ভূট্টা খড়ের সংরক্ষন ও ব্যবহার এবং গবাদিপশুর খাদ্য হিসাবে এর ভূমিকাঃ

ভূট্টা খড়ের সংরক্ষন ও ব্যবহার এবং গবাদিপশুর খাদ্য হিসাবে এর ভূমিকাঃ
———————————————————–
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল ও ঢাকা বিভাগে প্রচুর ভুট্টা চাষ হয়। শুধুমাত্র রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগে প্রচুর পরিমাণ জমিতে ভূট্টা চাষ করা হয়। এই বিপুল পরিমাণ উচ্ছিষ্ট সম্পদ হিসাবে ব্যবহার করে পশু খাদ্যের অভাব দূরীকরণসহ পশুজাত উৎপাদিত দ্রব্যের উৎপাদন খরচ বহুলাংশে কমানো যায়। ভুট্টা দানা ও খড় একই সংগে আহরণ করা যায়। তাছাড়া হাইব্রিড ভুট্টার খড় ভুট্টাদানা সংগ্রহের পরও সবুজ ও সতেজ থাকে ফলে খড়ের পুষ্টিমানও ভাল থাকে।
ভুট্টা রবি (নভেম্বর-ফেব্রুয়ারী) ও খরিপ ( মার্চ-অক্টোবর) উভয় মৌসুমেই জন্মে। তাই ভুট্টার খড় হতে বছরে দুই বার সাইলেজ করা যায় এবং সারা বছর পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
কোন রকম দ্রব্যাদি যোগ করা ছাড়াই ভুট্টা খড়ের সাইলেজ তৈরী করা যায় তবে মোলাসেস অথবা ইউরিয়া যোগ করে সাইলেজ তৈরী করলে সাইলেজের পুষ্টিমানও বাড়ে এবং অধিককাল সংরক্ষণ করা যায়।
হাইব্রিড ভুট্টা হতে রবি ও খরিপ মৌসুমে প্রতি হেক্টরে দানা উৎপন্ন হয় যথক্রমে ৬-১০ টন ও ৪-৫ টন। তাছাড়া প্রতি ঋতুতে প্রতি হেক্টরে ভুট্টার খড় উৎপন্ন্ হয় ২৫-৫০ টন। এই খড় সাধরনত জ্বালানী হিসাবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এটি ব্যবহার করে উৎকৃষ্ট পশুখাদ্য তৈরী করা যায়।
দেশের মোট ভুট্টা উৎপাদন এলাকার যথাক্রমে ৫৪ শতাংশ (১৫ লক্ষ হেক্টর)এবং ২৫ শতাংশ (৭ লক্ষ হেক্টর) এলাকা রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অন্তর্ভূক্ত। তাই এ সমস্ত এলাকায় সমন্বিত খামার ব্যব স্থাপনার মাধ্যমে ভুট্টা দানা ও খড় ব্যবহার করে ডেইরী, বীফ, লেয়ার, ব্রয়লার ও ছাগল উৎপাদন সম্ভব।
ব্যবহার পদ্ধতিঃ
খামারীগণ হাইব্রিড বা প্রচলিত যে কোন ভুট্টা যেমন বর্ণালী, মোহর,শুভ্র, প্যাসিফিক১১, প্যাসিফিক ৬০, প্যাসিফিক ৩৯৩, বারী-৫ ইত্যাদি রবি অথবা খরিপ যে কোন মৌসুমে লাগাতে পারেন।
ভুট্টা গাছ হতে পরিপক্ক ভুট্টার মোচা উঠানোর পর সাইলেজ করার জন্য ভুট্টা গাছ কর্তন করা হয়।
ভুট্টা গাছ কর্তনের পর ভালভাবে সাইলেজ করার জন্য ভুট্টা গাছকে ট্রাক্টর চালিত চপার মেশিনে বা দা দিয়ে ৭-১০ সেঃমিঃ সাইজে টুকরো করা হয়।
টুকরাকৃত এ গাছকে সাইলো পিটে সংরক্ষণ করা হয়।
একটি সাইলো পিটের আকৃতি হতে পারে এরূপ যেমন- ৩ ফুট গভীর তলদেশে ৩ ফুট প্রশস্ত, মধ্যভাগে
৮ ফুট প্রশস্ত,এবং উপরিভাগে ১০ ফুট প্রশস্ত। এভাবে তৈরীকৃত ১০০ বর্গফুটের একটি সাইলো পিটে ২.৫-৩.০ টন ঘাস সাইলেজ হিসাবে সংরক্ষণ করা যায়।
ব্যবহারের সম্ভাবনাঃ রবি ও খরিপ মৌসুমে দেশের উত্তরাঞ্চল ও ঢাকা বিভাগের এলাকা সমূহে ভুট্টা খড়
সংরক্ষণ করে স্বল্প খরচে দুগ্ধ ও গরু মোটাতাজা করন খামার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
পদ্ধতি ব্যবহারের সর্তকতাঃ সাইলো পিট উঁচু জায়গায় করতে হবে যাতে বৃষ্টির পানি জমা হতে না পারে এবং পানি গড়িয়ে চলে যেতে পারে। তাছাড়া পিটের ভিতর সাইলেজ যেন আটশাট অবস্থায় থাকে এবং বাতাস ও পানি প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে বিশেষ লক্ষ রাখতে হবে।

লেখকঃমুক্তি মাহমুদ
https://www.pioneer.co.nz/…/harvesting-a-dry-maize-silage-c…
(তথ্যঃসংগৃহীত)

Please follow and like us:

About admin

Check Also

সহজভাবে গরুর খাবার উৎপাদন /ব্যবস্থা করার সিস্টেম

লিখেছেন মিজানোর রহমান (পিডিএফ গ্রুপ) কিছু কদু গাছ লাগাইছি, বুড়ো পাতা গরুরে খাওয়াব… কিছু কলাগাছ …

Translate »