Breaking News

গরুর জাত পরিচিতি : সিন্ধী ও শাহীওয়াল

গরুর জাত পরিচিতি : ( সিন্ধী )

গরুর নাম : লাল সিন্ধী যেটাকে আমরা সিন্ধি বলেই জানি, জেবু (বস ইন্ডিকাস) জাতের সবচে জনপ্রিয়।

যেহেতু থারপারকার জাতের গরুকে সাদা সিন্ধী বলা হয় তাই থারপারকার থেকে আলাদা করার জন্য সিন্ধি গরুকে লাল সিন্ধি বলা হয়।

লাল সিন্ধি ছাড়াও এই গরুকে মালির এবং লাল করাচি নামেও ডাকা হয়।

ওজন : ষাঁড় : ৫০০-৭০০ কেজি
গাভী : ৩০০-৪০০ কেজি
বাছুর : ২২ – ৩০ কেজি

উৎস দেশ :

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে জন্ম নেয়া লাল সিন্ধি পরবর্তীতে এশিয়া, আফ্রিকা এবং আমেরিকা মহাদেশের কম করে হলেও ৩৩ টা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

মূলত নরম ইউরোপিয়ান (বস টোরাস) জাতের গরুকে গরম প্রতিরোধী এবং রোগ প্রতিরোধী করার জন্য ক্রস এর উদ্দেশ্যে প্রধানত বর্তমান সময়ে এই গরু ব্যবহার করা হয় যদিও এক সময় এটাই ছিল উপমহাদেশের প্রধান দুধ এবং মাংস উৎপাদনকারী গরু।

ইতিহাস :

রেড সিন্ধী বা সিন্ধী গরুর সঠিক ইতিহাস পাওয়া খুব কঠিন।

তবে সহজেই অনুময়ে যে পাকিস্তানের গরু পালনকারী সম্প্রদায় শত বছর ধরে এই জাতের গরু পালন করে আসছে। বেলুচিস্তান প্রদেশের বেলা অঞ্চলের ‘লাস বেলা’ জাত থেকে এই জাতের উদ্ভব হয়েছে বলে মনে করা হয়।

সিন্ধী গরু আমাদের দেশে প্রথম আসে ১৯ শতকের শেষের দিকে এবং বিংশ শতকের প্রথম দিকে।

আর এই সিন্ধি এবং সাহিওয়াল এর উপর ভিত্তি করেই শুরু হয় আমাদের দেশের দুধ কেন্দ্রিক ব্যবসার পথ চলা।

বিংশ শতকের শুরুতেই সিন্ধী গরু পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পরে. কোথাও ডুয়াল পারপাস গরু হিসাবে, কোথাও ইউরোপিয়ান জাতের সাথে দুধের গরু হিসাবে, আবার কোথাও মাংস উৎপাদনের জন্য।

পৃথিবীর প্রায় ৩৩ টা দেশে লাল সিন্ধি জাত পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হয়।

১৯৫৪ সালে অস্ট্রেলিয়া প্রথম লাল সিন্ধী লোকাল ফ্রিজিয়ান গরুর সাথে ক্রস করার জন্য পাকিস্তান থেকে আমদানি করে। অস্টেলিয়া ছাড়াও ব্রাজিলে রয়েছে এই গরুর ক্রস জাতের আধিক্য।

পালনকারী দেশ :

লাল সিন্ধি পাকিস্তানের জাত হলেও ভালো ইন্ডিজেনাস জাত হওয়ায় পৃথিবীর ৩৩ এর অধিক দেশে এটা পালন করা হয়।

কোথাও লোকাল জাতের সাথে ক্রস ব্রীড হিসাবে অথবা কোথাও মাংস উৎপাদনকারী এবং কোথাও মাংস ও দুধ উভয় উদ্দেশ্যে পালন করা হয়।

তবে এই জাতের প্রধান পালনকরী দেশ পাকিস্তান, ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রাজিল।

বৈশিষ্ট ও সুবিধা :

সিন্ধি গরু দেখতে শাহিওয়াল এর চেয়ে গাড় লাল রংয়ের অথবা কালচে লাল রংয়ের হয়ে থাকে।

