ইনকিউবেটরে ডিম থেকে বাচ্চা সময়কে দুই ভাগে ভাগে করতে হয়ঃ
প্রথমত ডিম ইনকিউবেটর দেবার পর থেকে ডিম ফুটার ৪/৫দিন আগে পর্যন্ত, যেমন ধরুন আজকে ইনকিউবেটরে মুরগীর ডিম উঠালেন, আমরা জানি মুরগী ডিম ২১দিনে বাচ্চা ফুটে, তাহলে মুরগীর ডিমের যত্নের প্রথম অংশ হচ্ছে ১৬/১৭ দিন পর্যন্ত
অর্থাৎ মুরগীর ডিম ইনকিউবেটরে দেবার পরে ১৭বা ১৮তম দিনে ইনকিউবেটরের নিয়ন্ত্রনের কিছুটার পরিবর্তন আনতে হবে, যেমন মুরগী ডিম ইনকিউবেটরে দেবার প্রথম দিন থেকে ১৭দিন পর্যন্ত আর্দ্রতা ৪০%- ৫০%এ র মধ্যে রাখতে হয়,
এবং ১৭দিনের পরে আর্দ্রতা বাড়িয়ে ৬৫%এর উপরে রাখতে হয়।
তাহলে আমরা বুঝলাম প্রথম দিকেআর্দ্রতা চেয়ে শেষের দিকে আদ্রতা বেশী রাখতে হয়।
অর্থাৎ আর্দ্রতা প্রথমে কম শেষে বেশী।
কম আর বেশী এই দুইটা যেমন বিপরীত শব্দ তেমনি কোনো স্থানে আদ্রতা কম আর বেশি রাখা সম্ভব নয়, হয়তো কম রাখতে হবে নয়তো বেশি রাখতে হবে যদি কম বেশি দুইটাই রাখা হয় তবে সেটা গড়ে একটা পরিমাপ হবে, তেমনি একই ইনকিউবেটরে সেটার ট্রে তে আর্দ্রতা কম আর হেচার ট্রেতে আদ্রতা বেশি রেখে বাতাস সার্ক্লুয়েশন করালে সেই ইনকিউবেটরে হেচার সেটার কোনোটাতেই সঠিক আর্দ্রতা থাকবে না, সেটা গড়ে একটা আর্দ্রতা হয়ে থাকে।সেই কারনে সেটার এবং হেচার যুক্ত ইনকিউবেটরে ডিম ফুটার ভাগ একটু কম আসে,হেচার ইনকিউবেটর আলাদা করলে হেচিংরেট একটু বেশি হয়।
সেটার ইনকিউবেটর অপেক্ষা হেচার ইনকিউবেটর তৈরিএবং নিয়ন্ত্রন একটু সহজ।
কারন হেচার ইনকিউবেটরে ডিম ঘুরানোর প্রয়োজন হয়না, আর্দ্রতা শোষণের তেমন প্রয়োজন হয় না।
হেচার ইনকিউবেটরে যে বিষয় গুলো লক্ষ রাখতে হয়।
*ডিম গুলো শুয়ায়ে স্থীর ভাবে রাখা হয়।
*তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করা হয়।
* পর্যাপ্ত আর্দ্রতা তৈরি করতে হয়।
*পর্যাপ্ত অক্সিজেন প্রবাহিত করতে হয়।
*অতিরিক্ত কর্বনডাইঅক্সাইড নিঃস্বারণ করতে হয়।
এবার হেচার ইনকিউবেটর কেনো সহজ সেটা উল্লেখ করবো,
সেটার ইনকিউবেটর অপেক্ষা হেচার ইনকিউবেটর নিয়ন্ত্রন করা সহজ কারন।
১/ডিম গুলোকে খুব সহজে স্থীর ভাবে শুয়ায়ে রাখা যায়।
২/তাপমাত্রা সহজেই নিয়ন্ত্রন করা যায়।
৩/ আর্দ্রতা তৈরিও সহজ,তাপের উৎসের কাছে বাটিতে করে পানি রাখলেই আর্দ্রতা তৈরি হয়।
৪/ইনকিউবেটরর ভিতর অক্সিজেন প্রবাহিত করলে কার্বনডাইঅক্সাইড বেরিয়ে যাবে কিংবা ইনকিউবেটরের ভিতরের বাতাস বেরর করে দিলে অতিরিক্ত কারকর্বনডাইঅক্সাইড বেরিয়ে যাবে এবং বাহির থেক অক্সিজেন প্রবেশ করবে।
প্রথমে আমরা যেকোনো সাইজের একটা বক্স বানাবো, বক্সের ভিতর পিষ্ঠের চতুর পাশে কর্কশীট লাগাবো যেনো ভিতরের তাপমাত্রা সঠিক ভাবে আটকে থাকে এবং সব যায়গায় সমান তাপমাত্রা থাকে।
এর পরে বক্সের ভিতর একটা বাল্ব লাগাবো, মনে রাখতে হবে বাল্বের তাপটা যেনো সরাসরি ডিম না লাগে, যদি কোনো ডিমের উপর বাল্ব অন হবার সাথে সাথে তাপও বেড়ে যায় তাহলে সেই ডিমের ভ্রুন মারা যাবে, তাই তাপ সারিসরি ডিমে না লাগিয়ে বাতাসে মাধ্যমে তাপকে ছাড়িয় সব যায়গায় সমান তাপমাত্রা রাখলে, কন্ট্রোলার সমান ভাবে সব জায়গার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করতে পারবে। এতেকরে সকল ডিম ভালোভাবে ফুটবে।
সেই জন্য ডিম থেকে ১০/১২ ইঞ্চি উচুতে বাল্ব লাগাতে হয়, বাল্ব বা হিটারের ওয়ার্ট বেশি হলে বা তাপের তীব্রতা বেশি হলে বাল্ব আরো উচুতে লাগাতে হয় অথবা হিট চেম্বার আলাদা রাখতে হয়।
বাল্ব টা ডিম থেকে দুরে সেট করবেন।
বাল্বের সাথে একটা তাপমাত্রা কন্ট্রোলার যুক্ত করবেন, বাল্বের পাশে একটা কুলিং ফ্যন লাগিয়ে দিন ফ্যন লাগানোর কারন হচ্ছে বাল্বের অতিরিক্ত তাপ টা বাতাসের মাধ্যে যেনো ছড়িয়ে দেয়, ফ্যনটা সর্বদা চালু রাখবেন।
বক্সের ভিতর একটা ট্রে রাখবেন ট্রে বানানো খুব সহজ প্রথমে কাঠের চারকোনা একট ফ্রেম বানাবেন ফ্রেমের নিচে নেট লাগালেই হেচার ট্রে হয়ে গেলো এবার ট্রেটা বক্সের ভিতর ঢুকান ট্রের নিচে ৬/৭ইঞ্চি ফাঁকা জায়গা রাখুন (ফাকা জায়গা রাখার কারন হচ্ছে আর্দ্রতার প্রয়েজন হলে সেখানে বাটিতে করে হালকা গরম পানি রাখলেই আর্দ্রতা বাড়বে।
ইনকিউবেটরের ছাঁদে সামান্য ফুটো করুন, এবং সেখানে একটা কুলিং ফ্যন লাগান,এই কুলিং ফ্যনের সাথে
একটা ওভার ট্যম্পারেচার কন্ট্রোলার লাগিয়ে নিন,। তাহলে আমরা এখনে দুইটা তাপমাত্রা কন্ট্রোলার ব্যবহার করলাম, ১টা তাপমাত্রা কন্ট্রোলার যেটার কাজ তাপ বেড়ে গেলে বাল্ব বন্ধ করে দেবো।
আর একটা অতিরিক্ত তাপমাত্রা কন্ট্রোলার যেটার কাজ তাপ বেড়ে গেলে একটা ফ্যন চালুকরে ভিতরের গরম বাতাস বের করে দিয়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করবে।
তাপমাত্রা কন্ট্রোলারে ৩৭.১ডিগ্রী সেলসিয়াস সেট করুন।
এবং অতিরিক্ত তাপমাত্রা কন্ট্রোলারে ৩৭.৬ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা সেট করুন।
এবার ইনকিউবেটরের ভিতর হেচিংএর সময়ের ডিম শুয়ায়ে রাখুন মাঝ খানে একটা পনি সহ বাটি রাখুন, এখন একটা HTC ভিতরে রাখুন সেটাতে ৬০%থেকে ৭০% আর্দ্রতা যাতে বজায় থাকে সেই জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী পানি দিতে পারেন।
এবার ইনকিউবেটর চালু করুন। এভাবে ২/৪দিন রাখলেই বাচ্চা ফুটবে।
অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে তাপমাত্রা কন্ট্রোলারই যথেষ্ঠ ছিলো তাহলে অতিরিক্ত তাপমাত্রা কন্ট্রোলার কেনো. আর বাল্ব অফ হলে তাপমাত্রা বাড়বেই বা কি করে।
এখনে অক্সিজেন প্রবাহিত কারার জন্য একটা কৌশল অবলম্বন করেছি, সেটা হচ্ছে, তাপমাত্রা কন্ট্রোলার বাল্ব বন্ধ করে দিলেও বাল্বের কাছে তাপমাত্রা বেশি থাকবে, বাল্ববের কাছে সারাক্ষণ চালু থাকা কুলিং ফ্যন সেই তাপমাত্রকে ইনকিউবেটরের ভিতরে ছড়িয় দেবে যার ফলে ইনকিউবেটরের ভিতর তাপমাত্রা অতিরিক্ত হয়ে যাবে তাপ অতিরিক্ত হয়ে গেলে ওভার ট্যম্পারেচার কন্ট্রোলারের সাথে যুক্ত ফ্যন টি চালুহবে এতে ভিতরে গরম বাতাস বের হবে, আসলে গরম বাতাসের সাথে ভিতরের কার্বনাডাইঅক্সাইড ও বের হয়ে যাচ্ছে এবং সেই স্থানে বাহিরের অক্সিজেন প্রবেশ করছে, এতে করে বাচ্চা ফুটলে তার জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা থাকছে।
লেখকঃআব্দুল ওহাব(০১৭৪৬-৬০৯২২০)