গরুর ক্ষুধা-মন্দা(এনোরক্সিয়া) বা খাদ্য গ্রহনে অনীহা দেখা দিলে করণীয়ঃ
——————————–
মাঝে মাঝে দেখা যায়,আপনার খামারের গরুটি ঠিক মত খাচ্ছে না বা খাদ্য গ্রহনে অনীহা দেখাচ্ছে। তখন আপনি কিছু পদক্ষেপ নিবেন যা নীচে পর্যায়ক্রমিক ভাবে দেয়া হলো।
১। গরুকে সবসময় কৃমিনাশক ওষুধপাতি দিয়ে কৃমিমুক্ত রাখবেন।
২!প্রতি সপ্তাহে অন্তত ২ বার গরুর জিভ পরিস্কার করে ১%পটাশের পানি দিয়ে ধুয়ে দিবেন।না পারলে নিদেন পক্ষে ১ বার হলেও এটা করবেন প্রতি সপ্তাহে।
৩। মধু মুখের ভিতরে সপ্তাহে ১ বার মেখে দিবেন।
৪। গরুকে বিট লবণের টুকরা চাঁটতে দিবেন।
৫। মাঝে মধ্যে ১০০ গ্রাম আদা বেঁটে খাইয়ে দিবেন।
৬। গরুকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ খড় দিবেন।কারণ,গরু জাবর কাটা প্রানী। জাবর কাটলে গরুর হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
৭। গরুকে অবশ্যই নির্দিষ্ট পরিমাণে আঁশ জাতীয় খাদ্য এবং মোলাসেস/চিঁটাগুর/রাব খাওয়াবেন।
৮। গরুকে সপ্তাহে অন্তত ২/৩ দিন তার জন্য সরবরাহকৃত দানাদার খাদ্যে খাওয়ার সোডা মিশিয়ে খাওয়াবেন। খাওয়ার সোডা ক্ষ্রার হওয়ায় এটা গরুর এসিডোসিস রোধ করে, ফলস্বরূপ গরু ক্ষুধামন্দা দেখা দেয় না। এছাড়াও খাওয়ার সোডা ব্লোটিং ও রোধ করে,গরুর ক্ষুধার চাহিদা বাড়ায়। খাওয়ার সোডা কি পরিমাণ খাদ্যে দেয়া যাবে তা নীচে দেয়া হলো।
ক) দুধালো গাভীর জন্য গরু প্রতি ১৫০-২৫০ গ্রাম (আকৃতি ও ওজন অনুযায়ী) প্রতিদিন বা সপ্তাহে ২/৩ দিন।
খ)ষাঁড় বা বলদের জন্য গরু প্রতি ১০০-১৫০ গ্রাম(আকৃতি ও ওজন অনুযায়ী) প্রতিদিন বা সপ্তাহে ২/৩ দিন।
উপরের পদক্ষেপ গুলি গ্রহন করলে আপনার গরুর ক্ষুধা-মন্দা বা খাদ্য গ্রহনে অনীহা দেখা দিবে না সহজে। আর, ক্ষুধামন্দাকে অবজ্ঞা করবেন না কখনোই। যদি দেখেন আপনার খামারের গরুটির ক্ষুধামন্দা সমস্যাটি দূর হচ্ছে না কোন ভাবেই, তাহলে অভিজ্ঞ ভেটেরিনারি ডাক্তার এনে ভালোমতো চিকিৎসা করাতে হবে গরুর,না হলে হয়তো আপনার খামারের মূল্যবান গরুটির প্রাণনাশের আশংকা দেখা দিতে পারে।কারণ,অনেক সময় জটিল রোগের ফলস্বরূপও ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়!!!
লেখকঃমুক্তি মাহমুদ(পি ডি এফ)
গরুর উদরাময় রোগ____যা খামারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
এই রোগ গরুর পাতলা পায়খানা, পেটনামা ও পেটকামড়ানী নামেই পরিচিত। এই রোগ বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক জীবনু দ্বারা সৃষ্টি হয়ে থাকে।
এই রোগের লক্ষণ হলোঃ___________
১।আক্রান্ত পশু খাবার হজম করতে পারে না।
২।পশু ঘন ঘন পাতলা পায়খানা করে।
৩।আক্রান্ত পশুর পেটে ব্যাথা থাকে।
৪।পশুর পায়খানার সাথে মল ও রক্ত আসতে পারে ও পায়খানা অনেক সময় দূগন্ধ হয়ে থাকে।
৫।আক্রান্ত পশুর পেটের চামড়া কুঁচকে যায়।
৬।সময় মতো চিকিৎসা না করলে বা দীঘ’ সময় নিলে পশুর শরীলে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে।
৭।আক্রান্ত পশুর কান ঝুলে পড়ে।
৮।পশু দূব’ল হয়ে পড়ে এমন কি পশু মারা ও যেতে পারে।
এই রোগের চিকিৎসাঃ_________________
Tab _Sulpha 3/Sulphadin/Sulfamide 3
দিতে হবে সকালে, বিকালে ও পরদিন সকালে ৩ ডোজ।
প্রয়োজনে লাগলে দিতে হবে……..
গর্ভকালীন সময়ে ও এগুলো নিরাপদ প্রতি ৩৫ কেজি ওজনে ১ টি ট্যাবলেট।
সাথে দিতে হবেঃ
Pow:Biogut প্রতি ১০০ কেজি ওজনে ১০ গ্রাম।
ও পানিস্বল্পতার কারণে স্যালাইনঃ
Electromin or Glucolyte Vet
প্রয়োজনে সাথে লাগলে জিংক ও দিতে হবে পরিমান মতো।
সুতরাং রোগ ছোট হউক বড় হউক অবহেলা করবেন না। প্রয়োজনে ভেট ডাক্তার ডাকুন ও পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করুন।
খামার সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও জীবানুমুক্ত রাখুন, বেঁচে থাকুক খামারীদের স্বপ্ন গুলো, টিকে থাকুক স্বপের খামার এই প্রত্যাশাই রইল।
মোঃ জুলমত আলী
গরুর বদ হজম দেখা দিলে হতে পারে বিভিন্ন সমস্যা।
যেমনঃ পেট ফাঁপা,খাবারের প্রতি রুচি কম, প্রসাব পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়, এমন কি মারা ও যেতে পারে।
গরুর হজম বৃদ্ধির উপায়ঃ
১।খাবার খাওয়ার হাউজ/ পাত্র প্রতিদিন পরিস্কার রাখুন।এতে গরুর খাবারের রুচি থাকে ও হজমে সহায়তা করে।
২। যে পরিমান খাদ্য ও দানাদার দেওয়া উচিত ততটুকু দেন যা সহজেই হজম হবে। ২/৩ দিনের দানাদার মিশ্রিত ভাসি খাবার দেওয়া পরিহার করুন।
৩।সপ্তাহে ২/৩ দিন গরুকে আদার রস ১০০-১৫০ গ্রাম ছোট গরু হলে আরো কম দেন,এতে বদহজম দূর হবে।
খাবারের প্রতি রুচি থাকবে।
৪।খামার প্রতিদিন পরিস্কার করুন, নিয়মিত গরুকে গোসল করান,খামার ও রাবার মেট থাকলে জীবনু নাশক ব্যবহার করুন নিয়মিত এতে বিভিন্ন দূগন্ধ দূর হবে তাতে ও গরুর বদহজম হবে না।
৫।খামারের প্রতিটি গরুকে ৩ মাস পর পর কৃমি মুক্ত করুন, ও ডাক্তারের পরামর্শে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিন, কেননা অনেক সময় কৃমির কারনে খাবারের রুচি কমে যায়।
৬।প্রতি ২/৩ মাস পর পর গরুকে জিংক দেন এতে খাবারের রুচি বৃদ্ধি হবে ও বদহজম হবে না।
৭।গরুকে ভাত/খুঁদের জাউ এগুলো দেওয়া বন্ধ করুন এগুলোর কারণে ও গরুর বদ হজম হয়ে থাকে।
গরুকে নিয়মিত কাঁচা ঘাস দেন।
৮।গরুকে ১৪/১৫ দিন পর পর রুচিবর্ধক পাউটার/ট্যাবলেট পরিমাণ মতো দিতে পারেন, এতে করে খাদ্য হজম করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
খাদ্য হজম করতে পারলেই গরুর শরীল ও স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে, সুতরাং বদ হজমের দিকগুলো পরিহার করুন।
মোঃ জুলমত আলী