জলাতঙ্ক
RABIES
জলাতঙ্ক মারাত্নক একটি ভাইরাস জনিত মরনব্যাধি রোগ। Rabies virus এ রোগের জন্য একমাত্র দায়ী।
এই ভাইরাসের বাহক হলো কুকুর বিড়াল শিয়াল বেজি চিকা বানর প্রভুতি প্রানী।
প্রথমে এই প্রভৃতি প্রানী গুলো আক্রান্ত হয় এবং পরবর্তীতে এই সকল আক্রান্ত প্রানী গুলো মানুষ ও গবাদিপশুকে কামড়ানোর ফলে অথবা দেহের কাটা ছেড়া বা ক্ষত স্থানে আক্রান্ত প্রানীর লালার সংস্পর্শ লাগলে এই জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।
জলাতঙ্ক ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুর বিড়াল শিয়াল বেজী বানর চিকা যদি গরুকে কামড়ায় তাহলে উক্ত গরুতে ৭ দিন থেকে ২ বছরের মধ্যে লক্ষন প্রকাশ পায়।
গরুতে এ রোগের লক্ষন প্রকাশের পর আর কোন চিকিৎসা নেই অর্থাৎ ৪-৭ দিনের মধ্যে মৃত্যু অবধারিত। এটি মানুষ সহ গবাদিপশুর স্নায়ুতন্ত্রের একটি সংক্রামক রোগ।
লক্ষন
> গরু এই জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হলে প্রথম দিকে খাওয়ার রুচি কমে যাবে এবং অস্বাভাবিক চলাফেরা/উঠাবসা লক্ষ করা যাবে।
> গরুর সামান্য জ্বর থাকবে এবং মুখ দিয়ে লালা ঝড়বে।
> খুব জোরে জোরে চিৎকার করবে এবং সামনে যা পাবে তাই কামড়াতে চাইবে।
> উত্তেজিত ও আক্রমনাত্নক আচরন সহ খরগোসের মত কান খাড়া করে রাখবে।
> মানুষের মত পানি দেখে আতঙ্কিত হবে না তবে পানি পরিমানে কম খাবে।
> মুখের মাংশ পেশীতে প্যারালাইসিস হওয়ায় খেতে পারবে না বিধায় পেটের দুই প্বার্শ পিঠের নিচে ঢুকে যাবে।
> গালের দুই পার্শ্বের মাংশ পেশী ও পিছনের পায়ে পক্ষাঘাত হবে এবং পক্ষাঘাত সারা শরীর ছড়িয়ে পড়বে।
> গরু চলনহীন হয়ে শুয়ে পরে ও বার বার দাড়ানোর চেষ্টা করেও দাড়াতে পারে না। বিধায় মাথা ও ঘাড় মাটিতে আচড়াতে থাকে। ফলে শিং ভাঙ্গা সহ মাথা ও চোখে ক্ষত দেখা দেয়।
> লক্ষন প্রকাশের চার থেকে সাত দিনের মধ্যে নিশ্চিত মারা যায়।
রোগ নির্নয়
কুকুর কামড়ানোর ইতিহাস জেনে ও বৈশিষ্ট্যপুর্ন উপসর্গ দেখে এ রোগ নির্নয় করা হয়।
চিকিৎসা
প্রানী চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রযোজ্য
® গরুকে কুকুর কামড়ানোর স্থানটিতে সাথে সাথে পটাশিয়াম-পার-ম্যাঙ্গানেট বা কাপড় কাচা সাবান দিয়ে কমপক্ষে ১০ মিনিট উত্তম রুপে ধুয়ে/মুছে দিতে হবে অথবা কয়েক ফোটা কার্বলিক এসিড বা ফেনল দিয়ে কামড়ানো স্থানটি পুড়িয়ে দিতে হবে।
® যতদ্রুত সম্ভব inj: Rabies vaccine 10ml
১ম ডোজ ১ সিসি করে মোট ৪ সিসি চার স্থানের মাংশ পেশীতে দিতে হবে।
২য় ডোজ ৮ম দিন পর ১ সিসি করে মোট ৩ সিসি তিন স্থানের মাংশ পেশীতে দিতে হবে।
৩য় ডোজ ২২তম দিন ৩ সিসি তিন স্থানে একই নিয়মে।
উক্ত ডোজ ছোট মাঝারী ও বড় গরুতে একই মাত্রায় দিতে হবে।
অথবা
® inj: A.R.V 10ml বড় গরুতে 30cc করে দৈনিক চামড়ার নিচে ১৪ দিন। এভাবে মাঝারী গরুতে 20cc এবং ছোট গরুতে 10cc করে দিতে হবে।
প্রতিরোধ
> গরুকে প্রতিষেধক টিকা Rabis vaccine (L.E.P) প্রয়োগ করে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
> বে-ওয়ারিশ কুকুর নিধন বা কুকুরকে ভ্যাকসিন প্রদানের মাধ্যেমে এ রোগ প্রতিরোধ করা।
> গরুর বাসস্থানের আশেপাশে কুকুর প্রবেশ করতে না দেওয়া।
> আক্রান্ত গরুকে অন্যন্য সুস্থ গরুর কাছ থেকে দ্রুত সরিয়ে ফেলা।
> পরিচর্যাকারী ব্যাক্তির হাতে পায়ে ক্ষত থাকলে আক্রান্ত গরুর ধারের কাছেও না যাওয়া।
> জলাতঙ্ক আক্রান্ত প্রানী (কুকুর বিড়াল শিয়াল বেজী) গরুকে কামড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে উক্ত স্থানে কাপড় কাচা সাবান বা পটাশিয়াম-পার-ম্যাঙ্গানেট দিয়ে ধুয়ে/মুছে দিতে হবে এবং সম্ভব হলে কার্বলিক এসিড বা ফানেল দিয়ে পুড়ে দিতে হবে ও দ্রুত Post exposure ভ্যাকসিন দিতে হবে।
…………………
Information & treatment by Dr. Jalal Uddin
লেখক ঃএস এম রাসেল( সততা ডেইরী ফার্ম )