Breaking News

মহিলা ভেটেরিনারিয়ান এ্যালেন ইসোবেল কাস্ট

আমরা_নারী_আমরা_পারি ?
একটা সময় ছিল যখন নারীরা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করবে এটা ভাবতেই পারত না তারপর যুগের পরিক্রমায় যারা শিক্ষিত হলো তাদের প্রফেশন ছিল শিক্ষকতা। বর্তমানে মেয়েরা ছেলেদের সাথে তাল মিলিয়ে অনেক দূর এগিয়ে এসেছে। অন্যান্য পেশার মতই ভেটেরিনারি প্রফেশনে এখন প্রায় অর্ধেক মেয়ে।(৫৫ভাগ মেয়ে ৪৫ভাগ ছেলে?)
দিন দিন এ সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা সম্ভব হয়েছে কয়েকজন নারী আত্নত্যাগের বিনিময়ে।আজ আমরা জানব ব্রিটেনের প্রথম মহিলা ভেটেরিনারিয়ান এ্যালেন ইসোবেল কাস্ট উনাকে নিয়ে।

তৎকালীন ব্রিটেনের রক্ষণশীল সমাজের কদাক্ষকে উপেক্ষা করে এ্যালেন কাস্টের সাহসী সিদ্ধান্তই পরবর্তীতে নারীদের এই পেশার সাথে জড়িত হতে উৎসাহিত করেছে। কলেজে পড়াকালীন ১ম বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উঠলে সেখানে স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে যোগদেন এ্যালেন। তখন ভেটেরিনারিতে সবাই ছিলেন পুরুষ। কেউ ভাবতেও পারত না মেয়েরা প্রাণীচিকিৎসার মতো জটিল কাজ করতে পারে। এ্যালেনের ভেটেরিনারিয়ান হবার স্বপ্ন তার পরিবারের জন্য মর্মপীড়াদায়ক ছিল। শত বাধা অতিক্রম করে ১৯২২ সালের ডিসেম্বরে এ্যালেন রয়েল কলেজ অব ভেটেরিনারি সার্জন থেকে প্রথম নারী হিসাবে ডিপ্লোমা অর্জন করেন।

প্রাণীদের প্রতি ভালোবাসা এবং ভেটেরিনারিয়ানদের প্রতি বন্ধুত্বের ফলে তার কর্মজীবন মোটেও বন্ধুর ছিল না।

ডা. এ্যালেন ১৯৬৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। রাজকীয় বংশোদ্ভুত এ্যালেন ছয় ভাই বোনের মধ্যে চতুর্থ ছিলেন। লন্ডন হাসপাতালের নার্স হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু হলেও ভেটেরিনারিতে তার মূল আকর্ষণ ছিল।

১৮৯৪ সালে এডিনবার্গে ভেটেরিনারি শিক্ষা শুরু করেন।
১৮৯৭ সালে এ্যালেন যখন প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করারর জন্য আবেদন করেন তখন তার আবেদন বাতিল করা হয়। তৎকালীন আইনে ভেটেরিনারি ছাত্র বলতে শুধু পুরুষ ছাত্রদের বোঝান হতো। এ্যালেন স্কটল্যান্ড কোর্টে এ বিষয়ে রিট আবেদন করেন। কিন্তু যেহেতু রয়েল কলেজ অব ভেটেরিনারি সার্জন ইংল্যান্ডে এবং ইংল্যান্ডের আইনে পরিচালিত তাই তার আবেদন কোন ফল বয়ে আনেনি।
১৯০০ সালে এ্যালেন তার জন্মভূমিতে ফিরে আসেন। যেহেতু আইন অনুযায়ী কোন নারী ভেটেরিনারিয়ান হিসাবে কাজ করতে পারত না, তাই তিনি সহকারী হিসাবে যোগদান করেন। গ্যালওয়ে কান্ট্রি কাউন্সিল তাকে ভেটেরিনারি ইনস্পেক্টর হিসাবে পদায়ন করে। কিন্তু পুনরায় নারী হিসাবে আরসিভিএসের আপত্তির ফলে তার পদের নাম শুধু ইনস্পেক্টর করা হয়।
১৯১৫ সালে খ্রিষ্টান মিশনারির কাজ শুরু করেন। পরে সেনাবাহিনীর ব্যাকটেরিওলজি ল্যাবরেটরিতে যোগদান করেন যেটা ছিল একটি ভেটেরিনারি হাসপাতালের সাথে সংযুক্ত। রেকর্ডে দেখা যায় তিনি কুইন মেরি আর্মি কোরে কাজ করেছিলেন।
১৯১৯ সালে ইংল্যান্ডে পাস হয় যুগান্তকারী Sex Disqualification (Removal) Act। যার ফলে মেয়েদের যে কোন প্রফেশনে যাবার বাধা চিরতরে দূর হয়। ২২ বছর অপেক্ষারর পর আরসিভিএস থেকে ভেটেরিনারি শিক্ষা সমাপ্ত করেন এ্যালেন।

চিরকুমারী ডা. এ্যালেন কাস্ট ৬৮ বছর বয়সে ২৯ জানুযারি ১৯৩৭ সালে জ্যামাইকাতে মৃত্যুবরণ করেন। ৩০ জানুয়ারি ১৯৩৭ নিউ ইয়র্ক টাইমসে তাকে নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।
তার জীবনীগ্রন্হ ” Aleen Cust: Veterinary Surgeon” ভেটেরিনারিতে নারীদের সংগ্রামী জীবনের এক উজ্জল দর্পন।

ডা নুসরাত মিলি

Please follow and like us:

About admin

Check Also

খামারীদের কেমন পরামর্শ দেয়া উচিত,কোনটা উচিত না এবং কিছু আলোচনা।

খামারীদের কেমন পরামর্শ দেয়া উচিত,কোনটা উচিত নাএবং কিছু আলোচনা। খামারীদের পরামর্শ দিতে গিয়ে যাতে সেটা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »