গাভীর দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির কৌশল
গাভী পালনের অন্যতম উদ্দেশ্য দুধ উৎপাদন। আর তার জন্য প্রয়োজন সুষম খাবার সরবরাহ, রোগাক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে যথাযথ চিকিতৎসা সহ অন্যান্য দৈনন্দিন পরিচর্যা। তবে এর সাথে আরো কিছু সহজ বিষয়ের দিকে নজর দিলে দুধের উৎপাদন আশানুরূপ মাত্রায় বাড়ানো সম্ভব। দুধে ৮০ ভাগের বেশি পানি থাকে। বাকি ১২.৫ ভাগ ফ্যাট নয় এমন শক্ত পদার্থ যেমন- ভিটামিন, মিনারেল ইত্যাদি। অবশিষ্টাংশ ফ্যাট। এক লিটার দুধ উতৎপাদনের জন্য গাভীর প্রায় চার লিটার পানির প্রয়োজন হয়। অথচ অধিকাংশ সময় গাভীকে পর্যাপ্ত পানি দেয়া হয় না। যেমন- রাতের বেলা পিপাসা লাগলেও গাভী পানি পান করতে পারে না। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গাভীকে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি দিলে দুধের উতৎপাদন প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে যায়। তাই গাভী যেন প্রয়োজনমত পানি পান করতে পারে সে জন্য চব্বিশ ঘণ্টা পানির পাত্রে পানি দিতে হবে। প্রচলিত ধারণা হচ্ছে গাভীকে বেশি খাবার দিলে দুধ উতৎপাদন বেশি হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে সুষম, পুষ্টিকর খাবার গাভীর শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এবং দুধ উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য কিন্তু অতিরিক্ত খাবার কখনোই নয়। বরং এতে হিতে বিপরীত হয়। খাবার হজমের জন্য পাকস্থলীর রাসায়নিক পরিবেশ হচ্ছে ক্ষারীয়। গাভী যত বেশি জাবর কাটবে খাবারের সাথে বেশি লালা মিশ্রিত হবে এতে খাবার বেশি হজম হবে। গাভী জাবর কাটার সময় না পেলে খাবার হজম হবে না। আর এ কারণে পুষ্টিও কম পাবে। আর পুষ্টি কম পেলে দুধ উতৎপাদনও কমে আসবে। তাই খাবার হজমের জন্য গাভীকে কমপক্ষে আট ঘণ্টা জাবর কাটার সময় দিতে হবে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর আর কোনো খাবার দেয়া ঠিক হবে না। গাভীকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে হবে। প্রতি লিটার দুধে প্রায় ১.২ গ্রাম ক্যালসিয়াম থাকার কারণে দুগ্ধবতী গাভীর দুধ উৎপাদনের জন্য বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম প্রয়োজন হয়। খাবারের সাথে ক্যালসিয়াম সরবরাহ না করলে গাভীর হাড় থেকে ক্যালসিয়াম ব্যবহার করে থাকে। এতে হাড়ে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিলে গাভী দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়ে। দুধ উতৎপাদনও কমে যায়।
উপরের বিষয়গুলোর দিকে নজর দিলে খরচ কমের পাশপাশি দুধ উতৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। খামারি লাভবান হবে।
