লাখ লাখ টাকার গরু কিনলেন।
তবে ১জন অদক্ষ রাখালের উপর সব দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েন না।
________________________________________________
তাহলে এই ভুলই আপনাকে শেষ করে দিবে।
খামারে লোকসান হয় কিছু ভুলের কারণেই।
খামার সেক্টরে বর্তমানে দক্ষ রাখালের খুবই অভাব।
তাই খামার করেই রাখালের উপর সমস্ত দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া ঠিক নয়।তবে দক্ষ রাখাল হলে তো ভিন্ন কথা।
একজন দক্ষ রাখালের কাছ থেকে আপনি পাবেনঃ
#সঠিক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা।
#খামার বিষয়ক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান।
#খামার হবে লাভমান।
১জন অদক্ষ রাখালের উপর লাখ লাখ টাকার গরু ও আপনার খামার কতটুকু নিরাপদ খেয়াল করুন।
তারপর সিন্ধান্ত নিন আপনি কী করবেন?
#খামার বিষয়ক অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে মনগড়া খামার পরিচালনা করলে যেকোন সময় বিপদের সম্মুখীন হতে হবে খামারীর।
#খামারে বিভিন্ন কাজকর্মে অবহেলা করে।
#কোন গাভীর কতটুকু খাদ্য প্রয়োজন ও কতটুকু খাদ্য খাওয়ালে দুধ ও গাভীর স্বাস্থ্য উভয় ভালো থাকবে সেদিকে নজর রাখে না।ফলে খামারী লসের সম্মুখীন হতে হয়।
#দুধের গাভী থেকে বেশি দুধ বাহির করে খামারীকে প্রোডাশন বেশি দেখানো, কিন্তু বাচুর কে পরিমাণ মতো দুধ খাওয়া থেকে বিরত রাখে।যার ফলে খামারী পাচ্ছে অসুস্থ ও দূর্বল বাচুর।
#খামারে গাভী ও বকনা সময় মতো হিটে না আসলে, বীজ কনসেপ্ট না করলেই ১জন অদক্ষ রাখাল খামারী কে ভালো জাতের গাভীটি ও বিক্রি করে দিতে পরামর্শ দেয়।কেন হিটে আসছে না ও বীজ কনসেপ্ট করছে না তা খুঁজে বাহির করে না।যার ফলে সঠিক পরামর্শ না পেয়ে খামারী ভালো জাতের গাভী বা বকনাটি বিক্রি করতে বাধ্য হয়।
#ভালো জাতের ফিজিয়ান,সিন্ধী,ও সংকর জাতের গাভীগুলো বাচ্চা দেওয়ার আগে সুষম খাদ্য ও ভিটামিন মিনারেলের অভাবে রাখা, বাচ্চা দেওয়ার পর গাভীর বিভিন্ন সমস্যা ফুল না পড়া,ঘন ঘন দুধ দহনে অবহেলা করা, হয়ে যায় ম্যাস্টাটিস। ফলে খামারীকে গুনতে হয় অনেক টাকা পড়তে হয় লসে।
#খামারে গরু কোন রোগ বালাই দেখা দিলে শুরুতে বুঝতে পারে না,যখন গরু গুলো অধিক ভাবে রোগে আক্রান্ত হয় তখন বুঝে।এর ফলে খামারীর হয় চরম ক্ষতি কেননা শুরুতে বুঝতে পারলে গরু ও খামারী উভয়ই ঝামেলা মুক্ত থাকে।
#প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ক কোন ধারণা না থাকাই,খামারে কোন রোগ হলেই জ্বর মাপার জন্য ও অপেক্ষা করতে হয় ভেট ডাক্তারের জন্য।
#কোন গরুকে কতটুকু ওজনে কোন গ্রুপের কৃমিনাশক খাওয়াতে হবে বা ইনজেকশন করতে হবে তাও জানে না,লিভার টনিক, জিংক,ক্যালসিয়াম এগুলো কী কাজ করে সেই বিষয়ে ধারণা নেই। ফলে খামারী টুকিটাকি সমস্যার সমস্ত নির্ভর হতে পারে না রাখালের উপর।
#খামারে গরু গুলোর খাদ্য থেকে শুরু করে, গরুর বিশ্রাম, গোসল,খামার ও খাবার পাত্র পরিষ্কার রাখা,খামারে বায়োসেকোরেটি, জীবাণু মুক্ত রাখা ও সময় মতো ভ্যাকসিন প্রয়োগ এগুলো থেকে অনেক সময় বিরত থাকে ও রুটিন মোতাবেক খামার পরিচালনা করে না।ফলে খামারী হয় ক্ষতিগ্রস্ত।
#অদক্ষ রাখাল কাজে অবহেলা কারণে খামারে যেকোন সময় ঘটতে পারে দূঘ’টনা। এমন কি গরু ও মারা যেতে পারে।ফলে খামারীর লসের পাল্লা ভারী হয়ে যাবে।
সুতরাং সাবধান! খামারে কম বেতনে রাখালের সংখ্যা শুধু বাড়ালেই হবে না।খেয়াল রাখতে হবে রাখাল কতটুক দক্ষ।আর আমরা জানি দক্ষ রাখালের বড়ই অভাব।তবু ও সচেতন হতে হবে খামারীদের।
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=367777280672231&id=100023198872057
তবে অদক্ষ রাখাল দিয়ে খামার পরিচালনা বেশী করেন আমার #প্রবাসী ভাইয়েরা।যার ফলে তাদের খামারে উপরের সমস্যা গুলো বেশি ঘটে ও গুনতে হয় লস আর লস।
আমার দেখা বেশ কয়েকটি খামারে ১জন অদক্ষ রাখালের কারণে যে সমস্যা গুলোর সম্মুখীন হতে হয়েছে খামারীদের তাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি ও তুলে ধরেছি।
সুতরাং কথাগুলো যদি মানতে পারেন,আশা করি খামারে রাখালের জন্য লস গুনতে হবে না ইনশাআল্লাহ। আর মানতে হবে বাধ্যতা মূলক নয়।মনে না চাইলে কেটে পড়বেন…….
ধন্যবাদ সবাইকে।
মোঃজুলমত আলী
লাখ টাকা দিয়ে গরু কিনে অযত্নে রাখবেন না।
লাখ টাকার গরু কারো কাছে কিছুই না,কারো কোটি টাকার সম্পদ খামারের হয়তো শেষ সম্বল।
গরুর যত্ন সমর্পকে আলোচনাঃ
আপনার একটু সু নজর খামারে বয়ে আনতে পারে ভালো কোন দিক সুস্থ থাকবে খামারের গরু গুলো।
সে জন্য করতে হবে কিছু কাজ।
১।প্রতিদিন খামার পরিস্কার রাখতে হবে ও সঠিক সময়ে খামারের প্রতিটি গরুকে পরিমাণ মতো খাদ্য দিতে হবে।
২।গরম কালে প্রতিদিন গরুগুলোকে গোসল করাতে হবে পরিস্কার পানি দিয়ে,যা শীতকালে প্রতিদিন না করলে ও চলে।
৩।খামারের দেয়ালে বা শেডে গোবর লেগে লেগে শুকিয়ে যায়, এমন যেনো না হয় খেয়াল রাখতে হবে ও লেগে থাকলে পরিস্কার করে নিতে হবে।
৪।গোসলের পানি,মূত্র, গোবরের পানি যে ড্রেন দিয়ে যাই তা নিয়মিত পরিস্কার রাখতে হবে।
৫।যে ঘরে খাদ্য রাখা হয় সেই ঘর নিয়মিত পরিস্কার করতে হবে।
৬।গরু কে খাদ্য দেওয়ার আগে অব্যশই খাদ্যর পাত্র পরিস্কার করে নেওয়া উচিত।
৭।খড়/ঘাস দেওয়া আগে তা ভালো ভাবে পরিবেশন করতে হবে যা ছোট করে কেটে দিলে গরুর খেতে সুবিধা হয় ও খাদ্য অপচয় ও কম হয়।
৮।গরুকে ৩মাস পর পর কৃমিনাশক দিতে হবে, প্রয়োজনে গোবর পরীক্ষা করে নিতে হবে ও প্রয়োজনে প্রাণীসেবা হাসপাতালে যোগাযোগ করবেন।
৯।যে খাদ্য গুলো দিবেন তা অবশ্যই ভেজাল মুক্ত হতে হবে।
১০।খামারে নিয়মিত জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে, ড্রেনে,রাবার মেটে,গরুর ৪পায়ের ও ২ খুরের মধ্যবতী’ ফাঁকা স্থানে।
১১।সময় মতো খামারের গরু গুলোকে ভ্যাকসিন দিতে হবে।
আসুন গরুর যত্ন নেয়, ওদের সমস্যার কথা ওরা বলতে পারে না,তাদের লক্ষণ ও নমুনা দেখে বুঝে নিতে হবে।
তাই আমি একটি কথা বলে থাকি,
গরু পালতে হলে নিজেকে গরু হতে হবে।
তবেই গরুর প্রতি মায়া বাড়বে।
সুস্থ থাকুক আপনার খামারের প্রতিটি গরু এই প্রত্যাশাই রইল…….
মোঃ জুলমত আলী