পোল্ট্রি শিল্পের সমস্যার অন্যতম মূল কারণ মাইকোটক্সিন
ভূমিকাঃ
পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত ফানজাই বা ছত্রাকের সংখ্যা ২ লাখের বেশি আর মাইকোটক্সিন হল প্রায় ৫০০ যা ছত্রাকের বিপাকীয় উপজাত।
মাইকোটক্সিন হলো ফাংগার কর্তৃক খাদ্য এবং বিভিন্ন খাদ্য উপাদান হতে পুস্টি সংগ্রহের সময় বিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিপাক উপজাত হিসেবে তৈরি হয়ে থাকে।
আর প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১০০০০,এদের মধ্যে ৫০টি প্রজাতি ক্ষতিকর কারণ এগুলো বিষ বা টক্সিন তৈরি করে।সম্মিলিতভাবে এই টক্সিন কে মাইকোটক্সিন বলা হয়।
এদের অধিকাংশ মানুষের উপকারী যেমন রুটি,পনির,এন্টিবায়োটিক,বিভিন্ন প্রানীয়,গবাদী পশু ও হাঁস মুরগির খাদ্য তৈরিতে ব্যবহার হয়।
মাইকোটক্সিন গ্রীক শব্দ Mykes (অর্থ ফাংগাস) এবং ল্যাটিন শব্দ Toxicum( অর্থ বিষ )থেকে এসেছে,ছত্রাক সব সময় এই উপজাত তৈরি করতে পারেনা,উপযুক্ত তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা হলেই তৈরি করতে পারে।
ছত্রাক হল এককোষী বা বহুকোষী থ্যালোফাইটিক উদ্ভিদ,এদের মূল,কান্ড,পাতা বা ক্লোরোফিল নামক বর্ণকনিকা থাকে।এই জীবাণু পরজীবী বা পরভোজী হিসেবে অন্য প্রাণিদেহে বাস করে।এরা বায়ুজীবী এবং এদের বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা ২০-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মাইকোটক্সিন অন্যান্য রোগ এবং তাপমাত্রার প্রতি খুব সেনসিটিভ।
ছত্রাক কি ক্ষতি করেঃ
ক্যান্সার তৈরি করে।
জন্ম ত্রুটি।
লিভার এবং কিডনি ড্যামেজ।
স্নায়ুকোষে প্রতিক্রিয়া।
মাইকোটক্সিন সমূহ কি কি
প্রধানত এস্পাজিলাস ফ্লেভাস ও প্যারাসাইটিকাস নামক ফাংগাস থেকে এক ধরণের বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করে তাদেরকে আলফাটক্সিন বলা হয়।
আফ্লাটক্সিন(লিপিড,এ ডি ই কে মেটাবলিজমে বাধা দেয় ,গল ব্লাডার বড় হয়,বার্সা,থাইমাস)
ট্রাইকোথিসিন টাইপ এ এবং বি
ভমিটক্সিন
টি২(ফুসারিয়াম টক্সিন(মুখে আলসার,ঘা,ক্রাস্ট,জিহবার কিনারায়,ঠোটে।
ব্রয়লারের পরিপাকে সমস্যা,ওজন কম আসে,রিকেটস,নার্ভাস সাইন।
লেয়ারের ডিম কমে যায়,সায়ানোসিস ,ওয়াটম কম্ব,ওভারী ও ওভিডাক্ট এট্রোফাই হয়ে যায়
২ ধরণের টাইপ এ (ট২,ডন)টাইপ বি(ডন,নিভানিল,ফুসারিনন)
অক্রাটক্সিন(কিডনি,প্রভেন্টীকোলাস,গিজার্ড ,এন্টারাইটিস ,লিভার বড় হয় কিন্তু হলুদ হয় না,) টাইপ এ বেশি মারাত্নক।
জিয়ারালিনোন
ফিউমোনিসিন্স
রুব্রা টক্সিন (থায়ামিন এর ঘটাতি করে)(পেনিসিলিয়াম রুব্রাম থেকে তৈরি হয়।
সাইট্রিনিন(Citrinin)
পানি বেশি খায়,ডায়রিয়া হয়
Oosporein:
চিকেন সাসসেপ্টিবল ,গাউট এবং আর্টিকোলার হয় ,মর্টালিটি ২০% হতে পারে।
কোন মাইকোটক্সিন কোন খাবারে থাকে এবং কোথা হতে তৈরি হয়ঃ
# আফ্লাটক্সিনঃ
এটি তৈরি হয় এস্পারজিলাস প্যারাসাইটিকাস,ফেবাস,নাইজার হতে।এ টি ৪ প্রকার বি১,বি২,জি১,জি২।এর মধ্যে বি১ বেশি বিষাক্ত এবং ক্ষতিকর।
বাদাম,তুলাবীজ,কিছু তৈল বীজ,ভুট্রা,রাইস পলিশকে আক্রান্ত করে।তবে বাদাম খৈল এবং নারিকেল তেলের মধ্যে বেশি থাকে।
লেয়ার থেকে ব্রয়লারের বেশি ক্ষতি করে।
কোন খাবারে আলফাটক্সিন কম থাকে
সূর্যমুখীর খৈল বা মিল,সয়াবিন মিল,মেইজ গ্লুটেন মিল,সরিষার খৈল এবং তেল বিহীন চালের কুড়ায় কম মাত্রায় আলফাটক্সিন থাকে।
#অক্রাটক্সিনঃ
এটি তৈরি হয় এস্পাজিলাস অক্রাকাস নামক মোল্ড থেকে।এটি ৩ প্রকার এ,বি ও সি,সি টা বিষাক্ত।
গম,চাল,বার্লি,বাদাম,শিম,বরবটি,রাইস পলিশ এবং মিশ্রিত খাদ্য শস্যে পাওয়া যায়।
গ। ট্রাইকোথেছেন্স;(টি২ টক্সিন)
এটি ফুসারিয়াম ট্রাইসিনক্টাম,ব্যাক্সাম,অক্সিস্পেরাম এবং মাইরোথেরাম ক্যালনেক্ট্রিক্স থেকে তৈরি হয়।
দানাদার খাদ্য এবং মিশ্রিত খাদ্য সহজে আক্রান্ত হয়।ফিস মিল ।
ঘ।জিয়ারালেননঃ(এফ ২ টক্সিন)ঃ
এস্ট্রোজেন হরমোন তৈরিতে বাধা দেয়।ডিম কমে যায় এবং ডিমের মান খারাপ হয়,ওজন কমে যায়,ডিম্বনালি এবং ডিম্বাশয়ে প্রদাহ হয়,ফুসফুস,হৃদপিন্ড এবং অন্ত্রনালিতে রক্তক্ষরণ হয়।ক্ষতির প্রভাব অনুযায়ী এটিকে জেনিটক্সিন বলা হয়।
২০১৪ সালে অলটেক কোম্পানি দক্ষিন এশিয়া্র খাবার এবং খাদ্যের উপাদানের উপর এক সমীক্ষা চালায় এতে দেখা যায়
একের অধিক মাইকোটক্সি আছে ৯৬.৬৭% সেম্পলে
গড়ে প্রতিটিতে ৫.৮টি করে আছে
৩০% সেম্পলে আছে ৫ টির বেশি
২০% সেম্পলে আছে ৭টির বেশি
১০% সেম্পলে আছে ১০টির বেশি মাইকোটক্সিন
এর মধ্যে ফিউমোনিসিন্স ৮৩%
অক্রাটক্সিন ৭৭%
ফিউসারিক এসিড ৭৩%
আফলাটক্সিন ৭০%
রিক্স এর ক্যাটাগরি ছিল নিম্নরুপ
হাইরিক্স ছিল ৩৭.৯%।
মাঝারি রিক্স ৩১%
কম রিক্স ৩১%
অধিকাংশ সময় কয়েকটি টক্সিন এক সাথে মিলিতভাবে আক্রমণ করে।
যে খাদ্যে পুস্টিমান বেশি সেটিতে মাইকোটক্সিন বেশি আক্রমণ করে।
যে বিষয় গুলি মাইকোটক্সিন হতে সাহায্য করে তা হলঃ
খাদ্যের আর্দ্রতা
পরিবেশের আর্দ্রতা
বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ।
গুদাম ঘরের অক্সিজেনের পরিমান এবং তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা।
কত দিন ধরে খাদ্য সংরক্ষনণ করা হয়েছে (যেমন ১৫-২২ দিনের বেশি পোল্ট্রি খাদ্য রাখলে নষ্ট হবার সম্বাবনা থাকে)
ঋতুর পরিবর্তন
গরমকালের আবহাওয়া।
কখনো বন্যা আবার কখনো খড়া।
অনাবৃষ্টি এবং পোকামাকড়ের দ্বারা বর্ধনশীল গাছপালার ক্ষতিসাধনন হয়।
দেরিতে বীজ বপন এবং অনিয়মিত সার প্রদান।
খাদ্য প্রস্তুতকারী মিলের যন্তপাতি গুলি ঠিকভাবে না সাজানো এবং খাদ্য সরবরাহকারী পাত্র না বদলানো।
আমাদের দেশে কিভাবে মাইকোটক্সিন আসেঃ
ক।শস্য সংগ্রহ করার পূর্বে
খাদ্যে যদি ১৪% বেশি জলীয় অংশ থাকে।
অতিরিক্ত তাপমাত্রা।
মোল্ডযুক্ত বাদাম খৈল থেকে।
নষ্ট হয়ে যাওয়া খাদ্য থাকলে।
খ।খাদ্য শস্য সংরক্ষণ
৯০% খামারে বা আড়তে খাদ্য মেঝের উপর দেয়ালের সাথে লাগিয়ে গাদা করে এমন কি গোডাউনে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা নেই যা মোল্ড জন্মাতে সাহায্য করে।
গ।পানিঃ
পানি মোল্ড জন্মাবার জন্য উপযুক্ত মাধ্যম।পানির ট্যাংকে ঢাকনা থাকতে হবে।সপ্তাহে ১দিন পানির ট্যাংক এবং খাবার পাত্র পরিস্কার করতে হবো আর প্রতিদিন পানির পাত্র পরিস্কার করতে হবে।
ঘ।লিটারঃ
ভিজা লিটার মোল্ড জন্মাতে সাহায্য করে।আর খাবার যদি লিটারে পড়ে আর লিটারে যদি জলীয় বাষ্প থাকে তাহলে বেশি পরিমাণে মাইকোটক্সিন হবে।
কার কি ক্ষতি করেঃখাদ্যে অল্প পরিমানে থাকলেও নিম্নলিখিত সমস্যা গুলি করে।
ওষধের কার্যকারিতা কম হয়।
খাদ্য থেকে পুস্টি কম পায়
আমিষ তৈরিতে বাধা দেয়।
ভিটামিন এ,রিবোফ্লাবিন,প্যান্টোথেনিক এসিড,বায়োটিন এবং থায়ামিন ইত্যাদি নষ্ট করে দেয়।
ব্রিডার মুরগি
ডিমের আকার ছোট হবে এবং কুসুমের ওজন কম হবে।
ডিমের উর্বরতা এবং বাচ্চা জন্মদানের পরিমাণ কমবে।
ডিমের ভেতরে থাকা অবস্থায় বাচ্চা মারা যাবে।
পা ল্যাংড়া এবং চোখ কানা বাচ্চা হবে।
ক্ষুদামান্দা হবে এবং ওজন কম হবে।
লেয়ারেরঃ
ডিম কম হবে ও খোসা পাতলা ডিম হবে।
ব্রয়লারেঃ
দেহের রং ফ্যাকাশে হবে,আফ্লাটক্সিন বিপাকীয় কার্যক্রম কমাবে ফলে ওজন কম হবে।
রোগ প্রতি্রোধ কমে যাবে ফলে অন্য জীবানূ আক্রমণ করবে।
এই জন্য আমরা ২টি কাজ করতে পারি
ক।ছত্রাক এবং মাইকোটক্সিনের বৃদ্ধি রোধ করতে পারি।
খ।খাদ্য উপাদান থেকে মাইকোটক্সিন দূর বা কমাতে পারি বিভিন্ন ফিড এডিটিভ ব্যবহার করে.
#3#33#333
পোল্ট্রি শিল্পে আফলাটক্সিন সমস্যাঃ
শুধু দেশে নয় সারা পৃথিবীতে একটা বড় সমস্যা।কিন্তু এ সম্পর্কে খামারীর মনোযোগ কম।আফ্লাটক্সিন বিষাক্ত পদার্থ যা ক্যান্সার তৈরি করতে পারে এমন বিপাকীয় বস্তু যারা এস্পারজিলাস ফেভাস,প্যারাসাটিকাস ও পেনিসিলিয়াম পিউবারুলাম থেকে তৈরি হয়।
আফ্লাটক্সিন হলো ফাঙ্গাসের সেকেন্ডারি মেটাবোলাইট যার আক্রমণে ১৯৬০ সালে ব্রিটেনে ১ম ১লাখ টার্কি মারা যায়।
পোল্ট্রি ও প্রাণী খাদ্যের প্রায় প্রতিটি উপকরণেই ছত্রাক জন্মাতে সাহায্য করে।এটি রাসায়নিকভাবে ২টি ডাইহাইড্রোফুরান রিং এর গলিত মিশ্রণ।এই টক্সিন একটায় তৈরি হলে পাশে ছড়িয়ে পড়ে।
বি১, বি২,জি১ ও জি২ এর মাঝে বি১ বেশি বিষাক্ত এবং সব প্রাণিতেই লিভারে বিষ্ক্রিয়া সৃস্টি করে।এটি হল গন্ধহীন,স্বাদহীন ও রংহীন।
হোস্টঃ
বাচ্চা মুরগি বয়স্ক মুরগি থেকে বেশি সংবেদনশীল ।
ব্রয়লার লেয়ার থেকে বেশি সংবেদনশীল কারণ ব্রলারের গ্রোথ বেশি।
সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীল প্রাণীর তালিকা নিচে দেয়া হলো।
খরগোশ>হাস > রাজ হাস> ফিজেন্ট>টার্কি >চিকেন>মাছ>শূকর>গরু>ভেড়া।
পরিবেশে এবং কোথায় জন্মেঃ
সঠিকভাবে গুদাম জাত না হলে সব খাদ্যেই জন্মাতে পারে যেমন ভুট্রা,সরগম্,গম,বাদাম,তুলাবীজ,বাজরা।তবে ভুট্রাতে বেশি পাওয়া যায়।
অয়েল কেল(খৈল) গ্রাউন্ড নাট,কটনসিড,সান ফ্লাওয়ার,প্লাম,কপ্রা ইত্যাদিতে পাওয়া যায়।
আর্দ্র আবহাওয়া,ভেজা মাটি,আর্দ্র বাতাস ও তাপমাত্রায় বাতাসে ছত্রাক স্পোরের মাত্রা বেড়ে যায় যা পরাগায়নের সময় এই স্পোর শস্য দানার পরাগায়ন নল বা তুলার মত অংশ দ্বারা বা পোকায় কাটা অংশ দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে।
বর্ষাকালে বেশি হয়।
আফ্লাটক্সিন অধিক তাপেও নষ্ট হয় না।হিট স্টেবল।
গরম ও আর্দ্র পরিবেশ ওদের জন্য ভাল যেমন দক্ষিন এশিয়া,আফ্রিকা,দক্ষিন আমেরিকা,মধ্য এশিয়া।
এই টক্সিন ২০ পিপিবি পর্যন্ত সহনীয় কিন্তু এটি যখন অন্য টক্সিনের সাথে মিলিত হয় তখন তা তীব্র এবং মারাত্মক হয়ে উঠে।প্রায় সময়ই এটি ১০০-৫০০পি পি বির কাছাকাছি পাওয়া যায়।
আফলাটক্সিন এর সাথে অক্রাটক্সিন এবং ট্রাইকোথিসিন এর সখ্যতা রয়েছে মানে এরা মিলিত ভাবে আক্রমণ করে।
আফলাটক্সিন কিভাবে ক্ষতি করেঃ
ফ্যাট ডাইজেশন ও শোষন কমে যায় কারণ প্যাঙ্ক্রিয়েটিক এনজাইম লাইপেজ ও বাইল সিক্রেশন কমে যায় ফলে হেপাটিকস্টেটোসিস(Hepatic steatosis) হয়(ফ্যাটি লিভার)।
বিস্টায় স্বাভাবিকের চেয়ে ১০গুণ বেশি ফ্যাট বের হয়ে যায় ফলে ক্যারুটিনয়েডের(Carotenoids) ট্রান্সপোট,শোষণ ও টিস্যু ডিপোজিশনে বাধা প্রাপ্ত হয়।(পেল বার্ড সিন্ড্রম হয়)
টক্সিক প্রভাব নির্ভর করে এনিমেল প্রজাতি,বয়স,সেক্স,ইমোনিটি,পুস্টি,ডোজ,ব্রিড,স্টেইন,খাবার কম্পজিশন,ধকল ইত্যাদির উপর।
পোল্ট্রি খামারী ও ফিড ম্যানুফেকচারী কোম্পানীর মেজর সমস্যা হলো আফ্লাটক্সিন।
৬০% পোল্ট্রি ফার্ম এই টক্সিন দ্বারা আক্রান্ত।
পোল্ট্রিতে আফ্লাটক্সিন সব চেয়ে বেশি যে প্রভাব পড়ে তা হলো মেটাবলিজমে (প্রোটিন,ফ্যাট,কার্বোহাইড্রেট,এমানোএসিড এর মেটাবলিজম ঠিক মত হয় না কারণ মেটাবলিজমের জন্য যে এনজাইম দরকার তা তৈরি হতে পারেনা এই আফ্লাটক্সিনের জন্য)
আফ্লাটক্সিন ভিটামিন ডি মেটাবলিজম এর সাথে প্রতিক্রিয়া করে ফলে হাড়ের শক্তি কমে যায় এবং পায়ে সমস্যা হর,তাছাড়া এটি ফসফরাস,কপার,আয়রনের সাথেও প্রতিক্রিয়া করে যার ফলে লেগ ডিঅর্ডার হয়।
সেলোলার ও হিউমোরাল ইমোনিটি কমে যায় ফলে বিভিন্ন রোগ হয়,ভ্যাক্সিন ফেইলর হয়,ট্রাইটার কম উঠে।
Hyperbilirubinemia
Hypoalbuminemia
বেশি সেন্সেটিভ কারণ ইনটেনসিভ সিস্টেমে পালন করার কারণে মুরগি নিজের মত করে প্রয়োজনীয় কিছু খেতে পারেনা।সব কিছু রেডি মেড খেতে হয় যাতে টক্সিসিটি থাকে।
টক্সিসিটি ২ ধরণের
তীব্র(একোট)ঃ অনেক মর্টলিটি হয়
দীর্ঘস্থায়ী(ক্রনিক)মরটালিটি হয় না কিন্তু অর্থনৈতিক ভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
#ওষধের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।
খাবার কম খায় ফলে ওজন কমে যায়।
হ্যাচাবিলিটি ও ফার্টলিটি কমে যায়।
অধিক মাত্রায় পায়ের সমস্যা হয়।
খাদ্য হতে পুস্টির শোষণ কমে যায়।
এফ সি আর বেড়ে যায় ও ডেইলি ওয়েট গ্রেইন কমে যায়।
ডিম কমে যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বিভিন্ন রোগের প্রতি সংবেদনশীলতা বেড়ে যায়।
রক্তশূণ্যতা দেখা দেয়।
ডিপিগমেন্টেশন হয়
ডিমের আকার,ওজন ঠিক থাকেনা।
ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাসের প্রতি সংবেদনশীল হয়।ভিটামিন,এমাইনো এসিড ও কক্সিডিস্ট্যাট শোষণে বাধা দেয় ফলে আমাশয় ও এন্টারাটিস হয়।
ব্রয়লারের ওজন কমে যায় কারণ লিভার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পুস্টির শোষণ কমে যায়।
মুরগির রিপ্রডাক্টিভ পারফরমেন্স কমে যায়।
ইমোনোসাপ্রেশনের জন্য বিভিন্ন ইনফেকশাস ডিজিজে আক্রান্ত হয়।বিশেষ করে আমশয় এবং গাম্বোরু।
প্যাথোজেনেসিস ঃ
Liver is target organ
bind nucleic acid and nucleoprotein
hypoproteinemia
reduce protein synthesis and immunosuppression
Hamper metabolic enzyme and structural protein
Carcinogenic and teratogenic
Anorexia and vomiting
Hepatocellular necrosis
Reduced cloting factor
Poultry haemorrahic syndrome/Mouldy corn toxicosis.
#আমিষ তৈরিতে বাধা দিয়ে ব্রয়ালারের উৎপাদন ব্যাহত করে।
#বারসা,থাইমাস ও প্লীহার কোষ ধবংস করে বা বাড়তে দেয়না।বি লিম্পোসাইট এবং টি লিম্পোসাইট এর প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয় মানে জীবাণু ধবংসের প্রক্রিয়া ফ্যাগোসাইটিস প্রক্রিয়া অচল করে দেয়।
#রক্তের শ্বেতকণিকা ধবংস হয়ে যায় ফলে টাইটার কমে যায়।
#এটিকে হেপাটোটক্সিন বলাহয়,লিভারের কোষ নষ্ট করে দেয় ফলে প্লাজমা প্রোটিন(ডিমের সাদা অংশ) ও (ফাইব্রিনোজেন,প্রোথ্রোব্রিন) তৈরি হতে পারেনা।ফলে ডিম উতপাদন কমে যায় এবং হেমোরেজ হয়।
চর্বি,কার্বো হাইড্রেট,ভিটামিন -মিনারেল ইত্যাদির বিপাকীয় হার কমে যায়।চর্বিতে দ্রবনীয় ভিটামিন (এ,ডি,ই কে) কার্যকর ভুমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়।
#পিত্ত রসের অভাবে চর্বি হজম হয় না।
#জীবাণু এবং রাসায়নিক বিষাক্ত বিপাকীয় বস্তু সমূহ যা লিভারে বিষ মুক্ত হয় তা আর হতে পারেনা।
#আফলাটক্সিনযুক্ত খাবার মুরগি খেতে চায়না।
#আফ্লাটক্সিন ব্রিডার মোরগের সিমেনের পরিমাণ,সিমেনের অন্ডকোষের ওজন,সিমেনের মান ও টেস্টোস্টেরন কমিয়ে দেয় ফলে ডিম ফোটার হার কমে যায়।
#ডিম পাড়া মুরগির ডিম্বাশয়ের ডিম্বাকোষ পরিপক্ক হতে বাধা দেয় ও ডিম উতপাদন কমে যায়।
#এটি রক্ত উৎপাদন প্রক্রিয়াকে নষ্ট করে দেয়।লোহিত কণিকা এবং হিমোগ্লোবিন কমে যায়।
লক্ষণঃ
উচ্চমাত্রার বিষক্রিয়ায় অল্প সময়ে প্রচুর মুরগি মারা যায় কিন্তু অল্প মাত্রার বিষক্রিয়ায় মারা যায়না কিন্তু লক্ষণ দেখা যায়।
খাবার কম খায় এবং রোগ প্রতিরোধ কমে যায়, ডিম কমে যায়,ছোট ডিম পাড়ে।
মাংসে রক্ত ক্ষরণ দেখা যায়।
অল্প বয়স্ক মুরগিতে পাতলা পায়খানা হয়,প্যারালাইসিস,ওজন কম হয়,শুষ্ক পা ও ঝুটি।
এম্বায়োটক্সিসিটি করে।
হাইপারপ্লাসিয়া অফ বাইল ডাক্ট।
লিভার নেক্রোসিস।
পোস্টমর্টেমঃ
Small haemorrhage may occurs due to increased fragility of minute blood vessels,that is known as bloody thigh syndrome.
আফ্লাটক্সিনের বিপাকক্রিয়া যেহেতু লিভারে হয়,সেহেতু লিভারে নানা ক্ষতের সৃস্টি হয় এবং জটিল হলে ৭২ ঘন্টার মধ্যে মারা যায়।
১।লিভার বড় ও নরম হয়,হলুদ হয়,পিত্তরস আটকে পড়ে ও টিউমার দেখা যায়,এটি লিভারের লিপিড বিপাকীয় ক্ষমতা কে নষ্ট করে দেয় ,ফলে লিভারে লিপিড জমা হয় এবং লিভার বড় হয়ে হলুদাভ রং ধারণ করে।
২।হৃদপিন্ডে হাল্কা হলদে রং এর পানি জমে যা হাইডোপেরিকারডিয়াম সিনড্রম নামে পরিচিত যা এডেনো ভাইরাস দ্বারা হয় যদি টক্সিন দ্বারা রোগ প্রতিরোধ কমে যায়।।
৩।কিডনি ফোলে যায়
৪।অস্তিমজ্জা বিবর্ণ ও চর্বি যুক্ত হয়ে থাকে যা লিপিড বিপাক এবং অপসারণে অক্ষম যা আফ্লাটক্সিন দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ লিভারকে নির্দেশ করে।
৫।মুরগির শরীর থেতলে যাওয়ার মত ক্ষতস্থানে রক্ত ক্ষরণ দেখা যায়।
৬।গিজার্ডে ক্ষতচিহ্ন দেখা যায়
৭ বার্সা সহ অন্যান্য লিম্ফয়েড অংগ ছোট হয়ে যায়।
আলফাটক্সিনের মাত্রা কিভাবে কমানো যায়
খাদ্যে আমিষ।মিথিওনিন,মিটামিন মিক্স এবং সেলেনিয়ামের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
ঘরের ভিতর তাপমাত্রা ও এমোনিয়া গ্যাসের পরিমাণ কমিয়ে।
যদি বাদাম খৈল দেয়া হয় তাহলে তা রোদে ১-২দিন শুকাতে হবে।
আলফাটক্সিন অত্যধিক তাপ,পিলেটিং এবং অন্যান্য প্রক্রিয়ায় অপরিবর্তনীয়।
তবে কম পি এইচ ৩.৫ এবং অধিক ক্ষারীয় অবস্থায় ১০ এর বেশি হলে আলফাটক্সিনের মাত্রা কমানো সম্বব।
প্রতিরোধঃ
ফিডের হারভেস্টিং যাতে ভাল হয়।
ভাল ফিড ইনগ্রিডিয়েন্ট কিনতে হবে।
১২% এর কম আর্দ্রতা থাকতে হবে।
১ সপ্তাহের বেশি খাবার স্টোর না করা ভাল।
স্টোর রোমের ভেন্টিলেশন ভাল রাখতে হবে।
লিভার টনিক
ভিটামিন ই ও সেলেনিয়াম।
সূর্যের আলোতে শুকালে মোল্ড থেকে রক্ষা পাওয়া যায় কিন্তু টক্সিন থেকে নয়।
টক্সিন বাইন্ডার(জিওলাইটস,ক্লেস,এলোমিনোসিলিকেটস)
মোল্ড ইনহিবিটর
এব্জরভেন্ট(prevent toxin absortion from intestine)
রাসায়নিক যোগঃপ্রপায়নয়িক এসিড,বেঞ্জয়িক,সরবিক,এসিটিক এসিড ও ক্যালসিয়াম প্রোপাইনেট ফাংগাস প্রতিরোধে ব্যবহার হয়।
তবে একক ভাবে কোন কেমিকেল কাজ করে না তাই কম্বিনেশন ব্যবহার হয়।
আলফাটক্সিনের মাত্রা পরীক্ষা করতে এক ট্রাক খাবার থেকে কতটুকু উপাদান ল্যাবে পাঠাতে হবে
ভুট্রা বা গম ১০কেজি
বাদামের খৈল,সয়াবিন,ফিশ মিল,কুড়া ৫কেজি
প্রস্তুতকৃত খাদ্য ৩কেজি
খাদ্য উপাদানের গ্রহণ যোগ্য জলীয় অংশ
ফিসমিল ৯-১০%
বিভিন্ন তেল বীজের খৈল বা মিল ১০-১১
চালের কুড়া ও গমের ভুষি ১১-১২
ভুট্রা,গম,চাল,জোয়ার ১২-১৩%
কিভাবে আলফাটক্সিন পরিমাপ করা হয়
১।এলাইজা টেস্ট.
২।হাই পারফরম্যান্স লিকোইড ক্রোমাটোগ্রাফই(HPLC) পদ্ধতি
৩।থিনলেয়ার ক্রোমাটোগ্রাথি
৪।আলফাটক্সিনোমিটার(ফ্লোরোটক্সিন মিটার)
৫।সিলেক্টিভ এডজরবেন্ট মিনিকলাম(SAM)পদ্ধতি।
চিকিৎসা
টক্সিন মুক্ত খাবার দিতে হবে।
প্রোটিন ও ভিটামিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে।
মেথিওনিন ও সালফার থাকে এমন এমাইনো এসিড বাড়িয়ে দিতে হবে।
ই ও সেলেনিয়াম বাড়িয়ে দিতে হবে।
লিভার টনিক।
টক্সিন বাইন্ডার।
টিপস
আবহাওয়ার আপ ডাউন হলে ভুট্রায় টক্সিসিটি বেশি হয় যাতে ১০-১৫% প্রডাকশন কমে যায়।
ভুট্রায় ফুসারিয়াম টক্সিন হয় যা সাদা কালার।
ডি ডি জি এস যদি ২০দিন স্টোর করা হয় তাতে আফ্লাটক্সিন ১০০পি পি বি হয়।
এম বি এম এ ই- কলাই বেশি থাকে আর যদি ১৫দিন স্টোর করা হয় তাহলে আফ্লাটক্সিন হয় ৫ পি পি বি।
চাল ভাংগায় ও টক্সিন থাকে যা দেখা যায় না।
গমে টক্সিন হয় না কারণ এতে টক্সিন বিরোধী জিন আছে।
আলালের ফার্মে ৩০০০ মুরগি ,বয়স ৩০ সপ্তাহ,প্রডাকশন ৯৫% থেকে ৯০% চলে আসে, সপ্তাহে ১-২টা মুরগি মারা যায়.১ মাস ধরে সমস্যা ,অনেক এন্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয়েছে কাজ হচ্ছে না।
খামারে হিস্ট্রি নিয়ে জানা গেল নতুন ভুট্রা ,রাত্রের বেলা খাবার তুলে না,তাছাড়া ১মাস আগে ৭দিন ড্যাম খাবার মুরগিকে দেয়া হয়েছিল।
সমাধানঃ
টক্সিনিল প্লাস ১০দিন
লি্ভাভিট/হেপারেনল ৫দিন
অলভিট এম এ ৫দিন
লাইসোভিট ২দিন পানিতে দেয়া হয়।
খাবার পাত্র পরিস্কার এবং প্রতিদিন খাবার পাত্র পরিস্কার করার ফলে মরা বন্ধ হয়।
এখানে মাইকোটক্সিনের সমস্যা ছিল।
রোগে আক্রান্ত হবার পর উতপাদন কি পূর্বের অবস্থায় নেয়া সম্ববঃ
আলফাটক্সিনযুক্ত খাবার খাওয়ানোর ১-২ সপ্তাহ পর্যন্ত কোন সমস্যা মানে প্রডাকশন কমে না বা ওজন কমে না কিন্তু যদি এই খাবার চলতে থাকে তাহলে ডিম আরো কমে যাবে।
যদি ভাল খাবার দেয়া হয় তাহলে ডিম আবার আগের অবস্থায় যাবে তবে সময় ৫-৬ সপ্তাহ লাগবে।
৫০০-১৫০০পিপিএম মানে ০.৫-১.৫গ্রাম/কেজি