বৈজ্ঞানিক সূত্র অনুযায়ী সঠিক তাপমাত্রায় ডিমের ভিতর শুক্রনু বড় হতে থাকে এবং একটা নিদৃষ্ট সময়ের মধ্যে সেই শুক্রানু বাচ্চায় রুপান্তরিত হয়ে ডিমের খোসা ভেঙ্গে বেরিয়ে আসে।
ডিমের ভিতরে তরল পদার্থ ভ্রুনের বৃদ্ধির সাথে সাথেএকটি নিদৃষ্ট সময়ের মধ্যে সঠিকভাবে সঠিক পরিমানে তরলটা শুকিয়ে খালি হলেই বাচ্চা কোনো সমস্যা এবং মৃত্যুঝুঁকি ছাড়াই ডিম থেকে বেরিয়ে আসে।
কিন্তু ডিমের বাহিরের আবহাওয়ায় বাতাসের আর্দ্রতা বা বাতাসে জ্বলীয় বাস্পের পরিমান যদি বেশি হয়ে থাকে তবে ডিমের ভিতরের তরল সঠিক সময়ে সঠিক পরিমানে শুকাতে পারে না, আবার বাতাসের আর্দ্রতা যদি কম থাকে তবে ডিমের ভিতরের তরল আগেই শুকিয়ে খালিহয়ে যায়,এবং বাচ্চার মৃত্যু হয়।
আর ভ্রুনের সঠিক গঠনের জন্য এবং ডিমের সর্ব জায়গায় সমান তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা পৌঁছানোর জন্য ডিম ঘুরিয়ে দেয়া হয়।
ইনকিউবেটর কোম্পানি গুলো কত %ভাগ হেচিংরেট আসবে সেটি কিভাবে বলে জানেন.?
ইনকিউবেটর কোম্পানি গুলো বৈজ্ঞানিক সূত্র বা নিয়মের সাথে ইনকিউরের কার্যক্ষমতা মিলিয়ে নিয়ে ইনকিউবেটরের ডিম ফুটার হার নির্ণয় করে।
কিন্তু ইনকিউবেটর এমন একটি যন্ত্র যেখানে দীর্ঘদিন নিখুঁতভাবে কৃত্যিম আবহাওয়া রাখতে হয়।
একটা কাজকে দীর্ঘদিন করলে সেটা নিখুঁত রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
তাই ইনকিবেটরের মূল কাজগুলি আধুনিক প্রযুক্তি দ্বারা করা হয়, যেমন অটোমেটিক তাপমাত্রা কন্ট্রোলার, অটোমেটিক আর্দ্রতা কন্ট্রোলার, এবং অটোমেটিক ডিম ঘুরানো।
কিন্তু এই অটোমেটিক কাজ গুলোর উপর লক্ষ রাখার দায়িত্ব মানুষের।
যেহেতু সব সময় যন্ত্রটিকে চালু রাখতেই হবে তাই
সব সময় তাপমাত্রাকে অটোমেটিক রাখতে নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানী বা বিদ্যুতের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
সকলের একটা কথা মনে রাখা ভীষণ জরুরী, ইনকিউবেটরে তপমাত্রাকে সব সময় সঠিক রাখতেই হবে।
এক ঘন্টা যদি তাপ কমে যায় তবে সব ভ্রুন মারা যেতেপারে যার ফলে ডিম নষ্ট হবে আর ফুটবে না।
আর তাপমাত্রা যদি দীর্ঘদিন একটু কম বা একটু বেশি থাকে তবুও ডিম ফুটার সময় ভ্রুনের মৃত্যুর ঝুঁকি থাকবেই।
কাজেই শুধু অটোমেটিক রাখা নয় পাশাপাশি সেটার জন্য সঠিক বিদ্যুৎ সাপ্লাইএর প্রয়োজন।
অনেকেই শীতকালে কোনো ব্যকআপ ছাড়াই ইনকিউবেটর চালু করে, তাদের খেয়াল রাখা উচিত মাঝরাতে যদি বিদ্যুৎ চলে যায় তবে বাহিরে বেশি ঠান্ডার কারনে ইনকিউবেটরের ডিম এক ঘন্টারও কম সময়ে ঠান্ডা হয়ে সব ভ্রুন মারা যেতে পারে।
কাজেই জরুরী অবস্থার জন্য কিছুটা জ্বালানীর ব্যকআপ রাখতেই হবে।
আর্দ্রতা কন্ট্রোল অটোমেটিক হলেও অবশ্যই সেগুলোরর প্রতি গভীরভাবে লক্ষ রাখা জরুরী আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রন মেনুয়েলি হলে গরম পানি দ্বারা আর্দ্রতা বাড়ানো যায়,
ইনকিউবেটরের ভিতর আদ্রতা শোষণ করা কঠিন কাজ, ইনকিউবেটরের ভিতর চুন জাতীয় পদার্থ রাখলে আদ্রতাকে কিছুটা কমানো যায়।
ডিম ঘুরানো এটা যদি অটো হয় তবে সেই অটোমেটিক কাজের উপরও গভীর ভাবে লক্ষ রাখতে হয়, সর্বপরি নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সাপ্লাই রাখতেই হবে।এবং নিজেক ধীরে ধীরে বুঝতে ইনকিউবেটর কিভাবে কাজ করছে, এটা করলে কোনো কিছুর ব্যতিক্রম হলে নিজেই বুঝতে পারবেন,এটাই অবিজ্ঞতার লক্ষণ।
ইনকিউবেটরে হেচিংরেট যদি খারপ আসে তবে বুঝতে হবে এর পিছনে কোনো করন অবশ্যই রয়েছে, কখন সেই কারন গুলোকে খুজে সমাধান করলে, পরবর্তীতে হেচিংরেট আগের চেয়ে আরো ভালো আসবে।
এভাবে ছোট ছোট ভুল গুলো নিজেই সংশোধন করে এক সময় হয়ে ওঠা যায় অভিজ্ঞ ইনকিউবেটর অপারেটর, এটা এক দিনে সম্ভব নয়। ভুল গুলো ধরার জন্য সবকিছু গভিরভাবে লক্ষ রাখা জরুরী,
মূল কথা, সকল ডিমে তাপমাত্রা সঠিক আর্দ্রতা, এবং সঠিক সময় ডিম গুলো ঘুরানো,অথবা ডিম ঘুরানো বন্ধ করা, এই গুলোই লক্ষণীয় বিষয়।
লেখকঃআব্দুল ওহাব