বাংলাদেশের নিজস্ব সম্পদ অষ্টমুখি লাল গরু।
উৎপত্তি স্থলঃচট্টগ্রাম জেলা।
জাতঃঅাষ্টমুখি লাল গরু/রেড চিটাগাং ক্যাটেল/সুন্দরি গরু।
বৈশিষ্ট্যঃ
গোটা শরীর লাল।মুখ,চোখের পালক,খুর,লেজের চুল,প্রজনন অঙ্গ লাল।
মাত্র ১৫ মাসেই গর্ভধারণ করে যেটা বস ইন্টিকাস/বস টরাসের কোনো জাতের ভিতরে এই গুণ নেই।
রোগপ্রতিরোধক হ্মমতা অন্য যে কোনো দেশির থেকে ভালো।
দুধের ঘনত্ব ৬% যেটা অন্য কোনো দেশি গরুর দুধে ভিতরে পাওয়া যাবে না।প্রতি বছরই বাচ্চাদেয়।
বছরের এ মাথায় ও মাথায়।কৃষি কাজের জন্যও উপযোগী।(লাঙল)খাদ্য অতি সাধারণ/কম খায় তুলনা মূলক বেশি দুধ দেয়।
একটি সংকর গাভি থেকে যেখানে ৫টি বাচ্চা পাওয়া সম্ভব সেখানে রেড চিটাগাং জাত থেকে ৮ টি বাচ্চা পাওয়া সম্ভব গোটা জীবন কালে।
তাপমাত্রা ওঠা নামা করলে যেখানে সংকর/হাইব্রীড গাভির দুধ কমে যায় সেখানে এ গাভির দুধের মান নির্দিষ্ট থাকে।
বাংলাদেশ বিলআরআই এর বিঞ্জানীরা ২০০৬ সাল থেকে জাতটা বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উন্নত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তাতে দেখা গেছে চট্টগ্রামের অাবহাওয়ায় সর্বচ্চ দুধের উৎপাদন ৬.৫ লিটারে পৌছে গেছে ও অন্য অাবহাওয়ায় ৫.২ লিটার দৈনিক(এটি দু বছর অাগের তথ্য)।
নুতন কিছু তথ্য অনুসারে ১০-১২ লিটারে পৌছেছে।(যদিও মিডিয়া একটু বেশিই বলে)তবে এই গরুর জাতটি নিয়ে বাংলাদেশের সবার কাজ করা উচিত,এটিকে সামনে নিয়ে আসা উচিত।
চট্টগ্রামের ৫টি উপজেলার কৃষদের নিয়ে আর সি সি ক্যাটেল গ্রুপও গঠন করা হয়েছে।
/চাটগাঁইয়া পাহাড়ি কালো গরু\\\\\
চট্টলার গরুর জাতের কথা বললে সবার
মনে একটা নামই আসে “রেড চিটাগাং ক্যাটেল”।চট্টলায় যে আরো কোনো জাতের গরু থাকতে পারে তা কারো নজরে না আসার
প্রধান কারণ ছিলো বাংলাদেশ এ
দীর্ঘ সময় ধরে দেশীয় জাত এর খরা।
আর এই দীর্ঘ খরার পর যখনি রেড চিটাগাং এর নাম উন্মোচিত হলো তখন রেড চিটাগাং ই হয়ে উঠলো বাংলাদেশ
এর Most celebrated cattle breed বা দেশি
জাতের গরুর মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত
নাম
কিন্তু এই উদযাপন এর আলোর ঝলকানিতে যে আরো একটি জাতের অস্তিত্ব ম্লান হয়ে যাচ্ছে, তা কারো নজরেই আসেনি।
কি ছিল সেই অবহেলিত জাত?????
চট্টগ্রাম এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম এর গহিন পাহাড়ি এলাকাগুলোতে একটা ঘন কালো রঙের গরুর জাত প্রায়শই নজরে
পরে।
কোনো এক দূর বা নিকট অতীতে হয়তো এই জাতের গরু চট্টলার সমতল ভূমিতেও দেখা যেতো, কিন্ত এখন তা কেবলই অতীত।
তারপরও, নেই নেই করেই যে কয়েকটা টিকে রয়েছে তা পাহাড়ি এলাকার পাহাড়িয়া আদিবাসী জনগোষ্ঠীর গোয়ালে।
কেননা সেই প্রাকৃতিক গহিনতার মাঝে কৃত্রিম প্রজনন এর নির্বিচার প্রয়োগ গিয়ে পৌঁছায়নি।
সবার হয়তো খেয়াল আছে গত এক দশকেরো বেশি সময় ধরে রেড
চিটাগাং জাত টিকিয়ে রাখার জন্য
সরকারি বা বেসরকারি ভাবে কি কি উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।
এই পুরোটা সময়জুড়ে রেড চিটাগাং চিহ্নিত করণ,ডিএনএ এনালাইসিস,
সরকারিভাবে এর স্টক গড়ে তোলা,সীমেন সংগ্রহ, একে কেন্দ্র করে গ্রাম এলাকায় সমবায় গড়ে
তোলা,এই জাতের ক্যাটেল শো এবং সবশেষে এর ফ্রোজেন সীমেন সরকারি বেসরকারিভাবে সহজলভ্য হওয়া এই
জাত কে হারিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেছিলো।নয়তো রেড চিটাগাং ও আজ সেই কালো
জাতটার মত হারানো অতীত হয়ে থাকতো।
কি এই কালো জাতটার বৈশিষ্ট্য?????
এই কালো জাতটার স্বাতন্ত্র্য হচ্ছে এর চামড়ার রঙ।এর চামড়া, লেজের পশম সহ প্রতিটি অংগই ঘন কালো।এ ছাড়া আর
প্রতিটি বৈশিষ্ট্যই রেড চিটাগাং এর সাথে তুলনীয়। যেন মনে হচ্ছে রেড চিটাগাং গরুকে কেউ খেলাচ্ছলে
কালো রঙ করে দিয়েছে যা ছবির গরু দুটির মাঝে লক্ষণীয় । এই জাতের
মাংস খুব সুস্বাদু, যার প্রধান কারণ হচ্ছে এর মাংসের প্রোটিন ও লিপিড অংশের সুষম বণ্টন। এর গাভী গুলোও বেশ
শক্তসমর্থ, এবং বছর বিয়ানো,দুধের পরিমাণ এখন অবধি ৩-৪ লিটার দেখেছি।
এতসব ভালো গুণাবলী থাকা সত্ত্বেও এর লাইমলাইট এ না আসার কারণ হচ্ছে এই জাতের এবং রেড চিটাগাং এর
বিস্তার একই এলাকায় হয়েছে।কিন্তু রেড চিটাগাং ভাগ্যবান যে তাকে
নানা রকম কনজারভেশন প্রজেক্ট ও গণসচেতনতার মাধ্যমে সংকরায়ন এর
আগ্রাসন থেকে রক্ষা করা হলেও এই কালো জাত এর ভাগ্যে তা জোটেনি।
তাই সে আজ দুর্গম পাহাড়ে কোণঠাসা।
লেখকঃaAhmed Bakhtiar Nafis