গলায়, ঘাড়ের উপরে অথবা কপালে কালচে রংয়ের ছটা দেখা যায়।

মোটা তীক্ষ সিং এবং অভিজাত চেহারা সিন্ধি গরুকে অন্য সকল জাত থেকে সহজেই আলাদা করে রেখেছে।

প্রচন্ড গরম ও বৈরী অঞ্চলের জাত হওয়ায় সিন্ধি গরু সহজেই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়ায় মানিয়ে নিতে পারে এবং সাথে রয়েছে রোগ প্রতিরোধের সহজাত ক্ষমতা।

যে কারণে আমাদের দেশে খুব সহজে এই জাতের গরু পালন করা যায়।

দুধ ও মাংস উৎপাদন :

সিন্ধি গরু এক ল্যাক্টেশন পিরিয়ডে গড়ে ২০০০- ৩০০০ কেজি উত্তম মানের দুধ প্রদান করে।

এই জাতের গরুর দুধে গড়ে ৪.৫-৫ % ফ্যাট থাকে।

দুধের অন্যান্য উপাদানও ফ্রিজিয়ান গরু থেকে বেশি থাকে।

সিন্ধি জাতের ষাঁড়ের ওজন বেশি হওয়ায় এবং মাংসের স্বাদ ও গুন্ ভালো হওয়ায়, এই জাতের ষাঁড় ভালো দামে বিক্রি হয়।

আমাদের দেশের হাটে প্রচুর এই জাতের গরু দেখা যায়।

আমাদের দেশে পাবনা অঞ্চল এই জাতের প্রধান পালনকারী এলাকা যদিও ইউরোপিয়ান জাতের ভিড়ে সিন্ধি গরুর সংখ্যা অনেক কমে গেছে।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব :

উভয় পারপাস গরু হিসাবে ভালো মানের মধ্যম পরিমান দুধ এবং উন্নত মানের বড় আকৃতির ষাঁড় এই গরুকে অর্থনীতিতে শক্ত অবস্থানে দাড় করিয়েছে।

উনিশ শতকের শেষের দিকে এবং বিংশ শতকের প্রথম দিকে যে ২ টা জাতের গরুর উপর নির্ভর করে পাবনার চলন বিল কেন্দ্রিক দুগ্ধ অর্থনীতি শুরু হয়, তার একটা এই সিন্ধি জাতের গরু।

শাহিওয়াল এবং সিন্ধি গরুর দুধের উপর ভিত্তি করেই ১৯৪৬ সালে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠে ‘মিল্ক ভিটা’।

এখনো শুধু পাকিস্তান বা ইন্ডিয়া নয়, আমাদের দেশেও গরু কেন্দ্রিক অর্থনীতিতে এই জাতের গরু একটা বড় অংশ দখল করে আছে।

রোগ প্রতিরোধী হওয়ায় এই জাতের গরুর চিকিৎসা ব্যয় কম এবং দুধের মান ভালো হওয়ায় দুধ অধিক মূল্যে বিক্রয় হয়।

সিন্ধী’ গরু পালনে সমস্যা :

সিন্ধী আমাদের দেশের এক সময়ের প্রধান দুধ ও মাংস উৎপাদনকারী গরু হলেও বর্তমান সময়ে গোখাদ্যের অতি মূল্যের কারণে এবং ইউরোপিয়ান অধিক দুধ উৎপাদনক্ষম গরুর ভিড়ে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে।

দুধ উৎপাদনকাল ছোট হওয়ায় দুধ উৎপাদনের জন্য সিন্ধী গরু এখন আর সব সময়, সব অঞ্চলে লাভজনক প্রমাণিত হয়না, যদিও দুগ্ধজাত পণ্য এবং মাংস উৎপাদনের জন্য এখনো এই জাতের গরু পালন করা হয়।

পাকিস্তানে সরকারি ভর্তুকি দিয়ে এই জাতের গরু পালনে উৎসাহী করা হচ্ছে।

জীবনকাল :

দীর্ঘ জীবনকালের অধিকারী সিন্ধী জাতের গরুর গড় দুধ উৎপাদনকাল ২০ বছর। এই জাতের গরুর গড়ে প্রায় ২৪-২৭ বছর বেঁচে থাকে।

তথ্যসূত্র :
১. ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটি, এপার্টমেন্ট অফ এনিম্যাল সাইন্স।
২. পাকিস্তান ভেটেনারি জার্নাল, ইউনিভার্সিটি অফ ফয়সালাবাদ।
৩. সেন্ট্রাল কোস্টাল এগ্রিকালচার রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ইন্ডিয়া।
৪. উইকিপেডিয়া।

লেখক ঃজাহিদুল ইসলাম(পি ডি এফ গ্রুপ)

গরুর জাত পরিচিতি  : ( শাহিওয়াল )

গরুর নাম :

আমাদের দেশে বাণিজ্যিক দুধ উৎপাদন শুরু হয়েছিল যে গরুর হাত ধরে সেটা আমাদের আজকের আলোচিত গরু ‘জেবু (বস ইন্ডিকাস)’ জাতের একটা প্রসিদ্ধ নাম ‘শাহিওয়াল’।

আমাদের দুধ কেন্দ্রিক ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে ডুয়াল পারপাস (দুধ ও মাংস উৎপাদন) গরু ‘শাহিওয়াল’ এর রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক।
গড় ওজন : ষাঁড় : ৫০০-৭০০ কেজি
গাভী : ৪০০-৫৫০ কেজি
বাছুর : ২৫-৩০ কেজি

উৎস দেশ :

শাহিওয়াল পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ‘শাহিওয়াল’ জেলার একটা ইন্ডিজেনাস গরুর জাত।

জন্ম স্থানের সাথে সম্পর্কিত করে এর নাম হয়েছে শাহিওয়াল।

ভারত পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী স্থানে জন্ম হওয়ায় এবং বিস্তার লাভ করায় অনেকে এটাকে ভারতীয় পাঞ্জাব এর ইন্ডিজেনাস জাত হিসাবে মনে করলেও এটার প্রকৃত উৎস দেশ পাকিস্তান।

ইউরোপীয় গরুর ভিড়ে এখন পাকিস্তানেও এই জাতের গরু তার স্বকীয়তা ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে, তাই এই জাতের নিজস্ব স্বকীয়তা ধরে রাখার জন্য সেখানে শাহিওয়াল পালনকারীদের জন্য বিশেষ ভর্তুকি প্রদান করা হয়, এমন কি ভারতীয় পাঞ্জাবেও একই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

ইতিহাস :

শাহিওয়াল যেহেতু পুরানো ইন্ডিজেনাস একটা গরুর জাত তাই এটার সঠিক ইতিহাস জানা খুব কঠিন,

তবে ১৮৬০ এর দশক থেকে শাহিওয়াল গরু সুশৃঙ্খল ভাবে পালনের বিচ্ছিন্ন ইতিহাস পাওয়া গেলেও ‘পাঞ্জাব শাহিওয়াল সংরক্ষণ গবেষণা কেন্দ্র, পাকিস্তান ‘ প্রদত্ত ইতিহাস থেকে জানা যায় ১৯১৫ সালে সর্দার জাহাঙ্গীর খান প্রথম শাহিওয়াল খামার স্থাপন করেন এবং তাকেই এই জাতের পাইওনিয়ার বলা হয়।

এরপর থেকে শাহিওয়াল দুনিয়াজোড়া এক খ্যাতিসম্পন্ন গরুর নাম।

পৃথিবীর এমন কোনো গরু পালনকারী ভূখণ্ড নাই যেখানে এই জাতের আগমন ঘটে নাই এবং ব্যাবহারিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় নাই, যদিও কিছু দেশে পরীক্ষা করা হয়েছে দুধের জাত হিসাবে এবং কিছু দেশে মাংসের জাত হিসাবে।

৭০০০- ৮০০০ বছর পূর্বে : জেবু কাটল গৃহপালিত পশু হিসাবে পালন শুরু হয় পাকিস্তানের ইন্দুস উপত্যকায়ে।
১৯১৫ : সর্দার জাহাঙ্গীর খান শাহিওয়াল জাতের গরুর প্রথম খামার করেন পাকিস্তানে।
১৯১৭ : ‘আল্লাহর দান’ খামার এর প্রতিষ্টা, জাহানিয়ান, মুলতানে।
১৯২৫ : সরকারি স্কিম এর আওতায় পাকিস্তানে শাহিওয়াল ব্রিডিং অফিসিয়ালি শুরু।
১৯৩৯ : কেনিয়াতে সাহিওয়াল গরুর আমদানি করা হয়।
১৯৫০ : নিউ গিনি হয়ে অস্ট্রেলিয়াতে সাহিওয়াল গরুর আমদানি।
২০০৪ : পাকিস্তানে শাহিওয়াল সংরক্ষণ কর্মসূচি শুরু।

পালনকারী দেশ :

পৃথিবীর প্রায় সব গরু পালনকারী দেশে কম বেশি শাহিওয়াল গরুর উপস্থিতি থাকলেও প্রধান পালনকারী দেশ হচ্ছে : পাকিস্তান, ইন্ডিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কেনিয়া, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, ব্রাজিল।

বৈশিষ্ট ও সুবিধা :

পাকিস্তানের প্রচন্ড গরমেও সম্পূর্ণ সুস্থ থাকার বৈশিষ্ট শাহিওয়াল গরুকে এক বিশেষ মাত্রা দিয়েছে, যে কারণে গরম গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়ায় এই জাতের রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা।

বিশুদ্ধ শাহিওয়াল জাত খুব বেশি পালন না করা হলেও ফ্রিজিয়ান বা অন্য দুধ উৎপাদনকারী বা মাংস উৎপাদনকারী গরুর সাথে ক্রস করিয়ে এই গরু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পালন করা হয়।

এই জাতের গরু সাধারণত লাল, হালকা লাল বা গাড় লাল রঙের হয়ে থাকে।

বস ইন্ডিকাস জাতের উঁচু চুটধারী শাহিওয়াল ষাঁড় গরুর রং লাল এর সাথে অনেক সময় হালকা কালচে রং এর মিশ্রণ দেখা যায়।

শাহিওয়াল গরুর রয়েছে প্রচন্ড রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা এবং যেকোনো পরজীবী আক্রমণ থেকে বিশেষ প্রতিরোধ ব্যবস্থা।

দুধ ও মাংস উৎপাদন :

দৈনিক দুধ উৎপাদন সন্তোষজনক হলেও ছোট দুধ উৎপাদনকাল হওয়ায় এই জাতের জনপ্রিয়তা এখন অনেকাংশে কমে গেছে।

তারপরও ডুয়াল পারপাস (দুধ ও মাংস উৎপাদন) গরু হিসাবে উপমহাদেশে রয়েছে এই জাতের রয়েছে একক শ্রেষ্টত্ব।

এক দুধ উৎপাদনকালে এই জাতের গরু অ্যাভারেজ ২২০০ থেকে ৩০০০ কেজি পর্যন্ত সর্বোত্তম মানের দুধ দেয়।

এই জাতের গরুর দুধে রয়েছে অধিক মিল্ক প্রোটিন এবং মিল্ক ফ্যাট যা হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান এর চেয়ে গড়ে প্রায় ২০-২৫ % বেশি।

যে কারণে শাহিওয়াল গরুকে বলা হতো আমাদের দেশের প্রধান দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনকারী গরু।

আর মাংস উৎপাদনে এই জাতের গরুর গুরুত্ব কোনো খামারির কাছে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার দরকার আছে বলে মনে হয়না। সুদর্শন, বিশালাকৃতির শাহিওয়াল ষাঁড় গরুর হাঁটে যেকোনো ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য যথেষ্ট।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব :

অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনা করলে বলা যায় উপমহাদেশের দুধ এবং মাংস কেন্দ্রিক অর্থনীতির বুনিয়াদ গড়ে দিয়েছে শাহিওয়াল জাতের গরু। বাংলাদেশে ডেইরি শিল্পের পথ প্রদর্শক প্রয়াত জনাব মুখলেসুর রহমান ১৯৪৬ সালে পাবনার লাহিড়ীমোহনপুর (বর্তমান সিরাজগঞ্জ)দৈনিক ২০০০ লিটার ক্ষমতার যে মিল্কভিটা প্লান্ট প্রতিষ্ঠা করেন, সেটার মূলেও পাবনা অঞ্চলে এই শাহিওয়াল জাতের গরুপালন।

এই শাহিওয়াল জাত আর সিন্ধি জাত দিয়েই বাংলাদেশের বাণিজ্যিক গরু পালন শুরু। শাহিওয়াল গরুর দুধে রয়েছে উচ্চ মাত্রার মিল্ক ফ্যাট এবং মিল্ক প্রোটিন, যে কারণে আমাদের দেশের বৃহত্তম পাবনা অঞ্চলের ঘি এবং দুগ্ধ পণ্যের শিল্প গড়ে উঠেছে এই জাতের দুধের উপর নির্ভর করে।

অত্যন্ত সুস্বাদু মাংসের বৈশিষ্ঠধারী শাহিওয়াল ষাঁড় গরু, যে কারণে এর রয়েছে উচ্চ মূল্যের প্রতিস্রুতি।

‘শাহিওয়াল’ গরু পালনে সমস্যা :

শাহিওয়াল আমাদের দেশের এক সময়ের প্রধান দুধ ও মাংস উৎপাদনকারী গরু হলেও বর্তমান সময়ে গোখাদ্যের অতি মূল্যের কারণে এবং ইউরোপিয়ান অধিক দুধ উৎপাদনক্ষম গরুর ভিড়ে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে।

শাহিওয়াল জাতের সবচে বড় সমস্যা হচ্ছে সেমেন দেয়ার পরে দুধের উতপাদন দ্রুত কমে যাওয়া।

দুধ উৎপাদনকাল ছোট হওয়ায় দুধ উৎপাদনের জন্য শাহিওয়াল গরু এখন আর লাভজনক প্রমাণিত হয়না, যদিও দুধ এবং মাংসের মান বিবেচনায় নিয়ে, দুগ্ধজাত পণ্য এবং মাংস উৎপাদনের জন্য এখনো এই জাতের গরু পালন করা হয়।

পাকিস্তানে এবং ইন্ডিয়াতে সরকারি ভর্তুকি দিয়ে এই জাতের গরু পালনে উৎসাহী করা হচ্ছে।

জীবনকাল :

দীর্ঘ জীবনকালের অধিকারী শাহিওয়াল জাতের গরুর গড় দুধ উৎপাদনকাল ২০ বছর। এই জাতের গরুর ৩০ বছর এর অধিক বেঁচে থাকার রেকর্ড রয়েছে।

শাহিওয়াল জাতের সুবিধা ও অসুবিধা।
# সুবিধা:
১. আকর্ষনীয় সুন্দর চেহারা।
২. দুধ মাংসের মান ভালো ও বাজারে চাহিদা বেশি।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি।
৪. অল্প খাদ্যে দেহের তুলনামুলক বেশি বৃদ্ধি।
৫. দীর্ঘ জীবনকাল।
# অসুবিধা :
১. দুধ উৎপাদন তুলনা মুলক কম।
২. প্রজননক্ষম দেরিতে হয়।
৩. হিট কন্সেপের হার কম।
৪. অল্পতে ফ্যাট বৃদ্ধি পায় তাই বন্ধতা বেশি দেখা দেয়।
৫. এদের ওলানের বাট মোটা ও শক্তো। তাই হাতে দোহন করতে কষ্ট হয়।
# উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝা যায়, শাহিওয়াল দুধের তুলনায় মাংস উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে ভালো জাত। 

Jahidul Islam(PDF)

তথ্যসূত্র :
১. শাহিওয়াল গবেষণা সংস্থা,শাহিওয়াল, পাকিস্তান।
২. ডিপার্টমেন্ট অফ এনিম্যাল সায়েন্স, ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটি, ইউ এস এ।
৩. অরগানিক ফার্মার্স সোসাইটি।
৪. অস্ট্রেলিয়া শাহিওয়াল সমিতি।
৫. উইকিপেডিয়া।

Please follow and like us:

About admin

Check Also

বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা ডেইরি গরুর ১০টি জাত

বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা ডেইরি গরুর ১০টি জাত বাংলাদেশে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল কৃষি খাতের মধ্যে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »