ইনকিউবেটর চালানোর ব্যাপারে লক্ষণীয় বিষয়গুলো

ইনকিউবেটর বানানো অথবা কেনার পরে প্রধান কাজ হলো ইনকিউবেটর টি সঠিকভাবে চালানো।
এটি চালানো সহজ, কিন্তু দীর্ঘ  দিন নিখুঁতভাবে ইনকিউবেটর চালানো বেশ কঠিন।
তবে কিছু নিয়ম মেনে কাজ করলে এটা অনেক সহজ হয়ে যায়।

ইনকিউবেটরের মুল বিষয় হচ্ছে তাপমাত্রা ঠিক রাখা, আর্দ্রতা ঠিক রাখা, এবং ডিম ঘুরানো এবং শেষের দিকে ডিম না ঘুরিয়ে স্থীর রাখা।
প্রথমে ইনকিউবেটরে সঠিকভাবে ডিম বসানোর পরে ইনকিউবেটরের কন্ট্রোলার অন করতে হবে।
কন্ট্রোলার ইনকিউবেটর চালানো সহজ করে দেয়, কিন্তু মানুষেরও কিছু দায়িত্ব আছে।

কন্ট্রোলার এবং পুরো ইনকিউবেটরে নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ সাপ্লাই নিশ্চিৎ করতে হয়।

যদি বিদ্যুত চলে যায় সাথে সাথে আই পি এস অথবা জেনারেটর চালু করতে হবে। আদ্রতা সঠিক রাখতে হয় প্রথম দ্রত আর্দ্রতা একটু কম রাখতে হয়, শেষের দিকে আদ্রতা একটু বাড়াতে হয় ৬৫%পর্যন্ত, আদ্রতার ব্যপাবে অনেক মতভেদ রয়েছে।

আর্দ্রতা যদি কিছু সময়ের জন্য কম বা বেশি হয় তবুও ভ্রুন মরবেনা, তবে আদ্রতা যদি দির্ঘ সময় কম বা বেশি হয় তবে ডিম ফুটার শেষের দিকে একটু সমস্যা হয়।

ডিম ঘুরানো অটো মেশিন গুলোতে এটা চিন্তা করতে হয় না, কিন্তু মেনুয়াল গুলোতে অন্তত ৩/৪ঘন্টার মধ্যে একবার ঘুরিয়ে দিলে ভালো হয়। ডিম ফুটার ৪/৫দিন আগে ডিম ঘুরানো বন্ধ করে দিতে হয়।

ডিম ফুটার আগে সব ডিম হেচারে রাখতে হয়, সেখানেই সকল বাচ্চা ফুটে বের হয়।
ইনকিউবেটর চালানোর মুল কথা, ইনকিউবেটর চালানোর ক্ষেত্রে ভুলের কোন সুযোগ নেই প্রত্যেকটা ছোট ছোট ভুলই হেচিংরেট কম আসার কারন হয়, আর শেষেদিকে সব ভুল গুলোর মাশুল দিতে হয়

তাই সব সময় নিখুতভাবে ইনকিউবেটর চালাতে হবে।
একটা কথা সব সময় মনে রাখতে হবে
“তাপমাত্রা কোনো ভাবেই কমতে দেয়া যাবে না’একমাত্র তাপ ঠিক রাখলেই ইনকিউবেটর ভ্রুন মৃত্যুর সম্ভবনা কম থাকে।

বলা চলে ভ্রুন বৃদ্ধির গুরুদায়িত্ব পালন করে তাপমাত্রা।
তাই তাপমাত্রা যে কোনো উপায়ে সব সময় সঠিক রাখতেই, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সঠিক তাপমাত্রা ৩৭.৭ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বিদ্যুৎএর লোডশেডিং বেশি হলে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় ইনকিউবেটর চালককে।

এটার জন্য ব্যকআপ হিসেবে আই পি এস থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে আইপিএস ব্যকআপও শেষ হয়ে যায় তবুও বিদ্যুৎ আসেনা.!

তখন চোখের সামনে সব ডিম নষ্ট হয়ে যেতে থাকে।
সেই জন্য আমার পরামর্শ তো আছেই এটা অন্তত কিছু ভ্রুনের প্রান বাঁচাবে, যদি কখনো এমন বিপদে পড়ে যেখানে সব ব্যকআপ শেষ।
ভ্রুন জীবিত রাখতে একটা কর্কশিটের বক্স যোগার করবেন তারপরে কিছু ছোট ছোট পাথর গরম করবেন, এর পরে গরম পাথরকে বালি দ্বারা চাঁপা দিয়ে একটা বটিতে করে সাবধানে কর্কশিটের বক্সের মধ্যে রাখতে হবে যতে কর্কশিট গলে না যায় সেইদিক লক্ষ রাখতে হবে।

এবার কর্কশিটের বক্সের ভিতর বালির বাটির উপর কম্বল বা মোটা কাপড় দিতে হবে এখনে লক্ষ রাখতে হবে কম্বল যেনো পুড়ে না যায় তাপ বেশি হলে বেশি বালি দিয়ে চাপা দিতে হবে যাতে আস্তে আস্তে পাথরের তাপ বালির মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে বালি গরম হয় এবং কম্বল সহনশীল গরম থাকে, এই বালি এবং কাপড় দেবার উদ্দেশ্য তাপ যেনো খুব ধিরে ডিম লাগে, আর কর্কশিটেরর বক্সের উদ্দেশ্য তাপটা যাতে দীর্ঘ সময় আটকে থাকে,

এবার বক্সের মধ্যে একটা থার্মোমিটার দিন তাপমাত্রা বেশি হলে বক্স টা খুলে একটু ঠান্ডা করে তাপ কমিয়ে ১০০ফারেনহাইট রাখুন, এবার ডিম গুলো মোটা কাপড়ের উপর সাজিয়ে দিন, এবং কর্কশিটের বক্স বন্ধ করে দিন এবং থার্মোমিটার টি যাতে বাহির থেকে দেখা যায় সেই ভাবে ছোট্ট ফুটো রাখুন, এবার দির্ঘ সময় ভিতরে ডিম গরম থাকবে, যখন তাপমাত্রা কমতে কমতে ৮৭ ফারেনহাইট এলেই আবার পাথর গরম করবেন গরম করে বলি চাপা দিবেন।
এভাবে জরুরি অবস্থায় কিছুটা হলেও ভ্রুন জীবিত রাখা যায়।

লেখকঃআব্দুল ওহাব