Breaking News

গরু মোটাতাজাকরণের কিছু কৌশল

গরু মোটাতাজাকরণের কিছু কৌশল

গরু মোটাতাজাকরণে খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও কিছু কৌশল সম্পর্কে আমাদের জেনে রাখা উচিত। আমাদের দেশে গরু পালন একটি লাভজনক পেশা। গরু পালন করে অনেকেই স্বাবলম্বী হচ্ছেন আবার সঠিক নিয়মে গরু পালন না করায় অনেকেই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। গরু পালনে লাভজনক হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সঠিক উপায়ে গরু মটাতাজাকরণ। আর এক্ষেত্রে খাদ্য ব্যবস্থাপনা উল্লেখযোগ্য। আসুন জেনে নেই গরু মোটাতাজাকরণে খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও কিছু কৌশল সম্পর্কে-

গরু মোটাতাজাকরণে খাদ্য তালিকা ও কিছু কৌশলঃ

১। গরু মোটাতাজাকরণের শুরুতেই গরুর ওজন নির্ণয় করতে হবে তাহলে কৃমির ঔষধ ও খাদ্য দিতে অনেকটা সুবিধা হবে। ওজন মাপার ক্ষেত্রে এই সুত্র ব্যবহার করতে পারেন -দৈর্ঘ্য*(বুকের বেড়ের) ২ (ইঞ্চি)এবার ৬৬০ দিয়ে ভাগ করতে হবে,তাহলে কেজির হিসাব পাওয়া যাবে।

২। গরু মোটাতাজাকরণে রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ক্ষুরা, তড়কা, বাদলাসহ অন্যান্য রোগের টিকা দিতে হবে।

৩। গরু মোটাতাজাকরণের শুরুর দিকে ১০০ কেজির জন্য ১.৫ কেজি দানাদার খাদ্য দিতে হবে। গরু যখন অনেকটা মোটাতাজা হয়ে যাবে তখন ১০০ কেজির জন্য ১ কেজি দানাদার খাদ্য দিতে হবে।

৪। গরুর পেটে গ্যাস সৃষ্টি হয় এমন খাদ্য যেমন ভাত বা খুদের জাউ বেশি পরিমাণে খাওয়ানো উচিত নয় এর ফলে গরুর পেট ফুলে যেতে পারে ।

৫। ১০০ কেজির জন্য প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ কেজি কাঁচাঘাস খাওয়াতে হবে। কাঁচাঘাস না পাওয়া গেলে বিকল্প হিসেবে সাইলেজ ব্যবহার করতে হবে।

৬। সঠিক নিয়মে গরুকে প্রতিদিন গোসল করাতে হবে। এতে গরুর ত্বক ও শরীর সতেজ থাকবে।

৭। গরুকে ইউ এম এস খাওয়াতে হবে। শুধু ইউ এম এসের কারনে প্রতি দিন ২৫০ গ্রাম করে মাংস বাড়ে।

ইউ এম এস তৈরী করার কৌশলঃ

১। ইউ এম এস তৈরিতে ৫০ কেজি পানি, ১০০ কেজি শুকনো খড়, ২৫ কেজি চিতাগুড়, ৩ কেজি ইউরিয়া সার ব্যবহার করতে হবে।

২। এটি তৈরির ২ ঘন্টা পরেও খাওয়ানো যাবে এবং ৩ দিন পরেও খাওয়ানো যাবে। ১০০ কেজির জন্য ১ কেজি ইউ এম এস খাওয়াতে হবে। ইউ এম এস খাওয়ানোর ১ ঘন্টা আগে ও পরে পানি খাওয়ানো যাবে না এবং পাত্রে পানি থাকলে ইউ এম এস দিয়ে মিশিয়ে খাওয়ানো যাবে না।

৩। গরুকে শুধু শুকনো খড় না খাওয়ানোটাই ভাল,এতে পেট ভরলেও তেমন বেশি স্বাস্থ্য বাড়ে না, অনেকে বলবেন শুকনো খড়ে আমাদের গরু মোটা হয়। আসলে আপনার গরু মোটা হয়েছে দানাদার, খৈল ও কাঁচাঘাসের কারনে। শুকনো খড়ে গরু মোটা হলেও তা পরিমানে কম হয়। তাই বেশি লাভবান হতে চাইলে শুকনো খড়কে ইউ এম এস প্রক্রিয়া করে খাওয়ান।

৪। গরুকে ওজন অনুসারে সুষম খাদ্য খাওয়াতে হবে।

মোটাতাজা গরুর ১০০ কেজি রেশন তৈরীর ফর্মুলাঃ

গমের ভূষি = ৩০ কেজি

ভুট্রা ভাঙ্গা = ২০ কেজি

রাইচ পালিশ = ১৫ কেজি

ডাউলের ভূষি = ৭ কেজি

সরিষার খৈল = ১০ কেজি

সয়াবিন খৈল = ১০ কেজি

চিতাগুড় = ৩ কেজি

ডিসিপি পাউডার = ৩ কেজি

আয়োডিন লবন = ২ কেজি

মোট = ১০০ কেজি

ডা মোঃ শাহিন মিয়া
বিসিএস প্রাণিসম্পদ
ভেটেরিনারি সার্জন
চৌদ্দগ্রাম কুমিল্লা

Please follow and like us:

About admin

Check Also

খুব কম খরচে মাংস উৎপাদনের একটা কৌশল

খুব কম খরচে মাংস উৎপাদনের একটা কৌশল . যেটা প্রান্তিক খামারীদের জন্য খুবই কার্যকরী হবে। আপনাকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »