Breaking News

গাভীর খাদ্য ব্যবস্থাপনা

গাভীর খাদ্য ব্যবস্থাপনা

এনার্জি বা শক্তি গাভী পালনের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শক্তির সোর্স হল শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাদ্য। একটি খাদ্যকে যদি পুড়িয়ে ফেলা হয় পুড়ে যাওয়ার পর ওজনের যে ঘাটতি হয় তাই এনার্জি ।

এনার্জির একটি গাভীর স্বাস্থ্য, উতপাদন ও উর্বরতা ঠিক রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে। আপনার গাভীর দৈন্দন্দিন যে শক্তির প্রয়োজন হয় তার থেকে বেশী পরিমান প্রদান করলে তা চর্বি হিসাবে শরীরে জমা হয়। গাভীর শরীরে কিছু পরিমান চর্বি জমা থাকা ভাল এই চর্বি হীট সাইকেল সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে ও নিয়মিত হীটে আসতে সহায়তা করে। গাভীর শরীরে চর্বির পরিমান খুবই কমে গেলে হীট সাইকেল অনিয়মিত হয় কিংবা অনেক দিন হীটে আসে না এটা সাধারনত ইনএকটিভ ওভারিয়ানের কারনে হয়ে থাকে।

আদর্শ চর্বির পরিমান হল বাচ্চা প্রসবের পূর্বে বডি কন্ডিশন স্কোর ৩- ৩.৫, বাচ্চা প্রসবের পর থেকে দুধ প্রদানের শেষ পর্যন্ত বিসিএস ২.৫-৩, বাচ্চা প্রদানের আগ থেকে বাচ্চা প্রদানের পর বিসিএস এর পার্থক্য ০.৫ হওয়া খুব ভাল এতে প্রথম বার বীজ ধারন ক্ষমতা খুব বেশী থাকে! যদি পার্থক্য ১ হয় সেক্ষেত্র ২-৩ বারে বীজ ধারন ক্ষমতা বেশী থাকে।

পার্থক্য ১ এর বেশী হলে সঠিক সময়ে প্রথম হীটে আসে না। বিসিএস ডেভলপ করতে হয়। বার বার বীজ দিতে হয়। বকনা বাছুর প্রথম বীজ দেয়ার আগ পর্যন্ত আদর্শ বিসিএস ২-২.৫। দুগ্ধবতী গাভীর যে এনার্জি প্রয়োজন তার থেকে কম এনার্জি পেলে তাকে বলে নেগেটিভ এনার্জি ব্যালেন্স। নেগেটিভ এনার্জি ব্যালেন্স হলে গাভীর স্বাস্থ্য হানী হয় হাই ইল্ডিং গাভীর ক্ষেত্রে কমন সমস্যা কিটোসিস দেখা দেয় ও উৎপাদন কমে যায়। অগভীর শরীরে অতিরিক্ত পরিমান চর্বি জমলে বীজ ধারণ ক্ষমতা কমে যায় গর্ভ ধারন করলে রেনাল পাল্পেশন এর মাধ্যমে গর্ভধারন নিশ্চিত করন কঠিন হয়ে যায় এবং বাচ্চা প্রসবের জটিলতা দেখা দেয়!

একটি গাভীর বডি মেইনটেনেন্স ও উৎপাদনের জন্য যে শক্তি প্রয়োজন হয় তা হিসাব করে খাদ্য প্রদান করলে আশানুরুপ উৎপাদন পাওয়া সম্ভব। এনার্জি জাতীয় খাদ্যের দাম কম হওয়ায় এটি পর্যাপ্ত পরিমানে প্রদান করতে হবে কিন্তু অতিরিক্ত নয়। এনার্জি কম হলে গাভী প্রোটিন হতে এনার্জি তৈরী করে যা অত্যন্ত ব্যয় সাপেক্ষ। যেহেতু আমাদের দেশে প্রোটিন অত্যন্ত দামী।

##

এনার্জি এর একক হল মেগা জুল(Mj), বা মেগা ক্যালরী (Mcal), যেখানে, ১ মেগা ক্যালরি = ৪.১৮৬৮ মেগা জুল। এনার্জি সিস্টেমে প্রাণীর চাহিদা ও খাদ্যের মূল্যায়নের উপর নির্ভর করে এনার্জি কে বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায় যেমনঃ গ্রস এনার্জি(GE): খাদ্যে গড় ১৮-২০% Mj GE ডাইজেস্টেবল এনার্জি(DE): প্রানীতে হজমের উপর নির্ভর করে ৩০-৯৫% মেটাবলাইজেবল এনার্জি(ME): মেটাবলিজম এর উপর নির্ভর করে ৮০% পর্যন্ত

উদাহরন স্বরূপ: জ্বালা ঘাস এ গ্রস এনার্জি ১৭.৪ মেগা জুল, ডাইজেস্টেবল এনার্জি ৯.৬ মেগা জুল, মেটাবলাইজেবল এনার্জি ৭.৯ মেগা জুল। * উচ্চ আশ ও সেলুলোজ যুক্ত খাদ্যের হজম ক্ষমতা কম। যেমনঃ পরিপক্ব কান্ড যুক্ত ঘাস, পুরাতন শুকনা ঘাস, খড়। * কম আশ ও সেলুলোজ যুক্ত খাদ্যের হজম ক্ষমতা বেশী। যেমনঃ শষ্য, মূল, প্রানীজ বাই প্রোডাক্ট # গরু, ছাগল, ভেড়া সহজে সেলুলোজ হজম করতে পারে # হাঁস, মুরগী সহজে সেলুলোজ হজম করতে পারে না। # ১ কেজি চর্বি ১ কেজি শর্করার তুলনায় ২.২৫ গুন বেশী শক্তি সম্পন্ন কিন্তু চর্বি জাতীয় খাদ্য দামী।

 

লেখকঃ
Kabirul Hassan

Please follow and like us:

About admin

Check Also

নবজাতক বাছুরের যত্ন ও করণীয় :

নবজাতক বাছুরের যত্ন ও করণীয় : স্তন্যপায়ী প্রায় সকল প্রাণীর জন্মপ্রক্রিয়া প্রায় একই হলেও কিছু …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »