন প্রথমে (১) তাপমাত্রা রেকর্ড করবোঃ তাপ যদি ১০১ বা তার নীচে হয় তাহলে বদহজম বা ফুড পয়জনিং বলবো।

তখন আমরা জানতে চাবো পুর্বের দিন গরু কি খেয়েছে, মাঠে গেলে কি ধরনের খাবার খেয়েছে?? যদি গুল্মজাতীয় গাছ খেয়ে থাকে যেমন, শিয়ালমতি/বন তুলসী/ কুকুর শোকা// বন মুলা সেক্ষেত্রে এ্যালকালয়েড পয়জনিং হতে পারে।

যার কোন চিকিৎসা নেই। সেক্ষেত্রে চিকিৎসার একমাত্র লক্ষ পেট খালি করা।এবং ব্লাড পিউরিফাই করার জন্য লিকুইড ডেক্সট্রোজ থেরাপি দেয়া।যেহেতু ফ্লুইড লস হয়নি।

আমি সোডিয়াম ক্লোরাইড ব্যাবহারের পক্ষপাতি নয়।

কারন আমরা মাত্র ২০ মিনিটে ১০০০ সিসি ফ্লুইড ইনজেক্ট করি। যদি সোডিয়াম ক্লোরাইড দেয় তা ভেঙ্গে রক্তে সোডিয়াম ও পটাসিয়াম আয়ন হয়। আয়োনিক একচেন্জ এর ফলে হার্ট বিট হয়।

ফলে এই আয়ন হার্ট বিটের আয়নকে নিউট্রালাইজ করে হার্ট বিট বাধাগ্রস্হ করে গরু মারা যেতে পারে, এটা আমার ধারনা।

তাই আমি শুধু ডেক্সট্রোজ ফ্লুইড থেরাপি ব্যাবহার করি।
আর
১।প্রোবায়োটিক প্লাসঃ
১০০-২০০ গ্রাম মুখে প্রতিবারে এইভাবে সকাল বিকাল ব্যাবহার করি।
২। ডেক্সট্রোজ ( পাউডার) ঃ
প্রতিবারে ১০০-২০০ গ্রাম দিনে ২বার।

এতে ডেক্সট্রোজ এনার্জী যোগায় এবং ২ টা মিলে বাল্কি পারগেটিভ হিসেবে কাজ করে দ্রুত পায়খানা করায় গরু বেচে যায়।

যদি কাচা ঘাস বিশেষ করে নিচু এলাকার ঘাস খেয়ে বা তরকারীর জমি বা বেশী নাইট্রোজেনাস সার ব্যাবহার করা জমির ঘাস খেয়ে নাইট্রেট পয়জনিং হয়,তখন মুখ দিয়ে লালা পড়ে।

তখন আমরা মিথিলিন ব্লু ব্যাবহার করি।মাত্রাটা রোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করে।

যাহা বোঝা যায় না, তাই আমি সরিষার দানা পরিমান নিয়ে স্যালাইনের সাথে অথবা পানি দিয়ে গুলায়ে শিরায় দিয়ে দিই।

দেবার ২/১০ মিনিটের মধ্যে যদি গরুর জ্ঞান ফেরে এবং নাক মুখ চেটে খাবারের কাছে যায় এবং খাবার খায়,তাহলে আমি সফল। আর যদি খাবারের কাছে গেল কিন্তু খেল না,তখন আবার অল্প করে মিথিলিন ব্লু দেই।

কোন অবস্হাতেই একবারে বেশী দেয়া যাবেনা।তাতে অতিরিক্ত মিথিলিন ব্লু রক্তের হেমোগ্লোবিনকে মেথেমোগ্লোবিনে রুপান্তর করবে, ফলে রক্ত অক্সিজেন ক্যারি করতে পারবেনা ফলে গরু শ্বাস কষ্ট হয়ে মারা যাবে।

বদহজম হজম হলে ইতিহাস ও পেটে চাপ দিলে হাত বসে যাবে এভাবে রোগ নির্নয় করা যাবে।

চিকিৎসাঃ

১। প্রোবায়োটিক প্লাসঃ
১০০-২০০ গ্রাম প্রতিবারে দিনে ২বার খাওয়ান।
২। এস আর ডেক্সট্রোজঃ
১০০-২০০ গ্রাম প্রতিবারে দিনে ২ বার।
৩। এস আর বভি( S R Bovi)ঃ
এক থেকে ২ প্যাকেট হালকা গরম পানিতে প্রতিবারে দিনে ২ বার।

ভাত খেয়ে কার্বোহাইড্রট ইনগোর্জমেন্ট হলেও এই চিকিৎসায় দ্রুত সফলতা লাভ করা যায়।

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, কার্বোহাইড্রেট ইনগোর্জমেন্টে কেন আবার ডেক্সট্রোজ পাউডার ব্যাবহার করবো।

তারা মেডিসিন বই বের করে দেখেন ঐ সময় রক্তে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়।

আর না খাওয়া গরুর যদি গায়ে তাপ থাকে।তাহলে আমরা ধরবো হয় ইনফেক্সাস ডিজিজ না হয় কিটোসিস।

কিটোসিসের ক্ষেত্রে মালিকের কাছে ইতিহাস নিলে পাবেন গরুটা কিছুদিন পুর্বে হাট থেকে কেনা অথবা ম্যাষ্টাইটিস/ রিটেন প্লাসেনটা/ এফ এম ডি/ অথবা পাতলা পায়খানা বা যে কোন কারনে খাদ্যাভাবে ভুগেছে।

গরুর পায়খানা প্রথমে পাবেন শক্ত গুটি গুটি,তাপমাত্রা ১০২- ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত। শক্ত পায়খানা অবশ্যই থাকবে।

যদি রোগীটা বিলম্বে আপনার হাতে পড়ে, তখন মালিককে জিজ্ঞাসা করে জানবেন প্রথম খাওয়া বন্দ্ধ হবার সময় পায়খানা শক্ত গুটি গুটি ছিল।

পরে দেখবেন তাপ বেশী অথবা উঠানামা করতেছে।মোট কথা যদি ২/১ জন ডাক্তারের হাত ঘুরে আপনার হাতে আসে তাহলে তা অবশ্যই কিটোসিসে রুপান্তর হবে। পরে হলে পায়খানা হবে অল্প অল্প কাল আঠালো।

চিকিৎসাঃ
১। এস আর রুচি( S R Ruchi)
প্রতিবারে ২০০–৩০০ গ্রাম দিনে ২ বার। পরের দিন দিনে একবার। সাথে ডেক্সট্রোজ ১০০ গ্রাম মিশায়ে খাওয়াবেন। ১–২ ডোজই খাওয়া ধরা, জ্বর পড়া ও যাবর ধরার জন্য যথেষ্ট। ৪/৫ দিন চলবে।

যদি ক্রোনিক হয়,তাহলে
এস আর বভিঃ ১–২ প্যাকেট হালকা গরম পানিতে মিশায়ে প্রথম খাওয়াবেন ১০–১৫ মিনিট পর রুচি পাউডার খাওয়াবেন।
কিটোসিস হলে কোন এন্টিবায়োটিক বা ফেব্রিফিউজ দিয়ে আপনি খাওয়া ধরাতে পারবেন না,জ্বর হয়তো কমতে পারে, কিন্তু খাওয়া ধরবে না।

আর যদি দীর্ঘদিন পর খাওয়া ধরে দুধ কম পাবেন স্বাস্হ্য ভাল হবে না।এই চিকিৎসা দিয়েই তার দুধ বাড়াতে পারবেন।

চিকিৎসার মাত্রাটা ১০০–১২০ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য।বড় হলে মাত্রা বাড়াবেন।বেশী হলে সমস্যা নেই বরং আরো তাড়াতাড়ী ভাল হবে।

Dr sk Robiul alam firoj

Please follow and like us:

About admin

Check Also

বাছুরের ডায়রিয়ার কারণ

Couses of diarrhea in neonatal rumenants ?Bacterial: ?Escherichia coli ?Salmonella spp. ?Campylobacter fecalis ?Campylobacter coli …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »