খাবার পাত্র:১-৭ দিন ১০০টির জন্য ১ টি
পানির পাত্র ১০০টির জন্য ১ টি
প্রথম ১-২ দিন পেপারে খাবার দিতে হবে (যদি লিটার ভাল থাকে তাহলে পেপারে না দিলেও চলে) যাতে খাবার চিনতে পারে এবং লিটারে যাতে খাবারে না পড়ে ও বাচ্চার জন্য সহজ হয়।
৩০ দিন পর্যন্ত ৪০ টির জন্য ১ টি খাবার পাত্র এবং ৫০ টার জন্য ১ টি পানির পাত্র।
৩০ দিন পর ৩০ টির জন্য ১ টি খাবার পাত্র
এবং ৪০ টির জন্য ১ টি পানির পাত্র.
খাবার এবং পানির পাত্র কিছু কম বেশি হতে পারে তবে বেশি দেয়াই ভাল বিশেষ করে বাচ্চা অবস্তায়.
ব্রুডিং:
বাচ্চা আসার আগে ঘরের তাপমাত্রা ৯৫’ ফারেনহাইট বা ৩৩’ সেন্টিগ্রেট করতে যা করার তাই করতে হবে.(স্টোভ,কাঠের গুড়ি দিয়ে তাপ, বালব,হারিকেন,কয়লা, হিটার,গ্যাস ব্রুডার,ইনফ্রারেট বাল্ব)
আলাদা ব্রুডিং ঘর হলে ভাল হয় কারন গঠনগতভাবে ব্রুডিং ঘর আলাদা, সেখানে সাইড ওয়াল,পরদা নিচ হতে উপর পরযন্ত থাকে. তাছাড়া দুটি ব্যাচ পালা যায়.
ব্রুডিং এর তাপমাত্রা
১ম সপ্তাহে ৯৫’ ফারেনহাইট
২য় সপ্তাহে ৯০
৩য় সপ্তাহে ৮৫
৪থ সপ্তাহে ৮০
৫ম থেকে শেষ পর্যন্ত ৭৫ ‘ ফারেনহাইট
লিটার এবং রোগ;
শীতের সময় লিটার ২ ইঞ্চি এবং গরমের সময় ১ ইঞ্চি করে দিলে ভাল হয় কারন লিটার পাতলা হলে বাচ্চার শরীরের তাপ বের হয়ে লিটারে চলে যায়.
লিটার ভিজা হলে আমাশয় হয়, আমাশয় হলে গামবোরু এবং রানিক্ষত হবার সম্বাবনা থাকে.
লিটার বেশি শুকনা হলে তুত বা শুকনা গুড়া নিম পাতা স্প্রে করে দিতে হবে কারণ ধুলা বালি নাকে গিয়ে মুরগির ঠান্ডা লাগে,বিশেষ করে বাচ্চার ব্রুডার নিউমোনিয়া হবার সম্বাবনা থাকে তাছাড়া রানিক্ষতে এবং গাম্বোরুর বিরুদ্ধে কাজ করবে।
তুতে ৩-৫গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।নিম পাতা ১-২গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে লিটারের উপর স্প্রে করতে হবে।
খাবার এবং পানির পাত্র ও রোগ;
খাবার পাত্র দিতে হবে পিঠ বরাবর আর পানির পাত্র দিতে হবে চোখ বরাবর তাহলে মুরগি সহজে খেতে পারবে এবং পানি ও খাবারে ময়লা পড়বে কম ফলে পানি বাহিত রোগ কম হবে, পেঠ ভাল থাকবে. পাতলা পায়খানা হবেনা ।ওজন ভাল হবে.
লিটার যদি খাবার এবং পানিতে পড়ে তাহলে আমাশয় হয় যা সব রোগকে দাওয়াত করে নিয়ে আসে.
প্রতিদিন পানির পাত্র পরিস্কার করতে হবে এবং সপ্তাহে ১ বার খাবার পাত্র পরিস্কার করতে হবে.
মুরগির অধিকাংশ রোগ পানির মাধ্যমে আসে.
পর্দা এবং রোগ:
পর্দার নিচের অংশ ফিক্স থাকবে এবং উপর হতে নিচে নামানো হবে,অথবা উপরে চটের অংশ এবং নিচে কাপড়ের অংশ থাকা উচিত যাতে প্রয়োজন অনুযায়ী উঠানো নামানো যায়.
শীতের সময় দরজায় এবং পরদার উপরের অংশ ঢেকে দিতে হয়.
পর্দা উপরে ফিক্স থাকলে সঠিকভাবে উঠানো নামানো যায়না ফলে ভিতরে গ্যাস হয়,গ্যাস হলে ধকল পড়ে এবং শ্বাস নালির ক্ষতি করে ফলে মাইকোপ্লাজমা,ব্রংকাইটিস এবং রানিক্ষেত হতে পারে.
খাবার এবং পানি:
খাবার হিসেবে সোনালি খাবার এবং ব্রয়লার খাবার দুটিই চলে,অনেকে ১৫-২০ দিন ব্রয়লার খাওয়ায় তারপর সোনালি,কেউ আবার দুইটা মিক্সার করে খাওয়ায়. কেউ শুধু সোনালি বা শুধু ব্রয়লার খাওয়ায়.
শুধু ব্রয়লার খাওয়ালে আমাশয় এবং নেক্রোটিক এন্টারাইটিস হওয়ার সম্বাবনা থাকে কারণ এতে প্রোটিন,এনারজি এবং অন্য ভিটামিন বেশি থাকে.
সোনালি মুরগি ব্রয়লারের মত বাড়েনা,তাই তাদের খাবারটাও সেভাবে তৈরি করা হয়েছে মানে প্রোটিন কম দেয়া আছে.
সোনালী মুরগি যত খায় তত বাড়ে না তাই খাবার হিসেব করে দেয়া ভাল।
১ম ২ দিন ৪ ঘন্টা পর পর খাবার দেয়া উচিত এবং খাবার যাতে সব সময় থাকে তানাহলে মুরগি ছোট বড় হয়ে যাবে.
৩-১০ দিন দিনে ৪ বার খাবার দিতে হবে এবং ১১ দিন থেকে দিনে ৩ বার খাবার.
৩০ দিন পর দিনে ২ বেলাও দেয়া যায়.
20-২৫ দিন যতটুকু খায় ততটুকু খাবার কিন্তু ২৫ দিন পর প্রতি সপ্তাহে প্রতি মুরগিতে ৪-৬ গ্রাম করে বাড়াতে হবে।
এমন ভাবে খাবার দিতে হবে যাতে
সকালে ৪ ঘন্টয় শেষ হয়(৪০%)
দুপুরে ৩ ঘন্টা খায়(২০%)
রাত্রে ৫ ঘন্টায় শেষ হয়।(৪০%)
শীতে ওজন বেশি হয়।
গরমের সময় ঠান্ডা সময় মানে সকালে এবং বিকালে খাবার দিতে হবে.
কতদিনে কত ওজন:
৪৫ -৬০ দিনে ৭০০-৮৫০ গ্রাম পর্যন্ত হয় আর খাবার খাবে ১০০০ মুরগিতে ৩৫-৪০ ব্যাগ.ওজন অনেকটা বাচ্চার মানের উপর নির্ভর করে. ইনব্রিডিং সমস্যার কারনে প্রায়ই বাচ্চার মান ভাল হয়না.
সোনালীর এফ সি আর সোনালীর খাবারে ২.২-২.৪ মানে ২২০০-২৪০০ গ্রাম খাবার খেয়ে ১কেজি ওজন ।
ব্রয়লার খাবারে ১.৮ -২ মানে ১৮০০-২কেজি খাবার খেয়ে ১কেজি ওজন।
ব্রয়লার ও সোনালী এক সাথে মিশিয়ে খাওয়ালে ব্রয়লার ৩৫% আর সোনালী ৬৫% দেয়া ভাল।তাহলে আমাশয় কম হবা
বাচ্চার দাম এবং রেডি মুরগির দাম:
রেট ১০-৩৩ টাকার মধ্যে উঠানামা করে।
রেডি মুরগির দাম ও উঠানামা করে ১৭০-২৪০ টাকা তাই লাভ টা ও উঠানামা করে.এখন রেট ১৮০টাকা
খাবারের দাম বাকিতে ১৯৫০-১৮০০ টাকা,নগদে ১৭৫০-১৯০০ টাকা
ব্রয়লার খাবার দিলে ওজন টা তাড়াতাড়ি আসে তবে আমাশয় বেশি হয়।
রোগব্যাধি :
প্রধান রোগ হল
আমাশয়
গাম্বোরো
রানিক্ষেত.
পক্স
এন্টারাইটিস
কৃমি
ক্যানাবলিজম
তাছাড়া মাইকোপ্লাজমা এবং ব্রংকাইটিস।
ডিম পাড়ার সোনালিতে মেরেক্স বেশি হয়।
টিকা:
১-৩ দিন আই বি + এন ডি
৭-৮দিন ঠোটে ছেকা
৮-১২ দিন গামবোরু
১৫-১৭ দিন গামবোরু
২০-২৫ দিন রানিক্ষেত
৪-৫ সপ্তাহ পক্স
৬সপ্তাহ রানিক্ষেত
৬-৭ সপ্তাহ কৃমিনাশক
তবে অনেকে ৮-১২দিনে এন ডি কিল্ড বা এন ডি +গাম্বোরু কিল্ড দেন।
কেউ কেউ ১ম দিনে ভেক্টরমিউন( এন ডি +মেরেক্স ) দেয়।
১ম দিকে রানিক্ষেতের লাইভ দিতে হবে ।কিল্ড দিলে ৪০ দিনের পর লাইভ দিতে হবেনা।
যেসব এলাকায় রানিক্ষেতের প্রাদুর্ভাব বেশি সেখানে রানিক্ষেতের কিল্ড টিকা দিতে হবে।
ঠোকরাঠুকরি করলে ঠোট ছেকা দিতে হবে ৭-১০দিনে।
টিপস
ইনব্রিডিং।
নিন্মমানের হ্যাচারী।
অদক্ষ লোক দিয়ে হ্যাচারী চালানো।
কোন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানী নাই সবই লোকাল তবে বড় কোম্পানী সোনালীর দিকে মনোযোগী হচ্ছে।
ব্রীডারের ব্যবস্থাপনা ভাল না।
ফলে বর্তমানে বেশি যে সমস্যা হচ্ছে
ওজন ভাল আসেনা
বেশি মারা যায়
( মেরেক্স,এ আই বেশি দেখা যাচ্ছে)
কখন কোন বাচ্চা ভাল না খারাপ তা বোজা যাচ্ছানা ফলে রিক্স বেড়ে যাচ্ছে
মেডিসিন:
আমাশয় বেশি হয় তাই
১৩-১৫দিনে
২৩-২৫ দিনে
৩৫-৩৭দিনে মোট তিন বার আমাশয়ের ডোজ করা উচিত.
৩৫-৪০ দিনে কৃমির ডোজ করলে ভাল হয়,
অনেক সময় ঠোটে ছেকা দিতে হয় ৫-১০ দিনে.
ব্রুডিং এর সময় প্রথম দিন,গুড়,ইলেক্টোলাইট, প্রবায়োটিক। সি এবং গ্লোকো্জ,মাল্টিভিটামিন দেয়া যায় ,পরের দিন থেকে লাগলে এন্টিবায়োটক দেয়া যায়.
প্রতি সপ্তাহ ২ দিন করে প্রবায়োটিক দিলে ভাল হয় এতে পায়খানা ভাল থাকবে.
কেন লাভ হয়না কারণঃ
১রেডি মুরগির দাম উঠানামা করে
২.ওজন কম আসা
৩ মুরগির ঘর যদি সঠিকভাবে করা না হয়।
৪.পালন সম্পর্কিত সঠিক ধারনা না থাকা
৫রোগ বালাই
৬.বায়োসিকিউরিটি না থাকা
৭..বাচ্চা ভাল মানের না হওয়া
৮.টিকার মান এবং দেয়ার পদ্ধতি ভাল না হওয়া
৯..বাচ্চার দাম বেশি
১০. খাবারের দাম বেশি
১১.মুক্ত বাজারনীতি মানে দামের উপর সরকারের কোন নীতিমালা নেই.
১২. দেশে কতগুলো ফার্ম আছে,কতগুলো বাচ্চা উৎপাদিত হয় এবং আমাদের চাহিদা কতটুকু তার কোন সঠিক হিসেব নেই ও সে অনুযায়ী কোন ব্যবস্থা নেই.
১৩।সাপ্লাই বেশি হলে দাম কমে সাপ্লাই কম হলে দাম বাড়ে এভাবেই চলছে পোল্ট্রি শিল্প
তবে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি সঠিকভাবে পালন করতে পারলে লস হবেনা ,হয়ত লাভ কম হবে কিন্তু বাংলাদেশে সঠিকভাবে ফার্ম চালাতে গেলে কোন ফার্মই থাকবে না।
কারণ ফার্ম গুলো কাছাকাছি,
একই ফার্মে এমন কি একই সেডে বিভিন্ন বয়সের মুরগি।
একটা ব্যাচ বিক্রির পর সোনালী বা ব্রয়লারের ক্ষেত্রে ১৪দিন আর লেয়ারের ক্ষেত্রে ৩ মাস গ্যাপ দিতে হয় কিন্তু আমাদের দেশে এই নিয়ম মানা হয় না।
লেয়ারের টাইটার দেখে টিকা দিতে হবে কিন্তু তা করা হয় না।
অসুস্থ ফার্মের মুরগি এখানে সেখানে ফেলানো হয় ফলে কুকুর,শিয়াল এই গুলো ভাল ফার্মের সামনে বসে মজা করে খায় আর মনে মনে বলতে থাকে সম্পদ দিয়ে গেলাম কিছুদিন পর তোমাদের খাব।
ফার্মের আশেপাশে দেশি মুরগি ফার্মের মুরগিকে টাইফয়েড,কলেরা,রানিক্ষতে,পক্স,,কৃমি ,মাইকোপ্লজমার জীবাণূ দিয়ে প্রতিদিন স্বাগত জানায়।
শালিক,চড়ুই,বন্য পাখি মাইকোপ্লাজমা আর বার্ড ফ্লুর জীবাণূ নিয়ে সেডের ভিতর আসা যাওয়া করে অনুমতি ছাড়াই।
সেডে প্রচুর মাকড়সার জাল যেন জীবাণূর বাসরঘর।
একসাথে ৩-৪টা এক্টিবায়োটিক না দিলে খামারীর মন ভরে না।মুরগির কথা কোন দিন চিন্তা করে না