নিমপাতার ব্যবহার
নিমপাতা এক আদিম ঔষধের নাম। আয়ুর্বেদশাস্ত্রে নিমপাতা এক বিস্ময়কর প্রাকৃতিক অনুদান। নিমের রয়েছে নানাবিধ ব্যবহার।
নিমের ডাল যে দাঁতের জন্য উপকারী সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মুখের দুর্গন্ধ ও দাঁতের জীবাণু রোধে এটি বেশ কার্যকরী।
নিম পাতা রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে রেখে দিতে পারেন পরবর্তীতে ফেসমাস্ক হিসেবে ব্যবহার করার জন্য।
মাথার ত্বকে অনেকেরই চুলকানি ভাব হয়, নিমপাতার রস মাথায় নিয়মিত লাগালে এই চুলকানি কমে, চুল শক্ত হয়, চুলের শুষ্কতা কমে যায় এবং চুল গজানো তরান্বিত হয়।
নিয়মিত নিমপাতার সাথে কাঁচা হলুদ পেস্ট করে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি ও স্কিন টোন ঠিক হয়। তবে হলুদ ব্যবহার করলে রোদ এড়িয়ে চলাই ভালো। নিমপাতার চেয়ে হলুদের পরিমাণ কম হবে।
নিমপাতা ব্যাকটেরিয়া বিরোধী। তাই ত্বকের সুরক্ষায় এর জুড়ি নেই। ব্রণের সংক্রমণ হলে নিমপাতা থেঁতো করে লাগালে ভালো ফল নিশ্চিত।
ত্বকের চুলকানিতেও নিমপাতা বেটে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
নিমের তেলে প্রচুর ভিটামিন ই থাকে যা ত্বক এবং চুলের জন্য উপকারী।
নিমপাতা সেদ্ধ পানি গোসলের পানির সাথে মিশিয়ে নিন। যাদের ত্বকে চুলকানি আছে তাদের এতে আরাম হবে আর গায়ে দুর্গন্ধের ব্যাপারটাও কমে যাবে আশা করা যায়।
নিমপাতা সেদ্ধ পানি বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। কোন ফেসপ্যাক পেস্ট করার সময় পানির বদলে এই নিম পানি ব্যবহার করতে পারেন।
কাটা ছেড়া বা পোড়া স্থানে নিম পাতার রস ভেষজ ওষুধের মতো কাজ করে।
তিতা নিমপাতার বহু গুন।
খামারের গরুর জন্য বহু উপকারী ঔষুধ।
তবে সবার জন্য নয়।
নিমপাতা আমি যেসব ৫টি সমস্যায় ব্যবহার করে আসছি তার ফল পেয়েছি চমৎকার।
১।কৃমিনাশক,লিভার টনিক, জিংক,ক্যালসিয়াম দেওয়ার পর ও অনেক সময় গাভীর পেটে বুটবুট শব্দ করে থাকে,তখন ১০০/২০০ গ্রাম নিম পাতার রস সাথে ১০০/১৫০ গ্রাম গুড় একটানা ৫/৭ দিন খাওয়ালে বুটবুট শব্দ বন্ধ হয়।তবে সকালে খালি পেটে খাওয়াতে হবে।
[গর্ভকালীন সময়ে দেওয়া যাবে না]
২।অনেক সময় গরু খেতে চায় না,রুচি কম, তখন রুচির জন্য বিভিন্ন হজম শক্তি বৃদ্ধিককারক পাউটার/ট্যাবলেট খাওয়ানোর পরে ও কাজ না হলে ১ নং পয়েন্টের নিয়ম অনুযায়ী নিমপাতার রস ও গুড় ৫/৭ ব্যবহারে সুফল পাওয়া যায়।
[গর্ভকালী সময়ে দেওয়া যাবে না]
৩।গবাদিপশুর কোন স্থানে চামড়া উঠে গিয়ে ঘাঁ হয়ে গেলে সেখানে নিমপাতা বেটে সরিষা তেলের সাথে মিশিয়ে মলম এর মতো বানিয়ে তা ৫/৭ দিন ব্যবহারে পরিপূর্ণ ভালো হয়।
৪।গরুর শরীলে অাঠালী দূর করতে ভালো কাজ করে নিমপাতা,নিমপাতার ফুটানো পানি ঠান্ডা করে ৫/৭ দিন গোসল করালে আঠালী চলে যায়।
৫।মশা মাছির ঔষুধ হিসাবে ব্যবহার।
১০০ /১৫০ গ্রাম নিম পাতা ২৫০ গ্রাম পানি সাথে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিয়ে বোতলে ভরে গরুর শরীলে স্পে করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।তবে ১ দিন তৈরি করে ৭ দিন ব্যবহার করলে তেমন ফল পাওয়া যায় না, দৈনিক টা দৈনিক ফল বেশি।
এটি একান্ত আমার বাস্তব অভিক্ততা।
কোন গ্রন্থ/বই এর কথা নয়।তাই কারো সাথে মিলতে না পারে।
মোঃ জুলমত আলী