বোয়ার ছাগল :
বোয়ার ছাগল ১৯০০ সালের দিকে সাউথ আফ্রিকাতে প্রথম দেখা যায়। বোয়ার Afrikaans (Dutch) শব্দ যার অর্থ হলো খামারি। ছাগলের এই জাত তৈরী করা হয়েছে শুধু মাংস উৎপাদনের জন্য। প্রচলিত আছে যে বোয়ার ছাগল মুলত ইন্ডিগুয়াস ছাগল নাম্যাকুয়া, স্যান এবং ফুকো ট্রাইব্যুন এর সাথে ইন্ডিয়ান এবং ইউরোপিয়ান ব্লাড লাইনের সাথে ক্রস করে তৈরী করা হয়েছে। যেহেতু বিভিন্ন উন্নত জাতের সাথে ক্রস করে তৈরি করা হয়েছে তাই বোয়ার খুব দ্রুত বেড়ে উঠে এবং এর মাংসের পরিমান অনেক বেশি পাওয়া যায়। তাই এই জাতটি সারা পৃথিবীতে খুব জনপ্রিয় হয়েছে মাংস উৎপাদনের জন্য। যেমনটি গরুর ক্ষেত্রে ব্রাহমা এবং বেলজিয়ান ব্লু বুল এবং মুরগির ক্ষেত্রে বয়লার মুরগি। বোয়ার খুব শক্ত প্রাণী এবং প্রচুর খায় যার ফলে এরা যেকোনো পরিবেশ খুব দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে। এমন ও পাওয়া গেছে যে প্রচন্ড গরমে এরা মাঠে ঘাস খাচ্ছে আর অন্য জাতের ছাগল গাছের নিচে বিশ্রাম নিচ্ছে। আমি একটা ওয়েবসাইট এ পেয়েছি যে সাউথ আফ্রিকা থেকে বোয়ার ছাগল জার্মানিতে নেয়া হয় তখন আফ্রিকাতে তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি এবং জার্মানিতে – ১৮ ডিগ্রি। তারপরও তাদের সেট হতে বেশি সময় লাগেনি। এদের প্রতিদিন ২৫০ গ্রাম পৰ্যন্ত ওজন বাড়ে যা কিনা ৩ মাসে ৩০ থেকে ৩৬ কেজি ওজন পর্যন্ত হয়ে থাকে। খুব বাজে খাবার ব্যাবস্থায় ও এরা ১৫ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়ে থাকে ৩ মাসে। এরা খুব দ্রুত পূর্ণ বয়স্ক হয়ে থাকে এবং ২ থেকে ৪ টা বাচ্চা এক সাথে দিয়ে থাকে। ২টি বাচ্চা হওয়া খুবই স্বাভাবিক । বোয়ার এর দাম বেশি হওয়ায় পৃথিবীতে সব জায়গায় ক্রস করানো হয় ওই এলাকার লোকাল জাতের ছাগলের সাথে। এই ক্রস এর ফলে প্রথম বার ই ৫০% ব্লাড লাইন চলে আসে। ৫০% বোয়ার ব্লাড লাইন এর ছাগল খুব সহজেই ৬ মাসে ৩০কেজি ওজন পাওয়া সম্ভব। আমাদের ফার্ম এ এরই মধ্যে ৬ মাসে ৩২ কেজি পেয়েছি। আমাদের ফার্ম এ বোয়ার ১০০ পাঠা আর দেশি ক্রস যমুনা পারি , বিটাল পাঠী ক্রস এ ৯৫% ই ২ টা করে বাচ্চা জন্ম দিচ্ছে এবং প্রতি ৮ মাসে বাচ্চা দিচ্ছে। একটি বিষয় আমরা অনেকেই ভুল করি আর তা হলো পিওর বোয়ার বলতে বুঝি ১০০% ব্লাড লাইন আসলে ৮৩%থেকে ৯৯% পর্যন্ত ব্লাড লাইন কে বলা হয় পিওর। যেটা ১০০% অরিজিনাল তাকে বলা হয় ফুল ব্লাড। ক্রস করার ক্ষেত্রে সব সময় খেয়াল রাখতে হবে বেশি উন্নত জাতের সাথে ক্রস করানো উচিত সমান জাতের সাথে ক্রস করলে জাত উন্নত হবে না। এদের রোগ বালাই খুবই কম হওয়ায়, অধিক বাচ্চা এবং দ্রুত ওজন বাড়ায় বাণিজ্যিক খামারে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আগামীতে এই জাতটি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
S R Farms