পর্দা ব্যবস্থাপনা,কত প্রকার,অধিকাংশ ভুল পদ্ধতি,সঠিক কি?পর্দার কারণে কি রোগ হয়।
পর্দা ফার্মের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় কিন্তু এটি সবচেয়ে বেশি অবহেলিত.দেশের ৯৮% ফার্মে সঠিকভাবে পর্দা লাগানো নেই।পর্দা এমন একটি ব্যবস্থা যার মাধ্যমে বাহিরের বাতাস,ঝড় বৃষ্টি ভিতরের ঢুকতে পারে না,ভিতরের গ্যাস বের হয়ে যায় এবং ভিতরে সঠিক তাপমাত্রা বজায় থাকে।
প্রকারভেদঃ
#প্রচলিত পর্দা
এটি উপরের দিকে স্থায়ীভাবে আটকানো থাকে এবং নিচ থেকে উপরের দিকে উঠানো থাকে।এটি ভুল পদ্ধতি।
#ডাবল পর্দাঃশীতে ডাবল পর্দা ভাল এতে ভিতরের তাপ বাহিরে বের হতে পারেনা এবং ভিতরে গরম থাকে।১টি কাপড়ের আর ১টি চটের বা ২ টিই চটের।এটি ভাল
#চটেরপর্দা
চটের পর্দা সবচেয়ে ভাল কিন্তু সব যায়গায় পাওয়া যায়না।
#দুই সেকশন পর্দা
এর দুটি অংশ থাকে তিনের দুই ভাগ যা উপরের দিকে দেয়া হয় আর তিনের এক যা নিচের দিকে থাকে যা ব্রুডিং এর সময় আটকানো থাকে আর পরে খুলে দেয়া হয়।এটি ভাল পদ্ধতি।
#কাপড়ের পর্দা
লেয়ার ফার্মের অধিকাংশ পর্দা এই কাপড়ের পর্দা।
#ফিডের বস্তার পর্দা
বাংলাদেশে অধিকাংশ ব্র্য়লারের ফার্মের পর্দা ফিডের বস্তা দিয়ে দেয়া হয়।
#অটোমেটিক পর্দা
এটি বড় ব্রিডার ফার্মে দেখা যায় যখন প্রয়োজন তখন তুলা হয়,তাছাড়া ম্যানোয়ালি কপিকলের সাহায্যে উপরে তোলা হয়
#ব্রুডিং ঘরের পর্দা
সাইড ওয়াল ১ ফুট করা হয় যেখানে প্রডাকশন ঘরের বেলায় ৬ ইঞ্চি রাখা হয় আর পর্দা সাধারনত ব্রুডিং ঘরের জন্য বেশী দরকার।বাচ্চা অবস্থায় পায়খানা কম হয় তাই গ্যাস হয় কম ফলে পর্দা দিলেও বেশি সমস্যা হয়না যে্মন হয় প্রডাকশন অবস্থায়।তাছাড়া বাচ্চা অবস্থায় ঠান্ডা বাতাস লাগলে মারাত্মক সমস্যা হয়।
#প্রডাকশন ঘরের পর্দা
ঊপরের দিকে ২ ফুট ফাকা রাখা হয় যাতে গ্যাস বের হতে পারে।প্রডাকশনের বেলায় বর্ষাকাল এবং শীতকাল বেশি গুরুত্ব পূর্ণ।অধিকাংশ সময় পর্দা নিচে ফেলে রাখা হয়,প্রয়োজন হলে পর্দা উঠানো হয়।
এখানে খেয়াল রাখতে হবে যাতে জমে থাকা পর্দা ইঁদুরে না কাটে বা পানিতে ময়লায় যাতে নষ্ট না হয়।
পর্দা ফ্লোর থেকে ১ফুট উপরে রশি দিয়ে গুছিয়ে রাখা উচিত।এতেও যদি ইদুরে কেটে ফেলে তাহলে পর্দা খূলে রেখে দিতে হবে বর্ষা ও শীতকালে লাগাতে হবে।
#পলিথিনের পর্দা
এটি ব্রুডিং এর সময় ঘরের ভিতর একটা ঘর বানানো হয়।
#রিং পদ্ধতির পর্দা
পর্দার দুই মাথায় গোল রিং পাইপের ভিতর পড়ানো হয় যা ডান্ দিকে বা বাম দিকে টেনে পর্দা সরানো হয়,এটি সহজে করা যায় কিন্তু ইচ্ছে অনুযায়ী আপ ডাউন করা যায়না।
#সঠিক পর্দা
পর্দা উপরের দিকে ১.৫-২ ফুটের মত ফাকা রাখা হয় যাতে এমোনিয়া গ্যাস বের হতে পারে।
পর্দা নিচের দিকে মানে নিচের অংশটুকু ফিক্স করে বেধে রাখা হয় আর উপরের অংশ ইচ্ছে অনুযায়ী আপ ডাউন করা হয়।
#আধুনিক অনেক ব্রিডার ফার্ম আছে যেখানে পর্দা থাকেনা,থাকে ইটের ওয়াল,বিশাল ফ্যানের মাধ্যমে ভিতরের গ্যাস বের হয়ে যায়।
পর্দা এবং রোগঃ
বাংলাদেশের ব্রয়লার ফার্মের যে এসাইটিস বা পেঠে পানি জমা যে রোগ হয় তার অন্যতম প্রধান কারণ এই ভুল পদ্ধতির পর্দা।
বর্ষাকালে ফার্মে যে আমাশয়,মাইকোটক্সিন ও ঠান্ডা লাগে তার অন্যতম কারণ সঠিক পর্দার অভাব।
সঠিক পদ্ধতিতে পর্দা লাগানো হলে বর্ষাকালে শেডের ভিতর থেকে পর্দা উঠানো -নামানো যায় আর যারা কর্মচারী দিয়ে ফার্ম চালায়,সেসব ক্ষেত্রে কর্মচারীরা বৃষ্টিতে ভেজার ভয়ে পর্দা উঠানো নামানোর কাজটা সঠিক ভাবে করেনা।
ফলে গ্যাস হয় আর গ্যাস হলে ইমোনিটি নষ্ট হয়ে গাম্বোরু,রানিক্ষেত এবং মাইকোপ্লাজমোসিস হয়।
নোটঃসেডের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে সব সময় পর্দা দিয়ে রাখলে সমস্যা নাই তবেশীতের সময় এক বারে বন্ধ করে দেয়া ভাল
প্রয়োজন অনুযায়ী পর্দা আপ ডাউন করতে হয় তব নরমালি ৪-৬ ঘন্টা পর পর পর্দা আপ ডাউন করা উচিত।