রোগ সমূহ
কবুতরের বিভিন্ন রোগ হয় যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল:
১।রানিক্ষেত:
লক্ষণঃ
শ্বাস কষ্ট,নেজাল ডিজচার্জ,মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়( নরমালী কবুতর মুখ দিয়ে শ্বাস নেয় না)
প্যারালাইসিস হয়। শেষের দিকে টর্টিকোলিস হয়(মাথা ঘুড়াতে থাকে)।শিভারিং হয়।
কবুতরের যত রোগ হয় তার মধ্যে রানিক্ষেত সবচেয়ে ভয়াবহ এবং বেশি হয় ।
মর্বিডিটি ৫০-৮০% মৃত্যহার ৬০- ১০০% হতে পারে.
১৯৭৮ সালে ইরাকে ১ম পিজনের রানিক্ষেত রিপোর্ট করা হয়।
চিকিৎসা ঃ
চিকিৎসায় তেমন রিজাল্ট পাওয়া যায় না।
সাথে সাথে রানিক্ষেতের টিকা দেয়া যেতে পারে।
লাইসোভিট/বিটামিউন দেয়া যায় ৪-৫দিন ১বেলা।
প্রতিরোধঃ
Colombobac PMV vaccine
২ সপ্তাহ বয়সে ০.2ml ঘাড়ে চামড়ার নিচে।
Chevivac (Renata)
৫ -১০ সপ্তাহে ০.২৫এম এল ঘাড়ের চামড়ার নিচে রানিক্ষেতের কিল্ড ভ্যাক্সিন,৪ সপ্তাহ পর আবার ১ টি টিকা দিলে ১ বছর ভাল থাকবে।
পরবর্তীতে ম্যাটিং,রেসিং,প্রদশনীতের ৪-৬ সপ্তাহের আগে কিল্ড টিকা দিতে হবে।
তাছাড়া ইনএক্টিভেটেড রানিক্ষেতের লাসোটা টিকা দেয়া যায় ।
২।পক্স:
এটি ঠোট,চোখের পাশে, মুখের ভিতর হয়,ছোট বাচ্চায় বেশি হয়।
ইনকিউবেশন পিরিয়ড ৪-১৪দিন।
স্টেপ্টোকক্কাস ও স্টেফাইলোকক্কাস দিয়ে সেকেন্ডারী ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশন হয়ে জটিল আকার ধারণ করে।
ক্যাঙ্কার ও ভিটামিন এ এর ঘাটতি হলেও কিছুটা এমন হতে পারে।
পক্স ভাইরাস হল হোস্ট স্পেসিফিক তবে অন্য হোস্ট কে আক্তান্ত করতে পারে তবে তা মাইল্ড হয়।
চিকিৎসা ঃ
প্যারাসিটামল
ভাইরাক্স
পটাশ মিশ্রিত পানি দিয়ে পক্সের জায়গা মুছে দিতে হবে।
প্রয়োজনে এন্টিবায়োটিক দেয়া লাগবে।
টিকাঃMedipox ৫ বা বেশি বয়সের কবুতরের জন্য।
৩।।সালমোনেলোসিস:
এটা কবুতরের কমন রোগ যা রানিক্ষেতের মত মনে হতে পারে।
ডায়রিয়া,নার্ভাস ডিজ অর্ডার, পা এবং পাখা প্যারালাইসিস হয়।
মৃত্যহার ৫-৫০% হয়।
পার একিউটকে কবুতর হঠাত মারা যেতে পারে।
যদি ব্রেইনে বা বোন ম্যারোতে জীবাণূ যায় তাহলে টর্টিকোলিস(Torticolis) হয় এবং মারা যেতে পারে।
আক্রান্ত কবুতর ক্যারিয়ার হিসাবে কাজ করে।
ডিমের ছাড়াও সব গুলো মাধ্যম দিয়ে ছড়ায়।
লেশনঃ লিভার এবং কিডনি বড় হয়ে যায়
ক্ষুদ্রান্তে গন্ধযুক্ত সবুজ বা বাদামী তরল দেখা যায়।
চিকিৎসা ঃ
অক্সিটেট্রাসাইক্লিন ০.৩ এম এল পার কবুতর ১দিন পর পর ৩-৫ দিন ইঞ্জেকশন মাংসে।
৪।।আই বি এইচ( ইনক্লোশন বডি হেপাটাইটিস):
মৃত্যহার ৫-১০০% হয়. গন্ধযুক্ত পায়খানা হয়.
৫।আমাশয়:
আইমেরিয়া লেব্বেয়রনা(labbeana,)কলিম্বারাম (colimbarum )স্পিসিস দিয়ে হয়।
মৃত্যহার ১-৫০% হয়
৬।কেংকার বা ট্রাইকোমোনিয়াসিস
থোরাক্স এবং ফ্যারিক্স আক্রান্ত হয়।
কবুতর ন্যাসারাল এবং প্রাইমারী ক্যারিয়ার
সব কবুত ই এই জীবাণূ বহন করে তাই বাচ্চতে হবার ঝুঁকি থাকে।
ইনকিউবেশন পিরিয়ড ৪-১৪দিন
বাচ্চাতে বেশি হয়।
৩টা ফর্মে হয়
ফ্যারিংগিয়ালঃ
হলদেটে ক্যাসজিয়াস ডিপোজিট দেখা যায়।
আম্বিলিকালঃ
ক্রপ মিল্ক খাওয়ানোর সময় মিল্ক ফ্লোরে পড়ে এবং সেখান থেকে আমবিলিকেল কর্ড আক্রান্ত হয়।
অর্গানঃ
খাবার কম খায় ,পানি বেশি খায়,ডায়রিয়া হয় ,শুকিয়ে যায়।
ঘাড় সোজা হয়ে পেংগোইনের মত দেখা যায়।
মুখের চারদিকে সবুজাভ বা হলুদ লালা হয়।
মৃত্যুহার ৫০% হয়.
চিকিৎসাঃ
তুতে ৩লিটারে ১গ্রাম পানিতে ৫দিন ।
মেট্রোনিডাজল ৩০ এম জি পার কেজি মুখে ৫ দিন।
সালমনেলোসিস,ক্যান্ডিডিয়াসিস ও পক্সের সাথে মিল থাকায় খেয়াল রাখতে হবে।
৭।এস্পারজিলোসিস:
মৃত্যুহার ৫০% হয়, ডিহাইড্রেশন হয়, শুকিয়ে যায়।
পানি বেশি খায় এবং শ্বাস কষ্ট হয়.
লেশন ঃ
ফুস্ফুসে,এয়ার স্যাকে, ব্রংকাইএ হলুদ ও গ্রে কালারে নডিউল দেখা যায়।
চিকিৎসা
তুতে ১ গ্রাম ৩ লিটার পানিতে ১৪ দিন।
নিস্টাটিন ৬২৫ আই ইউ পার কবুতর দৈনিক ৫-৬ দিন দিনে ৩বার।
৮।ক্লেমাইডিওসিস বা অর্নিথোসিস।
এটি মূলত বাচ্চাতে হয়। এটা নিয়ে আলাদা একটা পোস্ট আছে।
৯।মাইকোপ্লাজমোসিস;
নেজাল ডিজ চার্জ(নাক দিয়ে পানি পড়ে) ,মুখ থেকে খারাপ গন্ধ বের হয়।হা করে নিঃশ্বাস নেয় ,শ্বাস কস্ট হয়।।
উড়তে চায় না।
ইনকিউবেশন পিরিয়ড ৭-১৪দিন।
চিকিৎসাঃ
টাইলোসি্ন ৪গ্রাম ১লিটার ৫দিন।
প্রিভেন্টিভ হিসাবে ৪৫-৬০দিন পর পর দেয়া যায়।
মাইকোপ্লাজমা হলে অর্নিথোসিস(Ornithosis,আমাশয়,পক্স,প্যারাটাইফয়েড ) হবার সম্বাবনা বেশি থাকে।
১০।স্টেপ্টু ও স্টেফাইলোকক্কোসিস এবং কলিবেসিলোসিস যা সেপ্টিসেমিক আকারে হয়।
ডায়রিয়া হয় এবং শুকিয়ে যায়।সালমোনেলার মতই লক্ষণ দেখা যায়।বাচ্চাতে দেখা যায়।
১১।ক্রপ মাইওসিস বা থাস বা সাউর ক্রপ বা মনিয়ালিয়াসিস বা ক্যান্ডিডিয়াসিস
মুরগি থেকে কবুতরে বেশি হয়।
বাচ্চায় বেশি হয় , বরষাকালে বেশি হয়।
কেন বেশি হয় ঃ
শর্করা খাবার বেশি খেলে হয়,ছত্রাকযুক্ত খাবার খেলে হয়।
নোংড়া পরিবেশে,অনেকদিন ধরে এন্টিবায়োটিক দিলে,কৃমির লোড বেশি হলে,ভিটামিনের ঘাটতি হলে।
লেশনঃ
মুখে ও গলায় গ্রেয়িশ হোয়াইট এবং ইয়েলো কালার প্যাচ দেখা যায়।
মুখ থেকে স্লিমি ডিজ চার্জ বের হয়।
Affected bird regurgitate fluid with a sour ,fermentative odours i e the name (sour crop)
চিকিৎসা ঃ
টোথ পিক বা ফরসেপ্স দিয়ে মুখ থেকে স্যাম্পল এনে দেখতে হবে।
২% বোরিক এসিড
১২। কৃমি ,মাইট এবং উকুন
টিংসার অফ আয়োডিন ১ অংশ এবং গ্লিসারিন ৩ অংশ দিয়ে আক্রান্ত জায়গায় লাগাতে হবে প্রতিটি কবুতরের ক্ষেত্রে ।
বাচ্চা উঠার আগে সবকিছু পরিস্কার করতে হবে যেমন খোপ,বাসা এবং স্প্রে করতে হবে.
কবুতর আসার পর ০.৫% ম্যালাথিওনে গোসল করালে পরজীবী দূর হয়.
শীতকালে ২-৩ সপ্তাহ পর পর এবং গীষ্মকালে ৪-৬্সপ্তাহ পর পর ইন্সেক্টিসাইড দিয়ে প্স্রে করতে হবে।
২-৩ মাস পর প কৃমিনাশক খাওয়াতে হবে.
ডোজঃ
এলবেন্ডাজল ৭.৫ এম জি/কেজি বডিওয়েট ১দিন
পাইপেরাজিন ২.৫গ্রাম/লিটার পানিতে ৩দিন
ফেনবেন্ডাজল ৭.৫ এম জি/কেজি বডিওয়েট পানিতে ১দিন
একের পর এক কৃমিনাশক পালা করে খাওয়াতে হবে।
প্রয়োজনে নিচের নিয়মের খাওয়ানো যেতে পারে।
১ম সপ্তাহে ১ম ডোজ
২৫-৩০ দিনে ২য় ডোজ
৭-১৫ দিন পরপর গোসলের ব্যবস্থা করতে হবে।
খাবার ও পানির পাত্র পরিস্কার করতে হবে।
টিকার সিডিউল
পক্স
Medipox ৫ বা বেশি বয়সের কবুতরের জন্য।
রানিক্ষেত
Colombobac PMV vaccine
২ সপ্তাহ বয়সে ০.2ml ঘাড়ে চামড়ার নিচে।
Chevivac (Renata)
৫ -১০ সপ্তাহে ০.২৫এম এল ঘাড়ের চামড়ার নিচে রানিক্ষেতের কিল্ড ভ্যাক্সিন,৪ সপ্তাহ পর আবার ১ টি টিকা দিলে ১ বছর ভাল থাকবে।
পরবর্তীতে ম্যাটিং,রেসিং,প্রদশনীতের ৪-৬ সপ্তাহের আগে কিল্ড টিকা দিতে হবে।
নিচের নিয়মে সরকারী টিকা দেয়া হয় কিন্তু রেজাল্ট তেমন পাওয়া যায় না।
৭দিনে বি সি আর ডি ভি চোখে ১ফোটা করে
১৫দিনে রানিক্ষেত কিল্ড ০.৩ মিলি করে বুকের মাংসে বা ঘাড়ের চামড়ার নিচে
২৫ দিন পিজিয়ন পক্স ডানায় ছিদ্র করে
৬৫দিনে রানক্ষেত কিল্ড ০.৩মিলি করে ঘাড়ের চামড়ার নিচে
৫-৬ মাস পর পর রানিক্ষেত কিল্ড টিকা
দামি কবুতর হলে ৫৫ দিনে ও ১০৫ দিনে করাইজা করতে পারেন।
৩৫ দিনে টাইফয়েড ও ৭৫ দিনে কলেরা করতে পারেন