গাভী বা বকনার প্রজনন সম্পর্কিত কিছু আলোচনাঃ
————————————————————
প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে একটি পূর্ণ বয়স্ক গাভী গর্ভধারণের জন্য গরম হয় বা ডাক আসে।
গাভী বা বকনার ডাকে আসার বা গরম লক্ষণ:
• প্রতিটি গাভী স্বাভাবিক নিয়মে ১৮-২৪ দিন বিরতিতে ঋতুচক্রে ফিরে আসে ৷
• সাধারণত বেশিরভাগ গাভী রাতে ডাকে আসতে দেখা যায়, ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডাকে আসার লক্ষণ বোঝা বেশ দুরুহ হয়ে পড়ে।
• গাভীর ডাকে থাকা অবস্থা প্রায় ২-১৮ ঘন্টা স্থায়ী হয়৷ এ সময়ে প্রথম ৮-১০ ঘন্টা গাভী অস্থির থাকে, তার যৌনদ্বার দিয়ে স্বচ্ছ সুতোর ন্যায় আঠাযুক্ত বিজল পড়ে এবং অন্য গাভীর উপর লাফিয়ে উঠতে চেষ্টা করে।
• চূড়ান্ত ডাকে আসার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো চূড়ান্ত ডাকে আসা গাভীর উপর খামারের অন্য গাভী লাফিয়ে উঠলে সে নীরব থাকে৷ সাধারণত ডাকের লক্ষণ শুরু হওয়ার ১২-২৪ ঘন্টা পর চূড়ান্ত ডাক আসে।
• অপুষ্টি, আবহাওয়া, জলবায়ু, জাতের প্রভাব এবং বিশেষ করে প্রসবের পর ২/৩ ঋতুচক্রের সময় অনেক গাভীর ডাকে আসার লক্ষণ খুবই মৃদুভাবে প্রকাশ পায়৷ এসব ক্ষেত্রে সতর্কতার সাথে ডাকের লক্ষণগুলি কমপক্ষে ২ ঘন্টা পর পর কাছ থেকে নজর রাখতে হয়।
• লেজের গোড়া বা তার আশপাশের জায়গায় শুকনা আঁঠালো পদার্থ লেগে আছে কিনা তা দেখতে হবে।
• এছাড়া আগের মাসের ডাকে আসার সঠিক দিনক্ষণ মনে রেখে সে অনুযায়ী বর্তমান ১৮-২৪ দিন মিলিয়ে অথবা কোনো ষাঁড়ের সাথে রেখে এ ধরনের মৃদু ডাকে আসা গাভী সহজে সনাক্ত করা যায়।
প্রজননের সঠিক সময়:
কোনো গাভী রাতে গরম হয়েছে বুঝা গেলে তাকে পরদিন সকালে একবার এবং আরও নিশ্চিত হবার জন্য ঐদিন বিকেলের মধ্যে আরেকবার প্রজনন করাতে হবে৷
একইভাবে যে গাভী সকালে ডাক এসেছে বোঝা যাবে তাকে ঐদিন বিকেলে ও পরদিন সকালে আরেকবার প্রজনন করাতে হবে ৷
এ নিয়ম মেনে চললে গাভীর গর্ভধারণের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
গাভী বা বকনার দেরীতে ডাকে আসার বা গরম হওয়ার কারণ:
অনেক খামারের বকনা অনেক দেরিতে বা কখনোই ডাকে আসে না এবং প্রসবের পর অনেক গাভীর ডাক দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে৷
এ সমস্যার অন্যতম কারণগুলি হলো:
• পুষ্টি-হীনতা ও গাভীর ওলানের বাঁটে মুখ দিয়ে বাছুরের দীর্ঘক্ষণ ধরে চুষে ঘন ঘন দুধ খাওয়া।
• দুগ্ধবতী গাভীর প্রসব পরবর্তীতে জননাঙ্গের ব্যাধি, কৃমি, দৈনিক দুধ উৎপাদনের হার ইত্যাদি।
• বাছুরের দুধ ছাড়ানোর সময় দীর্ঘ হলেও গাভীর প্রসবের পর পুনর্বার বাচ্চা ধারণক্ষমতা ফিরে পেতে দেরি হয় (ঌ০-১২০ দিন বা এর চেয়ে বেশি দেরি হয়)।